কাপ্তাই হ্রদ
কাপ্তাই হ্রদ বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের রাঙামাটি জেলার একটি কৃত্রিম হ্রদ। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১৯৫৬ সালে কর্ণফুলি নদীর উপর কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ করা হলে রাঙামাটি জেলার ৫৪ হাজার একর কৃষি জমি ডুবে যায় এবং এ হ্রদের সৃষ্টি হয়।[১][২][৩][৪][৫]
কাপ্তাই হ্রদ | |
---|---|
অবস্থান | দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ |
স্থানাঙ্ক | ২২°২৯′৪৫″ উত্তর ৯২°১৩′৪৫″ পূর্ব / ২২.৪৯৫৮৩° উত্তর ৯২.২২৯১৭° পূর্ব |
ধরন | আধার |
প্রাথমিক অন্তর্প্রবাহ | কর্ণফুলী নদী |
প্রাথমিক বহিঃপ্রবাহ | কর্ণফুলী নদী |
অববাহিকা | ১১,১২২ বর্গকিলোমিটার (৪,২৯৪ বর্গমাইল) |
অববাহিকার দেশসমূহ | বাংলাদেশ |
গড় গভীরতা | ১০০ ফুট (৩০ মিটার) |
সর্বাধিক গভীরতা | ৪৯৫ ফুট (১৫১ মিটার) |
ইতিহাস
সম্পাদনাকাপ্তাই বাঁধ
সম্পাদনাপাকিস্তান সরকার ১৯৫৬ সালে আমেরিকার অর্থায়নে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ শুরু করে। ১৯৬২ সালে এর নির্মাণ শেষ হয়। ইন্টারন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি এবং ইউটাহ ইন্টারন্যাশনাল ইনকর্পোরেট ৬৭০.৬ মিটার (২,২০০ ফু) দীর্ঘ ও ৫৪.৭ মিটার (১৭৯ ফু) উচ্চতার এ বাঁধটি নির্মাণ করে। এ বাঁধের পাশে ১৬টি জলকপাট সংযুক্ত ৭৪৫ ফুট (২২৭ মি) দীর্ঘ একটি পানি নির্গমন পথ বা স্পিলওয়ে রাখা হয়েছে। এ স্পিলওয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৫ লাখ ২৫ হাজার কিউসেক ফিট পানি নির্গমন করতে পারে। এ প্রকল্পের জন্য তখন প্রায় ২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা বাজেট নির্ধারণ করা হলেও পরে তা ৪৮ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।[২]
অধিভুক্ত এলাকা
সম্পাদনাকাপ্তাই হ্রদের কারণে ৫৪ হাজার একর কৃষি জমি ডুবে যায় যা ঐ এলাকার মোট কৃষি জমির ৪০ শতাংশ[২]। এছাড়া সরকারি সংরক্ষিত বনের ২৯ বর্গমাইল এলাকা ও অশ্রেণীভুক্ত ২৩৪ বর্গমাইল বনাঞ্চলও ডুবে যায়। প্রায় ১৮ হাজার পরিবারের মোট এক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যূত হয়।
বিদ্যুৎ উৎপাদন
সম্পাদনাপ্রথমে এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ২০ হাজার কিলোওয়াট। প্রথমে ৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ১ ও ২ নম্বর ইউনিট স্থাপন করা হলেও পরে ১৯৬৯ সালের ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিটের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে মোট পাঁচটি ইউনিট চালু আছে যার মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট।[২]
পর্যটন
সম্পাদনাকাপ্তাই লেককে ঘিরেই মূলত রাঙামাটি জেলার পর্যটন শিল্প গড়ে উঠেছে। এই লেকের উপর রয়েছে বিখ্যাত ঝুলন্ত ব্রীজ। লেকের দুই ধারই পাহাড়-টিলা দিয়ে ঘেরা। ট্রলার ভাড়া করে লেকে ভ্রমণ করা যায়। ট্রলারে করে যাওয়া যায় শুভলং জলপ্রপাতে। লেকের পাড়ে রয়েছে নতুন চাকমা রাজবাড়ি ও বৌদ্ধ মন্দির। পুরাতন চাকমা রাজবাড়ি কাপ্তাই বাঁধ নির্মানের সময় লেকে তলিয়ে যায়। রাজবন বিহার বাংলাদেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বৃহত্তম বিহার রাঙামাটি শহরের অদূরেই অবস্থিত, যা পূণার্থী এবং দর্শনার্থীদের অন্যতম আর্কষনীয় স্থান।
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
ঝুলন্ত সেতু
-
কাপ্তাই লেকে চলমান নৌকা
-
লেকের সূর্যাস্ত
-
লেকের ভিডিও
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "কাপ্তাই লেক"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ গ ঘ দৈনিক যায়যায়দিন, জানুয়ারি ১০, ২০০৮, পৃষ্টা: ১০
- ↑ ডটকম, সমির মল্লিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "বিমুগ্ধ কাপ্তাই লেক"। bangla.bdnews24.com। ২০১৯-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-৩০।
- ↑ "বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেক | DW | 28.01.2011"। DW.COM। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-৩০।
- ↑ "কাপ্তাই লেক - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-৩০।