ফুলরা রাজ্য বা ফালরা রাজ্য ছিল ব্রিটিশ আমলের একটি অপ্রধান ও অতিক্ষুদ্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ও শাসিত দেশীয় রাজ্য। এই রাজ্যটি পূর্ববর্তী পশতুন গিলজি বা মোগল বার্লাস কনফেডারেশনের তনোলি উপজাতি দ্বারা শাসিত হতো। রাজ্যটি উত্তর পশ্চিম সীমান্তের অঞ্চলে অবস্থিত এবং এটি নিকটবর্তী পৈত্রিক রাজ্য অম্ব রাজ্যের পূর্ব দিক অবস্থিত ছিল।

ফুলরা রাজ্য
পাকিস্তান দেশীয় রাজ্য
১৮২৮–১৯৫০

পাকিস্তানের মানচিত্রে ফুলরা রাজ্য
রাজধানী(দেশীয় রাজ্য) ফুলরা
আয়তন 
• 
৯৮ বর্গকিলোমিটার (৩৮ বর্গমাইল)
ইতিহাস 
• প্রতিষ্ঠিত
১৮২৮
• বিলুপ্ত
১৯৫০
বর্তমানে যার অংশখাইবার পাখতুনখোয়া, পাকিস্তান
খাইবার পাখতুনখোয়া সরকার

প্রাক্তন ফুলরা রাজ্যের আওতাভূক্ত অঞ্চলটি বর্তমান কালে পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে মানসেহর তহসিলের একটি ইউনিয়ন পরিষদ হিসাবে হিসাবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।[১]

ইতিহাস সম্পাদনা

ফুলরা রাজ্য ১৮৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যখন অম্ব রাজ্যের তৎকালীন শাসক মীর পান্ডা খান তনোলি ফুলরা অঞ্চলটিকে নইজ রাজত্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে তার ভাই মাদাদ খান তনোলির অধীনে ফুলরা অঞ্চলটিকে একটি ছোট্ট রাজত্ব হিসাবে মঞ্জুর করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালের পূর্বে ফুলরা রাজ্য ব্রিটিশ ভারতের পূর্ণ রাজপদ (দেশীয় রাজ্য) হিসাবে স্থান পেয়েছিল কিনা এই নিয়ে এখনও কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত যদি এটি দেশীয় রাজ্য হিসেবে না থাকে তাহলে নিশ্চিত ভাবেই এটি সামন্ত জমিদারি সম্পত্তি বা জায়গীর (এস্টেট) মর্যাদায় ছিল। তবে পরবর্তী সময়ে ফুলরা রাজ্যকে "ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাজ্যের" স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কারণ ১৯১৯ এবং ১৯২১ সালে ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্যের দাপ্তরিক ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া-তে ফুলরা রাজ্যকে দেশীয় রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত ফুলরা জম্মু ও কাশ্মীরের রাজার আধিপত্যের অধীনে ছিল। ১৯৮৯ সালের পরে এটি একটি ব্রিটিশ আশ্রিত রাজ্য হিসেবে ব্রিটিশ ভারতে পরোক্ষভাবে প্রবেশ করে।[সন্দেহপূর্ণ ]

১৯৪৭ সালে, ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে বিদায় নেওয়ার পরপরই ফুলার শেষ শাসক পাকিস্তানের নতুন কর্তৃত্বের সাথে একীভূত করণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। ফলে ফুলরা ১৯৫০ সালের সেপ্টেম্বর অবধি পাকিস্তানের একটি দেশীয় রাজ্য ছিল। তারপর ফুলরার শাসকের মৃত্যুর পর এটি উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে অন্তর্ভুক্ত হয়।[১]

রাজবংশ সম্পাদনা

এই রাজ্যে আম্বের বংশগত তনোলি নবাবদের (শাসক) সমান্তরাল রেখার দ্বারা শাসিত ছিল। আম্ব এবং ফুলরা একসাথে মাঝে মাঝে "সামন্তত তনাওয়াল" হিসাবে পরিচিত ছিল। [২]

মেয়াদ ফুলরার নবাব
১৮০৯-১৮১৮ নবাব খান তনোলি
১৮২৮-১৮৫৭ খান মাদাদ খান তনোলি
১৮৫৮-১৮৯০ খান আবদুল্লাহ খান তনোলি
১৮৯০-১৯০৮ খান আবদুল (আবদুর) রহমান খান তনোলি
১৯০৮-১৯৩২ নবাব আতা মুহাম্মদ খান তনোলি

(জ. ১৮৭৯ – মৃ. ১৯৩২)

১৯৩২-১৯৫০ নবাব আবদুল লতিফ খান তনোলি

(জ. ১৯০৭ – মৃ. ১৯৫০)

সেপ্টেম্বর ১৯৫০ ফুলের রাজ্য বিলুপ্ত হয়ে যায়

মাদাদ খানের বংশোদ্ভূত সম্পাদনা

ফুলার আদি খান মাদাদ খানের বংশের দুটি শাখা ছিল যেমন একটি সিনিয়র শাখা এবং একটি জুনিয়র শাখা। [৩] ফুলরা রাজ্য বিলুপ্ত হওয়ার পরে, এই দুটি শাখাই এলাকায় প্রতিনিধিত্ব করে চলেছে। এর সর্বশেষ নবাব খান আবদুল লতিফ খান তনোলির বংশধররা এই অঞ্চলে ব্যক্তিগত বাসিন্দা হিসাবে রয়ে গিয়েছিলেন [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] আবদুল লতিফ খান তনোলির বংশধররা হলেন তাঁর পুত্র নবাবজাদা মুহাম্মদ ফরিদুন খান তনোলি এবং তাঁর নাতি নবাবজাদা আলী রাজা খান তনোলি। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তারা ফুলার পরিবারের প্রবীণ শাখা নিয়ে গঠিত। [ উদ্ধৃতি প্রয়োজন ][ উদ্ধৃতি প্রয়োজন ] জুনিয়র শাখার মধ্যে, মাদাদ খান তনোলির আরও দুটি জীবিত পুত্র ছিল, বাহাদর খান তনোলি (একটি তনোলির মহিলার কাছ থেকে), যার উত্তরসূরী এখনও মঙ্গল ডোগা, মহল এবং মাসান্দ গ্রামে বসতি স্থাপন করেছেন;[৪] এবং আরসালা খান তনোলি [৫] যিনি গুজর মহিলা থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং যার বংশধররা এখনও গোজরা গ্রামে থাকেন। তারা সবাই আজ বেসরকারী নাগরিক।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. The Pakistan Gazetteer, vol. 5 (Cosmo Publications, 2000), p. 243
  2. Hubert Digby Watson, Gazetteer of the Hazara District, 1907, p. 187
  3. Major H Wace 'District Settlement Report on Hazara' 1874
  4. Lt Col E G Hastings 'The Upper Tanawal Feudatory Area: A Confidential Report for Government', Govt. of the Punjab, Lahore, 1883; at the Punjab Governmental Archives, Lahore, p 124
  5. Hastings, 1883, pp 144-145

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা