নাগলক্ষ্মী ( সংস্কৃত: नागलक्ष्मी ) হলেন শেষনাগের (নাগরাজ ) সহধর্মিণী। শেষনাগ হিন্দু পৌরাণিক কাহিনীতে বিষ্ণুর দুটি বাহনের একজন। নাগলক্ষ্মীকে ক্ষীর সাগর নামক ঐশ্বরিক সাগরের রূপ মনে করা হয়। [১]

নাগলক্ষ্মী
অন্তর্ভুক্তিবৈষ্ণবধর্ম
আবাসক্ষীর সাগর
ব্যক্তিগত তথ্য
দম্পত্য সঙ্গীশেষ
সন্তানসুলোচনা

নাগলক্ষ্মীর কিংবদন্তি প্রধানত গর্গ সংহিতায় পাওয়া যায়। গর্গ সংহিতার বলভদ্র খণ্ডের তৃতীয় অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বাপরে তিনি বলরামের স্ত্রী রেবতী এবং ত্রেতাযুগে লক্ষ্মণের স্ত্রী ঊর্মিলা রূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কিছু ঐতিহ্যে, রেবতী ও ঊর্মিলাকে শেষনাগের রূপ মনে করা হয়। [২] [৩]

ঐতিহ্যে যেখানে বলরামকে বিষ্ণুর সাথে চিহ্নিত করা হয়েছে সেখানে রেবতীকে লক্ষ্মীর রূপ বিবেচনা করা হয়। [৪]

গর্গ সংহিতা সম্পাদনা

গর্গ সংহিতায়, ঋষি প্রদীপিক নাগলক্ষ্মীর গুণাবলী বর্ণনা করেছেন: [৫]

এরপর, দীপ্তিময়ী নাগলক্ষ্মী অনন্ত শরৎতকালীন পূর্ণচন্দ্রের ন্যায় শোভিত হয়ে, একটি বহুমূল্যবান রথে তার লক্ষাধিক সহচরীর সাথে আগমন করলেন। তার তেজ ছিল সদা বর্ধমান। তিনি মহান সংকর্ষণের নিকট এসে তার ইচ্ছা প্রকাশ করে বললেন, প্রভু, আমিও পৃথিবীতে আপনার সাথে যেতে চাই। আপনার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার চিন্তা আমাকে এত গভীরভাবে পীড়িত করবে যে আমি তা সহ্য করতে পারবো না। আবেগাআপ্লুত হয়ে পড়েন নাগলক্ষ্মী।

ভগবান অনন্ত (শেষনাগ) যিনি সমগ্র মহাবিশ্বের সমস্ত কারণের পরম কারণ, যাঁর স্বভাব ভক্তদের দুঃখ দূর করা, যাঁর ঐশ্বরিক রূপ মহান সর্প ঐরাবতের মতো, তিনি তাঁর প্রিয়তমাকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। তিনি বললেন, হে রম্ভোরু! দুঃখ করো না। পৃথিবীতে অবতরণ করে রেবতীর দেহের সাথে একত্রীভুত হও। সেখানে তুমি আমার সেবা করবে।

এই প্রকার বাক্য শুনে নাগলক্ষ্মী জিজ্ঞেস করলেন, রেবতী কে ? সে কার কন্যা, কোথায় তার বাস? আমাকে বিস্তারিত বলুন। একথা শুনে ভগবান অনন্ত হাসিমুখে বললেন, এটা সৃষ্টির শুরুর কাহিনী। আমি কদ্রুর গর্ভ থেকে ঋষি কশ্যপের পুত্র হিসাবে জন্মগ্রহণ করে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছিলাম।

— গর্গ সংহিতা, অধ্যায় ৩

উপাসনা সম্পাদনা

অনন্তঙ্কভু নাগলক্ষ্মী মন্দিরটি কেরালার তিরুবনন্তপুরমে অবস্থিত। এটি পরিবেশগত সংবেদনশীলতা ও সর্পের জন্য পরিচিত। মন্দিরটি নাগলক্ষ্মী ও নাগরাজ অনন্তনের প্রাচীন ১০০০ বছরের পুরানো মূর্তির একমাত্র পবিত্র উপবন (সুর্পকাভু) হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। এই মন্দিরটি কেরালার একমাত্র নাগলক্ষ্মী মন্দির। [৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Garga Saṁhita (ইংরেজি ভাষায়)। Rasbihari Lal & Sons। ২০০৬। আইএসবিএন 978-81-87812-98-2 
  2. Raj, Selva J.; Dempsey, Corinne G. (১২ জানুয়ারি ২০১০)। Sacred Play: Ritual Levity and Humor in South Asian Religions (ইংরেজি ভাষায়)। State University of New York Press। আইএসবিএন 978-1-4384-2981-6 
  3. Śrīgargasaṃhitā: Kīrtibhāṣāsārasahitā (সংস্কৃত ভাষায়)। Vyāsa Bālābakṣa Śodhasaṃsthāna। ২০০০। 
  4. Gupta, Sanjukta (১৯৭২-০১-০১)। LAKSMI TANTRA (ইংরেজি ভাষায়)। Brill Archive। পৃষ্ঠা 47। 
  5. Swami, HH Lokanath (২০ আগস্ট ২০২০)। व्रजमण्डल दर्शन: तीस दिवसीय परिक्रमा के अनुभव (হিন্দি ভাষায়)। Padayatra Press। আইএসবিএন 978-93-5267-307-0 
  6. "Ananthankavu Naga Lakshmi Temple"Holy Prasadam