ফ্রঁৎস ফানোঁ

ফরাসি দার্শনিক, উপনিবেশবাদ-বিরোধী বিপ্লবী লেখক ও মনোচিকিৎসক

ফ্রঁৎস ফানোঁ[ক] (ফরাসি: Frantz Fanon, উচ্চারণ: [fʁɑ̃ts fanɔ̃]; ২০শে জুলাই ১৯২৫ – ৬ই ডিসেম্বর ১৯৬১), যিনি ইব্রাহিম ফ্রঁৎস ফানোঁ নামেও পরিচিত, ছিলেন ফরাসি উপনিবেশ মার্তিনিকের একজন ফরাসি পশ্চিম ভারতীয়[১][২][৩] মনোবিজ্ঞানীরাজনৈতিক দার্শনিক। তাঁর কাজ উত্তর-ঔপনিবেশিক অধ্যয়ন, সমালোচনা তত্ত্বমার্ক্সবাদের মতো ক্ষেত্রসমূহে প্রভাবশালী।[৪] একজন বুদ্ধিজীবী হওয়ার পাশাপাশি ফানোঁ ছিলেন একজন রাজনৈতিক উগ্রপন্থী, সর্বাফ্রিকানবাদীমার্ক্সীয় মানবতাবাদী যাঁর মূল সংশ্লিষ্টতা ছিল উপনিবেশের মনোবিকারবিজ্ঞান[৫] এবং বিউপনিবেশায়নের মানবিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিণতি বিষয়ে।[৬][৭][৮]

ফ্রঁৎস ফানোঁ
জন্ম২০ জুলাই ১৯২৫ (1925-07-20)
মৃত্যু৬ ডিসেম্বর ১৯৬১(1961-12-06) (বয়স ৩৬)
মাতৃশিক্ষায়তনলিয়ঁ বিশ্ববিদ্যালয়
উল্লেখযোগ্য কর্ম
কালো চামড়া, সাদা মুখোশ; দ্য রেচেড অফ দি আর্থ
দাম্পত্য সঙ্গীজোজি ফানঁ
অঞ্চলআফ্রিকানা দর্শন
ধারামার্ক্সবাদ
কালো অস্তিত্ববাদ
সমালোচনামূলক তত্ত্ব
অস্তিত্ববাদী প্রপঞ্চবিদ্যা
প্রধান আগ্রহ
বিউপনিবেশায়নউত্তর-ঔপনিবেশিকতাবাদ, বিপ্লব, উপনিবেশায়নের মনোবিকারবিজ্ঞান, বর্ণবাদ, মনঃসমীক্ষণ
উল্লেখযোগ্য অবদান
দ্বৈত সচেতনতা, ঔপনিবেশিক মানসিকতা, To become black, Sociogeny

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

ফানোঁ ১৯২৫ সালে মার্তিনিকে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মা, ইলানোর মেডেলিস ছিলেন আফ্রো-মার্টিনিকান এবং সাদা আলসতিয়ান বংশোদ্ভূত এবং দোকানদার হিসাবে কাজ করতেন।[৯]

ফ্রান্সে চিকিৎসাবিদ্যায় শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি মনোরোগবিদ্যায় বিশেষ জ্ঞান অর্জন করেন। সাতাশ বছর বয়সে তিনি তার প্রথম বই প্রকাশ করেন। ফরাসিদের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের সময় তাকে একটি হাসপাতালের দায়িত্ব দেয়া হয়। তার সেখানকার অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণ তাকে বিদ্রোহীদের সাথে সহকর্মী করে তোলে এবং তিনি তাদের একজন সোচ্চার মুখপত্র হয়ে ওঠেন। ওই সময়েই তার 'জগতের লাঞ্ছিত ভাগ্যাহত' বইটি লেখা হয়। স্বায়ত্বশাসিত আলজেরিয়াতে শান্তির প্রতিষ্ঠা ফানোঁ দেখে যেতে পারেননি। ১৯৬১ সালে তার লিউকোমিয়া রোগ ধরা পড়ে। কাজের প্রতি গভীর নিষ্ঠার জন্য তিনি অবসর নেননি; কিন্তু দেখা গেল বড় দেরি হয়ে গেছে। ১৯৬১ সালের শেষের দিকে তাকে ওয়াশিংটন নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেই বছরই ডিসেম্বর মাসে মাত্র ছত্রিশ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর তার সমস্ত তাত্ত্বিক লেখা 'ফ্রঁৎস ফানোঁর বিপ্লবী চিন্তা' নামক বইটিতে সন্নিবেশিত হয়।[১০]

কর্মজীবন সম্পাদনা

কালো চামড়া, সাদা মুখোশ ফানোঁর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কালো চামড়া, সাদা মুখোশ-এ ফানোঁ মনোবিশ্লেষ করেছেন নিপীড়িত কালো ব্যক্তিকে যারা যেই সাদা দুনিয়ায় তারা বাস করেন সেখানে নিজেদেরকে নিচু মানের প্রাণী হিসেবে হৃদয়ঙ্গম করে থাকেন এবং অধ্যয়ন করে কীভাবে তারা ফর্সাত্বের কার্যকারিতার মাধ্যমে বিশ্বকে চালনা করে।[৯]

ফানোঁর দর্শন সম্পাদনা

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. এই ফরাসি ব্যক্তিনামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় ফরাসি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণে ব্যাখ্যাকৃত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Frantz Fanon | Biography, Writings, & Facts"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  2. Macey, David (১৩ নভেম্বর ২০১২)। Frantz Fanon: A Biography (ইংরেজি ভাষায়)। Verso Books। পৃষ্ঠা 316; 355; 385। আইএসবিএন 9781844678488 
  3. Boumghar, Sarah (১২ জুলাই ২০১৯)। "Frantz Fanon a-il été déchu de sa nationalité française ?"Libération (ফরাসি ভাষায়)। 
  4. Biography of Frantz Fanon। Encyclopedia of World Biography। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১২ 
  5. Seb Brah. "Franz Fanon à Dehilès: « Attention Boumedienne est un psychopathe". academia.edu.
  6. Lewis Gordon, Fanon and the Crisis of European Man (1995), New York: Routledge.
  7. Hussein Abdilahi Bulhan, Frantz Fanon and the Psychology of Oppression (1985), New York: Plenum Press.
  8. Fanon, Frantz। "Full text of "Concerning Violence""Openanthropology.org 
  9. Gordon, Lewis R.; Cornell, Drucilla (২০১৫-০১-০১)। What Fanon Said: A Philosophical Introduction to His Life and Thought (ইংরেজি ভাষায়)। Fordham University Press। পৃষ্ঠা 26। আইএসবিএন 9780823266081 
  10. জগতের লাঞ্ছিত ভাগ্যাহত, মূল: ফ্রানজ ফানো, অনুবাদ ও ভূমিকা: আমিনুল করিম ভূইয়া, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, ডিসেম্বর, ১৯৮৮।

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা