পূর্ণেন্দু ভূষণ সিনহা

ভারতীয় রসায়নবিদ

আখোর্য্য পূর্ণেন্দু ভূষণ সিনহা (Akhoury Purnendu Bhusan Sinha, জন্ম ১৯২৮) একজন ভারতীয় সোল্ড স্টেট রসায়নবিদ এবং পুনের জাতীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগার এর ভৌত রসায়ন বিভাগের প্রাক্তন প্রধান। [১] তিনি অর্ধপরিবাহী সম্পর্কিত তত্ত্ব এবং ম্যাঙ্গানাইট এর সংশ্লেষণ বিষয়ে তাঁর অধ্যয়নের জন্য পরিচিত।[২] তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী এবং ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমী এর একজন নির্বাচিত ফেলো।[৩] বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য ভারত সরকারের শীর্ষস্থানীয় সংস্থা কাউন্সিল অফ সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ তাঁকে ১৯৭২ সালে রাসায়ন বিজ্ঞানে তাঁর অবদানের জন্য সর্বোচ্চ ভারতীয় বিজ্ঞান পুরস্কারের মধ্যে একটি শান্তি স্বরূপ ভাটনাগর পুরস্কার দিয়েছিল।[৪]

পূর্ণেন্দু ভূষণ সিনহা
জন্ম (1928-09-23) ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯২৮ (বয়স ৯৫)
ভারত
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তন
পরিচিতির কারণম্যাঙ্গানাইট সংশ্লেষণ এবং অর্ধপরিবাহী তত্ত্ব নিয়ে অধ্যয়ন
পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্র
প্রতিষ্ঠানসমূহ

জীবনী সম্পাদনা

এ. পি. বি. সিনহা ১৯২৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় এ যোগদান করেছিলেন এবং সেখান থেকে তিনি ১৯৫৪ সালে পিএইচডি লাভ করেন। তাঁর গবেষণার বিষয়টি ছিল সলিড স্টেট রসায়ন ভিত্তিক। [১] পরে তিনি পুনের জাতীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগার এর ডাইরেক্টর গ্রেড বিজ্ঞানী হিসাবে এই প্রতিষ্ঠানের ভৌত রসায়ন বিভাগের নেতৃত্ব দান করেছিলেন। সলিড স্টেট রসায়নের উপর গবেষণা চালিয়ে যাওয়া, ইলেকট্রন ট্র্যাফিক ট্রান্সজিশন, স্যুইচিং, চৌম্বকীয় ক্রম এবং স্মৃতি প্রভাবের কারণে সৃষ্ট ইলেকট্রন পরিবহন এবং স্ফটিক বিকৃতির ক্ষেত্রে নিম্ন গতিশীলতা অর্ধপরিবাহী অধ্যয়ন তিনি করে ছিলেন। তিনি নতুন ম্যাঙ্গানাইট সংশ্লেষিত করার জন্য পরিচিত এবং বেশ কয়েকটি সলিড স্টেট পণ্য যেমন থার্মিস্টর, ফটোসেল, চৌম্বক এবং ফটোভোলটেইক পণ্যের বিকাশ সাধন করার জন্য পরিচিত। ইলেক্ট্রন ল্যাটিস ইন্টারঅ্যাকশন সম্পর্কিত তাঁর অধ্যয়নের ভিত্তিতে তিনি ফেরোইলেক্ট্রিসিটি তত্ত্বের জন্য সমর্থন তত্ত্বের প্রস্তাব করেছিলেন এবং থার্মোইলেক্ট্রিকাল শক্তি এবং সেমিকন্ডাক্টরে গতিশীলতা সম্পর্কে নতুন তত্ত্ব উদ্ভাবন করেছিলেন। [৫] তাঁর গবেষণাকর্ম দ্বারা অর্ধপরিবাহীর মধ্যে পরিবহন বিষয়ে বোঝার পথটিকে আরও প্রশস্ত করেছেন। তাঁর রচনা স্পেকট্রোস্কোপি ইন ইনঅরগানিক কেমিস্ট্রি নামের একটি গ্রন্থে সমন্বয় করা হয়েছে। [৬] বইয়ের মধ্য সি. এন. আর. রাও সম্পাদিত অধ্যায়টিতে রয়েছে তাপমাত্রার প্রভাব সম্পর্কে বিশেষ উল্লেখ সহ অক্সাইড, সালফাইড এবং সংশ্লিষ্ট যৌগের বৃদ্ধি এবং কাঠামোর স্তর সংক্রান্ত একটি গবেষণা[৭] পিয়ার জার্নালে তাঁর বেশ কয়েকটি নিবন্ধ পর্যালোচনা করা হয়েছে। [৮][note ১] বেশ কয়েকজন লেখকের উদ্ধৃতিতেও তাঁর রচনা স্থান পেয়েছে।[note ২]

সিনহা তাঁদের সম্পাদকীয় বোর্ডের সদস্য হিসাবে বুলেটিন মেটেরিয়ালস সায়েন্স এবং ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ পিওর অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স এর মতো জার্নালের সাথে যুক্ত ছিলেন। [১] কাউন্সিল অফ সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ তাঁকে ১৯৭২ সালে সর্বোচ্চ ভারতীয় বিজ্ঞান পুরস্কারের একটি শান্তি স্বরূপ ভাটনাগর পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করেছিল।[৯] ১৯৭৪ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির নির্বাচিত ফেলো হওয়ার সম্মান লাভ করেন। এরপর ১৯৭৮ সালে তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমি দ্বারা তাঁদের ফেলো হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। [৩] তিনি মহারাষ্ট্র বিজ্ঞান একাডেমি-এরও একজন নির্বাচিত ফেলো এবং ১৯৭৮ সালে তিনি জাতীয় গবেষণা উন্নয়ন কর্পোরেশন প্রদত্ত মেধাবী উদ্ভাবন পুরস্কার লাভ করেন।[১] এনসিএল-এ তাঁর পদচ্যুতি হওয়ার পরে সিনহা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং মরিস ইনোভেটিভ রিসার্চের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। [২]

উদ্ধৃতি সম্পাদনা

  • পি দে (জানুয়ারি ১৯৭২)। ইলেকট্রনিক স্ট্রাকচার অ্যান্ড ম্যাগনেটিজম অফ ইনঅরগানিক কম্পাউন্ডস। রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রি। পৃষ্ঠা ১০৮–। আইএসবিএন 978-0-85186-251-4 
  • জে. সি. তোলেদানো (জানুয়ারি ১৯৮৮)। ডিফেক্টস। সিআরসি প্রেস। পৃষ্ঠা ৮–। আইএসবিএন 978-0-677-25660-3 
  • টি.এ. কাপলান; এস. ডি. মহান্তি (১১ এপ্রিল ২০০৬)। ফিজিক্স অফ ম্যাঙ্গানাইটস। Springer Science & Business Media। পৃষ্ঠা ২৩৯–। আইএসবিএন 978-0-306-47091-2 
  • গেরহার্ড নিউমান; কর্নেলিস তুইজন (১৯ আগস্ট ২০১১)। সেল্ফ-ডিফিউসন অ্যান্ড ডিফিউসন ইন পিওর মেটালস: হ্যান্ডবুক অফ এক্সপেরিমেন্টাল ডাটা। এলসিভিয়ার। পৃষ্ঠা ৯৬–। আইএসবিএন 978-0-08-056004-5 
  • জি. জে লং; এফ. গ্রানডিজেন (১১ নভেম্বর ২০১৩)। ম্যাসবাউর স্পেকট্রোস্কোপি অ্যাপ্লায়েড টু ইনঅরগানিক কেমিস্ট্রি। স্প্রিঞ্জার সায়েন্স অ্যান্ড বিজনেস মিডিয়া। পৃষ্ঠা ১৭৬6–। আইএসবিএন 978-1-4899-2289-2 
  • বরিস ইল্ডুসোভিচ খারিসভ; ওক্সানা ভ্যাসিলিয়েভনা খারিসোভা; উবেল্ডো অর্টিজ-মেন্ডিজ (৬ জানুয়ারি ২০১৬)। সিআরসি কনসাইজ এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ন্যানোটেকনোলজি। সিআরসি প্রেস। পৃষ্ঠা ১০০৭–। আইএসবিএন 978-1-4665-8089-3 

নির্বাচিত গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

গ্রন্থসমূহ সম্পাদনা

  • আখোর্য্য পূর্ণেন্দু ভূষণ সিনহা (১৯৫৪)। এ স্টাডি অফ দি গ্রোথ অ্যান্ড স্ট্রাকচার অফ লেয়ারস অফ অক্সাইডস, সালফাইডস অ্যান্ড রিলেটেড কম্পাউন্ডস, উইথ স্পেশাল রেফারেন্স টু দি এফেক্ট অফ টেম্পারেচার। ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি, ইম্পিরিয়াল কলেজ লন্ডন। 
  • কার্ল জোহান বলহাউসেন; ডি আর ইটন; জে ডব্লিউ হ্যাস্টি; আর এইচ হাউজ; জে এল মারগ্রেভ; এ এস এন মুর্তি; উইলিয়াম এল বাউন; ডেভিড ডাব্লিউ ফিশার; এ চক্রবর্তী; হ্যারি ডি শুল্টজ; এইচ বি মাথুর; চিন্তামণি নাগেসা রামচন্দ্র রাও; জ্যাক এম উইলিয়ামস; এস ডাব্লিউ পিটারসন; জন আর ফেরারো; জোহানেস আর্নল্ডাস কোনিংস্টেইন; কে ডি জে রুট; ম্যাক্স টি রজারস; এইচ এ কুস্কা; ব্রায়ান জি রামসে; এ পি বি সিনহা (১৯৭০)। স্পেক্ট্রোস্কোপি ইন ইনঅরগানিক কেমিস্ট্রি। অ্যাকাডেমিক প্রেস। ওসিএলসি 636106622 


আরো দেখুন সম্পাদনা

মন্তব্য সম্পাদনা

  1. Please see Selected bibliography section
  2. Please see Citations section

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Indian fellow"। Indian National Science Academy। ২০১৬। নভেম্বর ১২, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১২, ২০১৬ 
  2. "Brief Profile of the Awardee"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১২, ২০১৬ 
  3. "Fellow profile"। Indian Academy of Sciences। ২০১৬। নভেম্বর ১২, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১২, ২০১৬ 
  4. "View Bhatnagar Awardees"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১২, ২০১৬ 
  5. "Handbook of Shanti Swarup Bhatnagar Prize Winners" (পিডিএফ)। Council of Scientific and Industrial Research। ১৯৯৯। পৃষ্ঠা 34। মার্চ ৪, ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৫, ২০১৬ 
  6. Carl Johan Ballhausen, D R Eaton; J W Hastie; R H Hauge; J L Margrave; A S N Murthy; William L Baun; David W Fischer; A Chakravorty; Harry D Schultz; H B Mathur; Chintamani Nagesa Ramachandra Rao, Chemiker Indien; Jack M Williams; S W Peterson; John R Ferraro; Johannes Arnoldus Koningstein; K D J Root; Max T Rogers; H A Kuska; Brian G Ramsey; A P B Sinha (১৯৭০)। Spectroscopy in inorganic chemistry। Academic Press। ওসিএলসি 636106622 
  7. Akhoury Purnendu Bhusan Sinha (১৯৫৪)। A study of the growth and structure of layers of oxides, sulphides and related compounds, with special reference to the effect of temperature। Department of Applied Physical Chemistry, Imperial College London। 
  8. "Browse by Fellow"। Indian Academy of Sciences। ২০১৬। 
  9. "Chemical Sciences"। Council of Scientific and Industrial Research। ২০১৬। সেপ্টেম্বর ১২, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৭, ২০১৬