প্রবেশদ্বার:বই/নির্বাচিত লেখক

প্রবেশদ্বার:বই/নির্বাচিত লেখক/১

গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস (১৯২৭ - ২০১৪), যিনি গাবো নামেও পরিচিত ছিলেন, একজন কলম্বীয় ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও সাংবাদিক। তিনি তার নিঃসঙ্গতার একশত বছর উপন্যাসের জন্যে বিশেষভাবে পরিচিত। জাদুবাস্তবতার ব্যবহারে তার সাহিত্যকর্ম একইসাথে শিল্পোত্তীর্ণ এবং জনপ্রিয় হয়েছে। তার বহু উপন্যাসের পটভূমি ছিল এক কাল্পনিক জনপদ মাকান্দো আর তার প্রিয় প্রসঙ্গ ছিল নিঃসঙ্গতা। ১৯৮২ সালে মার্কেস সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

সাহিত্যবোদ্ধারা মতে মার্কেস হোর্হে লুইস বোর্হেস এবং হুলিও কোর্তাসারের পাশাপাশি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ দক্ষিণ আমেরিকান কথাসাহিত্যিক। তিনি খোলাখুলিভাবে দেশের রাজনীতির সমালোচনা করতেন, কিউবার বিপ্লবী নেতা কাস্ত্রোর সাথে তার বন্ধুত্ব ছিল। জীবনের বেশিরভাগ সময় মার্কেস বসবাস করেছেন মেক্সিকো এবং ইউরোপের বিভিন্ন শহরে। শেষজীবনে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তার স্মৃতিভ্রংশ হয়। ২০১৪-র এপ্রিলে তার মৃত্যুর পর রাষ্ট্রপতি হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস তাকে "কলম্বীয়দের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ" বলে অভিহিত করেন।


প্রবেশদ্বার:বই/নির্বাচিত লেখক/২

আইজাক আসিমভ (১৯২০ - ১৯৯২) রুশ বংশোদ্ভুত প্রখ্যাত মার্কিন লেখক এবং জৈব রসায়নের অধ্যাপক। তিনি মূলত বিজ্ঞান কল্পকাহিনী এবং জনপ্রিয় বিজ্ঞান বিষয়ক রচনায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন এবং এক্ষেত্রে তার সাফল্য গগনচুম্বী। যোগ্যতা বিবেচনায় তাকে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর গ্র্যান্ড মাস্টার আখ্যায় ভূষিত করা হয়েছে। বহুপ্রজ লেখক আজিমভ ৫০০'র-ও অধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। তার সবচেয়ে প্রসিদ্ধ রচনা হচ্ছে ফাউন্ডেশন সিরিজ

আজিমভ তার জীবদ্দশায় বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর বিগ থ্রি-এর একজন ছিলেন, অন্য দুজন ছিলেন রবার্ট এ হাইনলেইন এবং আর্থার সি ক্লার্ক। আমেরিকার কল্পবিজ্ঞান লেখক সংঘ তার লেখা নাইটফলকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কল্পবিজ্ঞান গল্পের স্বীকৃতি দেয়। তবে কল্পবিজ্ঞানের পাশাপাশি জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিত, ইতিহাস, রসায়ন এমনকি শেকসপিয়রের সাহিত্যকর্ম নিয়েও আজিমভ লেখালেখি করেছেন।


প্রবেশদ্বার:বই/নির্বাচিত লেখক/৩

টমাস স্টেয়ার্নস এলিয়ট (১৮৮৮ – ১৯৬৫) একজন ইংরেজ কবি, নাট্যকার, প্রকাশক ও সাহিত্য-সমালোচক। তাকে "বিশ শতকের অন্যতম প্রধান কবি" এবং "আধুনিক কবিতার পথিকৃৎ" ভাবা হয়। এলিয়ট যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করলেও ২৫ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে চলে যান এবং একসময় বৃটিশ নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।

এলিয়ট ১৯১৫ সালের দিকে তার কবিতা দি লাভ সং অফ জে আলফ্রেড প্রুফ্রক এর মাধ্যমে সবার নজর কাড়েন। এরপরে তার ঝুলি থেকে একে একে বের হয় বিশ্ববিখ্যাত সব কবিতা: দি ওয়েস্ট ল্যান্ড (১৯২২), দি হলো মেন (১৯২৫), অ্যাশ ওয়েন্সডে (১৯৩০) এবং ফোর কোয়ার্টার্স (১৯৪৫)। তার লেখা নাটকগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল মার্ডার ইন দ্যা ক্যাথেড্রাল (১৯৩৫)। আধুনিক কাব্যে অভূতপূর্ব অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৪৮ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।


প্রবেশদ্বার:বই/নির্বাচিত লেখক/৪

আনিসুজ্জামান (জন্ম ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭) একজন বাংলাদেশি গবেষক, প্রাবন্ধিক ও লেখক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইমেরিটাস অধ্যাপক। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিযে তার গবেষণা সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। গবেষণা গ্রন্থ মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য , পুরোনো বাংলা গদ্য,আঠারো শতকের বাংলা চিঠি , Cultural Pluralism, প্রবন্ধগ্রন্থ আমার চোখে, কাল নিরবধি এবং রবীন্দ্র-নজরুল-মুনীর চৌধুরির রচনাবলী সম্পাদনা প্রভৃতি তার সুপরিচিত কর্ম।

আনিসুজ্জামান প্রত্যক্ষভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি দীর্ঘকাল জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রকল্পে অংশ নেন। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ভ্রাম্যমাণ ফেলো হয়েছিলেন। বাংলা সাহিত্যের গবেষণায় কৃতিত্বের জন্যে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭০), একুশে পদক (১৯৮৫), আনন্দ পুরস্কার (১৯৯৩) এবং পদ্মভূষণ পদক (২০১৪) পেয়েছেন।