বাহাদুর হোসেন খান
ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন খান (১৯ জানুয়ারি, ১৯৩১ - ৩ অক্টোবর, ১৯৮৯) ছিলেন একজন বাংলাদেশী উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার ও সরোদ বাদক। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম এক সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ আয়েত আলী খাঁ এবং চাচা আলাউদ্দিন খাঁ।[১]
বাহাদুর হোসেন খান | |
---|---|
জন্ম | ১৯ জানুয়ারি ১৯৩১ |
মৃত্যু | ৩ অক্টোবর ১৯৮৯ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
পেশা | উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার ও সরোদ বাদক |
কর্মজীবন | ১৯৪৯-১৯৭৯ |
পিতা-মাতা | ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ (পিতা) উমর-উন-নেসা খানম (মাতা) |
আত্মীয় | আলাউদ্দিন খাঁ (চাচা) আবেদ হোসেন খান (ভাই) মোবারক হোসেন খান (ভাই) |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাবাহাদুর হোসেন ১৯৩১ সালের ১৯ জানুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের এক প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ একজন প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী এবং মাতা উমর উন-নেসা। তার চাচা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ উপমহাদেশের অন্যতম একজন সঙ্গীতজ্ঞ।[২] ছয় ভাইবোনের মধ্যে বাহাদুর পঞ্চম। তার বড় তিন বোন আম্বিয়া, কোহিনূর, ও রাজিয়া এবং বড় ভাই প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ আবেদ হোসেন খান ও ছোট ভাই সঙ্গীত গবেষক ও লেখক মোবারক হোসেন খান।[৩]
পরিবারের ঐতিহ্য অনুযায়ী শৈশব থেকে সঙ্গীত সাধনায় মগ্ন হন। তাঁর পিতার হাতেই তাঁর সরোদের হাতেখড়ি হয়। সঙ্গীতে উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁর পিতা তাঁকে মাইহারে নিয়ে যান। সেখানে তিনি তার চাচা আলাউদ্দিন খাঁর নিকট দীর্ঘ ২০ বছর সরোদের তালিম গ্রহণ করেন।[৪]
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৪৯ সালে তিনি বাংলাদেশ বেতারের শিল্পী হিসেবে যোগ দেন। সেখানে দুই বছর থাকার পর ১৯৫১ সালে বম্বে চলে যান। সেখানে তিনি নৃত্যশিল্পী শান্তি বর্মণের 'লিটল ব্যালে ট্রুপ'-এর সঙ্গীত পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।[৪]
বাহাদুরের কয়েকটি লংপ্লেসহ অন্যান্য রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ১৯৬০ সালে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত মেঘে ঢাকা তারা চলচ্চিত্রে জ্যোতিরিন্দ্র মিত্রের সহকারী সঙ্গীত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সুবর্ণ রেখা দিয়ে চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা শুরু করেন।[৫] পরবর্তীতে তিনি নতুন পাতা চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনার জন্য তিনি বিশেষ সম্মান লাভ করেন। এছাড়া সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ হল:, ত্রিসন্ধ্যায়, যেখানে দাঁড়িয়ে, শ্বেত ময়ূর, তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩), গার্ম হাওয়া (১৯৭৪), যুক্তি তক্কো আর গপ্পো (১৯৭৪), অমাবস কি চান্দ (১৯৭৯)। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ও যামিনী রায়ের ওপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্রের আবহ সঙ্গীত পরিচালনা করেন।[৪]
অধ্যাপনা
সম্পাদনাবাহাদুর হোসেন কয়েক বছর কলকাতা ও ক্যালিফোর্নিয়ায় আলী আকবর কলেজ অব মিউজিকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিষয়ে অধ্যাপনা করেন।[৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ মোবারক হোসেন খান (১৬ অক্টোবর ২০১৪)। "সুরের পরম্পরা"। যায়যায়দিন। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৭।
- ↑ Chowdhury,, Tathagata Ray (সেপ্টেম্বর ১, ২০১৪)। "Pandit Ravi Shankar was unhappy as I was drawing more applause: Annapurna Devi"। দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৭।
- ↑ সারওয়ার, সাবিত (৭ জানুয়ারি ২০১৪)। "মোবারক হোসেন খান: তিতাস তীরের সঙ্গীতবিশারদ"। যায়যায়দিন। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ মোবারক হোসেন খান। "খান, ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৭।
- ↑ Ritwik Ghatak listing ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে. BFI.com.
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে বাহাদুর হোসেন খান (ইংরেজি)