নূর মোহাম্মদ (বীর প্রতীক)
শহীদ নূর মোহাম্মদ (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[১]
নূর মোহাম্মদ | |
---|---|
মৃত্যু | ১৯৭১ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাশহীদ নূর মোহাম্মদের জন্ম নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার দেলিয়াই গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুর রব পাটোয়ারী এবং মায়ের নাম আশ্রাফের নেছা। তার স্ত্রীর নাম খোশতারা বেগম। তার এক মেয়ে। [২]
কর্মজীবন
সম্পাদনাপাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন নূর মোহাম্মদ। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে নিজ এলাকায় এসে স্থানীয় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
সম্পাদনা১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী জেলার সদরের উত্তর-পশ্চিমে ছিল সোনাইমুড়ির অবস্থান। এখানে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছোট একটি ক্যাম্প। সেই ক্যাম্পে তাদের সঙ্গে স্থানীয় রাজাকারেরাও ছিল। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে একদল মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদের নেতৃত্বে সোনাইমুড়ির পাকিস্তানি ক্যাম্পে আক্রমণ করেন। হাইস্কুলে ছিল ক্যাম্প। কয়েক ঘণ্টা ধরে সেখানে যুদ্ধ হয়। মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে ঘেরাও করে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের কোণঠাসা করে ফেলেন। তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। তখন তাদের মনোবল ভেঙে পড়ে। এ সময় নূর মোহাম্মদ পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন। প্রথমে তারা অস্বীকৃতি জানালেও শেষ পর্যন্ত রাজি হয়। এরপর তারা একে একে স্কুলমাঠে আত্মসমর্পণ করতে থাকে। স্কুলমাঠে কয়েকজন সহযোদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে নূর মোহাম্মদ তা তদারক করছিলেন। এমন সময় লুকিয়ে থাকা এক রাজাকার তাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। সেই গুলি সরাসরি তার এবং আরেক সহযোদ্ধা আবদুল হামিদের শরীরে বিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ নূর মোহাম্মদ ও আবদুল হামিদ মাটিতে ঢলে পড়েন। তখনই তাদের জীবনপ্রদীপ নিভে যায়। পরে সহযোদ্ধারা নূর মোহাম্মদের মরদেহ নিয়ে যান তার গ্রামের বাড়িতে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হকের জমিতে তাকে সমাহিত করা হয়। [৩]
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনামৃত্যু
সম্পাদনাতিনি ১৯৭১ সালের ৭ ই ডিসেম্বর শহীদ হন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ২৫-১১-২০১১"। ২০১৮-১১-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-২৯।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭১। আইএসবিএন 9789843338884।
পাদটীকা
সম্পাদনা- এই নিবন্ধে দৈনিক প্রথম আলোতে ১৩-০২-২০১২ তারিখে প্রকাশিত তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না প্রতিবেদন থেকে লেখা অনুলিপি করা হয়েছে। যা দৈনিক প্রথম আলো ক্রিয়েটিভ কমন্স অ্যাট্রিবিউশন-শেয়ার-এলাইক ৩.০ আন্তর্জাতিক লাইসেন্সে উইকিপিডিয়ায় অবমুক্ত করেছে (অনুমতিপত্র)। প্রতিবেদনগুলি দৈনিক প্রথম আলোর মুক্তিযুদ্ধ ট্রাস্টের পক্ষে গ্রন্থনা করেছেন রাশেদুর রহমান (যিনি তারা রহমান নামেও পরিচিত)।