জঁ তিরল

ফরাসি অর্থনীতিবিদ
(জ্যাঁ তিরোল থেকে পুনর্নির্দেশিত)

জঁ মার্সেল তিরল (ফরাসি: Jean Marcel Tirole) (জন্ম ৯ আগস্ট, ১৯৫৩) একজন ফরাসি অর্থনীতিবিদ। তিনি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ক্রীড়া তত্ত্ব, ব্যাংকিং ও অর্থনীতি এবং মনোবিদ্যাগত অর্থনীতি এর উপর কাজ করেছেন। বাজার শক্তি এবং বড় বড় কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিশ্লেষণমূলক কাজের জন্য তিনি ২০১৪ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[১][২][৩] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ তম সমাবর্তনে তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

জঁ তিরল
জঁ তিরল, ২০০৭ সালে ।
জন্ম (1953-08-09) ৯ আগস্ট ১৯৫৩ (বয়স ৭০)
জাতীয়তাফ্রান্স
প্রতিষ্ঠানতুলুজ অর্থশাস্ত্র বিদ্যালয়
কাজের ক্ষেত্রব্যষ্টিক অর্থনীতি
ক্রীড়া তত্ত্ব
শিল্প প্রতিষ্ঠান
শিক্ষায়তনম্যাসাচুসেট্‌স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি
পারি দোফিন বিশ্ববিদ্যালয়
একল নাসিওনাল দে পোঁ এ শোসে
একোল পোলিতেকনিক
পুরস্কারজন ভন নিউম্যান পুরস্কার (১৯৯৮)
বিবিভিএ ফাউন্ডেশন ফ্রন্টিয়ার্স অফ নলেজ আওয়ার্ড (২০০৮)
অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার (২০১৪)
Information at IDEAS / RePEc

শিক্ষা সম্পাদনা

তিরল প্যারিসের একোল পোলিতেকনিক এবং একল নাসিওনাল দে পোঁ এ শোসে থেকে ১৯৭৮ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং উপাধি এবং একই সালে পারি দোফিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিদ্ধান্তমূলক গণিতের উপর "ডক্টরেট" লাভ করেন। এরিক মাসকিন এর তত্ত্বাবধানে অর্থনৈতিক তত্ত্বের উপর প্রবন্ধ (Essays in economic theory) শিরোনামে ম্যাসাচুসেট্‌স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে থিসিস করেন।[৪]

জীবনী সম্পাদনা

তিরল তুলুজ স্কুল অফ ইকোনমিকস-এ জঁ-জাক লাফোঁ ফাউন্ডেশন বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি একল পোলিতেকনিক থেকে স্নাতক উপাধি এবং ম্যাসাচুসেট্‌স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ১৯৮১ সালে পিএইচডি লাভের পর ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত একল নাসিওনাল দে পোঁ এ শোসে-এ গবেষক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৪-১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি এমআইটির অধ্যাপক হিসেবে কর্তব্যরত ছিলেন। ১৯৯৪-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি একোল পোলিতেকনিক-এ অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে কর্তব্যরত ছিলেন। ১৯৯৮ সালে তিনি ইকোনমেট্রিক সোসাইটি ("অর্থমিতিক সমাজ") এবং ২০০১ সালে ইউরোপিয়ান ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশান (European Economic Association, "ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সংগঠন")-এর সভাপতি ছিলেন। তিনি এখনো এমআইটির সাথে সংযুক্ত, এখানে তার পরিদর্শনের অধিকার রয়েছে এবং তিনি ২০১১ সাল থেকে "অ্যাকাডেমিয়া ডেস সাইন্সেস মোরালিস এট পলিটিকাস" এর সদস্য এবং ২০১৩ সাল থেকে "কনসিল স্ট্র্যাটেজিকা ডে লা রিসার্চেস" এর সদস্য।

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

তিরল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ক্রীড়া তত্ত্ব, ব্যাংকিং ও অর্থনীতি এবং মনোবিদ্যাগত অর্থনীতি এর উপর কাজ করেছেন। বাজার শক্তি এবং বড় বড় কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিশ্লেষণমূলক কাজের জন্য তিনি ২০১৪ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[৩] তিনি ইউনিভার্সিটি লিব্রে ডি ব্রুজেলেস থেকে ১৯৮৯ সালে, লন্ডন বিজনেজ স্কুল এবং মনট্রিঅল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৭ সালে, অ্যাথেনস ইউনিভার্সিটি অফ সাইন্স অ্যান্ড বিজনেজ এবং ইউনিভার্সিটি অফ রোম টর ভেগাটা থেকে ২০১২ সালে, লউসান্না বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৩ সালে সম্মানসূচক ডক্টর উপাধি লাভ করেন।[৫] তিরল ২০০৮ সালে অর্থনীতি এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়শ্রেণীতে বিবিভিএ ফাউন্ডেসন ফ্রন্টিয়ারস অফ নলেজ পুরস্কার, ১৯৯৭ সালে পাবলিক ইউটিলিটি রিসার্চ সেন্টার ডিস্টিঙ্গুইস্টড সার্ভিস পুরস্কার (ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়), ১৯৯৩ সালে ইয়রজ জেনশন ফাউন্ডেশন এবং ইউরোপিয়ান ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশান থেকে ইয়রজ জেনশন পুরস্কার লাভ করেন। তিরল আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড সাইন্স (১৯৯৩) এবং আমেরিকান ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশন (১৯৯৩) ফরেন অনারারী সদস্য। এছাড়া তিনি একজন স্লোন ফেলো (১৯৮৫) এবং একজন গিউগেইনহাইম ফেলো (১৯৮৮)। তিনি ১৯৮৬ সালে ইকোনমেট্রিক সোসাইটি এর একজন ফেলো ২০১১ সালে একজন ইকোনমিক থিওরি ফেলো (সোসাইটি ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অফ ইকোনমিক থিওরী) ছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি ফ্রেঞ্চ সিএনআরএস এর সর্বোচ্চ সম্মাননা (স্বর্ণ পদক অথবা মেডেল ডি অর) লাভ করেন, ২০০৮ সালে প্রিক্স ডি সার্কেল ডি'অক, ২০০৯ সালে আউটস্ট্যান্ডিং কন্ট্রিবিউশন টু দা প্রফেসন পুরস্কার (ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যানার্জি ইকোনমিকস), ২০১০ সালে ইনোভেটিভ কুয়ান্টিটিভ ইনোভেসনস ইন ফাইনান্স এর উপর শিকাগো মার্কেন্টাইল এক্সচেণ্জ–ম্যাথেম্যাটিকাল সাইন্স রিসার্চ ইন্সটিটিউট (সিএমই-এমএসআরআই) পুরস্কার, টিজাল্লিং কুপম্যান অ্যাসেট পুরস্কার (টিলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়) এবং "প্রিক্স ক্লড লেভি-স্ট্রস" পুরস্কার লাভ করেন। IDEAS/RePEc এর মতে তিনি পৃথিবীর অন্যতম প্রভাবশালী অর্থনীতিবিদদের একজন।[৬]

প্রকাশনাসমূহ সম্পাদনা

তিরল অর্থনীতি বিষয়ক প্রায় ২০০টি পেশাদারি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। তিনি ১০টি বই প্রকাশ করেছেন। তার গবেষণার ক্ষেত্র হচ্ছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং এগুলোর নিয়ন্ত্রণ, ক্রীড়া তত্ত্ব, অর্থনীতি, মনোবিদ্যাগত অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও সামষ্টিক অর্থশাস্ত্র

প্রকাশিত গ্রন্থ ও রচনাবলি সম্পাদনা

  • Dynamic Models of Oligopoly (D. Fudenberg এর সাথে যৌথভাবে), ১৯৮৬. [১]
  • The Theory of Industrial Organization, MIT Press. (১৯৮৮) Description and chapter-preview links.
  • Game Theory (D. Fudenberg এর সাথে যৌথভাবে), MIT Press, ১৯৯১ [২].
  • A Theory of Incentives in Regulation and Procurement (J.-J. Laffont এর সাথে যৌথভাবে), MIT Press,1993. Description & chapter- preview links.
  • The Prudential Regulation of Banks (M. Dewatripont এর সাথে যৌথভাবে), MIT Press, ১৯৯৪. [৩]
  • Competition in Telecommunications, MIT Press, ১৯৯৯ [৪].
  • Financial Crises, Liquidity and the International Monetary System, Princeton University Press, ২০০২ [৫].
  • The Theory of Corporate Finance, Princeton University Press, ২০০৫. Description. Association of American Publishers 2006 Award for Excellence.
  • Balancing the Banks ( Mathias Dewatripont এবং Jean-Charles Rochet এর সাথে যৌথভাবে), Princeton University Press, 2010 [৬].
  • Inside and Outside Liquidity (Bengt Holmström এর সাথে যৌথভাবে), MIT Press, 2011 [৭].

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/last-page/2014/10/14/8879.html
  2. http://www.jugantor.com/first-page/2014/10/14/158880
  3. Sveriges Riksbank's Prize in Economic Sciences in Memory of Alfred Nobel 2014, Sveriges Riksbank, অক্টোবর ১৩, ২০১৪, সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৩, ২০১৪ 
  4. "Essays in economic theory / by Jean Tirole"। MIT Library catalog। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১০-১৩ 
  5. (ইতালীয়) Laurea magistrale honoris causa Jean Tirole ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ মে ২০১২ তারিখে
  6. "Economist Rankings at IDEAS"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১৪ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা