তাম-এ গিলাস
তাম-এ গীলাস (ফার্সি: طعم گيلاس; ইংরেজি: Taste of Cherry) আব্বাস কিয়ারোস্তামি পরিচালিত ইরানি চলচ্চিত্র যা ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায়। ছবিটিতে মিনিমালিজমের সুস্পষ্ট উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। কিয়ারোস্তামি এই ছবির জন্য কান চলচ্চিত্র উৎসবে পাম দোর অর্জন করেন।
তাম-এ গীলাস টেস্ট অব চেরি طعم گيلاس... | |
---|---|
পরিচালক | আব্বাস কিয়ারোস্তামি |
প্রযোজক | আব্বাস কিয়ারোস্তামি |
রচয়িতা | আব্বাস কিয়ারোস্তামি |
শ্রেষ্ঠাংশে | হোমায়ূন এরশাদী আবদোল রহমান বাগেরী আফশীন খোরশিদ বখতিয়ারী সফর আলী মোরাদী |
চিত্রগ্রাহক | হোমায়ূন পায়ওয়ার |
পরিবেশক | Zeitgeist Films |
মুক্তি | মে, ১৯৯৭ (কান চলচ্চিত্র উৎসব) ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ (নিউ ইয়র্ক চলচ্চিত্র উৎসব) ৩০ জানুয়ারি ১৯৯৮ (যুক্তরাষ্ট্র) ৫ জুন ১৯৯৮ (যুক্তরাজ্য) |
স্থিতিকাল | ৯৫ মিনিট |
দেশ | ইরান |
ভাষা | ফার্সি |
কাহিনী সূত্র
সম্পাদনাজনাব বাদী একজন মধ্যবয়স্ক ইরানি লোক। তিনি তেহরানের আশেপাশে গাড়ি চালিয়ে যে কোন একজন মানুষ খুঁজছেন যে তার একটি কাজ করে দিতে পারবে। বিনিময়ে তিনি তাকে অনেক অর্থ দেবেন। একসময় বোঝা যায় কাজটি হল তাকে সমাধিস্থ করা। তিনি সেই রাতেই আত্মহত্যা করবেন এবং মারা যাওয়ার পর তাকে সমাধিস্থ করার জন্যই কাউকে খুঁজছেন। ইতোমধ্যে এক পাহাড়ি বিরানভূমিতে তিনি নিজের কবর খুঁড়ে ফেলেছেন। তার মানে ঐ ব্যক্তির কাজ হবে কেবল ভোরে এসে তাকে মাটিচাপা দিয়ে যাওয়া। তিনি অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়ে এই কবরেই শুয়ে থাকবেন। একসময় মারা যাবেন। আর ভোরে এসে তাকে ঐ ব্যক্তি মাটিচাপা দিয়ে যাবে। কবরের পাশে কথামতো অর্থকড়ি-সহ তার গাড়ি থাকবে। মাটি চাপা দেয়ার পর ওই ব্যক্তি গাড়ি নিয়ে চলে যাবে।
ঘুরতে ঘুরতে তিনি তিনজনের দেখা পান। প্রথমজন এক কুর্দি সৈনিক যে কবর দেখামাত্রই দৌড়ে পালায়। সে মনে করে লোকটি পাগল হয়ে গেছে। দ্বিতীয় ব্যক্তি ইরানি হওজায় অধ্যয়নরত এক আফগান শিক্ষার্থী। ইসলামে আত্মহত্যা নিষেধ—কোরআনের আয়াত উল্লেখ করে এই ছাত্র তাকে তা বোঝানোর চেষ্টা করে। তৃতীয়জন ইরান জাতীয় জাদুঘরে কর্মরত এক বয়স্ক আজেরি চর্মসংরক্ষণবিদ। এই ভদ্রলোক তাকে আত্মহত্যা করতে নিরুৎসাহিত করেন। এই ব্যক্তি বলেন যে, তিনি নিজেও একবার দাম্পত্য কলহে জর্জরিত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। বেঁচে যাওয়ার পর তিনি বুঝেছিলেন জীবন অনেক মূল্যবান। তিনি আত্মহত্যার জন্য বেরিয়েছিলেন খুব ভোরে লম্বা এক দড়ি নিয়ে। তারপর তিনি উঠে পড়েন তুঁতগাছে দড়ি বাঁধতে। কৌতূহলবশত তিনি খেয়ে ফেলেন একটি তুঁতফল, তারপর আরেকটি, তারপর আরও একটি। এভাবে সকাল হয়ে যায় সুমিষ্ট তুঁতফল খেতে খেতে। সকালে স্কুলগামী বাচ্চারা আসে তুঁতগাছের নিচে, তাকে বলে গাছটি ঝাঁকিয়ে দিতে। বৃষ্টির মতো তুঁতফল ঝড়তে থাকে তখন, বাচ্চারা খুশি হয়ে পেটপুরে খায়। তারপর ওই লোক ভাবেন কেবল সামান্য তুঁতফল খাওয়ার জন্য হলেও পৃথিবীতে বাঁচা যায়! তারপর তার স্ত্রীর জন্য তিনি কিছু ফল নিয়ে বাসায় ফিরে যান। তারপরও আত্মহত্যা করতে চাইলে তিনি বাদীকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বাদী অনেক সময় ধরে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। গভীর রাত্তিরে একসময় কবরে গিয়ে শুয়ে পড়েন। তখনই বজ্রপাত শুরু হয়। বাদী কবর থেকে আকাশ দেখতে থাকেন। তিনি মারা গিয়েছেন কি-না তা পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় না। সিনেমা শেষ হয় ভোরের দৃশ্য দিয়ে। দেখা যায় ভোরবেলা সেই বিস্তীর্ণ পাহাড়ি এলাকা। সিনেমার শেষ দৃশ্যে “তাম-এ গীলাস” ছবিরই শুটিং হতে দেখা যায়।
প্রতিক্রিয়া
সম্পাদনাঅধিকাংশ সমালোচকই প্রশংসা করেছেন। রিভিউ সংগ্রাহক রটেন টম্যাটোস-এ এর রেটিং ৮১% অর্থাৎ শতকরা ৮১ জন সমালোচকই প্রশংসা করেছেন। ক্রাইটেরিয়ন কালেকশন ১৯৯৯ সালের ১লা জুন এটিকে তাদের এক্সক্লুসিভ ফিল্ম কালেকশনের অন্তর্ভুক্ত করেছে।