নীলিমা ইব্রাহিম
নীলিমা ইব্রাহিম (১১ অক্টোবর ১৯২১ — ১৮ জুন ২০০২)[১] হলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী। ১৯৫৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৭২ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। ১৯৭৪-৭৫ সালে তিনি বাংলা একাডেমির অবৈতনিক মহাপরিচালক ছিলেন।[২]
ড.নীলিমা ইব্রাহিম | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | নীলিমা রায় চৌধুরী ১১ অক্টোবর ১৯২১ |
মৃত্যু | ১৮ জুন ২০০২ | (বয়স ৮০)
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
শিক্ষা | পিএইচডি (বাংলা ভাষা ও সাহিত্য) |
মাতৃশিক্ষায়তন | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | লেখিকা, শিক্ষাবিদ |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | আমি বীরঙ্গনা বলছি, ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালি সমাজ ও বাংলা নাটক "অগ্নিস্নাত বঙ্গবন্ধুর ভষ্মচ্ছাদিত কন্যা আমি" "বাঙালী মানস ও বাংলা সাহিত্য" |
দাম্পত্য সঙ্গী | মোহাম্মদ ইব্রাহিম (বি. ১৯৪৫) |
পিতা-মাতা | প্রফুল্ল কুমার রায় চৌধুরী কুসুম কুমারী দেবী |
পুরস্কার | বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৯) একুশে পদক (২০০০) স্বাধীনতা পদক (২০১১) |
শৈশব ও শিক্ষাজীবনসম্পাদনা
নীলিমা ইব্রাহিম ১৯২১ সালের ১১ জানুয়ারি খুলনার বাগেরহাটে জমিদার প্রফুল্ল রায় চৌধুরী ও কুসুম কুমারী দেবীর কোলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৩৭ সালে খুলনা করনেশন গার্লস স্কুল থেকে ১৯৩৯ সালে কলকাতায় ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন থেকে যথাক্রমে স্কুল লেভেল ও ইন্টার লেভেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে কলা ও শিক্ষার উপরে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন, পরবর্তীতে ১৯৪৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যের এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা সাহিত্যে ডক্টরেটও অর্জন করবেন।[২]
কর্মজীবনসম্পাদনা
তিনি ছিলেন একজন পেশাগত কর্মী। তিনি যথাক্রমে খুলনা করনেশন গার্লস স্কুল, লোরেটো হাউস, ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন এবং অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন, যেখানে তিনি ১৯৫৬ সালে অধ্যাপক নিযুক্ত হন এবং ১৯৭২ সালে বাংলা অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলা একাডেমির চেয়ারপারসন হিসেবে এবং বিশ্ব নারী ফেডারেশনের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেন।[২][৩]
জাতীয় শিশু দিবসের প্রস্তাবকসম্পাদনা
১৯৯৩ সালের ২৫শে ডিসেম্বর তারিখে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শিশু সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার জাতীয় সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ই মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব করেন নীলিমা ইব্রাহিম।[৪] ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মত বেসরকারীভাবে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
কাজসম্পাদনা
উপন্যাসসম্পাদনা
- বিশ শতকের মেয়ে ১৯৫৮
- এক পথ দুই বাক ১৯৫৮
- কেয়াবন সঞ্চারিনী ১৯৫৮
- বহ্নিবলয় ১৯৮৫
নাটকসম্পাদনা
- দুইয়ে দুইয়ে চার ১৯৬৪
- যে অরণ্যে আলো নেই(মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক) ১৯৭৪
- রোদজ্বলা বিকেল ১৯৭৪
- সূর্যাস্তের পর
- নব মেঘদূত
- রমনা পার্কে
প্রবন্ধসম্পাদনা
- আমি বীরাঙ্গনা বলছি
- শরৎ প্রতিভা
- বাংলার কবি মধুসূদন
- শতাব্দীর অন্ধকারে (সাদা)
- বিন্দু-বিসর্গ
- অগ্নিস্নাত বঙ্গবন্ধুর ভস্মাচ্ছাদিত কন্যা আমি (মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক)
- A War Heroine: I Speak (মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তক স্মৃতিচারণ)
ভ্রমণ
শাহি এলাকার পথে পথে
বস্টনের পথে
পুরস্কার ও সম্মাননাসম্পাদনা
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৯)
- জয় বাংলা পুরস্কার (১৯৭৩)
- মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার (১৯৮৭)
- লেখিকা সংঘ পুরস্কার (১৯৮৯)
- বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী স্মৃতি পদক (১৯৯০)
- অনন্য সাহিত্য পদক (১৯৯৬)
- বেগম রোকেয়া পদক (১৯৯৬)
- বঙ্গবন্ধু পুরস্কার (১৯৯৭)
- শেরে বাংলা পুরস্কার (১৯৯৭)
- থিয়েটার সম্মাননা পদক (১৯৯৮)
- একুশে পদক (২০০০)
- স্বাধীনতা পদক (২০১১)
মৃত্যুসম্পাদনা
অধ্যাপিকা নীলিমা ইব্রাহিম ২০০২ সালের ১৮ জুন মৃত্যুবরণ করেন।[৩]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, সম্পাদনা: অঞ্জলি বসু, ২য় খণ্ড, চতুর্থ সংস্করণ, সাহিত্য সংসদ, ২০১৫, কলকাতা
- ↑ ক খ গ "ইব্রাহিম, নীলিমা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৭।
- ↑ ক খ মল্লিক, রঞ্জন (২০২০-০৬-১৭)। "ড. নীলিমা ইব্রাহিম: একটি নক্ষত্র"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৭।
- ↑ "জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে যেভাবে জাতীয় শিশু দিবস প্রবর্তিত হলো"। Bangabandhu Shishu Kishore Mela (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৩-০১। ২০২২-০৫-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-১২।