সৃষ্টিতত্ত্বের ক্ষেত্রে নীহারিকা অনুকল্প (ইংরেজি: nebular hypothesis) হল সৌরজগতের উদ্ভব ও বিবর্তন তথা অন্যান্য গ্রহব্যবস্থারও সৃষ্টিতত্ত্ব-ব্যাখ্যাকারী সর্বাধিক স্বীকৃত তত্ত্ব। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, সূর্য-প্রদক্ষিণকারী গ্যাস ও ধুলোর থেকে সৌরজগতের উৎপত্তি ঘটেছিল। ১৭৫৫ সালে ইমানুয়েল কান্ট তাঁর "বিশ্বজনীন প্রাকৃতিক ইতিহাস ও অন্তরীক্ষ তত্ত্ব" গ্রন্থে এই তত্ত্বটি প্রথম প্রকাশ করেন। পরে ১৭৯৬ সালে পিয়ের সিমোঁ লাপ্লাস এই তত্ত্বে কিছু পরিবর্তন সাধন করেছিলেন। আদিতে সৌরজগতের ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হলেও গ্রহজগৎ উদ্ভবের প্রক্রিয়াটিকে এখন সমগ্র মহাবিশ্বেই ক্রিয়াশীল বলে মনে করা হয়। নীহারিকাতত্ত্বের সর্বাধিক স্বীকৃত আধুনিক রূপান্তরটি হল সৌর নীহারিকা চাকতি মডেল (ইংরেজি: solar nebular disk model বা SNDM) বা সৌর নীহারিকা মডেল (ইংরেজি: solar nebular model)।[১] এই তত্ত্বের মাধ্যমে গ্রহগুলির প্রায়-বৃত্তাকার ও একতলীয় কক্ষপথ এবং সূর্যের আবর্তনের সঙ্গে একই দিকে গ্রহগুলির গতি সহসৌরজগতের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ব্যাখ্যা প্রদান করার চেষ্টা করা হয়। মূল নীহারিকা অনুকল্পের কিছু কিছু উপাদান গ্রহ গঠন-সংক্রান্ত আধুনিক তত্ত্বগুলিতেও প্রতিধ্বনিত হয়েছে। কিন্তু সেই মূল তত্ত্বের অধিকাংশ উপাদানই নতুন তত্ত্ব দ্বারা অপসারিত হয়েছে।

নীহারিকা অনুকল্প মতে, আণবিক হাইড্রোজেনের প্রকাণ্ড ও ঘন মেঘসমূহ বা দৈত্যাকার আণবিক মেঘ (ইংরেজি: Giant Molecular Cloud বা GMC) থেকে নক্ষত্রগুলি গঠিত হয়। এই মেঘগুলি অভিকর্ষীয় দিক থেকে অস্থির এবং এগুলির মধ্যকার পদার্থ একাঙ্গীভূত হয় ক্ষুদ্রতর ও ঘনতর গুচ্ছের সৃষ্টি করে। তারপর এই গুচ্ছগুলি আবর্তিত হয়, ভেঙে পড়ে এবং নক্ষত্রের সৃষ্টি ঘটায়। নক্ষত্রের উৎপত্তি একটি জটিল প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় সর্বক্ষেত্রেই নবীন নক্ষত্রকে ঘিরে একটি গ্যাসময় আদিগ্রহীয় চাকতি (প্রোপ্লাইড) সৃষ্টি হয়। নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এই চাকতি থেকে গ্রহেরও উদ্ভব ঘটতে পারে, তবে এই পরিস্থিতির কথা সঠিক জানা যায় না। এই জন্য গ্রহজগতের উদ্ভবকে নক্ষত্রের উৎপত্তির একটি স্বাভাবিক ফলশ্রুতি মনে করা হয়। সূর্যের মতো একটি নক্ষত্রের উৎপত্তি ঘটতে প্রায় ১০ লক্ষ বছর লাগে এবং তারপরে আদিগ্রহীয় চাকতিটি বিবর্তিত হয়ে একটি গ্রহজগতের রূপ নিতে সময় লাগে ১-১০ কোটি বছর।[২]

আদিগ্রহীয় চাকতি হল একটি উপচয় চাকতি যা থেকে কেন্দ্রীয় নক্ষত্রটি পরিপুষ্ট হয়। প্রথম দিকে চাকতিটি অত্যন্ত উষ্ণ অবস্থায় থাকে। তারপর টি টরি নক্ষত্র স্তর নামে পরিচিত পর্যায়ে পৌঁছে সেটি শীতল হতে শুরু করে। এই স্তরেই পাথর ও বরফ দ্বারা গঠিত ছোটো ছোটো ধুলোর দানা সৃষ্টি হয়। এরপর এই দানাগুলি ঘনীভূত হয়ে সম্ভবত কিলোমিটার-আকারবিশিষ্ট প্ল্যানেটসিমাল সৃষ্টি করে। চাকতিটি যদি যথেষ্ট বড়ো হয় তবে পলাতক উপচয়ের সূত্রপাত ঘটে, যার ফলে দ্রুত—১০০,০০০ থেকে ৩০০,০০০ বছরে—উপগ্রহ গঠিত হয় মঙ্গল-আকারবিশিষ্ট গ্রহীয় ভ্রূণের মধ্যে। নক্ষত্রের কাছে গ্রহীয় ভ্রূণগুলি অত্যুগ্র নিমজ্জনের একটি পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যায়, যার ফলে অল্প কয়েকটি শিলাময় গ্রহের উদ্ভব ঘটে। শেষ পর্যায়টি সম্পূর্ণ হতে সময় লাগে প্রায় ১০ কোটি থেকে একশো কোটি বছর।[২]

দানব গ্রহগুলির উৎপত্তি আরও জটিল একটি প্রক্রিয়া। মনে করা হয় যে এই ঘটনা ঘটে হিমরেখার বাইরে, যেখানে গ্রহীয় ভ্রূণগুলি প্রধানত বিভিন্ন ধরনের বরফের দ্বারা গঠিত হয়। এর ফলে এই ভ্রূণগুলি আদিগ্রহীয় চাকতির অভ্যন্তরীণ ভাগের তুলনায় বেশ কয়েক গুণ ভারী হয়। ভ্রূণ গঠনের পরে কী ঘটে তা সম্পূর্ণ স্পষ্ট নয়। কয়েকটি ভ্রূণের আকার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে এবং পরিণামে তা ৫-১০ পার্থিব ভর অর্থাৎ ন্যূনতম মানে উপনীত হয়, যা চাকতি থেকে হাইড্রোজেন-হিলিয়াম গ্যাসের উপচয়ের সূচনার জন্য প্রয়োজনীয়।[৩] অন্তঃস্থলে গ্যাসের পুঞ্জীভবন প্রথম দিকে ধীর প্রক্রিয়া হিসেবে থাকে, যা বেশ কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে চলতে থাকে। কিন্তু গঠনশীল আদিগ্রহগুলি প্রায় ৩০ পার্থিব ভরে (টেমপ্লেট:পার্থিব ভর) পৌঁছে গেলে তা ত্বরান্বিত হয় এবং একটি পলায়নী ভঙ্গিতে অগ্রসর হয়। মনে করা হয় যে, বৃহস্পতি- ও শনি-সদৃশ গ্রহগুলি মাত্র ১০,০০০ বছরের মধ্যেই তাদের ভরের প্রধান ভাগটি পূঞ্জীভূত করেছিল। গ্যাস নিঃশেষিত হয়ে গেলে উপচয় বন্ধ হয়ে যায়। গঠিত হওয়া গ্রহগুলি গঠিত হওয়ার সময় বা তার পরে দীর্ঘ পথ অভিপ্রয়াণ করতে পারে। ইউরেনাসনেপচুনের মতো হিম দৈত্যগুলিকে ব্যর্থ অন্তঃস্থলবিশিষ্ট গ্রহ মনে করা হয়। চাকতিটি প্রায় সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার পর অনেক দেরিতে এগুলি গঠিত হয়েছিল।[২]

ইতিহাস সম্পাদনা

১৭৩৪ সালেই যে ইমানুয়েল সুইডেনবার্গ নীহারিকা অনুকল্পের কিছু কিছু অংশ প্রস্তাব করেছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া যায়।[৪][৫] ইমানুয়েল কান্ট সুইডেনবার্গের কাজের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। তিনি এই তত্ত্বটিকে পক্কতর রূপ দান করে ১৭৫৫ সালে বিশ্বজনীন প্রাকৃতিক ইতিহাস ও অন্তরীক্ষ তত্ত্ব গ্রন্থে প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, গ্যাসময় মেঘগুলি (নীহারিকা) ধীরে ধীরে আবর্তিত হয়, ক্রমে ভেঙে পড়ে এবং মাধ্যাকর্ষণের কারণে চ্যাপ্টা আকার ধরন করে, এর পরিণামে নক্ষত্রগ্রহসমূহের উৎপত্তি ঘটায়।[১]

পিয়ের সিমোঁ লাপ্লাস ১৭৯৬ সালে স্বাধীনভাবে অনুরূপ একটি মডেল প্রস্তুত ও প্রস্তাব করেন[১] এক্সপোজিশন ডু সিস্টেমে ডু মন্ডে গ্রন্থে। তিনি মনে করতেন, আদিতে সমগ্র সৌরজগতের সমান আয়তন জুড়ে সূর্যের এক সম্প্রসারিত উষ্ণ বায়ুমণ্ডল বিরাজ করত। এই তত্ত্বে একটি সংকোচনশীল ও ঠান্ডা হতে থাকা আদিসৌর মেঘ—আদিসৌর নীহারিকার উল্লেখ পাওয়া যায়। শীতল ও সংকুচিত হওয়ার সময় নীহারিকাটি চ্যাপ্টা আকার ধারণ করে এবং আরও দ্রুত আবর্তিত হতে থাকে। এর ফলে এটি থেকে ধারাবাহিকভাবে পদার্থের কয়েকটি গ্যাসময় বলয় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় (বা ঝরে যায়)। লাপ্লাসের মতে, এই উপাদানগুলি ঘনীভূত হয়ে গ্রহের উদ্ভব ঘটায়। তিনি যে মডেলটি প্রস্তাব করেছিলেন, তা কান্টের মডেলের অনুরূপই ছিল। শুধু লাপ্লাসের মডেলটি ছিল অধিকতর বিস্তারিত এবং অপেক্ষাকৃত ছোটো মাপের।[১] লাপ্লাসীয় নীহারীকা মডেলটি ঊনবিংশ শতাব্দী জুড়ে প্রাধান্য বজায় রাখলেও এটি কয়েকটি সমস্যারও সম্মুখীন হয়। প্রধান সমস্যাটি ছিল সূর্য ও গ্রহগুলির মধ্যে কৌণিক ভরবেগের বণ্টন-সংক্রান্ত। গ্রহগুলির ৯৯ শতাংশ কৌণিক ভরবেগ বিদ্যমান এবং এই বিষয়টি নীহারিকা মডেলের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়নি।[১] এই কারণে বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় অধিকাংশ জ্যোতির্বিজ্ঞানীই গ্রহ গঠনের এই তত্ত্বটি প্রত্যাখ্যান করেন।

ঊনবিংশ শতাব্দীতে এই তত্ত্বের একজন প্রধান সমালোচক ছিলেন জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল (১৮৩১-১৮৭৯)। তিনি মনে করতেন, "একটি বলয়ের অভ্যন্তরীণ ও বহির্ভাগীয় অংশের আবর্তনের পার্থক্য" উপাদানের ঘনীভবনের সহায়ক নয়।[৬] জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্যার ডেভিড ব্রিউস্টার লাপ্লাসের মত প্রত্যাখ্যান করে ১৮৭৬ সালে লেখেন যে, "নীহারিকাতত্ত্বে বিশ্বাসকারীরা নিশ্চিতভাবে মনে করেন যে আমাদের পৃথিবী এটির নিরেট পদার্থ থেকে এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সৌর বায়ুমণ্ডলে উৎক্ষিপ্ত একটি বলয় থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যা পরে সংকুচিত হয়ে একটি নিরেট শিলাময় গোলক গঠন করে, যা থেকে আবার একই প্রক্রিয়ায় চাঁদ উৎক্ষিপ্ত হয়।" তিনি মনে করতেন যে এই অভিমতে প্রেক্ষাপটে বলতে হয়, "চাঁদ অপরিহার্যভাবে পৃথিবীর জলময় ও বায়ুময় অংশগুলি থেকে জল ও বায়ু বহন করে নিয়ে গিয়েছিল এবং সেই কারণে চাঁদের একটি বায়ুমণ্ডল থাকাও আবশ্যক।"[৭] ব্রিউস্টার দাবি করেন যে, স্যার আইজ্যাক নিউটনের ধর্মীয় বিশ্বাস পূর্বে নীহারিকা-সংক্রান্ত ধ্যানধারণাগুলিকে নাস্তিকতা-প্রবণ হিসেবে গ্রহণ করেছিল এবং নিউটনকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন যে "কোনও দৈব শক্তির ধারণা ব্যতিরেকে পুরনো ব্যবস্থাগুলি থেকে নতুন ব্যবস্থার উদ্ভব তার কাছে অলীক প্রতিভাত হয়েছিল"।[৮]

লাপ্লাসীয় মডেলটির ত্রুটির কথাটি হৃদয়ঙ্গম করে বিজ্ঞানীরা সেটির বিকল্পের অনুসন্ধান শুরু করেন। বিংশ শতাব্দীতে এই প্রসঙ্গে অনেকগুলি তত্ত্ব প্রস্তাব করা হয়েছিল; যার মধ্যে ছিল টমাস চেম্বারলেইনফরেস্ট মল্টনের প্ল্যানেটেসিমাল তত্ত্ব (১৯০১), জেমস জিনসের জোয়ার মডেল (১৯১৭), অটো স্মিটের উপচয় মডেল (১৯৪৪), উইলিয়াম ম্যাকক্রির আদিগ্রহ তত্ত্ব (১৯৬০) এবং শেষ পর্যন্ত মাইকেল উলফসনের বন্দীকরণ তত্ত্ব[১] ১৯৭৮ সালে অ্যান্ড্রু প্রেন্টিস গ্রহ গঠন সম্পর্কে আদি লাপ্লাসীয় ধ্যানধারণাগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করে আধুনিক লাপ্লাসীত তত্ত্ব উপস্থাপনা করেন।[১] কিন্তু উপরিউক্ত কোনও প্রয়াসই সম্পূর্ণ সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। অনেকগুলি প্রস্তাবিত তত্ত্ব ছিল নিছকই বর্ণনামূলক।

গ্রহ গঠন বিষয়ে আধুনিক যুগে বহুল স্বীকৃত তত্ত্বটি হল সৌর নীহারিকা চাকতি মডেল (এসএনডিএম)। এই তত্ত্বের রূপরেখা অঙ্কনের সঙ্গে সোভিয়েত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ভিক্টর সাফরোনোভের নাম জড়িত।[৯] সাফরোনোভের বই আদিগ্রহীয় মেঘের বিবর্তন এবং পৃথিবী ও গ্রহসমূহের উৎপত্তি প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে[১০] এবং তা ইংরেজি অনূদিত হয় ১৯৭২ সালে। গ্রহগুলির উৎপত্তি সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা যা ভাবেন তার উপর এক দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব বিস্তার করে এই বইটি।[১১] এই বইটিতে গ্রহ গঠন প্রক্রিয়া-সংক্রান্ত প্রায় সকল প্রধান সমস্যাকে সূত্রবদ্ধ করা হয়েছিল এবং তার কয়েকটির সমাধানও করা হয়েছিল। সাফরোনোভের ধারণাগুলি পলায়নী উপচয়ের আবিষ্কর্তা জর্জ ওয়েদেরিলের রচনাকর্মে পক্কতর রূপ দেওয়া হয়।[১] মূলে সৌরজগতের ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হলেও আমাদের ছায়াপথে ২০১২ সালের ৭ই মার্চ তারিখ পর্যন্ত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ৭৬০টি বহির্গ্রহ আবিষ্কার করার পর তত্ত্ববিদরা এসএনডিএম-কে পরবর্তীকালে সমগ্র মহাবিশ্বে ক্রিয়াশীল মনে করেন।[১২]

সৌর নীহারিকা মডেল: অর্জন ও সমস্যা সম্পাদনা

অর্জন সম্পাদনা

 
নিকটবর্তী নবীন নক্ষত্রকে ঘিরে ধূলিময় চাকতির বিস্তারিত চিত্র।[১৩]

নবীন নাক্ষত্রিক বস্তুগুলির চারিদিকে উপচয় চাকতির আবির্ভাব ঘটলে তার ফলশ্রুতিতে প্রাকৃতিকভাবেই নক্ষত্র গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।[১৪] প্রায় দশ লক্ষ বছর বয়সী একশো শতাংশ নক্ষত্রের চারিদিকেই এই ধরনের চাকতি দেখা যায়।[১৫] এই সিদ্ধান্তের সমর্থন পাওয়া যায় আদিনক্ষত্রটি টরি নক্ষত্রগুলির চারিপাশে গ্যাসময় ও ধূলিময় চাকতিসমূহের আবিষ্কারে এবং তাত্ত্বিক বিবেচনাতেও।[১৬] এই সব চাকতিগুলিকে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে যে এগুলির মধ্যে ধুলোর দানা কম (হাজার বছর) সময়কালের মধ্যেই আকারে বৃদ্ধি পায় এবং ১ সেন্টিমিটার আকারের কণার সৃষ্টি করে।[১৭]

যে উপচয় প্রক্রিয়ায় ১ কিলোমিটার আকারের প্ল্যানেটেসিমালগুলি আকারে বৃদ্ধি পেয়ে ১০০০ কিলোমিটার আকারবিশিষ্ট বস্তুতে পরিণত হয় সেই প্রক্রিয়াটিকে এখন ভালোভাবে বোঝা গিয়েছে।[১৮] যে কোনও চাকতির ভিতরে যেখানে প্ল্যানেটেসিমালগুলির সংখ্যা ঘনত্ব যথেষ্টভাবে বেশি সেখানেই এই প্রক্রিয়া গড়ে ওঠে এবং এক পলায়নী ভঙ্গিতে চলতে থাকে। পরে বৃদ্ধি মন্দীভূত হয় এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগত উপচয়ের আকারে অব্যাহত থাকে। এর সর্বশেষ ফল হল বিভিন্ন আকারের গ্রহীয় ভ্রূণের উদ্ভব। এই ভ্রূণগুলির আকার নক্ষত্র থেকে দূরত্বের উপর নির্ভরশীল।[১৮] বিভিন্ন সিমিউলেশনের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে যে আদিগ্রহীয় চাকতির অভ্যন্তরীণ অংশে ভ্রূণগুলির একত্রীভবনের ফলে পৃথিবীর আকারবিশিষ্ট বস্তুগুলির উৎপত্তি ঘটেছে। তাই শিলাময় গ্রহগুলির উদ্ভবকে এখন প্রায় সমাধানকৃত একটি সমস্যা মনে করা হয়।[১৯]

বর্তমান সমস্যা সম্পাদনা

উপচয় চাকতিগুলির পদার্থবিদ্যাগত ধারণাগুলি কয়েকটি সমস্যার সম্মুখীন হয়।[২০] একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল আদিনক্ষত্র থেকে উপচয়িত উপাদান কীভাবে সেগুলির কৌণিক ভরবেগ হারায়। হ্যানেস অ্যালফভেন এর একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। তিনি বলেছেন যে, এটির টি টউরি নক্ষত্র পর্যায়ে সৌর বায়ু কর্তৃক কৌণিক ভরবেগ ক্ষয়িত হয়। সান্দ্র চাপে ভরবেগ পরিবাহিত হয় চাকতির বহিঃস্থ অংশগুলিতে।[২১] ম্যাক্রোস্কোপিক বিক্ষুব্ধতার দ্বারা সান্দ্রতা উৎপাদিত হয়। কিন্তু কী কৌশলে এই বিক্ষুদ্ধতা সৃষ্টি হয়, তা ভালো ভাবে বোঝা যায় না। কৌণিক ভরবেগ ক্ষয়ের আরেকটি সম্ভাব্য প্রক্রিয়া হল চৌম্বকীয় ব্রেকিং। এই ক্ষেত্রে নক্ষত্রের ঘূর্ণন নক্ষত্রটির চৌম্বক ক্ষেত্র হয়ে পারিপার্শ্বিক চাকতিতে স্থানান্তরিত হয়ে যায়।[২২] চাকতিগুলির মধ্যে গ্যাসের অন্তর্ধানের জন্য দায়ী প্রধান প্রক্রিয়াগুলি হল সান্দ্র ব্যাপন ও আলোক-বাষ্পীভবন।[২৩][২৪]

 
বহুবিধ নক্ষত্র জগৎ এএস ২০৫।[২৫]

প্ল্যানেটেসিমালগুলির উৎপত্তি নীহারিকা চাকতি মডেলে সবচেয়ে বড়ো অমীমাংসিত প্রশ্ন। কীভাবে ১ সেন্টিমিটার আকারবিশিষ্ট কণাগুলি একাঙ্গীভূত হয়ে ১ কিলোমিটার আকারবিশিষ্ট প্ল্যানেটেসিমাল গঠন করে তা এক রহস্য। মনে করা হয় যে, কোনও কোনও নক্ষত্রের গ্রহ থাকে, আবার অন্যগুলির শুধু গ্রহ কেন ধূলিবলয়ও থাকে না, সেই প্রশ্নের উত্তরও এই প্রশ্নটির মধ্যে নিহিত রয়েছে।[২৬]

দানব গ্রহগুলির উৎপত্তির সময়কালও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। দ্রুত বিলীয়মান আদিগ্রহীয় চাকতি থেকে সেই গ্রহগুলির অন্তঃস্থল কীভাবে যথেষ্ট দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ পরিমাণে গ্যাস পুঞ্জীভূত করতে পারে তার ব্যাখ্যা পুরনো তত্ত্বগুলির মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব হয়নি।[১৮][২৭] এই চাকতিগুলির গড় জীবৎকাল ১ কোটি (১০) বছরেরও কম, যা অন্তঃস্থল গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সময়ের চেয়ে কম বলেই মনে করা হয়।[১৫] এই সমস্যাটির সমাধানে অনেক অগ্রগতি হয়েছে এবং দানব গ্রহের উৎপত্তি-সংক্রান্ত বর্তমান মডেলগুলি এখন দেখিয়েছে যে বৃহস্পতি (বা আরও ভারী গ্রহগুলি) ৪০ লক্ষ বছরের মধ্যেই গঠিত হয়েছিল, যে সময়টুকু গ্যাসময় চাকতিগুলির গড় জীবৎকালের মধ্যেই পড়ে।[২৮][২৯][৩০]

দানব গ্রহ উৎপত্তির আরেকটি সম্ভাব্য সমস্যা হল সেগুলির কক্ষীয় অভিপ্রয়াণ। কয়েকটি পরিগণনা থেকে দেখা গিয়েছে চাকতির সঙ্গে পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় দ্রুত অন্তর্মুখী অভিপ্রয়াণ ঘটতে পারে। যা বন্ধ না হলে তার ফলশ্রুতিতে গ্রহটি "একটি উপ-বার্হস্পত্য বস্তু রূপেই কেন্দ্রীয় অঞ্চলসমূহে" পৌঁছে যাবে।[৩১] অধিকতর সাম্প্রতিক পরিগণনাগুলি ইঙ্গিত করে যে, অভিপ্রয়াণের সময় চাকতির বিবর্তন এই সমস্যা উপশমিত করতে পারে।[৩২]

নক্ষত্র ও আদিগ্রহীয় চাকতিগুলির উদ্ভব সম্পাদনা

আদিনক্ষত্র সম্পাদনা

 
দৃশ্য-আলো (বাঁদিকে) ও অবলোহিতে (ডানদিএক) দৃশ্য ট্রাইফিড নীহারিকা—৫,৪০০ আলোকবর্ষ দূরে স্যাগিটেরিয়াস তারামণ্ডলে অবস্থিত গ্যাস ও ধুলোর একটি দৈত্যাকার নক্ষত্র-গঠনকারী মেঘ

বিজ্ঞানীদের অনুমান, নক্ষত্রগুলি গঠিত হয় শীতল আণবিক হাইড্রোজেনের দৈত্যাকার মেঘগুলির মধ্যে। এই মেঘগুলি হল দৈত্যাকার আণবিক মেঘ, যার ভর সূর্যের ভরের (M) মোটামুটি ৩০০,০০০ গুণ এবং ব্যাস ২০ পারসেক[২][৩৩] বহু লক্ষ বছর ধরে দৈত্যাকার আণবিক মেঘগুলি পতন ও খণ্ডায়ন প্রবণ হয়ে পড়ে।[৩৪] এই খণ্ডাংশগুলি এরপর ছোটো ছোটো ঘন অন্তঃস্থল গঠন করে, যা আবার পতিত হয়ে নক্ষত্রে পরিণত হয়।[৩৩] এই অন্তঃস্থলের ভর সূর্যের ভরের একটি ভগ্নাংশ থেকে কয়েক গুণ পর্যন্ত হতে পারে এবং এই অন্তঃস্থলকেই বলা হয় আদিনাক্ষত্রিক (আদিসৌর) নীহারিকা।[২] এর ব্যাস হতে পারে ০.০১-০.১ পারসেক (২,০০০-২০,০০০ জ্যো.এ.) এবং কণা সংখ্যা ঘনত্ব হয় মোটামুটি ১০,০০০ থেকে ১০০,০০০ সেন্টিমিটার−৩[ক][৩৩][৩৫]

একটি সৌর-ভরবিশিষ্ট আদিনাক্ষত্রিক নীহারিকার প্রারম্ভিক পতন ঘটতে সময় লাগে প্রায় ১০০,০০০ বছর।[২][৩৩] প্রতিটি নীহারিকাই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে কৌণিক ভরবেগ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। নীহারিকার কেন্দ্রীয় অংশের গ্যাসের কৌণিক ভরবেগের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম হয়। এই অংশটি দ্রুত সংক্ষেপনের মধ্যে দিয়ে যায় এবং একটি তপ্ত উদ্স্থিতি (সংকোচনশীল নয়) অন্তঃস্থল গঠন করে। এই অন্তঃস্থলে মূল নীহারিকার ভরের একটি খণ্ডাংশই ধৃত হয়।[৩৬] অন্তঃস্থলগুলি সেই বীজ গঠন করে যা একটি নক্ষত্রে পরিণত হয়।[২][৩৬] এরপর যখন পতন অব্যাহত থাকে তখন কৌণিক ভরবেগের সংরক্ষণের অর্থ দাঁড়ায় যে পতনশীল আবরণটির আবর্তন ত্বরান্বিত হচ্ছে,[৩৭][৩৮] যা উপরিস্থ কেন্দ্রীয় অন্তঃস্থলে গ্যাসের সরাসরি উপচয় রোধে একটি বড়ো ভূমিকা গ্রহণ করে। তার পরিবর্তে গ্যাস এটির নিরক্ষীয় তলের কাছে বহির্মুখে ছড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়। ফলে একটি চাকতি গঠিত হয়, যা পরে উপচয়িত হয়ে অন্তঃস্থলে পরিণত হয়।[২][৩৭][৩৮] অন্তঃস্থলটির ভর ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে তা একটি নবীন উত্তপ্ত আদিনক্ষত্রে পরিণত হয়।[৩৬] এই পর্যায়ে আদিনক্ষত্র ও সেটির চাকতি পতনশীল আবরণ দ্বারা অত্যধিক মাত্রায় আচ্ছন্ন থাকে এবং সেটিকে প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় না।[১৪] আবরণটির অস্বচ্ছতা প্রকৃতপক্ষে এত বেশি হয় যে মিলিমিটার-তরঙ্গ বিকিরণ এর ভিতর দিয়ে সহজে পলায়ন করতে পারে না।[২][১৪] এই ধরনের বস্তুগুলিকে অতি উজ্জ্বল ঘনীভবনের আকারে পর্যবেক্ষণ করা হয়, যা প্রধানত মিলিমিটার-তরঙ্গ ও সাবমিলিমিটার-তরঙ্গ বিকিরণ বিচ্ছুরিত করে।[৩৫] এগুলিকে বর্গায়িত হয় বর্ণালিসংক্রান্ত শ্রেণি ০ আদিনক্ষত্র হিসেবে।[১৪] পতনের সঙ্গে প্রায়শই দ্বিমেরু নিঃসরণ ঘটে—জেট—যা অবলোহিত চাকতির আবর্তন অক্ষের সঙ্গে প্রবাহিত হয়। নক্ষত্র-গঠনকারী অঞ্চলগুলিতে প্রায়শই এই জেটগুলিকে দেখা যায় (হারবিগ-হারো (এইচএইচ) বস্তু দেখুন)।[৩৯] শ্রেণি ০ আদিনক্ষত্রগুলির ঔজ্জ্বল্য বেশি— একটি সৌর-ভরবিশিষ্ট আদিনক্ষত্র ১০০ সৌর ঔজ্জ্বল্য পর্যন্ত বিকিরণ করতে পারে।[১৪] এই শক্তির উৎস অভিকর্ষীয় পতন। কারণ সেগুলির অন্তঃস্থল তখনও পারমাণবিক গালন শুরু করার মতো যথেষ্ট উত্তপ্ত হয় না।[৩৬][৪০]

 
অন্যভাবে গুপ্ত নবজাত নক্ষত্র এইচএইচ ৪৬/৪৭ থেকে আণবিক নির্গমনের অবলোহিত চিত্র

চাকতির উপরিস্থ স্থানে সেটির পদার্থের পতন চলতে থাকলে আবরণটি ক্রমশ সরু ও স্বচ্ছ হয়ে আসে এবং নবীন নাক্ষত্রিক বস্তু (ওয়াইএসও) প্রথমে দূর-অবলোহিত আলোয় এবং পরে দৃশ্য আলোয় দৃষ্টিগোচর হয়।[৩৫] এই সময় নাগাদই আদিনক্ষত্রে ডিউটেরিয়াম গালন শুরু হয়। আদিনক্ষত্রটি যদি যথেষ্ট ভারী হয় (৮০ বার্হস্পত্য ভরের (MJ) বেশি), তাহলে তার পরে হাইড্রোজেনের গালন ঘটে। অন্যথায় যদি এটির ভর অত্যন্ত কম হয় তাহলে বস্তুটি একটি বাদামি বামনে পরিণত হয়।[৪০] পতন শুরু হওয়ার প্রায় ১০০,০০০ বছর পরে নতুন নক্ষত্রের এই জন্মের ঘটনাটি ঘটে।[২] এই পর্যায়ের বস্তুগুলি পরিচিত শ্রেণি ১ আদিনক্ষত্র নামে,[১৪] যাকে নবীন টি টউরি নক্ষত্র, বিবর্তিত আদিনক্ষত্র বা নবীন নাক্ষত্রিক বস্তুও বলা হয়ে থাকে।[১৪] এই সময়ের মধ্যেই নির্মীয়মান নক্ষত্রটি তার ভরের অনেকটাই পুঞ্জীভূত করে নেয়: চাকতির মোট ভর ও অবশিষ্ট আবরণটির ভর কেন্দ্রীয় নবীন নাক্ষত্রিক বস্তুটির ভরের ১০-২০ শতাংশের বেশি হয় না।[৩৫]

পরবর্তী পর্যায়ে আবরণটি চাকতি কর্তৃক জড়ো হয়ে সম্পূর্ণ দূরীভূত হয়ে যায় এবং আদিনক্ষত্রটি একটি ধ্রুপদি টি টউরি নক্ষত্রে পরিণত হয়।[খ] এই ঘটনা পরে প্রায় ১০ লক্ষ বছর পরে।[২] একটি ধ্রুপদি টি টউরি নক্ষত্রের চারিপাশে চাকতির ভর নাক্ষত্রিক ভরের প্রায় ১-৩ শতাংশ এবং প্রতি বছরে ১০−৭ থেকে ১০−৯ M হারে তা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।[৪৩] সচরাচর ক্ষেত্রে এক জোড়া দ্বিমেরুবিশিষ্ট জেটও উপস্থিত থাকে।[৪৪] এই বৃদ্ধি ধ্রুপদি টি টউরি নক্ষত্রগুলির সকল অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যই ব্যাখ্যা করে: নিঃসরণ রেখায় শক্তিশালী গলনি (নক্ষত্রটির অন্তরিন ঔজ্জ্বল্যের ১০০ শতাংশ পর্যন্ত), চৌম্বকীয় সক্রিয়তা, আলোকমিতি-সংক্রান্ত পরিবর্তনশীলতা ও জেটসমূহ।[৪৫] নিঃসরণ রেখাগুলি প্রকৃতপক্ষে সৃষ্টি হয় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত গ্যাস নক্ষত্রের "পৃষ্ঠভাগে" আঘাত করলে, যা ঘটে নক্ষত্রের চৌম্বক মেরু অঞ্চলে।[৪৫] জেটগুলি হল বৃদ্ধিরই উপজাত: এগুলি অত্যধিক কৌণিক ভরবেগ বহন করে। প্রায় ১ কোটি বছর ধ্রুপদি টি টউরি পর্যায়টি বজায় থাকে।[২] কেন্দ্রীয় নক্ষত্রে উপচয়, গ্রহ গঠন, জেট কর্তৃক উৎক্ষেপন এবং কেন্দ্রীয় নক্ষত্র ও নিকটবর্তী নক্ষত্রগুলি থেকে অতিবেগুনি-বিকিরণের মাধ্যমে আলোকবাষ্পীভবনের ফলে চাকতিটি ক্রমশ অদৃশ্য হয়ে যায়।[৪৬] এর ফলে নবীন নক্ষত্রটি পরিণত হয় একটি দুর্বলভাবে রেখাযুক্ত টি টউরি নক্ষত্রে, যা কোটি কোটি বছর ধরে ধীরে ধীরে বিবর্তিত হয়ে একটি সাধারণ সূর্য-সদৃশ নক্ষত্রে পরিণত হয়।[৩৬]

আদিগ্রহীয় চাকতি সম্পাদনা

 
হাবল স্পেস টেলিস্কোপের অভিলেখাগারে সংরক্ষিত নবীন নক্ষত্রসমূহের চিত্রাবলিতে শনাক্তকৃত আবর্জনা চাকতি এইচডি ১৪১৯৪৩এইচডি ১৮১০৮৯, ইমপ্রুভড ইমেজিং প্রসেস ব্যবহার করে গৃহীত চিত্র (২৪ এপ্রিল, ২০১৪)।[৪৭]

নির্দিষ্ট কয়েকটি পরিস্থিতিতে চাকতিটি (যেটিকে এখন আদিগ্রহীয় চাকতি বলা চলে) একটি গ্রহ ব্যবস্থার জন্ম দিতে পারে।[২] নবীন নক্ষত্র গুচ্ছগুলিতে নক্ষত্রগুলির অতি মাত্রায় ভগ্নাংশগুলির চারিপাশে আদিগ্রহীয় চাকতিগুলিকে দেখা যায়।[১৫][৪৮] নক্ষত্র গঠনের গোড়া থেকেই এগুলির অস্তিত্ব থাকে। কিন্তু আদিতম পর্যায়ে এগুলি পারিপার্শ্বিক আবরণের স্বচ্ছতার কারণে অপর্যবেক্ষিতই থেকে যায়।[১৪] মনে করা হয় যে, একটি শ্রেণি ০ আদিনক্ষত্র ভারী ও উত্তপ্ত হয়। এটি একটি উপচয় চাকতি, যা কেন্দ্রীয় আদিনক্ষত্রকে পুষ্ট করে।[৩৭][৩৮] তাপমাত্রা সহজেই ৫ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক এককের মধ্যে ৪০০ কে এবং ১ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক এককের মধ্যে ১,০০০ কে ছাড়িয়ে যেতে পারে।[৪৯] চাকতির উষ্ণায়ন মুখ্যত ঘটে সেটির মধ্যে আলোড়নের সান্দ্র অপচয়ের জন্য এবং নীহারিকা থেকে গ্যাসের পতনের দ্বারা।[৩৭][৩৮] অভ্যন্তরীণ চাকতিতে উচ্চ তাপমাত্রার ফলে অধিকাংশ উদ্বায়ী পদার্থ—যেমন জল, জৈব পদার্থ ও কিছু পাথর বাষ্পীভূত হয়ে যায় এবং লোহার মতো অধিকাংশ তাপরোধকারী পদার্থই শুধু অবশিষ্ট থাকে। বরফ টিকে থাকতে পারে শুধুমাত্র চাকতির বাইরের অংশেই।[৪৯]

 
কালপুরুষ নীহারিকায় একটি আদিগ্রহীয় চাকতির জন্ম

উপচয় চাকতিগুলির পদার্থবিজ্ঞানে প্রধান সমস্যাটি হল আলোড়নের প্রজন্ম এবং উচ্চ কার্যকরী সান্দ্রতার জন্য দায়ী কার্যসাধন-পদ্ধতিটি।[২] আলোড়নশীল সান্দ্রতাকে কেন্দ্রীয় আদিনক্ষত্রে ভর চাকতির পরিধির মধ্যে ভরবেগের পরিবহণের জন্য দায়ী মনে করা হয়। উপচয়ের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কেন্দ্রীয় আদিনক্ষত্র কর্তৃক গ্যাস উপচয়িত হয়ে পারে শুধুমাত্র যখন তা অধিকাংশ কৌণিক ভরবেগ হারায় আর এই কৌণিক ভরবেগকে অবশ্যই পরিবাহিত হতে হয় গ্যাসের ক্ষুদ্র অংশের বহিরাভিমুখে চালনার মাধ্যমে।[৩৭][৫০] এই প্রক্রিয়ার ফলে আদিনক্ষত্র ও চাকতির ব্যাসার্ধ উভয়ই বৃদ্ধি পায়। নীহারিকার প্রাথমিক কৌণিক ভরবেগ যথেষ্ট বেশি হলে ব্যাসার্ধের বৃদ্ধি ১,০০০ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক পর্যন্ত ঘটতে পারে।[৩৮] কালপুরুষ নীহারিকার মতো অনেক নক্ষত্র-গঠনকারী অঞ্চলে বৃহৎ চাকতিগুলি নিয়মিত পর্যবেক্ষিত হয়ে থাকে।[১৬]

আরও দেখুন সম্পাদনা

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর কণা সংখ্যা ঘনত্বের (২.৮×১০১৯ সেমি−৩) সঙ্গে তুলনীয়
  2. টি টউরি নক্ষত্র হল নবীন নক্ষত্র, যার ভর প্রায় ২.৫ M-এর কম হয়। এগুলির মধ্যে সক্রিয়তার তীব্রতর মাত্রা লক্ষিত হয়। এগুলি দু’টি শ্রেণিতে বিভক্ত: দুর্বলভাবে রেখাযুক্ত ও ধ্রুপদি টি টউরি নক্ষত্র।[৪১] এই ধ্রুপদি টি টউরি নক্ষত্রগুলির উপচয় চাকতি থাকে এবং তা তপ্ত গ্যাসের পুঞ্জীভবন চালিয়ে যায়। এই ধরনের গ্যাস আবার সেগুলির বর্ণালিতে শক্তিশালী বিচ্ছুরণ রেখার মাধ্যমে নিজেদের প্রকাশ করে। আদিনক্ষত্রগুলির উপচয় চাকতি থাকে না। ধ্রুপদি টি টউরি নক্ষত্রগুলি বিবর্তিত হয়ে দুর্বলভাবে রেখাযুক্ত টি টউরি নক্ষত্রে পরিণত হয়।[৪২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. উলফসন, এম. এম. (১৯৯৩)। "সোলার সিস্টেম – ইটস অরিজিন অ্যান্ড ইভোলিউশন" [সৌরজগৎ – তার উৎস ও বিবর্তন]। কিউ. জে. আর. অ্যাস্ট্রোন. সোস.৩৪: ১–২০। বিবকোড:1993QJRAS..34....1W  কান্টের অভিমত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখুন স্টিফেন পামকুইস্ট, "কান্ট’স কসমোগনি রি-ইভ্যালুয়েটেড" ["কান্টের সৃষ্টিতত্ত্ব পূনর্মূল্যায়িত"], স্টাডিজ ইন হিস্ট্রি অ্যান্ড ফিলোজফি অফ সায়েন্স ১৮:৩ (সেপ্টেম্বর, ১৯৮৭), পৃ. ২৫৫–২৬৯।
  2. মন্টমারলে, থিয়েরি; অগারিউ, জেন-চার্লস; কসিডন, মার্ক (২০০৬)। "সোলার সিস্টেম ফরমেশন অ্যান্ড আর্লি ইভোলিউশন: দ্য ফার্স্ট ১০০ মিলিয়ন ইয়ারস" [সৌরজগতের উদ্ভব ও আদি বিবর্তন: প্রথম ১০ কোটি বছর]। আর্থ, মুন, অ্যান্ড প্ল্যানেটস৯৮ (১–৪): ৩৯–৯৫। এসটুসিআইডি 120504344ডিওআই:10.1007/s11038-006-9087-5বিবকোড:2006EM&P...98...39M  |display-authors==এবং অন্যান্য অবৈধ (সাহায্য)
  3. ডি'এঞ্জেলো, জি.; বোডেনহেইমার, পি. (২০১৩)। "থ্রি-ডাইমেনশনাল রেডিয়েশন-হাইড্রোডায়নামিকস ক্যালকুলেশনস অফ দি এনভেলপস অফ ইয়াং প্ল্যানেটস এমবেডেড ইন প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্কস" [আদিগ্রহীয় চাকতিতে নিহিত নবীন গ্রহগুলির আবরণের ত্রিমাত্রিক বিকিরণ-জলগতিবিজ্ঞান পরিগণনা]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৭৭৮ (১): ৭৭ (২৯ পৃ.)। arXiv:1310.2211 এসটুসিআইডি 118522228ডিওআই:10.1088/0004-637X/778/1/77বিবকোড:2013ApJ...778...77D 
  4. সুইডেনবার্গ, ইমানুয়েল (১৭৩৪)। (প্রিন্সিপিয়া) লাতিন: অপেরা ফিলোসোফিকা এট মিনারেলিয়া (বাংলা: দার্শনিক ও খনিজবিজ্ঞান-বিষয়ক রচনাবলি)এক 
  5. বেকার, গ্রেগরি এল. "ইমানুয়েল সুইডেনবার্গ – অ্যান এইটিনথ সেঞ্চুরি কসমোলজিস্ট" ("ইমানুয়েল সুইডেনবার্গ – অষ্টাদশ শতাব্দীর এক বিশ্বতত্ত্ববিদ") ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ জুলাই ২০১১ তারিখে দ্য ফিজিক্স টিচার। অক্টোবর ১৯৮৩, পৃ. ৪৪১–৪৪৬।
  6. জর্জ এইচ. এ. কোল (২০১৩). প্ল্যানেটারি সায়েন্স: দ্য সায়েন্স অফ প্ল্যানেটস অ্যারাউন্ড স্টারস, দ্বিতীয় সংস্করণ, মাইকেল এম. উলফসন, পৃ. ১৯০
  7. ব্রিউস্টার, ডেভিড (১৮৭৬), "মোর ওয়ার্ল্ডস দ্যান ওয়ান: দ্য ক্রিড অফ দ্য ফিলোজফার অ্যান্ড দ্য হোপ অফ দ্য খ্রিস্টিয়ান", চ্যাটো অ্যান্ড উইন্ডাস, পিকাডিলি, পৃ. ১৫৩; উদ্ধৃতি: "those who believe in the Nebular Theory consider it as certain that our Earth derived its solid matter and its atmosphere from a ring thrown from the Solar atmosphere, which afterwards contracted into a solid terraqueous sphere, from which the Moon was thrown off by the same process". এবং "the Moon must necessarily have carried off water and air from the watery and aerial parts of the Earth and must have an atmosphere".
  8. ডেভিড ব্রিউস্টার কর্তৃক প্রদত্ত উদ্ধৃতি অনুযায়ী, "মোর ওয়ার্ল্ডস দ্যান ওয়ান: দ্য ক্রিড অফ দ্য ফিলোজফার অ্যান্ড দ্য হোপ অফ দ্য খ্রিস্টিয়ান", ফিক্সড স্টারস অ্যান্ড বায়োনারি সিস্টেমস। পৃ. ২৩৩; উদ্ধৃতি: "the growth of new systems out of old ones, without the mediation of a Divine power, seemed to him apparently absurd".
  9. হেনবেস্ট, নাইজেল (১৯৯১)। "বার্থ অফ দ্য প্ল্যানেটস: দি আর্থ অ্যান্ড ইটস ফেলো প্ল্যানেটস মে বি সারভাইভারস ফ্রম আ টাইম হোয়েন প্ল্যানেটস রিকোচেটেড অ্যারাউন্ড দ্য সান লাইক বল বিয়ারিংস অন আ পিনবল টেবিল" [গ্রহসমূহের জন্ম: পৃথিবী ও তার সঙ্গী গ্রহগুলি সম্ভবত এমন এক সময় থেকে টিকে রয়েছে যখন গ্রহগুলি একটি পিনবল টেবিলে বল বিয়ারিংগুলির মতো সূর্যের চারিদিকে সবেগে ঠিকরে ঠিকরে পড়ত]। নিউ সায়েন্টিস্ট। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-১৮ 
  10. সাফরোনোভ, ভিক্টর সেরগিভিচ (১৯৭২)। ইভোলিউশন অফ দ্য প্রোটোপ্ল্যানেটারি ক্লাউড অ্যান্ড ফরমেশন অফ দি আর্থ অ্যান্ড দ্য প্ল্যানেটস [আদিগ্রহীয় মেঘের বিবর্তন এবং পৃথিবী ও গ্রহসমূহের উৎপত্তি]। ইজরায়েল প্রোগ্রাম ফর সায়েন্টিফিক ট্রান্সলেশনস। আইএসবিএন 978-0-7065-1225-0 
  11. ওয়েদেরিল, জর্জ ডব্লিউ. (১৯৮৯)। "লিওনার্ড মেডেল সাইটেশন ভর ভিক্টর সেরগিভিচ সাফরোনোভ"। মেটেওরিটিকস২৪ (৪): ৩৪৭। ডিওআই:10.1111/j.1945-5100.1989.tb00700.xবিবকোড:1989Metic..24..347W 
  12. স্নেইডার, জেন (১০ সেপ্টেম্বর ২০১১)। "ইন্টারঅ্যাকটিভ এক্সট্রা-সোলার প্ল্যানেটস ক্যাটালগ" [পারস্পরিক ক্রিয়াশীল বহির্গ্রহ তালিকা]। দি এক্সট্রাসোলার প্ল্যানেটস এনসাইক্লোপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-১০ 
  13. "স্ফিয়ার রিভিলস ফ্যাসিনেটিং জু অফ ডিস্কস অ্যারাউন্ড ইয়াং স্টারস" [নবীন নক্ষত্রের চারিপাশে চাকতিসমূহের আকর্ষণীয় চিড়িয়াখানা প্রকাশ করল স্ফিয়ার]। ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.ইএসও.অর্গ। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৮ 
  14. আন্দ্রে, ফিলিপ; মন্টমর্লে, থিয়েরি (১৯৯৪)। "ফ্রম টি টউরি স্টারস প্রোটোস্টারস: সারকামস্টেলার মেটিরিয়াল অ্যান্ড ইয়াং স্টেলার অবজেক্টস ইন দ্য ρ ওফিউশি ক্লাউড" [টি টউরি নক্ষত্র আদিনক্ষত্র থেকে: ρ ওফিউশি মেঘে পরিনাক্ষত্রিক পদার্থ ও নবীন নাক্ষত্রিক বস্তু]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৪২০: ৮৩৭–৮৬২। ডিওআই:10.1086/173608বিবকোড:1994ApJ...420..837A 
  15. হাইসখ, কার্ল ই.; লাডা, এলিজাবেথ এ.; লাডা, চার্লস জে. (২০০১)। "ডিস্ক ফ্রিকোয়েন্সিজ অ্যান্ড লাইফটাইমস ইন ইয়াং ক্লাস্টারস" [নবীন গুচ্ছগুলিতে চাকতির পৌনঃপুন্য ও জীবৎকাল]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৫৫৩ (২): এল১৫৩–এল১৫৬। arXiv:astro-ph/0104347 এসটুসিআইডি 16480998ডিওআই:10.1086/320685বিবকোড:2001ApJ...553L.153H 
  16. প্যাডগেট, ডেবোরা এল.; ব্র্যান্ডনার, উলফগ্যাং; স্টেপলফেল্ট, কার্ল এল. (১৯৯৯)। "হাবস স্পেস টেলিস্কোপ/নিকমোস ইমেজিং অফ ডিস্কস অ্যান্ড এনভেলপস অ্যারাউন্ড ভেরি ইয়াং স্টারস" [চাকতিসমূহ এবং অতি নবীন নক্ষত্রগুলির চারিপার্শ্বস্থ আবরণগুলির হাবল স্পেস টেলিস্কোপ/নিকমোস চিত্রগ্রহণ]। দি অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল১১৭ (৩): ১৪৯০–১৫০৪। arXiv:astro-ph/9902101 এসটুসিআইডি 16498360ডিওআই:10.1086/300781বিবকোড:1999AJ....117.1490P  |display-authors=এবং অন্যান্য অবৈধ (সাহায্য)
  17. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Kessler-Silacci2006 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  18. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Kokubo2002 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  19. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Raymond2006 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  20. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Wurchterl2004 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  21. লিনডেন-বেল, ডি.; প্রিংগল, জে. ই. (১৯৭৪)। "দি ইভোলিউশন অফ ভিসকাস ডিস্কস অ্যান্ড দি অরিজিন অফ দ্য নেব্যুলার ভেরিয়েবলস" [সান্দ্র চাকতিগুলির বিবর্তন এবং পরিবর্তনশীল নীহারিকার উৎস]। মান্থলি নোটিসেস অফ দ্য রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি১৬৮ (৩): ৬০৩–৬৩৭। ডিওআই:10.1093/mnras/168.3.603 বিবকোড:1974MNRAS.168..603L 
  22. ডেভিট, টেরি (৩১ জানুয়ারি ২০০১)। "হোয়াট পুটস দ্য ব্রেক অন ম্যাডলি স্পিনিং স্টারস?" [পাগলের মতো ঘূর্ণায়মান নক্ষত্রগুলিতে কী ব্রেক কষায়?]। ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন-ম্যাডিসন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-০৯ 
  23. ডুলেমন্ড, সি.; হলেনবাক, ডি.; কাম্প, আই.; ডি'অ্যালেসিও, পি. (২০০৭)। "মডেলস অফ দ্য স্ট্রাকচার অ্যান্ড ইভোলিউশন অফ প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্কস [আদিগ্রহীয় চাকতিগুলির নির্মিতি ও বিবর্তনের মডেলসমূহ ]"। রেইপুর্থ, বি.; জেউইট, ডি.; কেইল, কে.। প্রোটোস্টারস অ্যান্ড প্ল্যানেটস ৫প্রোটোস্টারস অ্যান্ড প্ল্যানেটস ৫। টাকসন, অ্যারিজোনা: ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা প্রেস। পৃষ্ঠা 555–572। arXiv:astro-ph/0602619 আইএসবিএন 978-0816526543বিবকোড:2007prpl.conf..555D 
  24. ক্লার্ক, সি. (২০১১)। "দ্য ডিসপারসাল অফ ডিস্কস অ্যারাউন্ড ইয়াং স্টারস [নবীন নক্ষত্রগুলির চারিদিকে চাকতিগুলির বিচ্ছুরণ]"। গার্সিয়া, পি.। ফিজিক্যাল প্রসেসেস ইন সারকামস্টেলার ডিস্কস অ্যারাউন্ড ইয়াং স্টারস  [নবীন নক্ষত্রগুলির চারিদিকে পরিনাক্ষত্রিক চাকতিগুলিতে ভৌত প্রক্রিয়াসমূহ]। শিকাগো, ইলিনইস: ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো প্রেস। পৃষ্ঠা 355–418। আইএসবিএন 9780226282282 
  25. "ওয়ার্ল্ডস উইথ মেনি সানস" [বহু সূর্য-বিশিষ্ট জগৎসমূহ]। ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.ইএসও.অর্গ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  26. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Youdin2002 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  27. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Inaba2003 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  28. লিসায়ার, জে. জে.; হুবিকিজ, ও.; ডি'এঞ্জেলো, জি.; বোদেনহেইমার, পি. (২০০৯)। "মডেলস অফ জুপিটার'স গ্রোথ ইনকরপোরেটিং থার্মাল অ্যান্ড হাইড্রোডাইনামিক কনস্ট্রেইন্টস" [তাপীয় ও জলগতিবিদ্যা-সংক্রান্ত বাধ্যতার মধ্যে বৃহস্পতির বৃদ্ধি-সংক্রান্ত মডেলসমূহ]। ইকারাস১৯৯ (২): ৩৩৮–৩৫০। arXiv:0810.5186 এসটুসিআইডি 18964068ডিওআই:10.1016/j.icarus.2008.10.004বিবকোড:2009Icar..199..338L 
  29. বোদেনহেইমার, পি.; ডি'এঞ্জেলো, জি.; লিসায়ার, জে. জে.; ফোর্টনি, জে. জে.; ও অন্যান্য (২০১৩)। "ডিউটেরিয়াম বার্নিং ইন ম্যাসিভ জায়ান্ট প্ল্যানেটস অ্যান্ড লো-মাস ব্রাউন ডোয়ার্ফস ফর্মড বাই কোর-নিউক্লিয়েটেড অ্যাক্রেশন" [অষ্ঠি-নিউক্লিয়াসযুক্ত উপচয় কর্তৃক গঠিত বৃহদাকার দানব গ্রহ ও কম ভরবিশিষ্ট বাদামি বামনে ডিউটেরিয়াম দহন]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৭৭০ (২): ১২০ (১৩ পৃ.)। arXiv:1305.0980 এসটুসিআইডি 118553341ডিওআই:10.1088/0004-637X/770/2/120বিবকোড:2013ApJ...770..120B 
  30. ডি'এঞ্জেলো, জি.; ওয়েডেনশিলিংন, এস. জে.; লিসায়ার, জে. জে.; বোদেনহেইমার, পি. (২০১৪)। "Growth of Jupiter: Enhancement of core accretion by a voluminous low-mass envelope" [বৃহস্পতির বৃদ্ধি: একটি বিপুলায়তম [ও] কম ভরবিশিষ্ট আবরণ কর্তৃক অষ্ঠি উপচয়ের বৃদ্ধি]। ইকারাস২৪১: ২৯৮–৩১২। arXiv:1405.7305 এসটুসিআইডি 118572605ডিওআই:10.1016/j.icarus.2014.06.029বিবকোড:2014Icar..241..298D 
  31. পাপালোইজউ ২০০৭, পৃ. ১০
  32. ডি'এঞ্জেলো, জি.; ডুরিসেন, আর. এইচ.; লিসায়ার, জে. জে. (২০১১)। "জায়ান্ট প্ল্যানেট ফর্মেশন [দানব গ্রহ গঠন]"। এস. সিগার.। এক্সোপ্ল্যানেটস [বহির্গ্রহসমূহ]। ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা প্রেস, টাকসন, অ্যারিজোনা। পৃষ্ঠা ৩১৯–৩৪৬। arXiv:1006.5486 বিবকোড:2010exop.book..319D 
  33. পুদরিৎজ, রালফ ই. (২০০২)। "ক্লাস্টারড স্টার ফরমেশন অ্যান্ড দি অরিজিন অফ স্টেলার মাসেস" [গুচ্ছবদ্ধ তারা গঠন এবং নাক্ষত্রিক ভরের উৎস]। সায়েন্স২৯৫ (5552): ৬৮–৭৫। এসটুসিআইডি 33585808ডিওআই:10.1126/science.1068298পিএমআইডি 11778037বিবকোড:2002Sci...295...68P 
  34. ক্লার্ক, পল সি.; বোনেল, ইয়ান এ. (২০০৫)। "দি অনসেট অফ কোলাপস ইন টারব্যুলেন্টলি সাপোর্টেড মলিকিউলার ক্লাউডস" [বিক্ষুব্ধভাবে আলম্বিত আণবিক মেঘগুলিতে পতনের সূত্রপাত]। মোন. নোট. আর. অ্যাস্ট্রন. সোস.৩৬১ (১): ২–১৬। ডিওআই:10.1111/j.1365-2966.2005.09105.x বিবকোড:2005MNRAS.361....2C 
  35. মোটে, এফ.; আন্দ্রে, পি.; নেরি, আর. (১৯৯৮)। "দি ইনিশিয়াল কন্ডিশনস অফ স্টার ফরমেশন ইন দ্য ρ ওফিউশি মেইন ক্লাউড: ওয়াইড-ফিল্ড মিলিমিটার কন্টিনুয়াম ম্যাপিং" [ρ ওফিউশি প্রধান মেঘে তারা গঠনের প্রারম্ভিক শর্তাবলি: ওয়াইড-ফিল্ড মিলিমিটার কন্টিনুয়াম ম্যাপিং]। অ্যাস্ট্রন. অ্যাস্ট্রোফিজিক্স.৩৩৬: ১৫০–১৭২। বিবকোড:1998A&A...336..150M 
  36. স্টেহলার, স্টিভেন ডব্লিউ .; শু, ফ্র্যাংক এইচ.; টাম, রোনাল্ড ই. (১৯৮০)। "দি ইভোলিউশন অফ প্রোটোস্টারস: ২ দ্য হাইড্রোস্ট্যাটিক কোর" [আদিনক্ষত্রগুলির বিবর্তন: দুই উদ্স্থিতি অন্তঃস্থল]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল২৪২: ২২৬–২৪১। ডিওআই:10.1086/158459বিবকোড:1980ApJ...242..226S 
  37. নাকামোতো, তাইশি; নাকাগাওয়া, ইউশিৎসুগু (১৯৯৪)। "ফরমেশন, আর্লি ইভোলিউশন, অ্যান্ড গ্র্যাভিটেশনাল স্টেবিলিটি অফ প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্কস" [আদিগ্রহীয় চাকতিগুলির উদ্ভব, আদি বিবর্তন ও অভিকর্ষীয় স্থিরতা]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৪২১: ৬৪০–৬৫০। ডিওআই:10.1086/173678বিবকোড:1994ApJ...421..640N 
  38. ইয়র্কে, হ্যারল্ড ডব্লিউ.; বোডেনহেইমার, পিটার (১৯৯৯)। "দ্য ফরমেশন অফ প্রোটোস্টেলার ডিস্কস। থ্রি। দি ইনফ্লুয়েন্স অফ গ্র্যাভিটেশনালি ইনডিউসড অ্যাংগুলার মোমেন্টাম ট্রান্সপোর্ট অন ডিস্ক স্ট্রাকচার অ্যান্ড অ্যাপিয়ারেন্স" [আদিনাক্ষত্রিক চাকতিগুলির উদ্ভব। তিন। চাকতির গঠন ও আকৃতির উপর অভিকর্ষ প্রসূত কৌণিক ভরবেগ পরিবহণের প্রভাব]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৫২৫ (১): ৩৩০–৩৪২। ডিওআই:10.1086/307867 বিবকোড:1999ApJ...525..330Y 
  39. লি, চিন-ফেই; মান্ডি, লি জি.; রেইপার্থ, বো (২০০০)। "সিও আউটফ্লোজ ফ্রম ইয়াং স্টারস: কনফ্রন্টিং দ্য জেট অ্যান্ড উইন্ড মডেলস" [নবীন নক্ষত্রসমূহ থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ: জেট ও বায়ু মডেলগুলির মুখোমুখি]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৫৪২ (২): ৯২৫–৯৪৫। ডিওআই:10.1086/317056বিবকোড:2000ApJ...542..925L  |display-authors=ও অন্যান্য অবৈধ (সাহায্য)
  40. স্টাহ্লার, স্টিভেন ডব্লিউ. (১৯৮৮)। "ডিউটেরিয়াম অ্যান্ড দ্য স্টেলার বার্থলাইন" [ডিউটেরিয়াম ও নাক্ষত্রিক জন্মরেখা]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৩৩২: ৮০৪–৮২৫। ডিওআই:10.1086/166694বিবকোড:1988ApJ...332..804S 
  41. মোহান্তি, শুভঞ্জয়; জয়বর্ধন, রায়; বাসরি, গিবর (২০০৫)। "দ্য টি টউরি ফেজ ডাউন টু নিয়ারলি প্ল্যানেটারি মাসেস: এশেল স্পেকট্রা অফ ৮২ ভেরি লো মাস স্টারস অ্যান্ড ব্রাউন ডোয়ার্ফস" [প্রায় গ্রহীয় ভর পর্যন্ত টি টউরি পর্যায়: ৮২টি অত্যন্ত কম ভরবিশিষ্ট নক্ষত্র ও বাদামি বামনের এশেল বর্ণালি]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৬২৬ (১): ৪৯৮–৫২২। arXiv:astro-ph/0502155 এসটুসিআইডি 8462683ডিওআই:10.1086/429794বিবকোড:2005ApJ...626..498M 
  42. মার্টিন, ই. এল.; রেবোলো, আর.; মাগাজু, এ.; পাভলেংকো, ইয়া. ভি. (১৯৯৪)। "প্রি-মেইন সিকোয়েন্স লিথিয়াম বার্নিং" [প্রাক্-প্রধান পর্যায় লিথিয়াম দহন]। অ্যাস্ট্রোন. অ্যাস্ট্রোফিজ.২৮২: ৫০৩–৫১৭। arXiv:astro-ph/9308047 বিবকোড:1994A&A...282..503M 
  43. হার্টম্যান, লি; ক্যালভেট, ন্যুরিয়া; গুলব্রিং, এরিক; ডি’আলেসিও, পলা (১৯৯৮)। "অ্যাক্রেশন অ্যান্ড দি ইভোলিউশন অফ টি টউরি ডিস্কস" [টি টিউরি চাকতিসমূহের বৃদ্ধি ও বিবর্তন]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৪৯৫ (১): ৩৮৫–৪০০। ডিওআই:10.1086/305277 বিবকোড:1998ApJ...495..385H 
  44. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Shu1997 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  45. মুজারোল, জেমস; ক্যালভেট, নুরিয়া; হার্টম্যান, লি (২০০১)। "এমিশন-লাইন ডায়াগনস্টিকস অফ টি টউরি ম্যাগনেটোস্ফেরিক অ্যাক্রেশন. ২. ইমপ্রুভড মডেল টেস্টস অ্যান্ড ইনসাইটস ইনটু অ্যাক্রেশন ফিজিক্স" [টি টউরি চৌম্বকমণ্ডলীয় বৃদ্ধির নিঃসরণ-রেখা লক্ষণ-নির্ধারণ। ২। উন্নত মডেল পরীক্ষা এবং উপচয় পদার্থবিজ্ঞানের অন্তর্জ্ঞান]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৫৫০ (২): ৯৪৪–৯৬১। ডিওআই:10.1086/319779 বিবকোড:2001ApJ...550..944M 
  46. অ্যাডামস, ফ্রেড সি.; হলেনবাক, ডেভিড; লগলিন, গ্রেগরি; গোর্তি, উমা (২০০৪)। "ফোটোইভ্যাপোরেশন অফ সারকামস্টেলার ডিস্কস ডিউ টু এক্সটারনাল ফার-আলট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন ইন স্টেলার অ্যাগ্রিগেটস" [নাক্ষত্রিক সমষ্টিগুলিতে বহিঃস্থ দূর-অতিবেগুনি বিকিরণের দলে পরিনাক্ষত্রিক চাকতির আলোকবাষ্পীভবন]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৬১১ (১): ৩৬০–৩৭৯। arXiv:astro-ph/0404383 এসটুসিআইডি 16093937ডিওআই:10.1086/421989বিবকোড:2004ApJ...611..360A 
  47. হ্যারিংটন, জে. ডি.; উইলার্ড, রে (২৪ এপ্রিল ২০১৪)। "রিলিজ ১৪–১১৪ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ফরেন্সিজ আনকভার প্ল্যানেটারি ডিস্কস ইন নাসা'জ হাবল আর্কাইভ" [রিলিজ ১৪-১১৪ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ফরেন্সিজ নাসার হাবল অভিলেখাগারে গ্রহীয় চাকতি আবিষ্কার করল]। নাসা। ২০১৪-০৪-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৪-২৫ 
  48. মেগাথ, এস. টি.; হার্টমান, এল.; লুমান, কে. এল.; ফাজিও, জি. জি. (২০০৫)। "স্পিৎজার/আইআরএসি ফোটোমেট্রি অফ দ্য ρ ক্যামেলিনটিস অ্যাসোসিয়েশন" [ρ ক্যামেলিনটিস সংযোগের স্পিৎজার/আইআরএসি আলোকমিতি]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৬৩৪ (১): এল১১৩–এল১১৬। arXiv:astro-ph/0511314 এসটুসিআইডি 119007015ডিওআই:10.1086/498503বিবকোড:2005ApJ...634L.113M 
  49. চিক, কেনেথ এম.; ক্যাসেন, প্যাট্রিক (১৯৯৭)। "থার্মাল প্রসেসিং অফ ইন্টারস্টেলার ডাস্ট গ্রেইনস ইন দ্য প্রিমিটিভ সোলার এনভায়রনমেন্ট" [আদ্যকালীন সৌর পরিবেশে আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূলিকণার তাপীয় প্রক্রিয়াকরণ]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৪৭৭ (১): ৩৯৮–৪০৯। ডিওআই:10.1086/303700 বিবকোড:1997ApJ...477..398C 
  50. ক্লার, এইচ. এইচ.; বোদেনহাইমার, পি. (২০০৩)। "টারব্যুলেন্স ইন অ্যাক্রেশন ডিস্কস: ভোর্টিসিটি জেনারেশন অ্যান্ড অ্যাংগুলার মোমেন্টাম ট্রান্সপোর্ট ভায়া দ্য গ্লোবাল ব্যারোক্লিনিক ইনস্টেবিলিটি" [উপচয় চাকতিগুলিতে আলোড়ন: বিশ্বজনীন ব্যারোক্লিনিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে সান্দ্রতা উৎপাদন ও কৌণিক ভরবেগ পরিবহণ]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৫৮২ (২): ৮৬৯–৮৯২। arXiv:astro-ph/0211629 এসটুসিআইডি 119362731ডিওআই:10.1086/344743বিবকোড:2003ApJ...582..869K 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা