পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান

পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান বা ইংরেজিতে চীফ অব দ্য নেভাল স্টাফ অব পাকিস্তান হচ্ছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর সর্বোচ্চ পদ। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রটির স্বাধীনতার পরপরই এই পদটি চালু হয় তবে তখন এর নাম ছিলো পাকিস্তান নৌবাহিনীর সর্বাধিনায়ক বা কমান্ডার-ইন-চীফ অব দ্য পাকিস্তান নেভি। ১৯৭২ সালে নৌবাহিনী প্রধান চীফ অব নেভাল স্টাফ নামে পরিচিতি পান। নৌপ্রধানের নিয়োগ হয় পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির দ্বারা দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশক্রমে।[২]

পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রধান
سربراہ پاک بحریہ
নৌবাহিনী প্রধানের পতাকা
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়[১]
সংক্ষেপেসিএনএস
এর সদস্যজয়েন্ট চীফস অব স্টাফ কমিটি
যার কাছে জবাবদিহি করেপাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
আসননৌবাহিনী সদর-দপ্তর
ইসলামাবাদ
মনোনয়নদাতাপাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
নিয়োগকর্তাপাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি
মেয়াদকাল৩ বছর (সর্বোচ্চ)
পূর্ববর্তীপাকিস্তান নৌবাহিনীর সর্বাধিনায়ক (১৯৪৭-১৯৭২)
গঠন৩ মার্চ ১৯৭২; ৫২ বছর আগে (1972-03-03)
প্রথমঅ্যাডমিরাল হাসান হাফিজ আহমেদ (স্টাফ প্রধান)
পরবর্তীউর্ধ্বতন অ্যাডমিরাল
বেতনপাকিস্তান নৌবাহিনী বেতন কাঠামো
ওয়েবসাইটOfficial website

পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী এবং সমগ্র পাকিস্তান রাষ্ট্রে নৌবাহিনী প্রধান একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। পাকিস্তান নৌবাহিনী রাষ্ট্রটির সমুদ্র সীমা রক্ষায় গুরু দায়িত্ব পালন করা সহ চোরাচালানিদের ধরা সহ শান্তিকালীন সময়ে সহ প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বৈরিতা বজিয়ে রাখার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসেবে কাজ করে, সে হিসেবে নৌবাহিনী প্রধান পাকিস্তানের শীর্ষ ব্যক্তিদের একজন বিবেচিত হন।

পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রধান অধিনায়ক হিসেবে কাজ করেন, তিনি নৌবাহিনীর শীর্ষ অ্যাডমিরালদের একজন।[৩][৪]

ইতিহাস সম্পাদনা

১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রটি তৈরি হবার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তান নৌবাহিনীও তৈরি হয়, ব্রিটিশ ভারতের রাজকীয় ভারতীয় নৌবাহিনীর মুসলিমরা রাজকীয় পাকিস্তান নৌবাহিনী গড়ে তোলেন, যদিও একেবারে শুরুর দিকে পাকিস্তান নৌবাহিনীর উঁচু পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রায় সবাই ইংরেজ ছিলেন। ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীর রিয়ার অ্যাডমিরাল পদবির কর্মকর্তা পাকিস্তান নৌবাহিনীর ফ্ল্যাগ অফিসার কমান্ডিং হচ্ছিলেন ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত, এই বছর রিয়ার অ্যাডমিরাল সিদ্দিক চৌধুরী নামের একজন স্থানীয় পাকিস্তানি নৌবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বে আসেন। ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত নৌ সদর করাচিতে ছিলো; '৭৫ সনে তা ইসলামাবাদে স্থানান্তরিত হয়ে যায়।

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫তে পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান ছিলেন অ্যাডমিরাল আফজাল রহমান খান, যার নেতৃত্বে পাকিস্তান নৌবাহিনী ভারতীয় নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় এবং শত্রুকে উপর্যুপরি ঘায়েল করতে সক্ষম হয়। 'অপারেশন দোয়ারকা' নামের নৌ সমরাভিযানের সাফল্যে রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান অনেক খুশী হয়েছিলেন এবং নৌবাহিনীর অনেক সদস্য যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান স্বরূপ পদক পেয়েছিলো।[৫]

পাকিস্তান নৌবাহিনীর সদর দপ্তর ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত করাচিতে ছিলো; এই বছর তা ইসলামাবাদে স্থানান্তরিত হয়ে যায়।

নৌ প্রধানদের তালিকা সম্পাদনা

  1. রিয়ার অ্যাডমিরাল জেমস উইলফ্রেড জেফোর্ড (১৫ আগস্ট ১৯৪৭ – ৩০ জানুয়ারি ১৯৫৩)[৬]
  2. ভাইস অ্যাডমিরাল এইচএমএস চৌধুরী (৩১ জানুয়ারি ১৯৫৩ – ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯)[৬]
  3. ভাইস অ্যাডমিরাল আফজাল রহমান খান (১ মার্চ ১৯৫৯ – ২০ অক্টোবর ১৯৬৬)[৬]
  4. অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ আহসান (২০ অক্টোবর ১৯৬৬ – ৩১ আগস্ট ১৯৬৯)[৬]
  5. ভাইস অ্যাডমিরাল মুজাফফর হাসান (১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯ – ২২ ডিসেম্বর ১৯৭১)[৬]
  6. ভাইস অ্যাডমিরাল হাসান হাফিজ আহমেদ (৩ মার্চ ১৯৭২ – ৯ মার্চ ১৯৭৫)[৬]
  7. অ্যাডমিরাল মুহাম্মদ শরীফ (২৩ মার্চ ১৯৭৫ – ২১ মার্চ ১৯৭৯)[৬]
  8. অ্যাডমিরাল কেরামত রহমান নিয়াজি (২২ মার্চ ১৯৭৯ – ২৩ মার্চ ১৯৮৩)[৬]
  9. অ্যাডমিরাল তারিক কামাল খান (২৩ মার্চ ১৯৮৩ – ৯ এপ্রিল ১৯৮৬)[৬]
  10. অ্যাডমিরাল ইফতিখার আহমেদ শিরহি (৯ এপ্রিল ১৯৮৬ – ৯ নভেম্বর ১৯৮৮)[৬]
  11. অ্যাডমিরাল ইয়াস্তুর-উল-হক মালিক (১০ নভেম্বর ১৯৮৮ – ৮ নভেম্বর ১৯৯১)[৬]
  12. অ্যাডমিরাল সাইদ মুহাম্মদ খান (৯ নভেম্বর ১৯৯১ – ৯ নভেম্বর ১৯৯৪)[৬]
  13. অ্যাডমিরাল মনসুরুল হক (১০ নভেম্বর ১৯৯৪ – ১ মে ১৯৯৭)[৬]
  14. অ্যাডমিরাল ফসিহ বোখারি (২ মে ১৯৯৭ – ২ অক্টোবর ১৯৯৯)[৬]
  15. অ্যাডমিরাল আব্দুল আজিজ মির্জা (২ অক্টোবর ১৯৯৯ – ২ অক্টোবর ২০০২)[৬]
  16. অ্যাডমিরাল শহীদ করিমুল্লাহ (৩ অক্টোবর ২০০২ – ৬ অক্টোবর ২০০৫)
  17. অ্যাডমিরাল আফজাল তাহির (৭ অক্টোবর ২০০৫ – ৭ অক্টোবর ২০০৮)
  18. অ্যাডমিরাল নোমান বশির (৭ অক্টোবর ২০০৮ – ৭ অক্টোবর ২০১১)
  19. অ্যাডমিরাল মুহাম্মদ আসিফ স্যান্ডিলা (৭ অক্টোবর ২০১১ – ৭ অক্টোবর ২০১৪)

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. MoD, Ministry of Defence। "Organogram of MoD" (পিডিএফ)mod.gov.pk/। Ministry of Defence Press। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৭ 
  2. Pakistan Navy Official Website। "Organizations in Navy"www.paknavy.gov.pk। Navy ISPR। ৩১ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৬ 
  3. Cheema, Pervaiz Iqbal (২০০২)। "Evolution of the Navy"। The Armed Forces of Pakistan (google books) (ইংরেজি ভাষায়)। New york: NYU Press। পৃষ্ঠা 225। আইএসবিএন 9780814716335 
  4. Shabbir, Usman (২০০৩)। "Command & Structure"pakdef.org (ইংরেজি ভাষায়)। PakDef Military Consortium। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১৭ 
  5. "Pak Navy Day: Operation Dwarka 1965 – Celebrating the heroic achievements"bolnews.com। ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০। ১৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০২১ 
  6. Pervaiz Iqbal Cheema. The Armed Forces of Pakistan, New York: New York University Press. 2003. pp. 86~90