পল নিক্সন
পল অ্যান্ড্রু নিক্সন (ইংরেজি: Paul Nixon; জন্ম: ২১ অক্টোবর, ১৯৭০) কাম্ব্রিয়ার ল্যাংওয়াদবি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ার, কেন্ট, এমসিসি ও কাম্বারল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[১] দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। বামহাতে ব্যাটিং করার পাশাপাশি বামহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন 'ব্যাজার', 'নিকো' ডাকনামে পরিচিত পল নিক্সন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | পল অ্যান্ড্রু নিক্সন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ল্যাংওয়াদবি, কাম্ব্রিয়া, ইংল্যান্ড | ২১ অক্টোবর ১৯৭০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | ব্যাজার, নিকো | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৬ ফুট ০ ইঞ্চি (১.৮৩ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | উইকেট-রক্ষক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৯৯) | ১২ জানুয়ারি ২০০৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২১ এপ্রিল ২০০৭ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই শার্ট নং | ৪৭ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৩–২০১১ | লিচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০০–২০০২ | কেন্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৯৯/২০০০ | মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮৯–১৯৯৯ | লিচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮৭ | কাম্বারল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ |
কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ
সম্পাদনা১৯৮৯ সালে লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে পল নিক্সনের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে।[২] ১৯৯৬ ও ১৯৯৮ - এ দুই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ২০০০ সাল পর্যন্ত ক্লাবের পক্ষে খেলতে থাকেন। এরপর কেন্টে চলে যান। কেন্টের পক্ষে দুই বছর খেলার পর উদীয়মান জেরাইন্ট জোন্সের আবির্ভাবের প্রেক্ষিতে পুনরায় ২০০৩ সালে লিচেস্টারশায়ারে ফিরে যান। লিচেস্টারে দ্বিতীয় মেয়াদে অবস্থানকালীন নিক্সন দুইবার টুয়েন্টি২০ কাপ ও শেষের দিনগুলোয় ফক্সেসের পিছনে থেকে বৃহৎ প্রতিদ্বন্দ্বীকারী দলের অন্যতম সদস্যের ভূমিকায় ছিলেন। ২০০৬ সালে নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে নিজস্ব সেরা অপরাজিত ১৪৪ রান তুলেন তিনি।[৩]
জুলাই, ২০০৭ সালে জানা যায় যে, কাউন্টি মৌসুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিক্সনকে লিচেস্টারশায়ারের অধিনায়ক হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হবে। ড্যারেন রবিনসনের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। অন্যদিকে জেরেমি স্ন্যাপ একদিনের দলে নেতৃত্বে বহাল ছিলেন।[৪] তিন বছরের চুক্তিতে স্বাক্ষরিত হবার পর আগস্ট, ২০০৭ সালে নিক্সনকে সকল ধরনের প্রতিযোগিতায় ক্লাবের নতুন অধিনায়কের মর্যাদা দেয়া হয়।[৫]
নিক্সন তার নিজ নামের পাশে আঠারোটি প্রথম-শ্রেণীর সেঞ্চুরি লিখিয়েছেন। তন্মধ্যে, ষোলটি লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে ও বাদ-বাকী দুইটি কেন্টের পক্ষে করেছিলেন। দুইবার সেঞ্চুরি করার পরও তার দল পরাজিত হয়েছিল। আগস্ট, ২০০২ সালে কেন্টের সদস্যরূপে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ১০৩ ও ২৬ রান করেন। খেলায় তিনি আট ক্যাচ, দুইটি স্ট্যাম্পিং ও দ্বিতীয় ইনিংসে তিন বলে আট রান দেন। খেলায় তার দল ১০ উইকেটে পরাজিত হয়।[৬] সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে দ্বিতীয়টিতে লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে খেলাকালে নর্দাম্পটনশায়ারের মুখোমুখি হন। ৩০ ও ১১০ রানের পাশাপাশি চার ক্যাচ মুঠোবন্দী করলেও দল ১৭৭ রানের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল।[৭]
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনা১২ জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার ওডিআই অভিষেক হয়। ৩৬ বছর বয়সে আশ্চর্যজনকভাবে ২০০৭ সালের ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য ইংল্যান্ড দলের সদস্য মনোনীত করা হয়। নিয়মিত উইকেট-রক্ষক ক্রিস রিডের বিকল্প হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। এরপূর্বে ২০০০-০১ মৌসুমে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য নির্বাচিত করা হলেও অ্যালেক স্টুয়ার্টের স্থলাভিষিক্ত হবার সুযোগ পাননি।
জুলাই, ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হওয়া নবপ্রবর্তিত টুয়েন্টি২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপকে সামনে রেখে ৩০-সদস্যের প্রাথমিক দলে তাকেও রাখা হয়েছিল। তবে উইকেট-রক্ষকের স্থান গ্রহণের জন্য ম্যাট প্রায়রের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হয়।[৮] তবে, আগস্টে ১৫-সদস্যের চূড়ান্ত দল ঘোষণা করা হলে প্রায়রকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়।[৯]
৯ জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টুয়েন্টি২০ খেলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে তার অভিষেক পর্ব সূচিত হয়। মাত্র ২২ বলে দুইটি চার ও একটি ছক্কায় অপরাজিত ৩১ রান তুলেন। মাইক হাসিকে স্ট্যাম্পিং ও পল কলিংউডের বলে মাইকেল ক্লার্ককে রান আউট করেন। তাস্বত্ত্বেও ইংল্যান্ড ৭৭ রানে পরাজিত হয়েছিল।[১০]
কমনওয়েলথ ব্যাংক সিরিজ
সম্পাদনাএর তিনদিন পর প্রথমবারের মতো ওডিআই খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ আসে তার। কমনওয়েলথ ব্যাংক সিরিজের প্রথম খেলায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষিক্ত হন। খেলায় তিনি শূন্য রানে বিদায় নেন। জেমি ড্যালরিম্পল ও মন্টি পানেসরের বলে যথাক্রমে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও ম্যাথু হেইডেনের ক্যাচ তালুবন্দী করেন। তবে, রিকি পন্টিং ও মাইকেল ক্লার্কের অনবদ্য অর্ধ-শতকের কল্যাণে অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয় তুলে নেয়।[১১]
৩০ জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান তুলেন। জ্যাকব ওরামের বলে ৪৯ রানে আউট হবার সময় তিনি দুইটি চার ও দুইটি ছক্কা হাঁকান।[১২] এ সময়ে অষ্টম উইকেট জুটিতে লিয়াম প্লাঙ্কেটকে নিয়ে ৭৬ রান তুলে বেন হলিউক ও ড্যারেন গফের গড়া রেকর্ড ভঙ্গ করেন।[১৩] অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১ম ফাইনালে ব্যাটহাতে অপরাজিত ১১ রান তুলেন ১০ বল মোকাবেলা করে। খেলায় ইংল্যান্ড তিন বল বাকী থাকতে জয় পায়।[১৪] এসসিজিতে গ্লেন ম্যাকগ্রার সর্বশেষ বলে আউট হন।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ
সম্পাদনা২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের অন্যতম খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। সুপার এইট পর্বে দলের তৃতীয় খেলায় আবারও অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় তার দল। এবার অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জয় তুলে নেয়। ইনিংসের শেষদিকে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ রানে ব্র্যাড হজের বলে বিদায় নেন। ঐ মুহুর্তে ওডিআইয়ে তার ব্যাটিং গড় ছিল ১৯.৮০। তবে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাত্র ৭ গড়ে রান তুলতে সক্ষমতা দেখান।[১৫]
আইসিএলে অংশগ্রহণ
সম্পাদনাঅক্টোবর, ২০০৭ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লীগে খেলার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। তিনি স্বদেশী ড্যারেন ম্যাডি ও বিক্রম সোলাঙ্কির সাথে যোগ দেন। তিনি মন্তব্য করেন যে, এটি বেশ উদ্দীপনাময় সুযোগ ও সঠিক সময়ের। 'ক্রিকেটের মক্কা’ হিসেবে ভারতের পরিচিতি রয়েছে ও জাতীয় দলের সফলতার প্রেক্ষিতে সেখানে টুয়েন্টি২০ খেলার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে।[১৬] আইসিএল অবলুপ্তির পূর্ব-পর্যন্ত দুই মৌসুম দিল্লি জায়ান্টসের পক্ষে খেলেন তিনি।
অবসর
সম্পাদনাগ্রেস রোডে অনুষ্ঠিত টি২০ কোয়ার্টার ফাইনালে কেন্টের বিপক্ষে খেলা শেষে পেশাদারী ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। তবে, কেন্টকে পরাজিত করতে পারলে পরের খেলাগুলোয় তার অংশগ্রহণের কথা বলা হয়। ২০ ওভারে ২০৩ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমে দলটি ১৯.২ ওভার ব্যয় করে যা দলের সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রায় পরিগণিত হয়। নিক্সন ১৭ বলে ৩১ রান তুলেন। সুপার ওভারে ল্যাঙ্কাশায়ারকে পরাজিত করার ফলে দলটি চূড়ান্ত খেলায় উপনীত হয়। চূড়ান্ত খেলায় সমারসেটকে ১৮ রানে হারিয়ে শিরোপা জয় করে স্বপ্নময় খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি। ২৩ বছরের খেলোয়াড়ী জীবন অবশেষে ২৭ আগস্ট, ২০১১ তারিখে অবসর নেন পল নিক্সন।[১৭]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Major Teams ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ জুলাই ২০১২ তারিখে from www.cricket-online.org
- ↑ Debut ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে from www.cricketarchive.com
- ↑ Career Best ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে from www.cricketarchive.com
- ↑ Appointment as One-day captain from www.bbc.co.uk
- ↑ Appointment as Club captain from www.bbc.co.uk
- ↑ Kent v. Warwickshire scorecard from www.cricketarchive.com
- ↑ Leicestershire v. Northamptonshire scorecard from www.bbc.co.uk
- ↑ Provisional 2007 Twenty20 World Championship Squad from www.bbc.co.uk
- ↑ Actual 2007 Twenty20 World Championship Squad from www.bbc.co.uk
- ↑ First Twenty20 International scorecard from www.cricinfo.com
- ↑ First ODI scorecard from www.cricinfo.com
- ↑ 49 v. New Zealand scorecard from www.cricinfo.com
- ↑ ODI England Batting Partnership Records ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ জুলাই ২০০৭ তারিখে from www.cricinfo.com
- ↑ Commonwealth Bank Series Final v. Australia from www.cricinfo.com
- ↑ England v. Australia Super Eight Match 3 scorecard from www.bbc.co.uk
- ↑ Indian Cricket League from www.cricinfo.com
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে পল নিক্সন (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে পল নিক্সন (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)