ঝর্ণা ধারা চৌধুরী

বাংলাদেশী সমাজকর্মী

ঝর্ণা ধারা চৌধুরী (১৫ অক্টোবর ১৯৩৮ - ২৭ জুন ২০১৯) ছিলেন একজন বাংলাদেশী সমাজকর্মী যিনি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার 'গান্ধী আশ্রম'-এর সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী[১] ও ২০১৫ সালে বাংলাদেশের একুশে পদক লাভ করেন।[২]

ঝর্ণা ধারা চৌধুরী
জন্ম১৫ অক্টোবর ১৯৩৮
মৃত্যু২৭ জুন ২০১৯(2019-06-27) (বয়স ৮০)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
শিক্ষাস্নাতক
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা কলেজ
পেশাসমাজকর্মী
পুরস্কারপদ্মশ্রী, একুশে পদক

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের কালুপুর গ্রামে ১৯৩৮ সালের ১৫ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবার নাম গান্ধীয়ান প্রমথ চৌধুরী ও মায়ের নাম আশালতা চৌধুরী। তিনি ১১ ভাইবোনের মধ্যে দশম।

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৯৫৪ সালে তার বাবা মারা যাওায়ার পর ১৯৫৬ সালে গান্ধীর প্রতিষ্ঠিত অম্বিকা কালিগঙ্গা চ্যারিটেবল ট্রাষ্টে (গান্ধী আশ্রম ট্রাষ্ট) যোগ দেন।[৩] ১৯৬০ সালে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সংসারত্যাগীদের সংগঠন চট্টগ্রামের প্রবর্তক সংঘে যোগদানের মাধ্যমে সরাসরি মানবসেবা নিয়োজিত হন। সমাজসেবার পাশাপাশি তিনি তার পড়ালেখাও চালিয়ে নিতে থাকেন। তিনি চট্টগ্রামের খাস্তগীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আগরতলায় ত্রাণ কাজে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৭৯ সালে পুনরায় গান্ধী আশ্রম ট্রাষ্টে ফিরে আসেন। ১৯৯০ সালের ১৩ জুন চারু চৌধুরীর মৃত্যুর পর তিনি ট্রাষ্টের সচিবের দায়িত্ব পান।

পুরস্কার সম্পাদনা

সমাজকর্মের স্বীকৃতি হিসাবে ১৯৯৮ সালে আন্তর্জাতিক ‘বাজাজ পুরস্কার’ লাভ করেন। ২০০২ সালে নারী উদ্যোক্তার স্বীকৃতি হিসেবে ‘অনন্যা’ পুরস্কার, সমাজসেবার জন্য ২০০৩ সালে নারীপক্ষ দুর্বার নেটওয়ার্ক, নিউইয়র্কের ওল্ড ওয়েস্টবেরি ইউনিভার্সিটির শান্তি পুরস্কার, শান্তি, সম্প্রীতি ও অহিংসা প্রসারে ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শান্তি পুরস্কার’ লাভ করেন। এছাড়া ২০০৮ সালে নোয়াখালী জেলা প্রশাসন থেকে ‘সাদা মনের মানুষ’ হিসেবে তিনি সম্মাননা লাভ করেন।[৩] ২০১৩ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী ও ২০১৫ সালে সমাজসেবায় একুশে পদক লাভ করেন।

অন্যান্য পুরস্কার
  • ২০১০ - শ্রীযুক্তা ঝর্ণাধারা চৌধুরীকে শ্রীচৈতন্য পদক
  • ২০১০ - চ্যানেল আই এবং রাধুনীর পক্ষ থেকে "কীর্তিমতী নারী"
  • ২০১১ - হরিয়ানা কর্তক ‘‘গান্ধী স্মৃতি শান্তি সদ্ভাবনা’’ পুরস্কার
  • ২০১৩ -বেগম রোকেয়া পদক[৪]

মৃত্যু সম্পাদনা

ঝর্ণা ধারা চৌধুরী ২০১৯ সালের ২৭ জুন বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।[৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "ভারতের পদ্মশ্রী পুরস্কার পেলেন ঝর্ণাধারা চৌধুরী ::  :: কালের কণ্ঠ"কালের কণ্ঠ। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  2. "একুশে পদক পাচ্ছেন ১৫ জন"প্রথম আলো। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  3. "দৈনিক চলমান নোয়াখালী - Chaloman Noakhali - রোকেয়া পদক পেলেন ঝর্ণা ধারা চৌধুরী"chalomannoakhali.com। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  4. "রোকেয়া পদক পাচ্ছেন ঝর্ণা ধারা চৌধুরী ও হামিদা বানু"প্রথম আলো। ১৮ নভেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  5. "গান্ধীবাদী ঝর্ণা ধারা চৌধুরী আর নেই"প্রথম আলো। ২৭ জুন ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৯