বাংলাদেশ সুইডেন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

বাংলাদেশের সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

বাংলাদেশ সুইডেন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই হ্রদের তীরে অবস্থিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের একটি প্রাচীন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মধ্যে অন্যতম। এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯৬০ সালে। প্রতিষ্ঠানটি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ও সুইডিশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে সুইডিশ-পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭০ সালে সুইডিশ সরকারের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে, পরবর্তীকালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এটির নাম বাংলাদেশ সুইডেন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হিসেবে পুনঃনির্ধারণ করে।

বাংলাদেশ সুইডেন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
ধরনসরকারি
স্থাপিত১৯৬৩
ইআইআইএন১৩২৬৭৬ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
শিক্ষার্থী১৫০০
অবস্থান
২২°৩০′২০″ উত্তর ৯২°১২′৪১″ পূর্ব / ২২.৫০৫৪৫৬° উত্তর ৯২.২১১৩৪৪° পূর্ব / 22.505456; 92.211344
শিক্ষাঙ্গনশহুরে, ৩০.৫ একর (১২.৩ হেক্টর)
ওয়েবসাইটwww.bspi.gov.bd
মানচিত্র

ইতিহাস

সম্পাদনা

১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থিত সুইডিশ-পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) প্রায় ৩০ জন ছাত্র অধ্যয়ন করত। তাদেরকে পূর্ব পাকিস্তান থেকে করাচিতে গিয়ে নিয়মিত পড়ালেখা করতে হত, যা একটি বাঙ্গালি পরিবারের জন্য খুবই ব্যয়বহুল ছিল। এতে বাঙ্গালি ছাত্ররা প্রায় অসহায় হয়ে পড়ে। তখন তারা করাচির সুইডিশ-পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির প্রধান উপদেষ্টা মিস্টার মাক্স ও. লেদেন এর সাথে দেখা করেন এবং পূর্ব পাকিস্তানে এ রকম একটি জাতীয় ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি ব্যাপারটি আগ্রহের সাথে দেখেন এবং তাদেরকে সরকারের কাছে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করার পরামর্শ দেন। ছাত্ররা একত্রিত হয়ে তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্পমন্ত্রী এ. কে. খান এর সাথে দেখা করেন। তিনি তৎকালীন মন্ত্রীপরিষদের প্রভাবশালী বাঙ্গালি মন্ত্রী ছিলেন। তিনি সরকারের কাছে চট্টগ্রামের কাপ্তাইতে এই ইনস্টিটিউটটি প্রতিষ্ঠা কারার প্রস্তাব করেন। পরবর্তীতে, কেন্দ্রীয় সরকারের আহবানে সুইডেন থেকে আগত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধির একটি দল কাপ্তাই সফর করেন এবং প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে তাদের সম্মতি জানান। এর কিছুদিন পরই ১৯৬০ সালে সেনট্যাব নামের একটি সুইডিশ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এটির নির্মাণ কাজ শুরু করে এবং ১৯৬৫ সালে এর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়।[]

অবস্থান

সম্পাদনা

বাংলাদেশ সুইডেন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় প্রায় ৩০.৫ একর জমি জুড়ে অবস্থিত।[]

প্রযুক্তি

সম্পাদনা

বাংলাদেশ সুইডেন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বর্তমানে ৭টি প্রযুক্তি চালু আছে।

  • সিভিল (উড) প্রযুক্তি
  • অটোমোবাইল প্রযুক্তি
  • কনস্ট্রাকশন প্রযুক্তি
  • কম্পিউটার প্রযুক্তি
  • ইলেকট্রিক্যাল প্রযুক্তি
  • মেকানিক্যাল প্রযুক্তি
  • নন-টেক বিভাগ

শিক্ষা পদ্ধতি

সম্পাদনা

বাংলাদেশ সুইডেন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স প্রদান করে। এর প্রতিটি বিভাগ আটটি পর্বে বিভক্ত। অষ্টম বা শেষ পর্ব হলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং পর্ব। একজন শিক্ষার্থী প্রায় ছয় মাস ধরে একটি শিল্পে একটি নির্বাচিত প্রযুক্তি সম্পর্কে ব্যবহারিক তথ্য শেখে। বাংলাদেশ সুইডেন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে প্রতি পর্বের ৬৫% শিক্ষার্থী সরকার থেকে বৃত্তি পায়। এছাড়াও বিশ্ব ব্যাংক গোষ্ঠী থেকে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা প্রতি পর্বে ৪৮০০ টাকা করে বৃত্তি পায়। আবার প্রতি বিভাগে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং চলাকালে প্রত্যেক শিক্ষার্থী মাসিক ভাতা পায়।[]

ছাত্রাবাস

সম্পাদনা

বর্তমানে এই ইনস্টিটিউটে ২টি ছাত্রাবাস রয়েছে এবং এগুলোতে ২৯৬ জন ছাত্রের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।

  • জাহাঙ্গীর ছাত্রাবাস
  • সুইডিশ ছাত্রাবাস

কৃতি ছাত্র

সম্পাদনা
  • হানিফ সংকেত - নাট্যকার ও উপস্থাপক
  • চট্টগ্রামের প্রয়াত বিএনপি নেতা দস্তগীর চৌধুরী - ক্রীড়া সংগঠক
  • নুরু - জাতীয় ফুটবলদলের সাবেক অধিনায়ক এর বাবা
  • পান্না লাল নন্দী - দেশের বিশিষ্ট ফুটবলার

চিত্রশালা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "বিএসপিআই এলামনাই এসোসিয়েশন"bspi-alumni.com। ২০২২-০৭-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-১৬ 
  2. "বাংলাদেশ সুইডেন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট"bspi.gov.bd। ২০২২-০৭-১৬। ২০২২-০৭-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-১৬ 
  3. "পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়তে হলে"prothom-alo.com। ২০১৩-০৭-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-২৮ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা