বায়তুর রউফ মসজিদ
বায়তুর রউফ মসজিদ বাংলাদেশের ঢাকা জেলায় অবস্থিত একটি উল্লেখযোগ্য মসজিদ।[২] ২০১২ সালে নির্মান হওয়া এ মসজিদের ডিজাইন করেছেন স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম। অনবদ্য ডিজাইনশৈলীে এবং দেশীয় সংস্কুতি ও ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে এটি আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার পুরস্কারে ভূষিত হয়।[৩][৪]
বায়তুর রউফ মসজিদ | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | সুন্নি ইসলাম |
অবস্থান | |
অবস্থান | ফায়েদাবাদ, দক্ষিণখান থানা, ঢাকা |
পৌরসভা | ঢাকা |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৫২′৫২″ উত্তর ৯০°২৪′৫২″ পূর্ব / ২৩.৮৮১১৩৯৫° উত্তর ৯০.৪১৪৫৭৬° পূর্ব |
স্থাপত্য | |
স্থপতি | মেরিনা তাবাসসুম |
ধরন | মসজিদ |
স্থাপত্য শৈলী | দেশীয় স্থাপত্য |
সম্পূর্ণ হয় | ২০১২ [১] |
নির্মাণ ব্যয় | ১,৫০,০০০ মাকিন ডলার |
বিনির্দেশ | |
ধারণক্ষমতা | ৪,০০ সালাত আদায়কারী একসাথে সালাত আদায় করতে পারে |
গম্বুজসমূহ | ০ |
বর্ণনা
সম্পাদনাবায়তুর রউফ মসজিদর অবস্থান রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান থানার ফায়েদাবাদে। জমির মালিক সুফিয়া খাতুন স্থানীয় মুসলিমদের নামাজের জন্য এই যায়গাটি ওয়াকফ করেন। মসজিদটি ৭৫৪ বর্গ মিটার জায়গার উপর নির্মিত। এটি এমন ভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে, যার ভেতরে বসেই যেমন ঝকঝকে রোদের দেখা মিলবে, তেমনি ঝম ঝম বৃষ্টিতে এখানে বসেই বর্ষার দারুন আবহ উপভোগ করা যাবে। ভবনটিতে এমন ভাবে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যার ফলে যে কোন ঋতুতেই মসজিদটির ভিতরের তাপমাত্রা থাকবে প্রায় অপরিবর্তিত। ৪ টি আলো প্রবেশের পথ এবং ভবনের ছাদে গোল ছিদ্র করে আলো প্রবেশের ব্যবস্থা এবং একই সাথে আলো নান্দনিক আলো ছায়ার খেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যার ফলে দিনের বেলা এখানে কখনোই কৃত্রিম আলোর প্রয়োজন পরবে না।
প্রতি জামাতে ৪০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করেন, ঈদুল আজহায় এখানে ৬ শতাধিক মুসল্লি ঈদের নামাজ পড়তে পারেন।[৫] মসজিদের পাশা পাশি এখানে একটি মক্তব চালু করা হয়েছে।মসজিদের পূর্ণাঙ্গতার জন্য ইমামের ঘর ও গ্রন্থাগার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।[৬]। চতুর্দিকে আটটি থামের ওপর তৈরি। কিবলার দিকে ১৩ ডিগ্রি কোনাকুনি করা একটি থাম। মসজিদ বলতে যে পরিচিত অবয়ব কল্পনা করা হয় সেটা অনুপস্থিত এখানে। গম্বুজ বা মিনার নেই।
স্থাপত্য শৈলী
সম্পাদনামসজিদটির নির্মাণ শৈলী সুলতানি স্থাপত্য রীতি দ্বারা অনুপ্রাণিত। সনাতন পদ্ধতির ইটের ব্যবহারের সাথে সমকালীন স্থাপত্য রীতি মিশ্রিত হয়েছে। মসজিদটি সম্পূর্ণ ইটের তৈরি, কোন রঙ বা প্লাস্টারের কাজ এখানে করা হয় নি।[৭] লাল ইটের নিয়মিত ছিদ্রযুক্ত দেয়াল তৈরী করা হয়েছে যা প্রাচীন মসজিদের জালির প্রতিনিধিত্ব করছে। বিভিন্ন দরজা ও জানালার অনুপাত এবং বিন্যাসও নেয়া হয়েছে ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার অনুকরনে। এর স্থাপত্যের বিশেষ দিক হলো, এর বায়ু চলাচলব্যবস্থা ও আলোর চমৎকার বিচ্ছুরণ মসজিদের পরিবেশকে দেয় ভিন্ন মাত্রা। সরাসরি আলো প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে কিন্তু পুরো নামাজ কক্ষই থাকবে আলোকিত। এজন্য চারদিকে রাখা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। মসজিদের স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম মসজিদটির বিশেষত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন
’মসজিদটি তৈরি হয়েছে একটু ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। প্রচলিত মসজিদগুলোর ধরন থেকে আলাদা। আর মসজিদটি নির্মিত হয়েছে স্থানীয় ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে, অংশগ্রহণমূলক ধারণা থেকে। খরচও এসেছে সবার কাছ থেকে। পরিবেশবান্ধব এবং আলো-বাতাসের বিষয়টি মাথায় রেখে এর ডিজাইন করেছি। ইতিহাস, সংস্কৃতি, আবহাওয়াসহ নানা বিষয় মাথায় রেখে এর নির্মাণ করা হয়েছে। আর ব্যবহৃত সব উপকরণই স্থানীয়।’[৮]
মসজিদের সম্মুখভাগে এক চিলতে পাকা পরিসর। ঢাকা শহরের জনাকীর্ন অবস্তানে এটিও সামাজিক পরিসরে রূপান্তরিত হয়। স্থানীয় মানুষেরা এটিকে নিজেদের ভাবতে পছন্দ করে।
ছবি ঘর
সম্পাদনাবহি সংযোগ
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "মসজিদ নির্মাণে নারীর"। www.banglanews24.com।
- ↑ "Danish park designed to promote tolerance in community wins architectural award". Reuters. 2016-10-03. Retrieved 2019-10-07
- ↑ "'আগা খান অ্যাওয়ার্ড' পেলেন মেরিনা ও কাশেফ"। ৬ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "আগাখান পুরস্কার বিজয়ী কাসেফ মাহবুব চৌধুরী ও মেরিনা তাবাসসুম - শেষ পাতা - The Daily Ittefaq"। ৬ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/225987
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৬ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩০ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মে ২০২১।
- ↑ https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/890671