জ্ঞান চক্রবর্তী
জ্ঞান চক্রবর্তী (১৯০৬ ― ১৮ আগস্ট ১৯৭৭) ছিলেন একজন বাংলাদেশি সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী ও সাম্যবাদী নেতা। জন্ম হয়েছিল ঢাকার বিক্রমপুরে। পিতা লব্ধপ্রতিষ্ঠ উকিল যামিনী চক্রবর্তী।
জ্ঞান চক্রবর্তী | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ১৯০৬ |
মৃত্যু | ১৮ আগস্ট ১৯৭৭ | (বয়স ৭০–৭১)
নাগরিকত্ব | ![]() ![]() ![]() |
শিক্ষা | এম.এস.সি |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | লেখক, রাজনীতিবিদ |
পরিচিতির কারণ | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়ক |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | ঢাকা জিলার কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস ও অমর লেনিন |
রাজনৈতিক দল | ভারত বিভাজনের পূর্বে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি, ভারত বিভাজনের পরে পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি(পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি), বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি |
আন্দোলন | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন |
পিতা-মাতা |
|
শিক্ষা
সম্পাদনামাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি সশস্ত্র বিপ্লববাদী সংগঠন অনুশীলন সমিতির শাখা ‘বাণী সংঘে’র সাথে যুক্ত হন। পরে যুগান্তর দলে যোগ দেন। ১৯৩১ সালে তিনি গ্রেফতার হন। ওই বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এস.সি পড়ছিলেন। এসময় তার অন্যতম বন্ধু ছিলেন বিপ্লবী জগদীশ চক্রবর্তী।
সাম্যবাদী আন্দোলন
সম্পাদনাগ্রেপ্তার হয়ে বক্সা দুর্গ ও দেউলি বন্দিনিবাসে আটক থাকেন এবং এখানেই মার্কসবাদী দর্শনে আগ্রহ জন্মে। 'কমিউনিস্ট কনসলিডেশনে' যোগ দিয়ে ১৯৩৮ সালে মুক্তিলাভের পর ঢাকায় কমিউন করে সকলকে নিয়ে যৌথভাবে থাকতে আরম্ভ করেন। তার কমিউন থেকেই নানারকম গণসংগঠনের প্রচেষ্টা, বিড়িশ্রমিক, ও মজদুর ইউনিয়ন সংগঠিত হয়। গ্রামীণ কৃষকরাও এসে পরামর্শ নিতেন। ঢাকায় রেবতী মোহন বর্মণের উদ্যোগে মার্ক্সবাদী প্রকাশনার কেন্দ্র স্থাপিত হলে নেপাল নাগ, রণেন বসুর সাথে তিনি মার্ক্সবাদী পুস্তক প্রকাশ ও প্রচারের দায়িত্ব নেন। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী পুস্তক গোপনে বা ছদ্মবেশে তিনি বিলি করতেন। কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ হলে কংগ্রেস কর্মীদের সাথে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ঐক্যের দাবীতে সম্মেলনে অংশ নেন। এই সময় ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ১৯৪৩- ৪৭ সালে ঢাকা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক ছিলেন।[১]
সেই সময় প্রগতিশীল তরুন, ছাত্র- যুব, বুদ্ধিজীবী এবং উকিলদের ভেতর সাম্যবাদী আদর্শ ও চেতনা প্রসারে তার ভূমিকা ছিল। ১৯৪৮ সালে কমিউনিস্ট পার্টি পূনরায় নিষিদ্ধ হলে আবার কারাবাস হয়। মুক্তি পেলেও পুলিশি হামলা চলতে থাকে তার ওপরে।[২]
মুক্তিযুদ্ধ
সম্পাদনা১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনে তাকে নিয়ে ২০ জন কমিউনিস্ট নেতার ওপর গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী হয়েছিল। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের শিবির পরিচালনার ভার নিয়েছিলেন বৃদ্ধ বয়েসেও। ১৯৭৫ এ মুজিবর রহমানের হত্যার পর সামরিক শাসন জারী হলে আবার আত্মগোপন করেন। আজীবন সকলের সাথে কষ্ট স্বীকার করে দিনযাপন করেছেন। জীবনের ৩৫ বছর আত্মগোপনে বা কারান্তরালে কাটিয়েছেন এই বিপ্লবী। গ্রামাঞ্চলে কাজ করার সময় টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হন।[২][৩]
লেখা
সম্পাদনাঢাকা জিলার কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস ও অমর লেনিন তার সৃষ্ট রচনা।[২]
মৃত্যু
সম্পাদনাচিকিতসার কারণে কলকাতায় আসেন এবং হাসপাতালে মারা যান ১৮ আগস্ট ১৯৭৭।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ দাশ, সুস্নাত (জানুয়ারি ২০০২)। "সংযোজন ২"। অবিভক্ত বাঙলার কৃষক সংগ্রাম: তেভাগা আন্দলোলনের আর্থ-রাজনৈতিক প্রেক্ষিত-পর্যালোচনা-পুনর্বিচার (প্রথম প্রকাশ সংস্করণ)। কলকাতা: নক্ষত্র প্রকাশন। পৃষ্ঠা ২৮৯।
- ↑ ক খ গ প্রথম খন্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ১৭৯।
- ↑ "জ্ঞান চক্রবর্তী ছিলেন আজীবন মেহনতি মানুষের মুক্তির সংগ্রামে নিবেদিত"। সংবাদ। ২০ আগস্ট ২০১৬। ২১ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১.০১.২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)