হিন্দু ধর্মে নীলা একজন দেবী। তাকে নীলিমা বা নীলমান্ত্র নামেও অভিহিত করা হয়। তিনিই শনি দেবের প্রথম স্ত্রী এবং কুলিগ্নার মাতা। দেবী নীলা শনি দেবের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে৷ তিনি মূলত নীলকান্তমণি রত্মপাথরের দেবী। দেবী নীলা ব্রহ্মার পঞ্চমুখেরও ক্ষমতা ধারণ করে৷ তাছাড়াও তার পুত্র কুলিগ্না একজন ঋষি

নীলিমা
নীলকান্তমণির দেবী
দেবনাগরীनीला
সংস্কৃত লিপ্যন্তরNīlā
অন্তর্ভুক্তিদেবী, শনি গ্রহ
আবাসশনি গ্রহের অভ্যন্তরে
মন্ত্রॐ माशाश्व तैलै विमलेन्द्रनीलं तिलाः कुलित्था महिषी च लोहम्।
অস্ত্রকুড়াল
ব্যক্তিগত তথ্য
সঙ্গীশনি
সন্তানকুলিগ্না (পুত্র)

সৃষ্টি সম্পাদনা

হিন্দু ধর্ম মতে, নীলা ও শনিকে একই সময়ে সৃষ্টি করা হয়েছিল। মহাদেব শিব তাদের সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু শনি ছিল সাকারাত্মা শক্তির (ধনাত্মক শক্তি) আধার। অপর দিকে নীলা ছিল নিরাকারাত্মা শক্তির (ঋণাত্মক শক্তি) আধার। নীলা প্রথমে শক্তি রূপে বিরাজমান ছিল। এ সময়ে ভগবান বিশ্বকর্মা তার লোকে নীলাকে আটক করে। প্রায় ১২ বছর পর নীলা তার দেহপ্রাপ্ত হয়৷ এ সময় শনির শত্রু রাহু, ইন্দ্র, সংজ্ঞা নীলাকে ভুল বোঝায়৷ নীলা শনির প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং যুদ্ধ ঘোষণা করে৷ প্রথম দিকে নীলা শনির শত্রু ছিল। যদিওবা পরে নীলা তার ভুল বুঝতে পারে।

শনি ও নীলা সম্পাদনা

প্রথমে নীলা শনির ব্যাপারে ভুল বুঝেছিল। শনির শত্রুরা নীলাকে ভুল বুঝিয়েছিল। তারা নীলার শক্তি ব্যবহার করে শনিকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল৷ নীলা শনিকে আক্রমণ করে এবং অবরুদ্ধও করে৷ কিন্তু শনি তাকে তার ভুল বোঝাতে সক্ষম হয়। শনির শক্তির আধার যে নীলার ক্ষমতা এটি বুঝতে পেরে নীলা এই যুদ্ধ সমাপ্ত করে। পরবর্তীতে নীলা তাকে এবং তার সকল শক্তিকে শনিতে সমার্পিত করে শনির অভ্যন্তরে বাস করতে শুরু করে।

নীলা ও নীলা দেবী সম্পাদনা

নীলা নামে হিন্দু ধর্মে আরো একটি দেবী রয়েছেন৷ যিনি শ্রী বিষ্ণুর তৃতীয় সহধর্মিণী ছিলেন। নীলা দেবী ভগবান বিষ্ণুর প্রথম স্ত্রী ভূদেবীর সাথে একাত্ব হয়ে বিরাজ করেন। বেদের নীলা সূক্তে নীলা দেবীর গুণগান করা হয়েছে। কৃষ্ণ অবতারের সময় নীলা দেবী নাপ্পিনাই রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন। তারা দুজনে আলাদা সত্তা তবে কিছু ধার্মিক দৃষ্টিকোণ হতে মিল পাওয়া গেছে। যেমন- নীলা দেবী শ্রী বিষ্ণুর চেয়ে বয়সে বড়৷ এ কারণে তাকে তাকে জেষ্ঠাদেবীও বলা হয়ে থাকে। এ সময় বিষ্ণুকে ভগবান শনির সাথেও তুলনা করা হয়। নীলা দেবী বয়সে বড় হওয়ার জন্য তৃতীয় স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও প্রথম স্ত্রী ভূদেবীর সাথে একাত্ম হয়ে তিনি ডান পাশে অবস্থান করেন এবং লক্ষ্মী বাম পাশে অবস্থান করেন। নীলা ও ভূদেবী হিন্দু ধর্মে সহনশীলতা ও বাধার প্রতীক। নীলা দেবী ভগবান বিষ্ণুর সাধারণ ও সহজতার প্রতীক। অন্যদিকে ভূদেবী ভগবান বিষ্ণুর পালনকর্তা গুণটির প্রতীক৷ শেষত শ্রী লক্ষ্মী ভগবান বিষ্ণুর মহানুভবতার রূপায়ক।

জনপ্রিয় গণমাধ্যম সম্পাদনা

কালার্স টিভির তৎকালীন ধারাবাহিক অনুষ্ঠান কর্মফলদাতা শনিতে দেবী নীলার প্রাথমিক জীবন চিত্রিত করা হয়েছে। দেবী নীলা চরিত্রে অভিনেত্রী জান্নাত জুবায়ের রহমানি অভিনয় করেন।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা