বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট

বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান
(বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট থেকে পুনর্নির্দেশিত)

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৭০ সালের ১ অক্টোবর পূর্ব পাকিস্তান ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে কাজ শুরু করে। স্বাধীনতার পর এটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন, ১৯৭৩ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত হয় ও এটির নতুন নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। এই প্রতিষ্ঠান খাদ্য চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে নিত্য নতুন ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের চেষ্টায় নিয়োজিত। সংক্ষেপে এই সংস্থাটি ব্রি বা বি আর আর আই (বাংলাদেশ রাইচ রিচার্স ইনস্টিটিউট) নামেও পরিচিত। ৯ জানুয়ারি, ২০২৪ পর্যন্ত ব্রি উদ্ভাবিত সর্বমোট ধানের জাতের সংখ্যা ১১৫টি।[১] (সর্বশেষ:কৌলিক সারিটি ব্রি ধান১০৮)

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট
গঠিত১৯৭০
সদরদপ্তরঢাকা, বাংলাদেশ
যে অঞ্চলে কাজ করে
বাংলাদেশ
দাপ্তরিক ভাষা
বাংলা
ওয়েবসাইটwww.brri.gov.bd

অবস্থান সম্পাদনা

ঢাকার জেলার ৩৬ কিলোমিটার উত্তরে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরে এই সংস্থার সদর দপ্তর অবস্থিত।[২] সদর দপ্তরে ৭৬.৮৩ একর পরীক্ষণ মাঠ, ১টি জার্মপ্লাজম ব্যাংক, ১০ টি নেট হাউস, ১০ টি গ্রিন হাউস, ২০ টি গবেষণাগার রয়েছে। সারাদেশে এই ইনস্টিটিউটের ১১টি আঞ্চলিক অফিস রয়েছে। এগুলোর অবস্থান- কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, সোনাগাজী, ফরিদপুর, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ এবং গোপালগঞ্জ।

পরিচালনা পরিষদ সম্পাদনা

ব্রি’র মহাপরিচালক এর অধীনে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট বোর্ড অব ম্যানেজমেন্ট এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির ১৯টি গবেষণা বিভাগ, ৩ টি সাধারণ সেবা বিভাগ এবং ৮ টি প্রশাসনিক শাখা আছে। মোট ২৪৯ জন বিজ্ঞানীসহ সর্বমোট ৬৭৩ জন কর্মরত।

আঞ্চলিক কার্যালয় সম্পাদনা

১) কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয় সম্পাদনা

এই আঞ্চলিক কার্যালয় ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা কুমিল্লার চম্পকনগরে অবস্থিত। এই কার্যালয় মোট ২৮.৯৪ হেক্টর জমির উপর অবস্থিত। এর মধ্যে ২২ হেক্টর জমি গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হয়। কার্যালয় টি ৬ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সহ মোট ৩৩ জন জনবল দিয়ে পরিচালিত হয়।

২) রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয় সম্পাদনা

এই আঞ্চলিক কার্যালয় ১৯৭৮ সালে ১২.৭৮ হেক্টর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। কার্যালয় টি ৭ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সহ মোট ২৫ জন জনবল দিয়ে পরিচালিত হয়।

৩) রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় সম্পাদনা

১৯৯১ সালে ৬ হেক্টর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই কার্যালয়ে ৩ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সহ মোট ১১ জন কর্মরত আছে।

৪) কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয় সম্পাদনা

এটি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখনো নিজস্ব কোন জমি বা খামার গড়ে উঠেনি। গবেষণার কাজের জন্য চাষীদের জমি ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি ব্যবহার করা হয়।

৫) আঞ্চলিক কার্যালয়, সাতক্ষীরা সম্পাদনা

আঞ্চলিক কার্যালয়, খুলনা, (এখন সাতক্ষীরা) ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এর গবেষণা  কার্যক্রম ১৯৯৬ সালে খুলনার নিরালায় ভাড়া বাড়িতে শুরু করা হয়, যা পরবর্তীতে ০১ আগস্ট ১৯৯৯ সালে সাতক্ষীরা শহরে স্থানান্তর করা হয়।

সাফল্য সম্পাদনা

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল এবং হাইব্রিড ধানকে ব্রি ধান বলা হয়। ব্রি কর্তৃক উদ্ভাবিত ধানের মধ্যে রয়েছে খরা, বন্যা, লবণসহিষ্ণু, জিংকসমৃদ্ধ, ডায়াবেটিকস রাইসসহ অধিক উচ্চফলনশীল ধান। ১৯৭০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১১৩ জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে এ প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৮টি হাইব্রিড ও ১০৫টি ইনব্রিড। উদ্ভাবিত বিভিন্ন ধানের মধ্যে রয়েছে ব্রি ধান-২৮, ব্রি ধান-২৯, ব্রি ধান-৩৩, ব্রি ধান-৪৩, ব্রি ধান-৪৭, ব্রি ধান-৫০, ব্রি ধান-৬৩, ব্রি ধান-৭০, ব্রি ধান-৭৫, ব্রি ধান-৭৬ (জোয়ার-ভাটাসহনশীল জাত), ব্রি ধান-৭৭ (জোয়ার-ভাটাসহনশীল জাত), ব্রি ধান-৮০, ব্রি ধান-৮১, ব্রি ধান-৮৪, ব্রি ধান-৮৬, ব্রি ধান-৮৮, ব্রি ধান-৮৯, ব্রি ধান-৯০, বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ (জিংকসমৃদ্ধ জাত) ইত্যাদি জাত। [৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা