দারুল উলুম আহসানিয়া কামিল মাদ্রাসা
দারুল উলুম আহসানিয়া কামিল মাদ্রাসা নারিন্দা পুরাতন ঢাকা শহরের গেন্ডারিয়া থানার অভ্যন্তরে অবস্থিত একটি আলিয়া মাদ্রাসা। ১৮৭১ সালে ক্বেবলা শাহ আহসানুল্লাহ নামে এক আধ্যাত্নিক সাধক এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বর্তমানে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত একটি কামিল মাদ্রাসা।[১] এটি ঢাকা সায়দাবাদ বাসস্ট্যান্ড এবং সদরঘাট লঞ্চঘাটের মাঝামাঝি অবস্থান গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দার ৩১,৪৭, ৪৯/বি শাহ সাহেব লেনে অবস্থিত। মাদ্রাসার ইআইআইএন নাম্বার ১০৮৫০৫ এবং মাদ্রাসা কোড ১১০৮০।[২] মাদ্রাসার দাখিল ও আলিম ক্লাস বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক পরিচালিত হয়। মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষের নাম মুফতি কাজী আবু জাফর মুহাম্মাদ হেলাল উদ্দীন।[৩]
![]() মাদ্রাসার লোগো | |
ধরন | এমপিও ভুক্ত |
---|---|
স্থাপিত | ১৮৭১ |
প্রতিষ্ঠাতা | ক্বেবলা শাহ আহসানুল্লাহ |
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ (২০০৬- ২০১৬) ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৬- বর্তমান) |
অধ্যক্ষ | আবু জাফর মুহাম্মাদ হেলাল উদ্দীন |
মাধ্যমিক অন্তর্ভুক্তি | বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড |
শিক্ষার্থী | আনু. ৬০০+ |
ঠিকানা | ৪৯/বি শাহ সাহেব লেন, নারিন্দা , , , |
শিক্ষাঙ্গন | শহুরে |
EIIN সংখ্যা | ১০৮৫০৫ |
ক্রীড়া | ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, ব্যাটমিন্টন |
এমপিও সংখ্যা | ২৬১৬১৩২৩০১ |
ওয়েবসাইট | http://108505.ebmeb.gov.bd/ |
ইতিহাস
সম্পাদনাদীর্ঘদিন পূর্ব বাংলা অঞ্চলে ব্রিটিশ শাসনের ফলের ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি দুর্বল হয়ে পরেছিলো। ঢাকা অঞ্চলে ইসলামি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে পূর্ববাংলা মশুরীখোলার শাহ সাহেব নামে পরিচিত, ক্বেবলা শাহ আহসানুল্লাহ ১৮৭১ সালে এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় মাদ্রাসাটি ঢাকার বংশাল রোডের একটি ভাড়া বাড়িতে অস্থায়ীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতো। মাত্র ৯ বছর পরে ১৮৮০ সালে কলকাতা মাদ্রাসা বোর্ড থেকে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯২৬ সালে মাদ্রাসাটির নাম পরিবর্তন করে দারুল উলুম হাম্মাদিয়া রাখা হয়। ১৯৫২ সালে মাদ্রাসাকে ভাড়া বাড়ি থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাস ৪৭ শাহ সাহেব লেনের লাল বিল্ডিং এ স্থানান্তর করা হয়। ১৯৬৪ সালে মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন দারুল উলুম আহসানিয়া রাখা হয়। এরপর ১৯৯৯ সালে মাদ্রাসাটিকে বর্তমানের অবস্থানে (৪৯/বি শাহ সাহেব লেন) স্থায়ীভাবে স্থানান্থর করা হয়।
২০০৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী আইন, ২০০৬ অনুসারে বাংলাদেশের বাংলাদেশের ১,০৮৬টি ফাযিল (স্নাতক) ও ১৯৮টি কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদ্রাসার সাথে এই মাদ্রাসাটিও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয়।[৪] এরপরে ২০১৭ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলে, মাদ্রাসাটি সেখানে স্থানান্তরিত হয়।[৫]
শিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাএই মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম ও প্রশাসনিক কার্যক্রম হযরত শাহ আহসানুল্লাহ রহ. কমপ্লেক্স দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। মাদ্রাসার সভাপতির নাম মাওলানা শাহ মুহাম্মাদ আহছানুজ্জামান, তিনি মশুরীখোলা দরবার শরীফের পীর এবং হযরত আহসানুল্লাহ রহ. কমপ্লেক্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। প্রাথমিক অবস্থায় ১৮৭১ সালে মাদ্রাসাটি একটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা হিসাবে কার্যক্রম শুরু করে। এটি দীর্ঘকাল একটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা হিসাবেই প্রতিষ্ঠিত ছিলো, প্রায় ১০০ বছর পরে ১৯৮১ সালে মাদ্রাসায় দাখিল শ্রেণী চালু করা হয়। এরপরে ১৯৮৫ সালে আলিম শ্রেণী ও ১৯৮৭ সালে ফাজিল শ্রেণী চালু করা হয়। এরপরে মাদ্রাসাটি কামিল শ্রেণী চালু করার অনুমতি লাভ করে। এই মাদ্রাসায় ৪১ জন শিক্ষক এবং ৬০০ এর অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। মাদ্রাসায় ৯ তলা বিশিষ্ট ভবনে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
শাখা প্রতিষ্ঠান
সম্পাদনাদারুল উলুম আহসানিয়া কামিল মাদ্রাসা ও হযরত আহসানুল্লাহ রহ. কমপ্লেক্সের অধীনে সারা বাংলাদেশে ১৭টি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে থাকে। এগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- আহসানিয়া এতিমখানা,
- লতিফিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা,
- দারুল উলূম আহসানিয়া দাখিল মাদরাসা, সাভার।
সুযোগ-সুবিধা
সম্পাদনাএই মাদ্রাসায় গ্রন্থাগারিক, আবাসিক সুবিধা সহ নানা সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এই মাদ্রাসায় প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়ে থাকে।[৬] সাথে এগুলোর মধ্যে অন্যতম
- গ্রন্থাগার: মাদ্রাসা গ্রন্থাগারে আরবি, বাংলা, উর্দু, ফার্সি ও ইংরেজি ভাষায় প্রায় ৫ হাজার বই রয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এই বই নিয়ে পাঠ করতে পারে।
- ছাত্রাবাস: মাদ্রাসায় আবাসন ব্যবস্থা ভবনের নাম আহসানিয়া এতিমখানা। এই ছাত্রাবাসে একটি পাঁচতলা ইটের ভবন এবং অন্যান্য ৪টি টিনসেড বিল্ডিং রয়েছে।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি নোটিশ" (পিডিএফ)। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। ৬ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২২।
- ↑ "Darul Ulum Ahsania Fazil Madrasah - Sohopathi | সহপাঠী" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৭-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২১।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "পবিত্র শবে মিরাজ পালিত হচ্ছে"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২১।
- ↑ "আলিয়া মাদরাসার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ"। lekhapora24.net। ২০২১-০৮-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৭।
- ↑ "মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে প্রত্যাশা"। SAMAKAL (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৬-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১০।
- ↑ "দারুল উলুম আহসানিয়া কামিল মাদ্রাসার বার্ষিক ওয়াজ"। যায়যায়দিন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২১।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ফেসবুকে মাদ্রাসা