তক্ষক

সরীসৃপের প্রজাতি

তক্ষক (ইংরেজি: Gecko, বৈজ্ঞানিক নাম:Gekko gecko) গেকোনিডি গোত্রের একটি গিরগিটি প্রজাতি। পিঠের দিক ধূসর, নীলচে-ধূসর বা নীলচে বেগুনি-ধূসর। সারা শরীরে থাকে লাল ও সাদাটে ধূসর ফোঁটা। পিঠের সাদাটে ফোঁটাগুলি পাশাপাশি ৭-৮টি সরু সারিতে বিন্যস্ত। কমবয়সী তক্ষকের লেজে পরপর গাঢ-নীল ও প্রায় সাদা রঙের বলয় রয়েছে। মাথা অপেক্ষাকৃত বড়, নাকের ডগা চোখা ও ভোঁতা। চোখ বড় বড়, মণি ফালি গড়নের। লেজ সামান্য নোয়ানো। দৈর্ঘ্য নাকের ডগা থেকে পা পর্যন্ত ১৭ সেমি এবং লেজও প্রায় ততটা। তক্ষকের ডাক চড়া, স্পষ্ট ও অনেক দূর থেকে শোনা যায়; ডাকের জন্যই এই নাম। কক্‌কক্‌ আওয়াজ দিয়ে ডাক শুরু হয়, অতঃপর ‘তক্‌-ক্কা’ ডাকে কয়েক বার ও স্পষ্টস্বরে। এরা কীটপতঙ্গ, ঘরের টিকটিকি ছোট পাখি ও ছোট সাপ খেয়ে থাকে। ছাদের পাশের ভাঙা ফাঁক-ফোঁকড় বা গর্তে কিংবা গাছে বাস করে।

তক্ষক
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Reptilia
বর্গ: Squamata
উপবর্গ: Sauria
পরিবার: Gekkonidae
গণ: Gekko
প্রজাতি: G. gecko
দ্বিপদী নাম
Gekko gecko
(Linnaeus, 1758)
প্রতিশব্দ

Lacerta gecko Linnaeus, 1758

তক্ষক দক্ষিণ এশিয়ায় বিপর্যস্ত একটি প্রাণী। ব্যাপক নিধনই বিপন্ন হওয়ার কারণ। অনেকে ভুলক্রমে তক্ষককে বিষাক্ত সরীসৃপ হিসেবে চিহ্নিত করে। বাংলাদেশসহ মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওস, কাম্পুচিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীনফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৬০০ প্রজাতির তক্ষকের বাস। বাংলাদেশে প্রায় ২ প্রজাতির তক্ষক দেখা যায়। এশিয়ান প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ও আধুনিক চিকিৎসায় হাঁপানি, এইডস, ক্যান্সারের ওষুধ তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। কার্যত এ ঔষধ ও পরীক্ষা ফলপ্রসূ না হলেও তক্ষকের বিলুপ্তি ও শিকার চলছে অবৈধভাবে এবং অহরহ।

বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পাদনা

তক্ষক রাতে খুব পরিষ্কার দেখতে পায়। তক্ষকের অক্ষিগোলকে ট্রান্সপারেন্ট মেমব্রেন থাকে যা তাকে মানুষের চেয়ে ৩৫০ গুণ বেশি দৃষ্টিসম্পন্ন করেছে। তক্ষক আল্ট্রা-ভায়োলেট রশ্মিতেও (বেগুনি ও সবুজ) খুব পরিষ্কার দেখতে পায়। অন্যান্য আত্মরক্ষী প্রাণীদের মতো তক্ষকের ইন্দ্রিয়ক্ষমতা দাপুটে। এটির শরীরের লেজ, দাঁত, পা প্রভৃতি কোনোভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও তা আবার প্রাকৃতিকভাবে গজাতে পারে‌।