দুর্গামোহন দাশ
দুর্গামোহন দাশ (নভেম্বর ১৮৪১ - ডিসেম্বর ১৮৯৭) একজন সমাজ সংস্কারক এবং ঊনবিংশ শতকের বাংলার নবজাগরণের একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব।
দুর্গামোহন দাশ | |
---|---|
জন্ম | ১৮৪১ |
মৃত্যু | ১৮৯৭ (বয়স ৫৫–৫৬) রাঁচি, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি |
জাতীয়তা | বাঙালি |
পেশা | আইনজীবী |
দাম্পত্য সঙ্গী | ব্রহ্মময়ী দেবী |
প্রথম জীবন ও পরিবার
সম্পাদনাদুর্গামোহন দাশের আদি নিবাস ও জন্মস্থান বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকার বিক্রমপুরের(বর্তমান মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার) তেলিরবাগ গ্রামের বিখ্যাত দাশ পরিবারে । তার বাবার নাম কাশীশ্বর দাশ । দুর্গা মোহন দাশের ভাইয়ের নাম ভুবন মোহন দাস যিনি দেশ বন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের বাবা।অর্থাৎ চিত্তরঞ্জন দাশ দুর্গা মোহন দাশের ভাতিজা। দাশ পরিবারটি মূলত আইনজীবী পরিবার ছিল। তার বাবার কর্মস্থল বরিশালে চৌদ্দ বছর বয়সে প্রদর্শনী বৃত্তিলাভ করে তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়া আরম্ভ করেন । ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে আইনের প্রথম পরীক্ষা লাইসেন্সিয়েট অফ ল উত্তীর্ণ হয়ে তিনি কলকাতা সদর আদালতে আইনজীবী হিসাবে কাজ আরম্ভ করেন । ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে বরিশালে গিয়ে সরকারি উকিল হন । ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় এসে ওকালতি আরম্ভ করে ক্রমে প্রতিষ্ঠা পান । তার পুত্রদের মধ্যে এস.আর. দাশ এবং বিচারপতি জ্যোতিষরঞ্জন দাশের নাম উল্লেখযোগ্য । অবলা বসু এবং সরলা রায় তার দুই কন্যা । বিখ্যাত বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু এবং দার্শনিক প্রসন্নকুমার রায় তার দুই জামাতা । দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ তার ভ্রাতুষ্পুত্র । [১]
সমাজসেবা
সম্পাদনা১২৭১ বঙ্গাব্দে তার প্রচেষ্টাতে বরিশালে দুটি কায়স্থ বালবিধবার আবার বিবাহ হয় । পূর্ববঙ্গে এই প্রচেষ্টা ছিল প্রথম । এর জন্য তাকে বহু সামাজিক এবং আর্থিক পীড়ন সহ্য করতে হয় । পরে তার চেষ্টায় বরিশালে আরো কয়েকজন বিধবার বিবাহ হয় । বাবার মৃত্যুর পর তিনি অল্পবয়স্কা বিধবা সৎমার আবার বিবাহ দিয়েছিলেন । নিজে বিপত্নীক হবার পর অতুলপ্রসাদ সেনের বিধবা মা কে বিবাহ করেন । ১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আইন তৈরি হলে এইরকম বিবাহের জন্য অন্যতম ভারপ্রাপ্ত কর্মচারী নিযুক্ত হন । [১]
কলকাতায় আনন্দমোহন বসু, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়, শিবনাথ শাস্ত্রী, রজনীনাথ রায় প্রমুখদের সাথে স্ত্রীশিক্ষা এবং মেয়েদের উন্নতিবিধানে নানা কাজ করেন । উদ্ধারপ্রাপ্ত বালবিধবা এবং কুলীন মেয়েদের নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিতেন । এই সমস্ত বালিকাদের শিক্ষার জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দে হিন্দু মহিলা বিদ্যালয় এবং এটি বন্ধ হবার পর ১ জুন ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয় তাদের মিলিত চেষ্টায় স্থাপিত হয়েছিল । [১]
ব্রাহ্ম ধর্ম
সম্পাদনাপ্রধানত তার প্রচেষ্টায় ও অর্থসাহায্যে বরিশাল ব্রাহ্মমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । কলকাতায় নব্য ব্রাহ্মদের একটি ছোট দলের তিনি নেতা ছিলেন । তিনি সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা ও সদস্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন । [১]
রাজনীতি
সম্পাদনা১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা পৌরসভার সদস্য হন । ভারতসভার তিনি অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন । [১]