বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গাপূজা

কলকাতা মহানগরের একটি বিখ্যাত সার্বজনীন শারদীয়া দুর্গাপূজা মণ্ডপ

বাগবাজার সার্বজনীন পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার একটি বিখ্যাত সার্বজনীন শারদীয়া দুর্গাপূজা মণ্ডপ। এই পূজার সাথে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর স্মৃতি বিজড়িত রয়েছে। উত্তর কলকাতার বাগবাজার অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত শতবর্ষ প্রাচীন এই সার্বজনীন দুর্গাপূজাটি কলকাতার তথা পশ্চিমবঙ্গের সাবেকি পূজাগুলির মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে থাকে। বাংলার প্রাচীন রীতি অনুযায়ী নির্মিত প্রতিমা বাগবাজার সার্বজনীনকে এক অন্যমাত্রা দিয়েছে যে কারণে বাগবাজার সার্বজনীন দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে।[]

বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গাপূজা

পূজার সূত্রপাত

সম্পাদনা

বাগবাজার সার্বজনীনের পুজোর সূচনা ঘটে ১৯১৯ সালে৷ এই পুজো শুরু হয়েছিলো স্থানীয় নেবুবাগান লেন ও বাগবাজার স্ট্রিটের মোড়ে ৫৫ নম্বর বাগবাজার স্ট্রিটে । তখন এই বারোয়ারী পূজার নাম ছিল ‘নেবুবাগান বারোয়ারি দুর্গা পুজো’। এখানেই কয়েক বছর পুজো হয়। ১৯২৪ সালে পুজোটি সরে যায় বাগবাজার স্ট্রিট ও পশুপতি বোস লেনের মোড়ে। পরের বছর ফের সরে যায় কাঁটাপুকুরে। ১৯২৭ সালেও স্থানান্তরিত হয় এই পুজো। ১৯২৭ সালে দুর্গাপুজো হয়েছিল বাগবাজার কালীমন্দিরে।[]

পূজার বর্তমান রূপ

সম্পাদনা

১৯৩০ সালে বিখ্যাত আইনজীবী তথা তৎকালীন কলকাতা পুরসভার অল্ডারম্য‌ান দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গাপূজাটি বর্তমান চেহারা পায়। নাম হয় ‘বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনী’। তারই উদ্য‌োগে বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গাপুজো উঠে আসে কর্পোরেশনের মাঠে। তৎকালীন মেয়র সুভাষচন্দ্র বসু সানন্দে এই অনুমতি দেন। শুধু পুরসভার মাঠ ব্য‌বহার করতে দিয়েছিলেন তা-ই নয়, কলকাতা পুরসভা তখন বাগবাজারের এই পুজোয় চাঁদাও দিত। দুর্গাচরণের উদ্য‌োগে এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত হয় দেশীয় শিল্প সম্পর্কিত একটি পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শনী। সেখানে দেশীয় উদ্য‌োগগুলিকে আমন্ত্রণ করে জায়গা দেওয়া হত। ২০১৮ সালে এই পূজাটি শতবর্ষে পা দিয়েছে।

পূজার সঙ্গে জড়িত বিশিষ্টজন

সম্পাদনা

১৯৩৬ সালে এই পুজোর সভাপতি হয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বহু প্রথিতযশা ব্যক্তিদের নাম বাগবাজারের পুজোর সঙ্গে জড়িয়েছে। যাঁদের মধ্যে ছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, স্যার হরিশঙ্কর পাল ছিলেন অন্যতম।

প্রতিমা

সম্পাদনা

বাগবাজার সার্বজনীনের দূর্গা প্রতিমার চোখ দুটি পটল চেরা অর্থাৎ বড়ো হয়ে থাকে । সুবিশাল প্রতিমায় সাবেকিয়ানার ছোঁয়া সুস্পষ্ট । মায়ের মুখটি অপূর্ব সুন্দর । পূজোর শুরু থেকেই অষ্টমী দিন ' বীরাষ্টমী ব্রত ' পালিত হয়ে চলেছে । ওই দিন লাঠি খেলা, শরীর চর্চার প্রদর্শনী হয়ে থাকে । পূজোয় মাকে খিচুড়ি ভোগ দেওয়া হয় ।

সিঁদুর খেলা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা