প্লাসমিড
এই নিবন্ধটি অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত।(মার্চ ২০১৫) |
প্ল্যাসমিড হচ্ছে ছোট ডিএনএ অণু, যা একটি কোষে থাকে কিন্তু ক্রোমোজোমাল ডিএনএ থেকে আলাদা থাকে। এটি নিজে নিজেকে প্রতিলিপন করতে পারে। এগুলোকে সাধারণত পাওয়া যায় ব্যাকটেরিয়াতে। ছোট বৃত্তাকার,দুইটা ছাচ বিশিষ্ট ডিএনএ অণুরূপে। কখনো কখনো একে আর্কিয়া এবং ইউক্যারিওটিক জীবেও পাওয়া যায়। সাধারণত প্লাসমিড যেসব জিন ধারণ করে সেগুলো জীবকে টিকে থাকতে সহায়তা করে। যখন ক্রোমোজোম বড় হয় তখন সে যে সকল প্রয়োজনীয় জীন ধারণ করে তার মাধ্যমে জীব সাধারণ পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকে। কিন্তু প্লাসমিড ছোট হলেও যেসব অতিরিক্ত জীন ধারণ করে সেগুলো জীবকে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সহায়তা করে। প্লাসমিড vector হিসেবে molecular cloning এ ব্যবহার করা হয়।
প্লাসমিডকে replicon s হিসেবে বিবেচনা করা হয়। [[ডিএনএ]]-এর ইউনিট,যার মাধ্যমে ডিএনএ বাহকের অভ্যন্তরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের প্রতিলিপি গঠন করতে সক্ষম হয়। যাইহোক, প্লাসমিডকে ভাইরাসের মতই জীব হিসেবে গণ্য করা হয় না।প্লাজমিড হল এক্সট্রা ক্রোমোসোমাল ডিএনএ অণু। এগুলি ছোট, বৃত্তাকার এবং স্বায়ত্তশাসিতভাবে প্রতিলিপি করার ক্ষমতা রয়েছে। প্লাজমিডের প্রতিলিপি ক্রোমোসোমাল ডিএনএর নিয়ন্ত্রণে নেই। তারা বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। কিছু ইউক্যারিওট যেমন খামির এবং উদ্ভিদেও প্লাজমিড থাকে।তাদের স্বাধীনভাবে প্রতিলিপি করার ক্ষমতা প্লাজমিডকে জিন স্থানান্তর এবং হেরফের করার জন্য রিকম্বিন্যান্ট ডিএনএ প্রযুক্তিতে একটি ক্লোনিং ভেক্টর করে তোলে।জোশুয়া লেডারবার্গ প্লাজমিড "Plasmid" ইংরেজি প্রতিশব্দটি তৈরি করেছিলেন।প্ল্যাসমিড এক ধরনের বৃত্তাকার DNA অণু যা সাধারণত ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে পাওয়া যায়। এটি অন্য প্ল্যাসমিড বা মূল DNA এর সাথে সমন্বয় ঘটাতে সক্ষম এবং অর্ধসংরক্ষণশীল প্রক্রিয়ায় প্রতিলিপন ক্ষমতাসম্পন্ন। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিশেষ কর ইনসুলিন ও Genetically modified Food উৎপাদনে প্লাজমিক ব্যবহার করে।[১] প্লাসমিডকে এক ব্যাকটেরিয়াম থেকে আরেক ব্যাকটেরিয়ামে প্রতিস্থাপন করা যায়(এমনকি অন্য প্রজাতিতেও) এই প্রতিস্থাপন করা যায় তিনটি গঠন প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে। সেগুলো হল: transformation, Transduction এবং conjugation।এই যে বাহক থেকে বাহকে জেনেটিক উপাদানের এই প্রতিস্থাপন, একে বলা হয় horizontal gene transfer এবং প্লাসমিডকে mobilome এর অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।ভাইরাস(যারা তাদের জেনেটিক উপাদানসমূহকে রক্ষক প্রোটিন; (যাকে capsid বলা হয়) দিয়ে আবদ্ধ করে রাখে)। কিন্তু প্লাসমিডের ডিএনএ উলঙ্গই থাকে।কিছু কিছু শ্রেণির প্লাসমিড conjugative sex কে এনকোড করে, যা তার প্রয়োজন। প্লাসমিডের আকার ১ থেকে 200k bp(বেস পেয়ার:-Base pair) এর বেশি হতে পারে।প্ল্যাসমিডের গড় আণবিক ভর হলো {10⁶-200×10⁶=1990⁶}Dalton।আণবিক বংশগতিবিদ্যায় (molecular genetic) গবেষণায় প্ল্যাসমিড প্রচুর পরিমাণ এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।প্ল্যাসমিড অল্প ও বেশি সংখ্যক জিন ধারণ এবং বহন করতে পারে।[২]
বৈশিষ্ট্যসম্পাদনা
যুক্তরাষ্ট্রের আণবিক জীববিজ্ঞানী জোসুয়া লেডারবার্গ ১৯৫২ সালে প্রথম প্লাসমিড শনাক্ত করেন।[৩] ১৯৬৮ সালে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল যে প্লাসমিডকে অতিরিক্ত জেনেটিক উপাদান হিসেবে আলাদা বাহকে সংযুক্ত করা যায়।[৪] এবং এটাই তাকে ভাইরাস থেকে পৃথক করেছে এবং এর সংজ্ঞায় পরিবর্তন আসল, বুঝা গেল প্লাসমিড ক্রোমোজোমের বাইরেও টিকে থাকতে পারে ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের প্রতিলিপি গঠন করতে পারে।[৫]
কোষের অভ্যন্তরে স্বাধীনভাবে প্লাসমিড নিজের প্রতিলিপন করতে চাইলে তাকে অবশ্যই ডিএনএ এর ছাচ তৈরী করতে হবে,যা সূচনা বিন্দু(origin of species হিসেবে কাজ করবে। যেহেতু এটি নিজে নিজে প্রতিলিপি গঠন করতে পারে তাই এই এই দৃষ্টিকোণ থেকে প্লাসমিডকে replicon বলা হয়।[৬] ক্ষুদ্রাকৃতির প্লাসমিড তাদের বাহকের প্রতিলিপন উৎসেচক ব্যবহার করে নিজেদের প্রতিলিপি করে থাকে। কিন্তু বড় প্লাসমিডগুলো নিজেদের প্রতিলিপির জন্য সুনির্দিষ্ট জীন ধারণ করতে পারে। কিছু কিছু প্লাসমিড নিজেদেরকে বাহক ক্রোমোজোমে অভ্যন্তরে সংযুক্ত করতে পারে। এই ধরনের বিশেষ প্লাসমিডকে বলা হয় এপিজোম।[৭]
যতই ক্ষুদ্র হোক নানা কেন প্লাসমিড অন্ততপক্ষে একটা হলেও জিন বহন করে। প্লাসমিড যে সকল জীন বহন করে তার অধিকাংশই বাহক কোষের জন্য উপকারী। উদাহরণ স্বরুপ: প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাহক কোষকে টিকে থাকার জন্য প্লাসমিড সহায়তা করে। কিছু জীন অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে(যেমনঃAmpR,tetR,NeoR ইত্যাদি)। আবার কিছু জীন ভারী পদার্থ যেগুলো প্রতিরোধ করে while others may produce virulence factor that enable a bacterium to colonize a host and overcome its defences, or have specific metabolic functions that allow the bacterium to utilize a particular nutrient, including the ability to degrade recalcitrant or toxic organic compounds.[৫] প্লাসমিড সক্ষম ব্যাকটেরিয়া দিয়ে nitrogefix nitrogen(নাইট্রোজেন সংবন্ধন) করাতে। কিছু কিছু প্লাসমিডের কোষে কোনো প্রভাব দেখা যায় না।অথবা বাহকে তাদের উপকার কী সেটা এখনো নির্ণয় করা যায় নি। এইধরনের প্লাসমিডকে বলা হয় ক্রিপ্টিক প্লাসমিড (cryptic plasmids)
প্ল্যাসমিড গঠনসম্পাদনা
প্লাজমিডগুলি অতিরিক্ত ক্রোমোসোমাল এবং অপরিহার্য নয়। এগুলি দরকারী কিন্তু প্রজাতির প্রতিটি জীবের মধ্যে অগত্যা অনুপস্থিত।প্লাজমিড জিনোমের একটি অংশ নয় এবং একই প্লাজমিড বিভিন্ন প্রজাতিতে থাকতে পারে এবং একে অপরের থেকে স্থানান্তরিত হয়।প্লাজমিডের নিজস্ব প্রতিলিপির উৎস (ORI:-Origin of replication) আছে এবং তারা কোষের সাথে প্রতিলিপি তৈরি করে যাতে প্রতিটি কন্যা কোষ এর কাছে প্লাজমিডের একটি অনুলিপিও থাকে।প্রতিলিপির উৎপত্তি ছাড়াও, প্রায়শই এতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের জন্য জিন থাকে, টক্সিন(যেমনঃ অ্যাক্সোটক্সিন ও অ্যান্ড্রোটক্সিন) এবং অন্যান্য দরকারী জিন তৈরির জন্য, যা কোষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন হতে পারে।
প্ল্যাসমিডের ভেক্টর,বেস পেয়ার,লেবেলিংসমূহ,জিনোমের কতটুকু সংখ্যা ও জিনোমের নামসমূহসম্পাদনা
(১)pcDNA3.1plus(5428 বেস পেয়ার):-{T7 প্রবর্তক:-Hindill(912),Acd551(918),Kpnl(922),BamHI(930),EcoRI(953),MCS,EcoRV(965), Not(980),Xhol(986),Xbal (992),Apal (1002)};{BGH Poly-A,F1 ইন্টারজেনিক অঞ্চল,SV40 প্রোমোটার,অরিজিন অফ রেপ্লিকেশন:-Stu1(2054),Smal (2078),Narl(2265),Msc1(2347),নিওমাইসিন রেজিস্ট্যান্স জিন:-NeoR,RsrII(2781),BssHill(2662),Ampicillin রেজিস্ট্যান্স:-Aspel(4506),AmpR,tetR,Scal (4986),Pvul(4876),Sspl (5310),Bg ) Nrut (209), MIUI (229) Ndel (485), SnaBI (591)}{CMV প্রচারক}
(২)PCI ভেক্টর (40060 বেস পেয়ার):-AmpR,f1 ori,BamHI,Bgi II,Bs1981,Pst,Bst981,Nhe1,Xho1,EcoRI,Xbal1,GYR A,GYR B,RPO B,Accl1,BstZ1,Not1
(৩)PUC19 (2,686বেস পেয়ার):-AmpR,EcoRI,Sacl,Kpnl,MCS,Smal,BamHI,Xbal,Sall,Pstl,Sphl,Hind!!!.
(৪)pBCA-RLuc(130বেস পেয়ার):-
(৫)pLVG440(7500বেস পেয়ার):-
(৬)pBR322(4361বেস পেয়ার):-
(৭)PPMA43C(1,000বেস পেয়ার):-
(৮)HSP70(360বেস পেয়ার):-
(৯)PpUC19(2686বেস পেয়ার):-
(১০)pGEM-T(3000বেস পেয়ার):-
(১১)pGEM-T Easy(3015বেস পেয়ার):-
(১২)PIRES2-EGFP(5.3kbবেস পেয়ার):-
(১৩)PEGFP-C1(4.7kbবেস পেয়ার):-
(১৪)PJB8(5.4Kbবেস পেয়ার):-
(১৫)PSFVCs-lacz(14,923 বেস পেয়ার):-
(১৬)pcDNA3.1-nis.lacZ(8652 বেস পেয়ার):-
(১৭)pcDNA3.1-cyt.lacZ(8589 বেস পেয়ার):-
(১৮)Cry2 mcherry Gamma9 -pcDNA3.1(+)(7847 বেস পেয়ার):-
(১৯)FLAG-HA-pcDNA3.1-(5504 বেস পেয়ার):-
(২০)pcDNA3.1 (+/-)(7.9 kb বেস পেয়ার):-
(২১)
সংজ্ঞানুসারে কয়েকটি প্ল্যাসমিডের নাম সমূহসম্পাদনা
(১)ফোসমিড (Fosmid):-আদিকোষে অভ্যন্তরে স্বাধীনভাবে প্ল্যাসমিডে উর্বরতা ফ্যাক্টর জিনকে ফ্যাক্টর বাহক একটি ব্যাকটেরিয়া থেকে অন্য ব্যাকটেরিয়াতে স্থানান্তরিত করার অনুমতি দেয় যেখানে ফ্যাক্টরের অভাব থাকে,সেক্স পাইলাস ও অতিদ্রুততে কন্জুগেশন নালী গঠন করতে সক্ষম এবং কন্জুগেশনের মাধ্যমে জেনেটিক উপাদান স্থানান্তর করতে সক্ষম,যখন (F+) এবং (F-) কোষের মধ্যে সংযোজন ঘটে , তখন ফলস্বরূপ দুটি (F+) কোষ হয়। এছাড়াও, (F+) কোষের বিস্তার একটি বড় হুমকি নয়, এমন ধরনের প্ল্যাসমিডকে উর্বর প্ল্যাসমিড বা ফোসমিড বলে। উদাহরণস্বরূপঃ Escherichia coli ও ইত্যাদি ব্যাক্টেরিয়া এধরনের প্ল্যাসমিডধারী হয়ে থাকে।বায়োফ্র্যাগ্মেন্টেশন,বায়োডিগ্ৰেডেশন,র্যাণ্ডম মিউটেশন,ফার্মেন্টেশন,রিকম্বিনেশন, কন্জুগেশন,অবাত শ্বসন, গ্লাইকোলাইসিস, বায়োলুমিনেন্স, সংরক্ষণশীল, বায়োফিল্ম, মেরোজাইগোট গঠন ও প্যাথোজেনেসিস পদ্ধতি সহায়তা করে। [১]
(২)প্রতিরোধী প্ল্যাসমিড (Resistance plasmid):-এক বা একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স (যেমনঃ AmpR, tetR and NeoR) জিন বহন ও ধারণ করে এবং অন্যান্য বিষাক্ত ভারী ধাতু প্রতিরোধ,রেজিস্ট্যান্স ক্যাসেটে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট জিন এনকোডিং এর মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক অবক্ষয়ক ও পরিবর্তক এনজাইম ইফ্ল্যাক্স পাম্প দ্বারা নিঃসরিত করে,সেসব প্লাসমিডকে প্রতিরোধী প্ল্যাসমিড বলে।এ প্ল্যাসমিডে ampR ও tetR ইত্যাদি অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট জিন থাকে।অ্যান্টিবায়োটিক অবক্ষয়ক-পরিবর্তক এনজাইমঃ বিটা ল্যাক্টামেজ, পেনিসিলিনেজ। উদাহরণস্বরূপঃ Escherichia coli,NeisseriaI Gonorrhoeae,Acinetobacter Baumannii,Staphylococcus Aureus(Mrsa),Burkholderia Cepacia,Pseudomonas Aeruginosa,Clostridium DifficileI,Mycobacterium Tuberculosis,Klebsiella Pneumoniae,Streptococcus Pyogenes ও ইত্যাদি ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে এধরনের প্ল্যাসমিডধারী হয়ে থাকে এবং এসব ব্যাক্টেরিয়াকে রেজিস্ট্যান্টার ব্যাক্টেরিয়া (Resistor bacterium) বলা হয়।
(৩) রহস্যজনক প্ল্যাসমিড (Cryptic plasmid):-কিছু কিছু প্লাসমিডের আদিকোষে কোনো প্রভাব দেখা প্রায় অসম্ভব অথবা বাহকে তাদের উপকার কী সেটা এখনো নির্ণয় করা প্রায় অসম্ভব, এইধরনের প্লাসমিডকে রহস্যজনক প্ল্যাসমিড বলে। উদাহরণস্বরূপঃ
(৪)অত্যধিক তীব্রতাশীল বা রোগসৃষ্টিকারী ক্ষমতাধর প্ল্যাসমিড (Virulence plasmid):-আদিকোষের অভ্যন্তরে স্বাধীনভাবে প্ল্যাসমিড সংক্রমণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ফাংশন ছাড়াও অনেক ভাইরুলেন্স(virA,virB,virD,virG,virC,virE) জিন বহন ও ধারণ করে এবং সেসব ভাইরুলেন্স জিন এনকোডিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভাইরুলেন্স ফ্যাক্টর,অ্যাক্সোটক্সিন-অ্যান্ড্রোটক্সিন বা অত্যধিক তীব্রতাশীল বিষাক্ত পদার্থ ও এনজাইম ইফ্ল্যাক্স পাম্প দ্বারা নিঃসরিত হয়ে যা প্রাণীর কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং পোষক দেহকোষ বিগলিত করে মেরে ফেলে, অন্যরা ব্যাক্টেরিয়াকে প্রাণী কোষের সাথে সংযুক্ত করতে ও বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষ, প্রাণী বা এমনকি গাছপালাকে সংক্রমিত করতে সাহায্য করে যেখানে অন্যরা ব্যাক্টেরিয়াকে প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিশোধের বিরুদ্ধে সুরক্ষা করে থাকে, সেসব প্লাসমিডকে অত্যধিক তীব্রতাশীল বা রোগসৃষ্টিকারী প্ল্যাসমিড বলে। এধরনের প্ল্যাসমিডধারী ব্যাক্টেরিয়াকে Pathogenic Bacterium বা রোগস্রষ্টা ব্যাক্টেরিয়া বলা হয়। এধরনের প্ল্যাসমিডের অপর নাম হলো ভাইরুলোমিড (Virulmid) বলা হয়। উদাহরণস্বরূপঃ Asiatic cholera, Vibrio cholerae,Staphylococcus aureus,Streptococcus pyogenes,Bacillus cereus, Bacillus Subtilis, Bacillus anthracis,Salmonella,Helicobacter pylori,Bordetella pertussis,Corynebacterium diphtheriae, Escherichia coli,Mycobacterium Tuberculosis,Klebsiella Pneumoniae,Pseudomonas Aeruginosa, Clostridium DifficileI,Agrobacterium radiobacter,Agrobacterium Tumefaciens ও ইত্যাদি ব্যাক্টেরিয়ার কোষে এধরনের প্ল্যাসমিডধারী হয়ে থাকে।
(৫)অবক্ষয়ক প্ল্যাসমিড (Degradative plasmid):-হোস্ট ব্যাকটেরিয়ামকে এমন যৌগ অতিদ্রুততে হজম করতে সাহায্য করে যা সাধারণত কৃত্রিমভাবে পাওয়া যায় যেমনঃ কর্পূর,প্ল্যাস্টিক,পলিথিন,জাইলিন,ক্যাথেলিসিডিন,লেসিথিন, টলুইন,পলিহেক্সামেথোডায়ামিনোঅ্যাডিপেট (নাইলন ৬:৬),পলিক্যাপ্রোল্যাক্টাম(নাইলন ৬) এবং স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, বেন্জিন,টলুইন, সাকসিনিক অ্যাসিড ও ইত্যাদি,বিশেষ করে মনোহাইড্রোক্সিইথিল-টেট্রাফথ্যালেটেজ,স্যালিসাইলেজ,জাইলিনেজ,ডায়াস্ট্রোজ,জাইমেজ,টলুইনেজ,পলিইথিলিন-টেট্রাফথ্যালেটেজ,নিউক্লিয়েজ,মেটালোপ্রোটিনেজ,ডিপলিমারেজ,নাইলোনেজ,পলিক্যাপ্রোল্যাক্টামেজ ইন্ভার্টেজ,ইথানলেজ,টার্পিনোয়েডেজ,লাইপেজ,ক্যাথেলিসিডেজ,ফাইজেট,লেসিথিনেজ, পেনিসিলিনেজ, বিটা-ল্যাক্টামেজ,সাকসিনেজ, বেন্জিনেজ, লুসিফারেজ, রেস্ট্রিকশনেজ,লাইপেজ এনজাইম বা উৎসেচক জন্য এই প্লাজমিডে ডিগ্ৰেডেশন জিন থাকে যা এনকোডিং এর মাধ্যমে বায়োডিগ্ৰেডেশনাল এনজাইম এবং ইফ্ল্যাক্স পাম্পের মাধ্যমে নির্দিষ্ট যৌগগুলিকে বায়োডিগ্ৰেডেশন ও বায়োফ্র্যাগ্মেন্টেশন পদ্ধতিতে ভেঙে দিতে বা অবক্ষয় ঘটাতে সক্ষম এমন ধরনের প্ল্যাসমিডকে অবক্ষয়ক প্ল্যাসমিড বলে। উদাহরণস্বরূপঃ Ideonella sakaiensis নামক ব্যাক্টেরিয়া এধরনের প্ল্যাসমিডধারী হয়ে থাকে এবং এসব ব্যাক্টেরিয়াকে বায়োডিগ্ৰেডার ব্যাক্টেরিয়া (Biodegrader bacterium) বলা হয়।
(৬)কোসমিড (Cosmid):-এক ধরনের প্লাজমিড যা আলফা ফেজ থেকে কস সিকোয়েন্সের সন্নিবেশ দ্বারা নির্মিত,একটি ফেজ ডিএনএ অণু এবং একটি ব্যাকটেরিয়াল প্লাজমিডের মধ্যে সংকর জাতিভুক্ত। ColE1 নামক জিন এবং কোসমিড ভেক্টর বহন ও ধারণ করে যা এনকোডিং এর মাধ্যমে কোলিসিন ও মাইক্রোসিন (ব্যাক্টেরিওসিন:-Bacteriocin) নামক প্রোটিন উৎপাদন করতে সক্ষম,লাইসোজাইম এনজাইম নিঃসরণের মাধ্যমে অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীরকে বিগলিত করলে মেরে ফেলে এবং হোস্ট ব্যাকটেরিয়াকে অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে, এনজাইমের জন্য সাবস্ট্রেট যা (λ) আলফাফেজের ডিএনএ অণুকে ফেজ কোট প্রোটিনে প্যাকেজ করে, এমন প্ল্যাসমিডকে কোসমিড বলে। উদাহরণস্বরূপঃ
(৭)স্বঅনুলিপিক প্ল্যাসমিড (Replicon plasmid):-আদিকোষের অভ্যন্তরে স্বাধীনভাবে প্লাসমিড অর্ধসংরক্ষণশীল প্রক্রিয়ায় নিজের প্রতিলিপন করতে চাইলে তাকে অবশ্যই ডিএনএ এর ছাঁচ তৈরী করতে হবে,যা সূচনা বিন্দু হিসেবে কাজ করবে,তাই সেই দৃষ্টিকোণ থেকে এধরনের প্ল্যাসমিডকে স্বঅনুলিপিক প্ল্যাসমিড বলে।রেপ্লিকেটিভ প্লাজমিড (YRp), যা ক্রোমোসোমাল ডিএনএর একটি ক্রম পরিবহন করে যার মধ্যে প্রতিলিপির উৎস রয়েছে। এই প্লাজমিড কম স্থিতিশীল, কারণ এগুলি উদীয়মান হওয়ার সময় হারিয়ে যেতে পারে। এধরনের প্ল্যাসমিডের অপর নাম হলো রেপ্লিকোমিড (Replicomid) বলে। উদাহরণস্বরূপঃ
(৮) সংযুক্তি প্ল্যাসমিড(Episome plasmid):-আদিকোষের ভিতরে স্বাধীনভাবে প্লাসমিড নিজের ধারক ও বাহক ক্রোমোজোমে অভ্যন্তরে একীয়ভূতকরণ পদ্ধতিতে সংযুক্ত করতে পারে এমন বিশেষ ধরনের প্ল্যাসমিডকে সংযুক্তি প্ল্যাসমিড বলে। এধরনের প্ল্যাসমিডের অপর নাম হলো ক্রোমিড (Chromid) বলা হয়।ক্রোমিড হল এমন উপাদান যা একটি ক্রোমোজোম এবং একটি প্ল্যাসমিডের মধ্যে সীমারেখায় বিদ্যমান, যা ২০০৯ সালের ক্রমানুসারে প্রায় ১০% ব্যাক্টেরিয়া প্রজাতিতে পাওয়া যায়। এই উপাদানগুলি মূল জিন বহন ও ধারণ করে এবং ক্রোমোজোমের মতো কোডন ব্যবহার করে, তবুও প্ল্যাসমিড-টাইপ রেপ্লিকেশন মেকানিজম ব্যবহার করে যেমনঃ কম কপি নম্বর হিসাবে (RepABC)।ফলস্বরূপ,অতীতে এগুলিকে বিভিন্নভাবে মিনিক্রোমোজোম বা মেগাপ্ল্যাসমিড হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। ভিব্রিওতে, ব্যাকটেরিয়া একটি সংরক্ষিত জিনোম আকারের অনুপাত দ্বারা ক্রোমোজোম এবং ক্রোমিডের প্রতিলিপি সিঙ্ক্রোনাইজ করে।ইন্টিগ্রেটিভ প্লাজমিড (YIp), খামির ভেক্টর যা বেঁচে থাকার এবং প্রতিলিপির জন্য হোস্ট ক্রোমোজোমের একীয়ভূতকরণের উপর নির্ভর করে এবং সাধারণত একক জিনের কার্যকারিতা অধ্যয়ন করার সময় বা জিনটি বিষাক্ত হলে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও URA3 জিনের সাথে সংযুক্ত, যা পাইরিমিডিন নিউক্লিওটাইডস (T, C) এর জৈব সংশ্লেষণের সাথে সম্পর্কিত অরোটেট ফসফোরাইবোসাইলট্রান্সফারেজ নামক একটি এনজাইম কোড করে। এধরনের প্ল্যাসমিডে অপর নাম হলো ইন্টিগ্ৰোমিড(Integromid) বলে। উদাহরণস্বরূপঃ
(৯) নাইট্রোজেন সংবন্ধক প্লাসমিড (Nitrogefix plasmid):-আদিকোষের ভিতরে স্বাধীনভাবে প্ল্যাসমিডে (Nif Gene)[৩] নিফ জিন এনকোডিং এর মাধ্যমে নাইট্রোজেনেজ(Nitrogenase)[৪] নামক নাইট্রোজেন সংবন্ধক এনজাইম ইফ্ল্যাক্স পাম্পের মাধ্যমে নিঃসরিত করে এবং Fabaceae গোত্রভুক্ত পোষক বৃক্ষের শিকড়ের রুট নডিউলেশন ও সিম্বোসিস পদ্ধতিতে পোষক বৃক্ষের সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে তৈরিকৃত খাদ্য শোষণ করে আদিকোষের পুষ্টি সাধনেও সহায়তা করে এবং পোষক বৃক্ষের সাথে সম্পূর্ণরূপে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করে, সেসব প্লাসমিডকে নাইট্রোজেন সংবন্ধক প্ল্যাসমিড বলে। এধরনের প্ল্যাসমিডের অপর নাম হলো নাইট্রোমিড (Nitromid) বলা হয়। উদাহরণস্বরূপঃ শিমের শিকড়ে নডিউলস্রষ্টা Rhizobium bacterium ও Bradyrhizobium japonicum নামক সিম্বোটিক ব্যাক্টেরিয়া এধরনের প্ল্যাসমিডধারী হয়ে থাকে।লেগোহিমোগ্লোবিন (Leghemoglobin) নামক ইনহিবিটর অক্সিজেন(O²) দ্বারা নাইট্রোজেনেজ এনজাইমের কার্যকারিতা বিঘ্ন ঘটার হাত থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং নাইট্রোজেন সংবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে। যেসব অণুজীব নাইট্রোজেন(N²) সংবন্ধন করতে সক্ষম তাদের Diazotroph(ডায়াজোট্রোফ) বলে। কিছু উন্নত উদ্ভিদ ও প্রাণী Diazotroph এর সাথে মিথোজীবী রূপে সহাবস্থান করে।
(১০)জীব দ্যুতি প্ল্যাসমিড (Bioluminescent plasmid):-আদিকোষের অভ্যন্তরে স্বাধীনভাবে প্ল্যাসমিডে Luc) নামক জিন এনকোডিং এর মাধ্যমে লুসিফারেজ নামক জৈবিক দ্যুতি উৎপাদক এনজাইম নিঃসৃত হয় যা প্রোক্রোমোজোম থেকে ক্ষরিত লুসিফেরিন নামক প্রোটিন ও শক্তি বাহক অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP:-Adenosine Triphosphate) বায়োলুমিনেন্স পদ্ধতিতে জৈবিক দ্যুতি বা আলো ও শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম, এমন প্ল্যাসমিডকে জীব দ্যুতি প্ল্যাসমিড বলে। এধরনের প্ল্যাসমিডধারী ব্যাক্টেরিয়াকে লুমিনাস ব্যাক্টেরিয়া(Luminous bacterium) ও এধরনের প্ল্যাসমিডের অপর নাম হলো লুসিফোমিড (Lucifomid) বলে। উদাহরণস্বরূপঃ Bifidobacterium longum নামক ব্যাক্টেরিয়া এধরনের প্ল্যাসমিডধারী হয়ে থাকে।লুসিফোমিডগুলি সাধারণত নিয়ন্ত্রক উপাদানগুলির প্রভাব তদন্ত করতে ব্যবহৃত হয়, যেমন প্রবর্তক, বর্ধক এবং অনুবাদিত অঞ্চল বা Luc নামক জিনের অভিব্যক্তিতে এই নিয়ন্ত্রক উপাদানগুলির মিউটেশনের প্রভাব। [৫]
(১১)টিউমার ইন্ডিউসিং প্ল্যাসমিড(Tumour inducing plasmid):-আদিকোষের অভ্যন্তরে স্বাধীনভাবে প্ল্যাসমিডে vir জিন এনকোডিং এর মাধ্যমে সংক্রামিত হতে দেয়, একটি টিউমার,ক্রাউন পিত্তর টিউমার তৈরি করতে সক্ষম আর repABC জিন এনকোডিং এর মাধ্যমে সাইটোকাইনিন,অক্সিন ও অপিন নামক ফাইটোহরমোন নিঃসরণ করতে বিঘ্ন ঘটায়, এমন ধরনের প্ল্যাসমিডকে টিউমার ইন্ডিউসিং প্ল্যাসমিড বলে। উদাহরণস্বরূপঃ Agrobacterium radiobacter, Escherichia coli ও এগ্রোব্যাকটেরিয়ামের প্যাথোজেনিক প্রজাতির মধ্যে পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে এ. টিউমেফেসিয়েন্স, এ. রাইজোজেনস, এ. রুবি এবং এ. ভিটিস ও আলফাপ্রোটোব্যাক্টেরিয়া এধরনের প্ল্যাসমিডধারী হয়ে থাকে। [৬]
(১২)ফ্যাগেমিড(Phagemid):-আদিকোষের অভ্যন্তরে DNA-ভিত্তিক ক্লোনিং ভেক্টর যা প্লাজমিড এবং ব্যাকটেরিওফেজ উভয় বৈশিষ্ট্যই দেখায়,F1 ফেজ প্রতিলিপি সহ একটি F1 উৎপত্তি ধারণ করে,ব্যাক্টেরিওফেজএর ক্যাপসিডে প্যাকেজ করার ক্ষমতার মধ্যে তারতম্য রয়েছে, কারণ তাদের প্যাকেজিংয়ের জন্য একটি জেনেটিক সিকোয়েন্স সংকেত রয়েছে এমন ধরনের প্ল্যাসমিডকে ফ্যাগেমিড বলে। এধরনের প্ল্যাসমিড কোসমিড থেকে ভিন্ন ও এটি একটি হাইব্রিড ভেক্টর বাহক হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপঃ
(১৩)রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড প্ল্যাসমিড (RNA plasmid):-আরএনএ প্লাজমিড যদিও বেশিরভাগ প্লাজমিড ডাবল-স্ট্র্যান্ডেড ডিএনএ অণু, কিছু একক-স্ট্র্যান্ডেড ডিএনএ বা প্রধানত ডবল-স্ট্র্যান্ডেড আরএনএ নিয়ে গঠিত। আরএনএ প্লাজমিড হল অ-সংক্রামক এক্সট্রা ক্রোমোসোমাল রৈখিক আরএনএ রেপ্লিকন, উভয়ই এনক্যাপসিডেটেড এবং আনক্যাপসিডেটেড, যা ছত্রাক এবং বিভিন্ন গাছপালা, শেওলা থেকে শুরু করে ভূমি গাছ পর্যন্ত পাওয়া যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রে, RNA ভাইরাস এবং অন্যান্য সংক্রামক RNA থেকে RNA প্লাজমিডকে স্পষ্টভাবে আলাদা করা কঠিন বা অসম্ভব হতে পারে।এ প্ল্যাসমিডের অপর নাম হলো রাইবোমিড(Ribomid) বলে। উদাহরণস্বরূপঃ
[৮]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ Sinkovics, J; Harvath J; Horak A. (১৯৯৮)। "The Origin and evolution of viruses (a review)"। Acta Microbiologica et Immunologica Hungarica। 45 (3–4): 349–90। পিএমআইডি 9873943।
- ↑ Thomas, Christopher M; Summers, David (২০০৮)। "Bacterial Plasmids"। Encyclopedia of Life Sciences। আইএসবিএন 0470016175। ডিওআই:10.1002/9780470015902.a0000468.pub2।
- ↑ Lederberg J (১৯৫২)। "Cell genetics and hereditary symbiosis"। Physiol. Rev.। 32 (4): 403–430। পিএমআইডি 13003535।
- ↑ Stanley Falkow। "Microbial Genomics: Standing on the Shoulders of Giants"। Microbiology Society।
- ↑ ক খ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;finbarr
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Finbarr Hayes (২০০৩)। "Chapter 1 - The Function and Organization of Plasmids"। Nicola Casali, Andrew Preston। E. Coli Plasmid Vectors: Methods and Applications। Methods in Molecular Biology, Vol. 235। Humana Press। পৃষ্ঠা 5–6। আইএসবিএন 978-1-58829-151-6।
- ↑ T. A. Brown (২০১০)। "Chapter 2 - Vectors for Gene Cloning: Plasmids and Bacteriophages"। Gene Cloning and DNA Analysis: An Introduction (6th সংস্করণ)। Wiley-Blackwell। আইএসবিএন 978-1405181730।
- ↑ David Summers (১৯৯৬)। "Chapter 1 - The Function and Organization of Plasmids"। The Biology of Plasmids। Wiley-Blackwell; First Edition। পৃষ্ঠা 21–22। আইএসবিএন 978-0632034369।