দক্ষিণ কানাড়া জেলা

দক্ষিণ কানাড়া ১৩°০০′ উত্তর ৭৫°২৪′ পূর্ব / ১৩.০০° উত্তর ৭৫.৪০° পূর্ব / 13.00; 75.40 স্থানাঙ্কে অবস্থিত ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সীর একটি জেলা৷ [২] পূর্বতন এই জেলাটি বর্তমানে তিনটি জেলা তথা কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ কন্নড়উড়ুপি জেলা এবং কেরালা রাজ্যের কাসারগড় জেলায় বিভক্ত৷ জেলাটি মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির জাতিগতভাবে সবচেয়ে বিমিশ্রিত জেলা ছিলো, যেখানে মূখ্য ভাষা হিসাবে তুলু, কোঙ্কণী, উর্দু, বেয়ারি, কন্নড় এবং মালয়ালম ভাষা বলা হতো৷ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে এটির দক্ষিণ কন্নড় নাম অনুসৃত হয়৷

দক্ষিণ কানাড়া
ব্রিটিশ ভারতের জেলা
স্থানাঙ্ক: ১৩°০০′ উত্তর ৭৫°২৪′ পূর্ব / ১৩.০০° উত্তর ৭৫.৪০° পূর্ব / 13.00; 75.40
রাষ্ট্র ভারত
রাজ্যকর্ণাটক, কেরল
আয়তন
 • মোট৮,৪৪১ বর্গকিমি (৩,২৫৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০০১)[১]
 • মোট৩০,০৫,৮৯৭
 • জনঘনত্ব৩৫৬.১/বর্গকিমি (৯২২/বর্গমাইল)
ভাষা
 • প্রশাসনিককন্নড়, তুলু
 • প্রচলিত ভাষাতুলু, কোঙ্কণী, উর্দু, বেয়ারি, কুন্দগন্নড়
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০)
যানবাহন নিবন্ধনKA-19 (কেএ-১৯), KA-20 (কেএ-২০), KA-21 (কেএ-২১), KA-62 (কেএ-৬২), KL-14 (কেএল-১৪)
বৃহত্তম নগরমাঙ্গলুরু

১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও মহীশূর শার্দুল টিপু সুলতানের মধ্যে চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ সম্পন্ন হলে টিপু সুলতান পরাজিত হন। ফলস্বরূপ দক্ষিণ কানাড়া‌ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। এর সাথে উত্তর কানাড়া একত্রিত করে ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি র কানাড়া জেলা গঠন করা হয়। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে পূর্বতন কানাড়া জেলাবিভক্ত করে উত্তর কানাড়া এবং দক্ষিণ কানাড়া নামে দুটি নতুন জেলা গঠন করা হয়। উত্তর কানাড়াকে বোম্বে প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত করা হলেও দক্ষিণ কানাড়া মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অংশ রয়ে যায়। ১০,৪১০ বর্গকিলোমিটার (৪,০২১ মা) জুড়ে বিস্তৃত জেলাটির প্রশাসনিক সদর দপ্তর মাঙ্গলুরু শহরে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

তালুক সম্পাদনা

 
১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের দক্ষিণ কানাড়া জেলার মানচিত্র। ওই সময়ে কুন্দপুরা তালুক উত্তর কানাড়া জেলার অংশ ছিল কিন্তু ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে জেলাটি বোম্বে প্রেসিডেন্সির অংশ হওয়ার পূর্বে এই তালুক দক্ষিণ কানাড়া জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

জেলাটি যে ছয়টি তালুকে বিভক্ত ছিল সেগুলি হল:

জনতত্ত্ব সম্পাদনা

ঐতিহাসিক জনসংখ্যা
বছরজন.±%
১৮৭১ ৯,১৮,৩৬২—    
১৮৮১ ৯,৫৯,৫১৪+৪.৫%
১৮৯১ ১০,৫৬,০৮১+১০.১%
১৯০১ ১১,৩৪,৭১৩+৭.৪%
উৎস: ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া, চতুর্দ্দশ খণ্ড[৩]
 
দক্ষিণ কানাড়া মন্দির স্তম্ভ

১৯০১ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ কানাড়া জেলার জনসংখ্যা ছিল ১১,৩৪,৭১৩ জন যার ৮১ শতাংশ ছিলেন হিন্দু ১১ শতাংশ মুসলিম এবং ৭ শতাংশ খ্রিস্টান। তুলু ভাষা ছিল সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা সমগ্র জেলার ৪৪ শতাংশ মানুষের মাতৃভাষা ছিল। এরপরে ছিল কন্নড় ভাষা যা ছিল জেলার সমগ্র জনসংখ্যা ২৩ শতাংশ। প্রায় ১৯ শতাংশ ছিলেন কোঙ্কণী ভাষী। এছাড়া ৯ শতাংশ লোক তাদের মাতৃভাষা মালয়ালম বলে উল্লেখ করেন। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দের দক্ষিণ কানাড়া জেলার জনঘনত্ব ছিল ১০৯ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (২৮২ জন/বর্গমাইল)।

১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ভারতে ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া এই জেলাটির সহিত তাঞ্জোর জেলা, বিশাখাপত্তনম জেলাকে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে অবস্থিত সর্বাধিক ব্রাহ্মণ বসবাসকারী জেলা হিসেবে চিহ্নিত করে। [৩]

জেলাটিতে বিল্লবর এবং বন্ত সম্প্রদায়ের লোকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই জায়গাটি ছিল মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি তে অবস্থিত সর্বাধিক শতাংশ ব্রাহ্মণ বসবাসকারী জেলা যা সমগ্র জেলার জনসংখ্যার ১২ শতাংশ ছিল। [৩]

এই অঞ্চলের আদিবাসীরা হলেন তুলু ভাষাভাষীরা (বন্ত, বিল্লবর, মোগবীর, কুলাল, দেবদিগ, জোগি)৷ এই অঞ্চলে সর্বপ্রথমে যে ব্রাহ্মণ গোষ্ঠী বসবাস শুরু করে তারা মূলত ছিলেন স্থানিক ব্রাহ্মণ, তারা পরে তুলু ব্রাহ্মণ পরিচিতি পান৷ এছাড়া ব্রাহ্মণদের মধ্যে ছিলেন শিবল্লী, সারস্বত, হব্যক, কোটাহা উপজাতি, মহর এবং পার্বত্য কোরগ জনজাতি৷[৪]

প্রশাসন সম্পাদনা

জেলাটি একজন জেলাশাসক দ্বারা পরিচালিত হতো। প্রশাসনিক সুবিধার জন্য জেলাটি তিনটি মহাকুমা উপজেলায় বিভক্ত ছিল:

  • কুন্দপুরা উপজেলা: কুন্দাপুরা এবং উড়ুপি তালুক
  • মাঙ্গলুরু উপজেলা: মাঙ্গলুরু এবং আমিনদিভি দ্বীপপুঞ্জ
  • পুত্তুর উপজেলা: উপ্পিনঙ্গাড়ি এবং কাসারগড় তালুক

জেলাটিতে দুটি পৌরনিগম ছিল যথা ম্যাঙ্গালোর এবং উড়ুপি।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Census GIS India"। Census of India। ২০১৫-০৪-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-২৬ 
  2. Patsy Lozupone, Bruce M. Beehler, Sidney Dillon Ripley.(2004).Ornithological gazetteer of the Indian subcontinent, p. 82.Center for Applied Biodiversity Science, Conservation International. আইএসবিএন ১-৮৮১১৭৩-৮৫-২.
  3. The Imperial Gazetteer of India14Clarendon Press। ১৯০৮। 
  4. Silva, Severine; Fuchs, Stephan (১৯৬৫)। "The Marriage Customs of the Christians in South Canara, India"। Asian Folklore StudiesNanzan University24 (2): 2–3।