বাংলাদেশে কয়লা খনন

১৯৬২ সালে জামালগঞ্জে প্রথম কয়লা খনি আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কয়লা খনির সূচনা হয়েছিল।[১] বাংলাদেশের খনিগুলো মূলত কয়লা, গ্রানাইট, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং পেট্রোলিয়াম খনির সমন্বয়ে গঠিত।[২]

ইতিহাস সম্পাদনা

ব্রিটিশ ভারতের পূণঃবিভক্তির সময় থেকে মেঘালয়ের গাড়ো পাহারের কয়লা পূর্ব বাংলায় আসতো এবং এর বাণিজ্য হতো। কয়লা বাণিজ্যের জন্য ভারতের ব্রিটিশ রেল নেটওয়ার্কের সহায়তায় ঢাকায় খনির অফিস খোলা হয়েছিল। ১৯৬১ সালে ইউএন-পাক খনিজ সমীক্ষা প্রকল্প তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (আজকের বাংলাদেশ) পাকিস্তানের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দ্বারা সমীক্ষা শুরু করে । ১৯৬২ সালের জরিপে জয়পুরহাট জেলাজামালগঞ্জে ১.০৫ মিলিয়ন টন কয়লা পাওয়া যায়। পরের বৃহত আবিষ্কারটি ১৯৮৫ সালে হয়েছিলো যখন জিওলজিকাল সার্ভে অফ বাংলাদেশ দিনাজপুরে কয়লা আবিষ্কার করেছিল। ১৯৮৯ সালে খালাশপুরে, রংপুর জেলাতে একটি কয়লা ক্ষেত্র আবিষ্কার হয়েছিল এবং আরেকটি ১৯৯৯ সালে দিওপাড়ায় বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিক জরিপ কর্তৃক আবিষ্কৃত হয়েছিলো। বহুজাতিক বিএইচপি বিলিটন ১৯৯৭ সালে ফুলবাড়ী কয়লা ক্ষেত্র আবিষ্কার করে। গ্লোবাল কয়লা ম্যানেজমেন্ট পিএলসি ফুলবাড়ী কয়লা ক্ষেত্রের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলাধারগুলিতে বাংলাদেশের আনুমানিক ২ বিলিয়ন টন কয়লা রয়েছে। পদ্ধতি, প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিণতি সম্পর্কিত উদ্বেগের কারণে বাংলাদেশী কয়লার মজুদ অন্বেষণ অপ্রত্যাশিতভাবে কম। মেঘালয়ে খনিত কয়লা এবং চুনাপাথর বাংলাদেশে পরিবহন করা হয়ে থাকে, এবং এদেশে সিমেন্ট কারখানায় ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের মোট শক্তি উৎপাদনের দুই শতাংশ কয়লা দ্বারা করা হয়। বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে বর্তমানের শক্তি উৎপাদন ২ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে।[৩][৪]

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি সম্পাদনা

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি বড়পুকুরিয়া কয়লা খনন সংস্থা লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনন সংস্থা লিমিটেড রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার একটি সহায়ক সংস্থা। খনিটি দিনাজপুরে অবস্থিত, এটি বাংলাদেশের একমাত্র সক্রিয় খনি। খনিটির নিকটবর্তী স্থানীয়রা তাদের বাড়িতে ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। খনিটির নিকটবর্তী জলাশয়গুলি শুকিয়ে গেছে। জবাবে সরকার খনিটির নিকটবর্তী জমি অধিগ্রহণ করেছে।

২০১৮ সালের জুলাইতে খবর প্রকাশিত হয় ২২৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের প্রায় ১৪.২ মিলিয়ন টন কয়লা বড়পুকুরিয়া কয়লা খনন সংস্থা লিমিটেডের কর্মকর্তারা জালিয়াতি করেছেন। ঘটনাটি বড়পুকুরিয়া কয়লা কেলেঙ্কারী হিসাবে পরিচিত পায়।[৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. কিউ.এম আরিফুর রহমান (২০১২)। "কয়লা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  2. Minerals Yearbook, 2008, V. 3, Area Reports, International, Asia and the Pacific (ইংরেজি ভাষায়)। Government Printing Office। ২০১০-১০-২৫। পৃষ্ঠা 41। আইএসবিএন 9781411329645 
  3. "Bangladesh bets on coal to meet rising energy demand"Climate Home - climate change news। ২০১৭-০২-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-২০ 
  4. "How to adopt clean coal technology"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০২-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-২০ 
  5. "Just vanished"। The Daily Star। ২১ জুলাই ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৮