জেসমিন আক্তার (জন্ম ২০০১),[১] একজন ক্রিকেটার, যিনি বাংলাদেশের নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এবং তিনি হলেন রোহিঙ্গা, মিয়ানমার থেকে নির্মমভাবে নির্যাতিত একটি জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্গত। [২] তিনি শরণার্থী হিসাবে যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডে বসবাস করতে এসেছিলেন এবং একটি সর্ব-এশীয় মেয়েদের ক্রিকেট দল শুরু করেছিলেন। তিনি প্রথম স্ট্রিট চাইল্ড ক্রিকেট বিশ্বকাপ চ্যারিটি ম্যাচে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন এবং প্রায় জিতে গিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি বিবিসি -এর ১০০ জন সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ী এবং প্রভাবশালী নারীদের একজন মনোনীত হন।[৩]

জেসমিন আক্তার
জন্ম২০০১ (বয়স ২২–২৩)
জাতীয়তারোহিঙ্গা
শিক্ষাব্র্যাডফোর্ড কলেজ
পেশাক্রিকেটার ইংল্যান্ডের স্ট্রিট চাইল্ড বিশ্বকাপ দলের অধিনায়ক
প্রতিষ্ঠানইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব
পরিচিতির কারণএশিয়ান গার্লস স্ট্রিট ক্রিকেট শুরু
পুরস্কারবিবিসি ১০০ উইমেন ২০১৯

পটভূমি সম্পাদনা

জেসমিন আক্তার ২০০১ সালে জন্মগ্রহণ করেন, [১] বাংলাদেশের নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে, একটি শিবির যেখানে মোট এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগণ মিয়ানমারে গণহত্যা ও নৃশংস নিপীড়নের মুখে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল। তার জন্মের পরপরই তার বাবা মারা যান, এবং তার মায়ের আরও চারটি সন্তান ছিল। তাই প্রায় দশ বছর পর্যন্ত আক্তারের কোনো শিক্ষা লাভ করার সুযোগ ছিল না, কিন্তু তারা অবশেষে ইউএনএইচআরসি প্রোগ্রামের মাধ্যমে উদ্বাস্তু হিসাবে যুক্তরাজ্যে বসতি স্থাপন করতে আসে।

আক্তারের বয়স ছিল মাত্র ৮ যখন তারা ব্র্যাডফোর্ড, ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারে চলে আসে কিন্তু তারপর ২০১৪ সালে, তার মা এবং ছোট ভাই বাংলাদেশে আসার সময় একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। তার মা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং তিন মাস ধরে বাংলাদেশের হাসপাতালে থাকতে হয়। অবশেষে তারা যুক্তরাজ্যে ফিরে আসতে সক্ষম হন কিন্তু তাকে আরো দুই বছর হাসপাতালে যাওয়া আসার মধ্যে থাকতে হয়।

আক্তার ১৩ বছর বয়সে তার মা এবং তার তিন ভাইবোনের জন্য একজন শিশু যত্নকারী হয়ে ওঠেন। তিনি ব্র্যাডফোর্ড ফুটবল ক্লাবে ছিলেন কিন্তু তাকে তা ছেড়ে দিতে হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি সম্পূর্ণ বৃত্তি ত্যাগ করতে হয়েছিল। [৪]

ক্রিকেট ক্যারিয়ার সম্পাদনা

স্কুলের পরে ক্লাব কোচের সাহায্যে, আক্তারের ক্রিকেট প্রতিভা আবিষ্কৃত হয়েছিল। আক্তারের দক্ষতা দ্রুত স্বীকৃত হয়।

আক্তার স্থানীয়ভাবে ছোট বাচ্চাদেরও প্রশিক্ষন দিয়েছিলেন এবং দাতব্য সংস্থা সেন্টারপয়েন্ট দ্বারা দেখা গিয়েছিল যারা তরুণ গৃহহীন লোকদের সমর্থন করে এবং যেটি একটি স্ট্রিট চাইল্ড ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য ইংল্যান্ড জাতীয় দলকে একত্রিত করেছিল। আক্তারকে ইংল্যান্ডের সেই দলের অধিনায়ক করা হয়।

স্ট্রিট চাইল্ড ওয়ার্ল্ড কাপ প্রতিযোগিতাটি ছিল বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ভারত, মরিশাস, নেপাল, তানজানিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে বঞ্চিত ব্যাকগ্রাউন্ডের (১৩-১৭ বছর বয়সী) যুবকদের ক্রিকেট দলের জন্য যারা লন্ডন এবং কেমব্রিজে তাদের নিজ নিজ জাতীয় দলের হয়ে প্রতিযোগিতামূলকভাবে খেলছে এবং স্পোর্টিং টুর্নামেন্টের পাশাপাশি তাদের মানবাধিকারের উপর একটি মিনি-কংগ্রেসে যোগদান করা। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে একটি অনুষ্ঠানে আক্তার 'সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে আলো' সম্পর্কে কথা বলেন। [৪]

তানজানিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে সহজ জয়ের পর, [৫] ইংল্যান্ডের ফাইনাল ছিল ভারত দক্ষিণের বিপক্ষে এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ক্রিকেট বিশ্বকাপ আন্তর্জাতিকের ঠিক আগে লন্ডনের বিখ্যাত লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে খেলা হয়েছিল। আক্তার বলেন, বেন স্টোকসের মতো তার স্পোর্টিং হিরোদের মতো একই মাঠে খেলতে পেরে তিনি সত্যিই গর্বিত। [৬] এটি একটি ঘনিষ্ঠ ম্যাচ ছিল, আক্তারের দল শেষ ওভারে হেরে যায়।

২০২৩ সালে ভারতে পরবর্তী আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য একটি ভবিষ্যত স্ট্রিট চাইল্ড বিশ্বকাপের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Refugees, United Nations High Commissioner for। "Rohingya Star Lights up Lords in Junior Cricket Final"UNHCR (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-১১ 
  2. "Rohingya refugees' perspectives on their displacement in Bangladesh: uncertain futures"ODI (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-১১ 
  3. "BBC 100 Women 2019: Who is on the list this year?"BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১০-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-১১ 
  4. "Jasmin Akter: Rohingya Refugee to the BBC Women's 100 Women"GiveMeSport (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১০-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-১১ 
  5. "The life-changing power of the Street Child Cricket World Cup"The Big Issue (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৫-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-১১ 
  6. "London Just Hosted a Cricket World Cup to Support Children Living on the Streets"Global Citizen (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ মে ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-১১