বাগবাজার
বাগবাজার হল উত্তর কলকাতার একটি অঞ্চল। এই এলাকাটি কলকাতা পুলিশের শ্যামপুকুর থানার অন্তর্গত।[১] বাগবাজার ও তার পার্শ্ববর্তী শ্যামবাজার এলাকা দু'টি বাঙালি অভিজাত শ্রেণীর অন্যতম প্রধান বসতিস্থল।[২] কলকাতার ক্রমবিকাশ ও উন্নয়নে এই এলাকা একটি সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেছে। আবার অনেকের মতে গঙ্গার যেহেতু এই অংশটি বাঁক নিয়েছিল এবং এই বাঁকের নিকটে একটি হাট বস্তু তার জন্য এই অংশটিকে বাঁক বাজার হিসাবে লোকের মুখে পরিচিত ছিল। যা বর্তমানে বিবর্তন হয়ে বাগবাজার নামে রূপান্তরিত হয়েছে।
বাগবাজার | |
---|---|
কলকাতার অঞ্চল | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৪৮′ উত্তর ৮৮°১৫′ পূর্ব / ২৩.৮° উত্তর ৮৮.২৫° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
শহর | কলকাতা |
ওয়ার্ড |
|
মেট্রো স্টেশন | শ্যামবাজার ও শোভাবাজার-সুতানুটি (নিকটবর্তী স্টেশন) |
জনসংখ্যা (২০০১) | |
• মোট | ২০,০২১ |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
PIN | ৭০০ ০০৩ |
এলাকা কোড | +৯১ ৩৩ |
নামকরণ
সম্পাদনাসাধারণ ধারণা অনুযায়ী 'বাগ' (উদ্যান) বা 'বাঘ' শব্দ থেকে বাগবাজার শব্দটির উদ্ভব। তবে ভাষাতাত্ত্বিক সুকুমার সেন মনে করেন বাগবাজার শব্দটি 'বাঁক বাজার' শব্দের অপভ্রংশ। কারণ এই অঞ্চলের নিকটে হুগলি নদীর একটি প্রকাণ্ড বাঁক অবস্থিত।[৩]
ইতিহাস
সম্পাদনাবাগবাজার একসময় ছিল সুতানুটি গ্রামের অন্তর্ভুক্ত। এই অঞ্চল ছিল বসু ও পাল পরিবারের আবাসভূমি। এই বসু পরিবারে অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তিত্ব নন্দলাল বসু ব্রিটিশদের আগমনের অনেক আগেই সুতানুটিতে আসেন।[২] ডিহি কলকাতা গ্রামে বসতি স্থাপনের পর সুতানুটি অঞ্চল ধীরে ধীরে ইংরেজ কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়। এই অঞ্চলের উত্তরভাগে পেরিনস গার্ডেন নামে একটি প্রমোদ উদ্যান আছে। কলকাতার আদিযুগে কোম্পানির গণ্যমান্য কর্মচারীরা একসময় সস্ত্রীক এই উদ্যানে আমোদ প্রমোদ করতে আসতেন বলে জানা যায়। ১৭৪৬ সাল নাগাদ এই উদ্যানে ইংরেজ যাতায়াত উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৭৫২ সালে ২৫,০০০ টাকায় এই উদ্যানটি বিক্রি হয়ে যায়। যাঁর নামে এই উদ্যান, সেই ক্যাপ্টেন পেরিন ছিলেন বহু জাহাজের মালিক।[৪] ১৭৫৪ সালে কর্নেল সি এফ স্কট এই বাগানে একটি বারুদ উৎপাদন কারখানা স্থাপন করেছিলেন।[২]
কলকাতার অন্যতম ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী জমিদার 'ব্ল্যাক জমিদার' নামে পরিচিত গোবিন্দরাম মিত্রের পুত্র রঘু মিত্র ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালেই বাগবাজারের বিখ্যাত বাগবাজার ঘাটটি নির্মাণ করান। [৫] ১৭৫৬ সালের ১৭৫৬ তারিখে বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা আক্রমণ করলে বাগবাজারের অদূরেই কোম্পানির সঙ্গে তার বিখ্যাত লালদিঘির যুদ্ধটি ঘটে। এই যুদ্ধে সিরাজ জয়লাভ করেন ও কলকাতা অধিকার করে নেন। [৬]
ঊনবিংশ শতাব্দীতে কলকাতার যে বিশিষ্ট মানুষটির সঙ্গে বাগবাজারের নাম ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে পড়ে, তিনি শ্রীরামকৃষ্ণ। সম্ভবত ১৮৭৭ সালে প্রথমবার তিনি বাগবাজারে এসেছিলেন। ৪০, বোসপাড়া লেনে (বর্তমান নাম মা সারদামণি সরণি) কালীনাথ বসুর পৈতৃক বাসভবনে তিনি আসেন। এখানেই হরিনাথ চট্টোপাধ্যায় (পরবর্তীকালে স্বামী তুরীয়ানন্দ), গদাধর ঘটক (গঙ্গোপাধ্যায়) (পরবর্তীকালে স্বামী অখণ্ডানন্দ) ও বিশিষ্ট নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ ঘটে। [৭]
রামকৃষ্ণ মিশনের সংঘ-জননী সারদা দেবীর কলকাতায় বসবাসের সুবিধার জন্য মিশন বাগবাজারেই তার জন্য একটি সুউচ্চ তিনতলা বাড়ি নির্মাণ করেন। বর্তমানে এই বাড়িটি ‘মায়ের বাড়ি’ নামে পরিচিত এবং মিশনের বাংলা মুখপত্র উদ্বোধন পত্রিকার কার্যালয়। এই বাড়ি থেকে দূরে মারাঠা খাল ও গঙ্গার মিলনস্থলটি দেখা যায়। বাড়ি সম্মুখস্থ রাস্তাটির নাম মুখার্জ্জী লেন থেকে পরিবর্তিত করে উদ্বোধন লেন করা হয়েছে। বাড়ির দক্ষিণে কাশী মিত্র শ্মশানঘাট ও শ্মশানেশ্বর শিব মন্দির অবস্থিত।[৮]
ভূগোল
সম্পাদনাবাগবাজার অঞ্চলের উত্তরে বাগবাজার খাল, পূর্বে শ্যামবাজার, দক্ষিণে শোভাবাজার ও কুমারটুলি এবং পূর্বে প্রবাহিত হুগলি নদী। সুপ্রাচীন চিৎপুর রোড (বর্তমান নাম রবীন্দ্র সরণি) সুদীর্ঘকাল ধরেই বাগবাজার অঞ্চলের জীবনরেখা। সাবর্ণ রায়চৌধুরী নির্মিত হালিশহর থেকে বেহালা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি তীর্থপথের উপরে এই রাস্তা নির্মিত হয়েছিল। [৯] ১৯০৪ সালে এই পথ ধরেই ট্রামলাইন বাগবাজার অবধি বিস্তৃত করা হয়। [১০] ২০০৭ সালে এই লাইনটি সংস্কার করা হয়েছে। রবীন্দ্র সরণি যেমন উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত হয়ে বাগবাজারকে দ্বিখণ্ডিত করেছে তেমনি বাগবাজার স্ট্রিট পূর্বে বিধান সরণি থেকে পশ্চিমে বাগবাজার ঘাট অবধি বিস্তৃত হয়ে এই অঞ্চলকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে। গিরিশ অ্যাভেনিউ চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউ-এর একটি সম্প্রসারিত অংশ।[১১] ১৯৩০-এর দশকে এই রাস্তাটির নির্মাণকালে নির্মাণপথের মধ্যে গিরিশচন্দ্র ঘোষের বাসভবনটি পড়লে রাস্তাটিকে দুইভাগে ভাগ করে বাড়ির দুই পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে বাগানসহ বাড়িটি রাস্তার ঠিক মধ্যখানেই অবস্থান করছে। বাগবাজার অঞ্চলে বহু গলি বিদ্যমান।
বাগবাজারে চক্ররেলের একটি স্টেশন আছে। এই অঞ্চলের নিকটতম মেট্রো স্টেশন শ্যামবাজার হাঁটাপথের দুরত্বে অবস্থিত।
জনতত্ত্ব
সম্পাদনানৌকা দেখিতে দেখিতে ভাঁটার জোরে বাগবাজারের ঘাটে আসিয়া ভিড়িল। রাত্রি প্রায় শেষ হইয়াছে – কলুর ঘানি জুড়ে দিয়েছে, বল্দেরা গোরু লইয়া চলিয়াছে – ধোপার গাধা থপাস থপাস করিয়া যাইতেছে – মাছের ও তরকারির বাজরা হু হু করিয়া আসিতেছে – ব্রাহ্মণ পণ্ডিতেরা কোশা লইয়া স্নান করিতে চলিয়াছেন – মেয়েরা ঘাটে সারি সারি হইয়া পরস্পর মনের কথাবার্ত্তা কহিতেছে। কেহ বলিতেছে, পাপ ঠাকুরঝির জ্বালায় প্রাণটা গেল – কেহ বলে, আমার শাশুড়ি মাগী বড় বৌকাঁটকি – কেহ বলে, দিদি, আমার আর বাঁচতে সাধ নাই – বৌছুঁড়ী আমাকে দুপা দিয়া থেতলায় – বেটা কিছুই বলে না, ছোঁড়াটাকে গুণ ক’রে ভেড়া বানিয়েছে কেহ বলে, আহা, এমন পোড়া জাও পেয়েছিলাম, দিবারাত্রি আমার বুকে ব’সে ভাত রাঁধে, কেহ বলে, আমার কোলের ছেলেটির বয়স দশ বৎসর হইল – কবে মরি কবে বাঁচি, এই বেলা তার বিয়েটি দিয়ে নি। [১২]
প্যারীচাঁদ মিত্র
আলালের ঘরের দুলাল (১৮৫৮)
শ্যামপুকুর থানা ও কলকাতা পৌরসংস্থার ৭ নং ওয়ার্ডের একটি বিস্তৃর্ণ অঞ্চল বাগবাজার অঞ্চলের অন্তর্গত। এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ২০০১ সালের জনগণনার হিসাব অনুসারে ২০,০১২। তার মধ্যে পুরুষ ১০,৫১৮ জন ও নারী ৯,৪৯৪ জন।[১৩]
সংস্কৃতি
সম্পাদনাবাগবাজার বাংলার বহু কৃতি সন্তানের বাসভূমি। তাছাড়া কলকাতার সংস্কৃতি আন্দোলনের সঙ্গেও এই অঞ্চলের নাম বিশেষভাবে জড়িত। বাগবাজার স্ট্রিটেই কলকাতার দুটি অন্যতম প্রধান অডিটোরিয়াম অবস্থিত। একটি গিরিশ মঞ্চ; ৯০০ আসন বিশিষ্ট এই অডিটোরিয়ামটির উদ্বোধন হয় ১৯৮৬ সালে। [১৪] অপরটি পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা আকাদেমির শশিভূষণ বিদ্যাবিনোদ যাত্রামঞ্চ। বাগবাজারের ১২৫ বছরের পুরনো বাগবাজার রিডিং লাইব্রেরিটি শহরের অন্যতম প্রাচীন লাইব্রেরি। বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গাপূজাও কলকাতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় বারোয়ারি দুর্গাপূজা। এই পূজাটিও বাগবাজার স্ট্রিটেই অনুষ্ঠিত হয়। রামকৃষ্ণ ভক্তসমাজ এই অঞ্চলের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ অনুভব করেন। বাংলা সাহিত্যেও এই অঞ্চলের বহু উল্লেখ পাওয়া যায়। বিশেষত আলালের ঘরের দুলাল গ্রন্থে প্যারীচাঁদ মিত্র বাগবাজার ঘাটে স্নানরতা মেয়েদের কথোপকথনের একটি মনোজ্ঞ বর্ণনা দিয়েছেন।
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনাবাগবাজারের প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলি হল ব্যোমকালী মন্দির, মদনমোহন মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, বলরাম মন্দির, পুঁটেকালী মন্দির, রামকৃষ্ণ মঠ, বাগবাজার (মায়ের বাড়ি) ও উদ্বোধন কার্যালয় ইত্যাদি।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- গিরিশচন্দ্র ঘোষ – প্রখ্যাত নট ও নাট্যকার।
- বলরাম বসু – শ্রীরামকৃষ্ণের বিশিষ্ট ভক্ত।
- নগেন্দ্রনাথ বসু (১৮৬৬-১৯৩৮) – বিশ্বকোষ নামক বাংলা জ্ঞানকোষ রচয়িতা, বাগবাজারের ৮ নং কাঁটাপুকুর বাইলেনে তার নিবাস ছিল। এখানেই তিনি তার গ্রন্থটি রচনা করেন। কলকাতা পৌরসংস্থা তার সম্মানে এই লেনটি বিশ্বকোষ লেন নামে উৎসর্গ করেছে। সম্ভবত এটিই পৃথিবীর একমাত্র বইয়ের নামে রাস্তা। [১৫]
- মোহনচাঁদ বসু – নিধুবাবুর শিষ্য। উনিশ শতকে বাগবাজারে বাস করতেন। বাংলা আখড়াই গানে খেউড় উদ্ভাবন তিনিই করেন। [১৬]
- ভোলা ময়রা (আঠারো-উনিশ শতক) – স্বনামধন্য কবিয়াল ও বাগবাজার স্ট্রিটের মিষ্টান্ন বিক্রেতা। [১৭]
চিত্রকক্ষ
সম্পাদনা-
গিরিশ মঞ্চ, বাগবাজার - কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ
-
বাগবাজারে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা আকাদেমি ও ফণিভূষণ বিদ্যাবিনোদ যাত্রামঞ্চ
-
ভগিনী নিবেদিতার বাসভবন, এখানেই তার স্কুলের যাত্রা শুরু হয়
-
গিরিশ অ্যাভেনিউ, রাস্তার মধ্যখানে গিরিশচন্দ্র ঘোষের বাসভবন
-
বলরাম মন্দির - বলরাম বসুর বাসভবন, বর্তমানে রামকৃষ্ণ মঠ
-
বাগবাজারের প্রাচীন গলি বোসপাড়া লেন
-
বাগবাজার ঘাটের নিকটস্থ স্টিমার জেটি
-
কলকাতার বিখ্যাত বারোয়ারি পূজা বাগবাজার সার্বজনীনের দুর্গোৎসব, ২০০৬
-
বসু বাটি,বাগবাজার
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Shyapukur Police Station"। Kolkata Police। ২০০৭-০৯-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-১০।
- ↑ ক খ গ Nair, P. Thankappan in The Growth and Development of Old Calcutta, in Calcutta, the Living City, Vol. I, edited by Sukanta Chaudhuri, p. 17, Oxford University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৩৬৯৬-৩.
- ↑ বাংলা স্থাননাম, সুকুমার সেন, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ১৩৮৮ বঙ্গাব্দ, পৃ.৫৪
- ↑ Cotton, H.E.A., Calcutta Old and New, 1909/1980, p. 34, General Printers and Publishers Pvt. Ltd.
- ↑ Cotton, H.R.A., pp. 281,290
- ↑ Cotton, H.E.A., p290
- ↑ The stone tablet outside the house records this in detail. The visit has been described by Swami Turiyananda and Girish Chandra Ghosh, and quoted by Christopher Isherwood in his Ramakrishna and His Disciples, Advaita Ashram, pp 228-229, 249. However, Christopher Isherwood does not mention any name. These are given in the stone tablet.
- ↑ "Udbodhan"। A brief history of the area around। Ramakrishna Math, 1 Udbodhan Lane, Kolkata - 700003। ২০০৭-০৮-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৫।
- ↑ Nair, P.Thankappan, Civic and Public Services in Old Calcutta, in Calcutta, the Living City, Vol I, p. 228.
- ↑ Nair, P.Thankappan, Civic and Public Services in Old Calcutta, p.235.
- ↑ Map no. 5, Detail Maps of 141 Wards of Kolkata, D.R.Publication and Sales Concern, 66 College Street, Kolkata – 700073
- ↑ আলালের ঘরের দুলাল : বসুমতী কর্পোরেশন লিমিটেড (কলকাতা) সংস্করণ, পৃ. ১৯
- ↑ "Census of India 2001"। Provisional Population Totals, West Bengal, Table 4। Census Commission, Government of India। ২০০৭-০৯-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৫।
- ↑ "Places of Interest In and Around Kolkata"। Girish Mancha। West Bengal Government। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৫।
- ↑ Majumdar, Swapan, Literature and Literary Life in Old Calcutta, in Calcutta, the Living City, Vol. I, p. 111
- ↑ Mitra, Rajyeshwar, Music in Old Calcutta, in Calcutta, the Living City, Vol. I, p. 182
- ↑ Banerjee, Sumanta, The World of Ramjan Ostagar, the Common Man of Old Calcutta, in Calcutta, the Living City, Vol. I, p. 82