পিরিজপুর ইউনিয়ন

কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার একটি ইউনিয়ন

পিরিজপুর ইউনিয়ন বাংলদেশের ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার একটি ইউনিয়ন। ইউনিয়নটি বাজিতপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন।[][]

পিরিজপুর
ইউনিয়ন
৮নং পিরিজপুর ইউনিয়ন পরিষদ
পিরিজপুর ঢাকা বিভাগ-এ অবস্থিত
পিরিজপুর
পিরিজপুর
পিরিজপুর বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
পিরিজপুর
পিরিজপুর
বাংলাদেশে পিরিজপুর ইউনিয়নের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৩′১৬″ উত্তর ৯০°৫৭′১৬″ পূর্ব / ২৪.২২১১১° উত্তর ৯০.৯৫৪৪৪° পূর্ব / 24.22111; 90.95444 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলাকিশোরগঞ্জ জেলা
উপজেলাবাজিতপুর উপজেলা উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
মানচিত্র
মানচিত্র

পিরিজপুর ইউনিয়নের আয়তন প্রায় ৩২ বর্গকিলোমিটার।[]

জনসংখ্যার উপাত্ত

সম্পাদনা

পিরিজপুর ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যা ৩৪,৪৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৪,৭৩৬ জন এবং মহিলা ১৯,৭৪১ জন।[]

অবস্থান ও সীমানা

সম্পাদনা

পিরিজপুর ইউনিয়ন পরিষদের মাঝ দিয়ে ঢাকা-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়ক। এছাড়াও পিরিজপুর ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে কটিয়াদি-অষ্টগ্রাম মহাসড়ক। বাজিতপুর উপজেলা সর্ব পশ্চিমে অবস্থিত। কটিয়াদী উপজেলা এবং কুলিয়ারচর উপজেলার মিলন স্থল হলো পিরিজপুর ইউনিয়ন।

প্রশাসনিক এলাকা

সম্পাদনা

পিরিজপুর ইউনিয়ন বাজিতপুর উপজেলার আওতাধীন ৮নং ইউনিয়ন পরিষদ। এ ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম উপজেলার বাজিতপুর থানার আওতাধীন। এ ইউনিয়ন ৭টি মৌজায় বিভক্ত।[]

ওয়ার্ডভিত্তিক এ ইউনিয়নের গ্রামগুলো হলো[]
ওয়ার্ড নং গ্রামের নাম
১নং ওয়ার্ড উজানচর, উত্তর গজারিয়া, বিলপাড় গজারিয়া
২নং ওয়ার্ড ডুয়াইগাঁও, জফরপুর, বিলপাড় ডুয়াইগাঁও
৩নং ওয়ার্ড গোথালিয়া, নবুরিয়া, হাপানিয়া, নিলখী নয়াহাটি, নিলখী হাপানিয়া, বাংলা বাজার
৪নং ওয়ার্ড সুলতানপুর, মিরাকান্দি, গয়েশপুর, বোর্ড বাজার
৫নং ওয়ার্ড নিলখী, নোয়াগাঁও নিলখী, তাতারকান্দা
৬নং ওয়ার্ড জোয়ারিয়া, কৈকুড়ী
৭নং ওয়ার্ড দক্ষিন পিরিজপুর, বাজেগাঁও, মুন্সিকান্দা, পিরিজপুর বাজার, পূর্ব পিরিজপুর
৮নং ওয়ার্ড মধ্য পিরিজপুর, পশ্চিম পিরিজপুর, সূতিরপাড়, জয়নগর, আমতলা, জয়নগর নয়াহাটি
৯নং ওয়ার্ড খাশালা গজারিয়া, বড় গজারিয়া, ছোট গজারিয়া, গজারিয়া বাজার

ইতিহাস

সম্পাদনা

পিরিজপুর ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয় ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৭০ সালে। এর আগের বছর ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন পৌরসংস্থা বাজিতপুর পৌরসভা।

সুলতান পুর প্রাচীন মাজার

আমল

সম্পাদনা

১৩০৩ খ্রিষ্টাব্দে শাহ জালাল কর্তৃক ৩৬০ আউলিয়ার মাধ্যমে সিলেট বিজয় সম্পূর্ণ হয় বলে স্বীকৃত। এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে সিলেটে সুলতানি শাসনের সূত্রপাত ঘটে। সুলতানদের আমলে এ অঞ্চলের প্রশাসন ব্যবস্থাকে কয়েকটি ইকলিমে বা ইক্তায় বিভক্ত করা হয়। ইক্তার প্রাশাসককে ওজীর বলা হত।[৫] সিলেটের সর্ব প্রথম ওজীর হন সিকান্দর খান গাজী। এ সময় দিল্লীর সুলতানী পদে উপবিষ্ট ছিলেন আলাউদ্দীন খিলজী এবং বাংলার তৎকালীন সম্রাট ছিলেন শামস উদ্দীন ফিরুজ শাহ। সিকান্দর গাজী কয়েক বৎসর শাসন পরিচালনা করেন এবং শাহ জালাল জীবিত থাকা কালেই সিকান্দর গাজী এক নৌকাডুবিতে মৃত্যু বরণ করেন। এ বিষয়টি তোয়ারিখে জালালী গ্রন্থে কবিতায় এ ভাবে উল্লেখ আছেঃ

যখনে মরিল সেই গাজী সিকান্দর

বেসরদার হৈল ছিলট নগর

এজন্যে হযরত শাহ জালাল এমনী

নিযুক্ত করি দেন সরদার তখনি[২০]

সিকান্দর গাজীর পরে শাহ জালালের অন্য সঙ্গী অনুসারী হায়দর গাজী উপর সিলেটের শাসন ভার ন্যস্ত হয়।[৬][২১] হায়দর গাজীর মৃত্যুর পর কার দ্বারা সিলেটের শাসন পরিচালিত হয়, তা অজ্ঞাত। অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধির ধারণা করেন; হায়দর গাজীর পরে নবাব ইস্পেন্দিয়ার দ্বারা শাসিত হতে পারে। অতপর দিনাজপুরের রাজা গণেশ কর্তৃক গৌড়াধিপতি শামস উদ্দীন যখন নিহ্ত হন তখন সিলেটের শাসনকার্য কি ভাবে চলে ছিল তা জ্ঞাত হওয়া যায় নাই। এরপর গৌড় সম্রাট ইলিয়াছ বংশীয় বরবক শাহের পর ইউছুফ শাহের আমলে (১৪৮২ পূর্ব) সিলেটের সাথে গৌড়ের সম্পর্ক স্থাপিত হয়। শাহ জালালের দরগাহে প্রাপ্ত প্রস্তরলিপিতে ইউছুফ শাহের নাম অঙ্কিত থাকা এর প্রমাণ বলে অচ্যুতচরণ চৌধুরী মনে করেন। এ বংশীয় গৌড়ের শেষ রাজা মোজাফরের আমল (১৪৯৫ খ্রিঃ) পর্যন্ত গৌড়ের ছত্র-ছায়ায় থেকে শাহ জালালের দরগাহের খাদিমদের দ্বারা সিলেটের শাসনদণ্ড পরিচালিত হয়।[৬] অতপর হুসেন শাহের আমলে ময়মনসিংহ, ঢাকা, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ সহ সিলেটের সুনামগঞ্জ এলাকার নিম্নাঞ্চল নিয়ে ইকলিমে মুয়াজ্জমাবাদ নামে একটি প্রশাসনিক ইউনিট (প্রদেশ) ঘটিত হয়। এ সময় গৌড় হতে নিয়োজিত কানুনগোদের (দেওয়ান) মাধ্যমে সিলেট শাসিত হতো।

ধর্ম  প্রচার  সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মুসলিম সাধক হযরত শাফাই শাহ আউলিয়া (রহঃ)  ময়মনসিংহ জেলা বাজিতপুর উপজেলা  মৌজাঃ পিরিজ পুর ইউনিয়ন। বর্তমান  কিশোরগঞ্জ জেলা বাজিতপুর উপজেলা পিরিজপুর ইউনিয়ন সুলতান পুর উত্তর পাড়া গ্রামে মাজার শরীফ।

মাঘ মাসের প্রথম সোমবার থেকে ওরশ মোবারক শুরু হয়।

তিন দিন ব্যাপী ওরশ  ১৯ও২০।জানুয়ারী ২০২৬ইং কমিটির আয়োজনে আনুষ্ঠানিক ভাবে  থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ভক্ত -পাগল আর ভক্তি মূলক গানের আসর। জানা গেছে আশেকানদের পদ চারনায় মুখরিত

জরিপ সূত্র জানা যায়  ৭০৩ হিজরী ১৩০৩ ইং সনে শামসু উদ্দিন ফিরোজ শাহের মুসলিম শাসন। হযরত শাহ কামাল উদ্দিন কোহাফা ( রহঃ) ও সৈয়দ তাজ উদ্দিন (রহঃ)  কুরাইশী ও শাহ রুকন উদ্দিন (রহঃ) তাদের ১২ জনের সঙ্গী হয়ে হযরত শাফাই শাহ (রহঃ)  সহ শাহ কামাল উদ্দিন কোহাফা( রহঃ)  বাবা সাথে খাঁজা বোরহান উদ্দিন( রহঃ) খেতনের সাথে ৭০৩ হিজরি ১৩০৩ সনে হযরত শাহজালাল (রহঃ)  এর হাতে শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন কিছু দিন পর  সুনামগঞ্জ শাহার পাড়া আস্তানা হাস্তাপন করেন। পাংশী নদী দিয়ে বর্ষা কালে ইসলাম ধর্ম  প্রচার উদ্দেশ্য রওনা হোন

১৩১৫ সনে সিলেট সুনামগঞ্জ  ময়মনসিংহ জেলা  ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন।

হযরত শাহ কামাল উদ্দীন কোহাফাহ (রহঃ) সিলেটে এসে সর্বপ্রথম হযরত শাহ জালাল ইয়ামানী (রহঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করেন৭০৩ হিজরী ১৩০৩ মুসলিম শাসন আমলে সিলেট ময়মনসিংহ ইসলাম ধর্ম প্রচার এবং তার আনুগত্য ও শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। হযরত শাহ কামাল উদ্দীন কোহাফাহ (রহঃ) ও হযরত শাফাই শাহ আউলিয়া( রহঃ) সহ ১৩জন সঙ্গীয় শিষ্য দর্বেশগনও হযরত শাহ জালাল ইয়ামানীর আনুগত্য ও শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। তারা সিলেট সহরস্থ দর্গাহ মহল্লায় কিছু দিন অধিষ্ঠান করার পরে, হযরত শাহ জালাল ইয়ামানী (রহঃ) এর নির্দেশে সিলেট সুনামগঞ্জের - ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ।ওউত্তর-পশ্চিম সীমান্ত এলাকার উদ্দেশ্যে বর্ষাকালে সুরমা নদীর শেখঘাট হতে ৩ খানা পাংশী বজরা নিয়ে নদী পথে যাত্রা আরম্ভ করেন

শিক্ষা ব্যবস্থা

সম্পাদনা

২০০১ শিক্ষা জরিপ অনুযায়ী পিরিজপুর ইউনিয়নের শিক্ষার হার ৪৪%। এ ইউনিয়নে ৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি বেসরকারি রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি মাদ্রাসা রয়েছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

সম্পাদনা

পিরিজপুর ইউনিয়ন পরিষদের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ঢাকা-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়ক। এ মহাসড়ক দিয়ে সহজেই অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের যে কোনো স্থানে যাওয়া যায়। উপজেলা পরিষদে যাতায়াতেও আছে বড় পাকা সড়ক।[]

হাট-বাজার

সম্পাদনা

পিরিজপুর ইউনিয়নে অনেকগুলো হাট-বাজার রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো পিরিজপুর বাজার, জামতলী বাজার, গজারিয়া বাজার, উজানচর বাজার, বোর্ড বাজার, বাংলা বাজার ইত্যাদি। সবচেয়ে বড় বাজার হলো পিরিজপুর বাজার। এ বাজারে প্রায় ৫০০টি দোকানপাট আছে। বাজিতপুর তথা কিশোরগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় কাঁচা বাজার হিসাবে খ্যাত এবং কলার বাজার হিসাবে বিখ্যাত। এখান থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সবজি চালান হয়।[]

জনপ্রতিনিধি

সম্পাদনা
  • বর্তমান চেয়ারম্যান- মোঃ জাফর ইকবাল জুয়েল
চেয়ারম্যানগণের তালিকা
ক্রমিক নাম মেয়াদ
০১ আব্দুল খলিল পন্ডিত
০২ করিম
০৩ আব্দুর রাজ্জাক তুলা
০৪ অহিদ উদ্দিন
০৫ তুফানি
০৬ আজহারুল ইসলাম গোলাপ
০৭ মোঃ জোবায়ের ইব্রাহিম
০৮ মোঃ জাফর ইকবাল জুয়েল

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "পিরিজপুর ইউনিয়ন"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২৬ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২০ 
  2. "বাজিতপুর উপজেলা"বাংলাপিডিয়া। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। ১ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২০ 
  3. "এক নজরে পিরিজপুর ইউনিয়ন"। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২৪