বনমানুষ
বনমানুষ বা ওরাঙ্গুটান (ইংরেজি: Orangutan) পঙ্গ (Pongo) গণের লেজবিহীন প্রাইমেট। এদের শরীরে লাল কিংবা বাদামী বর্ণের লোম থাকে। পৃথিবীতে মাত্র তিনটি প্রজাতির ওরাং ওটাং দেখা যায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বনাঞ্চলে এদের আবাসস্থল। বর্তমানে খুব কমসংখ্যক বনমানুষ রয়েছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাওয়াই এর প্রধান কারণ। সিঙ্গাপুর চিড়িয়াখানায় ওরাং ওটাংকে প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে।
বনমানুষ[১] ওরাং ওটাং | |
---|---|
বোর্নিওবাসী বনমানুষ (Pongo pygmaeus) | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | স্তন্যপায়ী |
বর্গ: | প্রাইমেট |
পরিবার: | হোমিনিডি |
উপপরিবার: | পঙ্গিনি |
গণ: | Pongo Lacépède, 1799 |
আদর্শ প্রজাতি | |
Pongo borneo Lacépède, 1799 (= Simia pygmaeus Linnaeus, 1760) | |
প্রজাতি | |
Pongo pygmaeus | |
![]() | |
প্রতিশব্দ | |
Faunus Oken, 1816 |
নামসম্পাদনা
"ওরাং-ওটাং" (ওরাং-উটান) নামটি এসেছে দু'টি মালয় শব্দ ওরাং ("মানুষ" বা "লোক") এবং হুটান ("বন") থেকে - যার সম্পূর্ণ অর্থ দাঁড়ায় "বনের মানুষ" বা "বনমানুষ"।[২]
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাসসম্পাদনা
- প্রজাতি - Pongo
- বোর্নিওবাসী বনমানুষ - Pongo pygmaeus
- সুমাত্রীয় বনমানুষ - Pongo abelii
বৈশিষ্ট্যাবলীসম্পাদনা
ওরাং ওটাংয়ের লাল-বাদামী রঙের ঘন লোম রয়েছে। এছাড়াও, খুবই লম্বা ও শক্তিশালী বাহু রয়েছে। এর সাহায্যে তারা খুব দ্রুত ও নিখুঁতভাবে গাছে চড়তে পারে। তবে সুমাত্রা এলাকার ওরাং ওটাংগুলো বোর্নিওর ওরাং ওটাংয়ের তুলনায় আকারে ছোট এবং লোম অধিক ঘন। ব্যাপক সংখ্যায় বন নিধনের প্রেক্ষাপটে তাদের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে এবং বিপন্ন প্রজাতির তালিকার দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে।
জীবন-চক্রসম্পাদনা
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বোর্নিও এবং সুমাত্রা দ্বীপপুঞ্জের বৃষ্টিবহুল বনাঞ্চলে ওরাং ওটাংদের দেখা মেলে। অধিকাংশই উঁচু গাছপালায় বসবাস করে। ফল, পাতা, গাছের বাকল খেয়ে জীবনধারন করে। এছাড়াও, পোকামাকড়, পাখীর ডিম এবং ছোট ছোট প্রাণী খেতেও অভ্যস্ত তারা। গাছের পাতায় সঞ্চিত বৃষ্টির জল খেয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করে এজাতীয় প্রাণীগুলো। গাছ থেকে না তাড়ালে তারা ভূমিতে তেমন নামে না ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। প্রাপ্তবয়স্ক ওরাং ওটাংগুলো অত্যন্ত সাবধানতা ও সচেতনতা অবলম্বন করে নমনীয় পায়ের সাহায্যে এক শাখা থেকে অন্য শাখায় যাতায়াত করে। ছোটগুলো আরও সচেতনতা অবলম্বন করে।
স্ত্রীজাতীয় ওরাং ওটাং ২৩০ থেকে ২৬০ দিন গর্ভধারণ করে একটিমাত্র শাবক প্রসব করে। মাঝেমধ্যে দু'টি শাবকও প্রসব করতে পারে। প্রতি আট থেকে নয় বছর অন্তর তারা গর্ভধারণ করে থাকে। ছোট্ট শাবকগুলো তাদের মায়েদের সাথে কয়েক বছর অবস্থান করে। মায়ের পিঠে আরোহণপূর্বক বনাঞ্চলের নিয়ম-কানুন প্রতিপালনে সচেষ্ট হয় ও বনে অবস্থান করতে শেখে। মানব শিশুর ন্যায় ক্ষুদ্র ওরাং ওটাং শাবকগুলো খেলাধূলাপ্রিয় এবং স্নেহপূর্ণ আচরণ করে। পাঁচ কিংবা ছয় বছর বয়সসীমায় অবস্থান করে তারা স্বাধীনভাবে চলাচল করে; এমনকি নিজ নিজ এলাকা ছেড়ে চলেও যায়।[৩]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- Orangutan Foundation International
- Orangutan Language Project ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ মার্চ ২০০৯ তারিখে
- The Orangutan Foundation
- Orangutan Land Trust