জেনারেল স্যার টিমোথি মে ক্রিসি (২১শে সেপ্টেম্বর ১৯২৩ - ৫ই অক্টোবর ১৯৮৬) ছিলেন একজন ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা, যিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং এবং সেইসাথে ওমানের সুলতানের সশস্ত্র বাহিনী বাহিনীর কমান্ডার হয়েছিলেন।

সার টিমোথি ক্রিসি
ডাকনাম"দ্য বুল"
জন্ম(১৯২৩-০৯-২১)২১ সেপ্টেম্বর ১৯২৩
মৃত্যু৫ অক্টোবর ১৯৮৬(1986-10-05) (বয়স ৬৩)
আনুগত্যযুক্তরাজ্য যুক্তরাজ্য
সেবা/শাখা ব্রিটিশ সেনাবাহিনী
কার্যকাল১৯৪২–১৯৮৫
পদমর্যাদাজেনারেল
সার্ভিস নম্বর৩৫০২০৬
ইউনিটদশম বেলুচ রেজিমেন্ট
রয়্যাল নরফোক রেজিমেন্ট
রয়্যাল অ্যাংলিয়ান রেজিমেন্ট
নেতৃত্বসমূহ১১ তম সাঁজোয়া ব্রিগেড ১৯৬৯–১৯৭০
কমান্ডার, সুলতানের সশস্ত্র বাহিনী, মাস্কাট এবং ওমান ১৯৭২–১৯৭৫
জিওসি উত্তর আয়ারল্যান্ড ১৯৭৭–১৯৭৯
কমান্ডার-ইন-চিফ, ইউকে ল্যান্ড ফোর্সেস ১৯৮০–১৯৮১
ডেপুটি কমান্ডার-ইন-চিফ এবং চিফ অফ দ্য ডিফেন্স স্টাফ, ওমানের সুলতানের সশস্ত্র বাহিনী ১৯৮১-১৯৮৫
যুদ্ধ/সংগ্রামদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
বর্ডার ক্যাম্পেইন, উত্তর আয়ারল্যান্ড ১৯৫৬
ধোফার বিদ্রোহ
অপারেশন ব্যানার
আডেন এমার্জেন্সি
পুরস্কারনাইট কমান্ডার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য বাথ
অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার

সেনাবাহিনীতে কর্মজীবন সম্পাদনা

ক্রিসি ১৯২৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ক্লিফটন কলেজ থেকে শিক্ষা লাভ করেন।[১] তিনি স্কুল ছেড়ে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ১৯৪২ সালে ১০ তম বালুচ রেজিমেন্টের জুনিয়র অফিসার হিসাবে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইতালি এবং গ্রীসে তাদের সাথে কাজ করেছিলেন। এরপর তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে স্থানান্তরিত হন এবং রয়্যাল নরফোক রেজিমেন্টে যোগদান করেন।[২]

১৯৫৫ সালে, তিনি ৩৯তম পদাতিক ব্রিগেডের একজন মেজর ছিলেন, এই বাহিনী মাউ মাউ বিদ্রোহের সময় কেনিয়াতে কাজ করেছিল। পরবর্তী বছরে, উত্তর আয়ারল্যান্ডে কর্মরত থাকার সময়, ১৯৫৬ আইআরএ সীমান্ত অভিযানে গিয়ে তাঁর একটি ভিন্ন ধরনের অপ্রচলিত যুদ্ধের অভিজ্ঞতা হয়েছিল। স্টাফ কলেজে একজন প্রশিক্ষক হিসাবে কিছুদিন কাজ করার করার পরে, তিনি ১৯৬৫ সালে নবগঠিত রয়্যাল অ্যাংলিয়ান রেজিমেন্টের ১ম ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বের দায়িত্বে উন্নীত হন এবং আডেন ইমার্জেন্সিতে পরিষেবা দেন।[২] তিনি তাঁর পরিষেবার জন্য ১৯৬৬ সালের জন্মদিনের সম্মানে (রানির আনুষ্ঠানিক জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠান) অফিসার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার অর্জন করেন।[৩]

সিনিয়র কমান্ড সম্পাদনা

আডেনের পর, তিনি রাইনের ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে ১১ তম সাঁজোয়া ব্রিগেডের কমান্ডের পদে উন্নীত পান, এই পদে তিনি ১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন। এরপর তিনি ১৯৭১ সালে রয়্যাল কলেজ অফ ডিফেন্স স্টাডিজে যোগদান করেন।[২] ১৯৭২ সালে, তিনি ওমানে মেজর-জেনারেল নিযুক্ত হন, যেখানে তিনি সুলতানের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার হিসাবে কাজ করেন।[২] নতুন সুলতান, কাবুস বিন সাইদ, স্যান্ডহার্স্টের রয়্যাল মিলিটারি কলেজে প্রশিক্ষণ লাভ করেছিলেন এবং ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছিলেন। ধোফার বিদ্রোহের সময় নিজের বাহিনীকে পুনরুজ্জীবিত করার অংশ হিসাবে সুলতান বিপুল সংখ্যক ব্রিটিশ সামরিক উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছিলেন। ওমানে ক্রিসির সময়কাল ফলপ্রসূ ছিল; তিনি দ্রুত সেনাবাহিনীর একটি কেন্দ্রীভূত কমান্ড প্রতিষ্ঠা করেন এবং ধোফারি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে উদ্যোগ নিতে সহায়তা করেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে তাঁর পূর্বের অভিজ্ঞতার তাঁকে সাহায্য করেছিল, কারণ ওমানি সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশ বেলুচিদের দ্বারা গঠিত। তিনি ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফিরে যান, এরপরে সামরিক অভিযান ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়।[২]

 
এসেক্সের সেন্ট অ্যান্ড্রু'স, বেলচ্যাম্প সেন্ট পল গির্জায় জেনারেল স্যার টিমোথি ক্রিসির সমাধিস্থল।

পদাতিক সেনাবাহিনীর অধিকর্তা হিসাবে কিছুদিন কাজ করার পরে,[২] ১৯৭৭ সালের ১লা নভেম্বর তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং হিসাবে স্যার ডেভিড হাউসের স্থলাভিষিক্ত হন।[৪]

একজন কমান্ডার হিসাবে তাঁর অভিজ্ঞতা ছিল মূলত ছোট আকারের "ঔপনিবেশিক যুদ্ধে" এবং সেই হিসেবে এই অবস্থানে তাঁর পরিষেবা বিতর্কিত ছিল। তাঁর লক্ষ্য ছিল দ্রুত ফলাফল পাওয়া। যে কোন সমস্যার একটি সামরিক সমাধান পাওয়া যাবে, তাঁর এই বিশ্বাস তাঁকে রয়্যাল আলস্টার কনস্ট্যাবুলারির কমান্ডার স্যার কেনেথ নিউম্যানের সাথে দ্বন্দ্বে ফেলে দিয়েছিল। ১৯৭৯ সালে যখন ওয়ারেনপয়েন্ট আকস্মিক হামলায় ১৮ জন সৈন্য নিহত হয়, তখন ক্রিসি দাবি জানান নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়ার জন্য। এইসময় নিউম্যানের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চরমে উঠেছিল। যাইহোক, উত্তর আয়ারল্যান্ডের সেক্রেটারি অফ স্টেট রয় মেসনের সাথে তাঁর কাজের একটি ভাল সম্পর্ক ছিল।[২] ১৯৭৯ সালের ১লা ডিসেম্বর লেফটেন্যান্ট-জেনারেল স্যার রিচার্ড লসন তাঁকে কমান্ডার হিসাবে প্রতিস্থাপন করেন।[৫]

তিনি ১৯৮০ সালে ইউকে ল্যান্ড ফোর্সেসের কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে নিযুক্ত হন, কিন্তু সুলতানের ব্যক্তিগত অনুরোধে কিছুদিন পরেই তিনি এই পদ ত্যাগ করে ওমানে ফিরে যান।[৬] ১৯৮১ সালে ওমানের সশস্ত্র বাহিনীর সুলতানে ডেপুটি কমান্ডার-ইন-চিফ এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ হওয়ার জন্য ক্রেসি অবসর পরিত্যাগ করেছিলেন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সুদূরপ্রসারী সংস্কার ও সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণের তত্ত্বাবধান করেছিলেন। অন্যান্য কাজের মধ্যে, পুনর্নবীকরণ করা ব্যবস্থা তাঁকে অস্ত্র সংগ্রহের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দিয়েছিল। সুলতানের অনুমোদনেই ব্রিটিশ সংস্থাগুলি অস্ত্রের অনেক চুক্তি পেয়েছিল। সম্ভবত প্রত্যাশিতভাবেই, ওমানে তাঁর ভূমিকা সেদেশে বিতর্কিত ছিল, অনেক বরিষ্ঠ ওমানি তাঁর পদ্ধতির সমালোচনা করেছিলেন।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Clifton College Register" Muirhead, J.A.O. ref no 11348: Bristol; J.W Arrowsmith for Old Cliftonian Society; April, 1948
  2. Obituary: The Times, 7 October 1986.
  3. "নং. 44004"দ্যা লন্ডন গেজেট (সম্পূরক) (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ জুন ১৯৬৬। 
  4. Bew, Paul; Gordon Gillespie (১৯৯৩)। Northern Ireland: A Chronology of the Troubles, 1968-1993Gill & Macmillan। পৃষ্ঠা 124। আইএসবিএন 0-7171-2081-3 
  5. Bew, Paul; Gordon Gillespie (১৯৯৩)। Northern Ireland: A Chronology of the Troubles, 1968-1993Gill & Macmillan। পৃষ্ঠা 136। আইএসবিএন 0-7171-2081-3  Note that the London Gazette announced the handover effective 8 January 1980.
  6. "King's College London website"Liddell Hart Centre for Military Archiveskcl.ac.uk। ১ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০১৭ 
সামরিক দপ্তর
পূর্বসূরী
ডেভিড হাউস
উত্তর আয়ারল্যান্ডে জিওসি ব্রিটিশ সেনাবাহিনী
১৯৭৭−১৯৭৯
উত্তরসূরী
রিচার্ড লসন
পূর্বসূরী
স্যার জন আর্চার
সি-ইন-সি, ইউকে ল্যান্ড ফোর্সেস
১৯৮০−১৯৮১
উত্তরসূরী
স্যার জন স্ট্যানিয়ার
সম্মানজনক পদবীসমূহ
পূর্বসূরী
জ্যাক ডাই
রয়্যাল অ্যাংলিয়ান রেজিমেন্টের কর্নেল
১৯৮২−১৯৮৬
উত্তরসূরী
স্যার জন আকেহার্স্ট