জেনিফার ডাউডনা
জেনিফার অ্যান ডাউডনা (জন্ম ১৯শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৪) রসায়নে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী[৬] মার্কিন প্রাণরসায়নবিদ। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলির ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধারে আণবিক জীববিজ্ঞান, কোষ জীববিজ্ঞান ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক। ১৯৯৭ সাল থেকে তিনি হাওয়ার্ড হিউস মেডিকেল ইন্স্টিটিউটে গবেষক হিসেবে নিয়োজিত আছেন।[৭] এছাড়াও তিনি ইনোভেটিভ জিনোমিক্স ইন্স্টিটিউটের পরিচালক, জৈবচিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিষয়ের লি কা শিং চ্যান্সেলর অধ্যাপক এবং ইউসি বার্কলির জীববিজ্ঞানের উপদেষ্টা মণ্ডলীর পদে আসীন।[৭]
জেনিফার ডাউডনা | |
---|---|
![]() রয়েল সোসাইটির এডমিশন দিনে ২০১৬ সালে লন্ডনে জেনিফার ডাউডনা | |
জন্ম | জেনিফার অ্যান ডাউডনা ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৪ |
জাতীয়তা | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
কর্মক্ষেত্র | জৈবরসায়ন |
প্রতিষ্ঠান | ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় |
প্রাক্তন ছাত্র |
|
সন্দর্ভসমূহ | Towards the design of an RNA replicase (১৯৮৯) |
পিএইচডি উপদেষ্টা | জ্যাক সজটাক |
অন্যান্য শিক্ষায়তনিক উপদেষ্টা | থমাস কেচ |
পরিচিতির কারণ |
|
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | |
স্ত্রী/স্বামী | জেমি কেট |
ওয়েবসাইট |
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষাসম্পাদনা
প্রাথমিক জীবনসম্পাদনা
জেনিফার ডাউডনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন। ডাউডনার মাতা শিক্ষায় স্নাতোকত্তর সম্পন্ন করে গৃহিনী ছিলেন। ৭ বছর বয়সে পিতার থিসিসের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর তারা মিশিগান থেকে হাওয়াইয়ে স্থানান্তরিত হন। [৮][৯]
ডাউডনা অল্প বয়সে জনপ্রিয় বিজ্ঞানে বই দ্বারা প্রভাবিত হন। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন অবস্থায় জেমস ওয়াটসন রচিত "দি ডাবল হেলিক্স" বই তার চিন্তায় বিশাল প্রভাব ফেলে। এছাড়াও উচ্চবিদ্যালয়ের রসায়ন শিক্ষিকা মিস ওং এর প্রভাবও তিনি বিভিন্ন সময় স্বীকার করেছেন। [১০]
বিশ্ববিদ্যাল শিক্ষা ও পোস্ট-ডক্টরাল সময়কার বছর সম্পাদনা
ডাউডনা ক্যালিফোর্নিয়া পমোনা কলেজে জৈবরসায়নে পড়াশোনার জন্য ভর্তি হন। এই সময় নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে সন্দেহ হলে তার ফরাসী শিক্ষক তাকে বিজ্ঞান নিয়েই লেগে থাকতে অনুপ্রাণিত করেন। [১১] ফ্রেড গ্রিমান এবং করউইন হানশ - দুই রসায়ন অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ডাউডনাকে প্রভাবিত করেন। ১৯৮৫ সালে পমোনা কলেজ থেকে জৈব রসায়নে স্নাতক শেষ করে ১৯৮৯ সালে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল থেকে জীববৈজ্ঞানিক রসায়ন ও আণবিক ঔষধবিদ্যায় পিএইচডি সম্পন্ন করেন।[১২] সেলফ-রেপ্লিকেটিং ক্যাটালাইটিক আরএনএ এর নকশা নিয়ে তিনি জ্যাক সজটাকের অধীনে পিএইচডিতে কাজ করেছেন।[১৩]
গবেষণা ও কর্মসম্পাদনা
ডাউডনা তার গবেষণাকর্ম শুরু করেন নোবেলজয়ী চিকিৎসাবিদ জ্যাক সজটাকের তত্ত্বাবধানে।[১৪] তবে ক্রিসপার বিপ্লবের নেতৃত্বদানকারী হিসেবেই মূলতঃ ডাউডনা সুপরিচিত।[১৫] তিনি ক্রিসপার দ্বারা জিন সম্পাদনার মৌলিক কাজে জড়িত ছিলেন এবং এর উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। ২০১২ সালে ডাউডনা এবং এমানুয়েল কার্পেন্টিইর সর্বপ্রথম ব্যাক্টেরিয়ার ব্যবহৃত এনজাইম ক্রিসপার/ক্যাস৯ যে মনুষ্য নকশাকৃত জিন সম্পাদনায় ব্যবহার করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে প্রস্তাবনা রাখেন। এই আবিষ্কার জীববিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম বৈপ্লবিক আবিষ্কার হিসেবে স্বীকৃত।[১৬] প্রায়োগিক ক্ষেত্রে মৌলিক প্রোটিন, কোষবিদ্যা, উদ্ভিদ ও প্রাণীর রোগের চিকিৎসায় ক্রিসপার/ক্যাস৯ প্রযুক্তি ব্যবহারে একাধিক গবেষকদল গবেষণারত আছেন।[১৭]
ক্রিসপার/CRISPRসম্পাদনা
২০১২ সালে জেনিফার ডাউডনা ও তার সহকর্মীরা ডিএনএর জিনোম সম্পাদনার এক নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন। এই প্রযুক্তির ব্যবহারে সময় ও শ্রম দু'টোই নাটকীয়ভাবে কমে আসে।[১৫] তাদের এই আবিষ্কার ক্যাস৯ নামক এক প্রোটিনের ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে যা স্ট্রেপোকক্কাস ব্যাক্টেরিয়ার "ক্রিসপার" রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় উপলব্ধ্য। এই প্রোটিন কাঁচির মতো আক্রমণকারী ভাইরাসের ডিএনএ ব্যাক্টেরিয়ার ডিএনএ থেকে কেটে ফেলতে সক্ষম।[১৮] ২০১৫ সালে ডাউডনা এ ক্রিসপার প্রযুক্তি ও এর নৈতিক ব্যবহার নিয়ে একটি টেড টক প্রদান করেন। [১৯]
২০২০ সালে ক্রিসপার প্রযুক্তি আবিষ্কারে সহকর্মী ইমানুয়েল শারপেঁতিয়ের সাথে যৌথভাবে রসায়নে নোবেল পদক লাভ করেন।[২০]
অন্যান্য অবদানসম্পাদনা
জেনিফার ডাউডনার আরেকটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কারের হল, হেপাটাইটিস সি ভাইরাস একটি অপ্রচলিত নিয়মে ভাইরাস আক্রান্ত প্রোটন সংশ্লেষণে সক্ষম। তার এই আবিষ্কার শরীরের কোন কোষের ক্ষতি না করেই নতুন ধরনের ঔষধ আবিষ্কারে ব্যবহার করা যেতে পারে। [২১]
ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়ে ডাউডনা জেমি কেটের সান্নিধ্যে আসেন। ইয়েলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত অবস্থায় তারা বিয়ে করেন। এই দম্পতির পুত্র এন্ড্রু ২০০৩ সালে জন্মগ্রহণ করে। [২২]
পুরস্কার ও সম্মাননাসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
Anon (২০১৬)। "Professor Jennifer Doudna ForMemRS"। Royal Society। ২০১৬-০৪-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ "Alan T. Waterman Award Recipients, 1976 – present"। National Science Foundation। ২ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ "Emmanuelle Charpentier receives Jacob Heskel Gabbay Award"। Umeå University। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ ক খ "Laureates: Jennifer A. Doudna"। breakthroughprize.org। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ ক খ "Laureates of the Japan Prize: Jennifer A. Doudna, Ph.D."। The Japan Prize Foundation। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ "জিন কাটার 'কাঁচি' আবিষ্কার করে রসায়নে নোবেল দুই নারীর"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ৭ অক্টোবর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ Ledford, Heidi; Callaway, Ewen (২০২০-১০-০৭)। "Pioneers of revolutionary CRISPR gene editing win chemistry Nobel"। Nature (ইংরেজি ভাষায়)। ডিওআই:10.1038/d41586-020-02765-9।
- ↑ ক খ "Curriculum Vitae (Jennifer A. Doudna)" (PDF)। Lawrence Berkeley National Laboratory। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি: অবৈধ
<ref>
ট্যাগ;Gruber
নামের সূত্রের জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Mukhopadyay, Rajendrani। "'On the same wavelength'"। American Society for Biochemistry and Molecular Biology। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ Mukhopadyay, Rajendrani। "'On the same wavelength'"। American Society for Biochemistry and Molecular Biology। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি: অবৈধ
<ref>
ট্যাগ;Doudna13
নামের সূত্রের জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Doudna, Jennifer Anne (১৯৮৯)। Towards the design of an RNA replicase (গবেষণাপত্র)। Harvard University। ওসিএলসি 23230360।
- ↑ Pollack, Andrew (২০১৫-০৫-১১)। "Jennifer Doudna, a Pioneer Who Helped Simplify Genome Editing"। The New York Times। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-০২।
- ↑ Rajagopal, J; Doudna, J.; Szostak, J. (মে ১২, ১৯৮৯)। "Stereochemical course of catalysis by the Tetrahymena ribozyme"। Science। 244 (4905): 692–694। ডিওআই:10.1126/science.2470151। পিএমআইডি 2470151। বিবকোড:1989Sci...244..692R।
- ↑ ক খ Jinek, M.; Chilynksi, K.; Fonfara, I.,; Hauer, M.,; Doudna, J.,; Charpentier, E., (আগস্ট ১৭, ২০১২)। "A programmable dual-RNA-guided DNA endonuclease in adaptive bacterial immunity"। Science। 337 (6069): 816–821। ডিওআই:10.1126/science.1225829। পিএমআইডি 22745249। বিবকোড:2012Sci...337..816J।
- ↑ Pollack, Andrew (মে ১১, ২০১৫)। "Jennifer Doudna, a Pioneer Who Helped Simplify Genome Editing"। New York Times। সংগ্রহের তারিখ মে ১২, ২০১৫।
- ↑ Barrangou, R.; Doudna, J., (সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৬)। "Applications of CRISPR technologies in research and beyond"। Nature Biotechnology। 34 (9): 933–941। ডিওআই:10.1038/nbt.3659। পিএমআইডি 27606440।
- ↑ King, Mary-Claire. "Time 100 Most Influential People: Emmanuelle Charpentier & Jennifer Doudna". Time. April 16. 2015. Web. 25 Dec. 2016.
- ↑ Park, Alice. "The CRISPR Pioneers: Their Breakthrough Work Could Change the World." Time. N.d. 2016. Web. 25 Dec. 2016.
- ↑ ক খ "The Nobel Prize in Chemistry 2020"। NobelPrize.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-০৩।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি: অবৈধ
<ref>
ট্যাগ;hhmi
নামের সূত্রের জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Sabin Russell Cracking the Code: Jennifer Doudna and Her Amazing Molecular Scissors California Magazine, Winter 2014, Cal Alumni Association