জিৎ (অভিনেতা)
জিৎ নামে পরিচিত জিতেন্দ্র মদনানী ভারতের বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের একজন বিখ্যাত অভিনেতা। তিনি ২০০২ সালে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সাথী-তে তার ভূমিকার জন্য বি.এফ.জে.এ সবচেয়ে সম্ভাবনাময় অভিনেতার পুরস্কার পান। এই ছবিটি বাণিজ্যিক সাফল্যও লাভ করে। তিনি আপাতবাস্তব টেলিভিশন অনুষ্ঠানকোটি টাকার বাজি-এ উপস্থাপনা করার জন্য স্টার জলসা পরিবার অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন। তিনি টলিউডের সর্বোচ্চ হিট ছবিতে অভিনয়ের গৌরব অর্জন করেন। ঐ ছবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছবি হলঃ সাথী, জোশ, শত্রু, দুই পৃথিবী, ফাইটার, "পাওয়ার,"বচ্চন","১০০% লাভ, সুলতান দ্য সেভিয়ার , এবং ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রেকর্ড করা ছবি আওয়ারা। তিনি ২০১২ সালের আনন্দলোক অ্যাওয়ার্ড পান এই আওয়ারা ছবিতে অভিনয়ের জন্য।
জিৎ | |
---|---|
![]() ২০১৭-এ জিৎ | |
জন্ম | জিতেন্দ্র মদনানী ৩০ নভেম্বর ১৯৭০ |
পেশা | অভিনেতা |
কর্মজীবন | ১৯৯৩–বর্তমান |
উচ্চতা | ৫'১০" |
দাম্পত্য সঙ্গী | মোহনা রতলানী (২০১১-বর্তমান) |
প্রথম জীবনসম্পাদনা
তিনি প্রথমে সেন্ট জোসেফ এন্ড মারি স্কুল, নিউ আলিপুর ও পরে ন্যাশনাল হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃক পরিচালিত ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি কলেজ হতে গ্রাজুয়েট হন। পরে তিনি তার পরিবারের ব্যবসায় যোগদান করেন।[১][২] তবে সৃজনশীল কাজের প্রতি তার বরাবরই উৎসাহ ছিল। মাঝেমধ্যে তিনি বিখ্যাত অভিনেতাদের অভিনয় অনুকরন করার চেষ্টা করতেন। তার বন্ধু রাজেশ চৌধুরী সৃজনশীল দুনিয়ায় তার ভাগ্য পরীক্ষা করতে বলেন।
এরপর তিনি বিভিন্ন কাজে যোগদান করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন সিরিয়ালে যেমনঃ বিষবৃক্ষ-এ তারাচরণ চরিত্রে, জননী-এ অনিল চরিত্রে সহ আরো কিছু সিরিয়ালে অভিনয় করেন। এরপর তিনি মুম্বাই যান এবং তার উদ্দেশ্যে কোন প্রকার বাঁধা ছাড়াই পাঁচ বছর সেখানে থাকেন।
ছুটিতে কলকাতায় আসার পর তিনি বিভিন্ন পরিচালক ও প্রযোজকদের সাথে দেখা করেন। এরপর তিনি প্রসেনিয়াম আর্ট সেন্টার নামক এক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হন। এই প্রতিষ্ঠানে তিনি বিভিন্ন ইংরেজি নাটকে অভিনয় করেন যেমনঃ আর্মস অ্যান্ড দ্য ম্যান, ম্যান অ্যাট দ্য ফ্লোর। তারপর তিনি আবার মুম্বাই যান এবং এক তেলুগু ছবিতে অভিনয় করেন। ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির নাম ছিল চাঁদু এবং পরিচালক ছিল দক্ষিণ ভারতীয়। এই ছবিটি তেমন কোন পরিচয় তাকে এনে দিতে পারল না, যা তিনি আশা করেছিলেন।
২০০১ সালের অক্টোবরে তিনি আবার কলকাতায় আসেন এবং পরিচালক হারানাথ চক্রবর্তীর কাছ থেকে দেখা করার প্রস্তাব পান এন.টি.ওয়ান. স্টুডিওতে। তার কাছ থেকে তিনি ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সাথী ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পান এবং এই ছবির দৃশ্যায়ন শুরু হয় ১৫ জানুয়ারি, ২০০২ থেকে। এই ছবি জিৎকে বাংলা ছবির জগতে এক বিশেষ স্থান করে দেয়। তার স্বাভাবিক কিন্তু ভাষাসমৃদ্ধ অভিনয় দ্রুতই তাকে বাংলা চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে স্থান করে দেয়। যদিও তিনি রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন, ক্রমশ তিনি একজন অ্যাকশন হিরো হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৫ সালে থামস্ আপ-এর এক বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে তিনি আরো সুপরিচিত হন। ২০১২ সালে তিনি একজন সফল প্রযোজক হিসেবে সমাদৃত হন, তার অভিনীত ১০০% লাভ ছবিতে প্রযোজনার মাধ্যমে। তার পরের ছবি আওয়ারা বাজারে ভালোই চলেছে।[৩] তার নতুন ছবি আসছে ২০১৩ সালে। এর মধ্যে শ্রাবন্তীর বিপরীতে অভিনীত দিওয়ানা এবং শুভশ্রী গাঙ্গুলীর বিপরীতে অভিনীত বস ছবি বেশ উল্লেখযোগ্য। বস ছবিটি ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মহেশ বাবুর পরিচালিত ব্লকবাস্টার তেলুগু ছবি বিজন্যাসম্যান ছবির পুনর্নির্মাণ। এই ছবিটি বাবা যাদব- এর পরিচালনা ও রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্ট- এর প্রযোজনায় মুক্তি পায়।
ব্যক্তিজীবনসম্পাদনা
তিনি ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০১১ সালে এক স্কুলশিক্ষক মোহনা রতলানীকে বিয়ে করেন।[৪] তিনি ১২ই ডিসেম্বর, ২০১২ সালে এক কন্যা সন্তানের জনক হন। মেয়ের নাম নবন্যা।[১]
চলচ্চিত্রসম্পাদনা
জিৎ ২০০১ সালে তেলুগুতে চাঁদু ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তার পর তিনি ২০০২ সালে প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদীর বিপরীতে সাথী ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তার পশ্চিমবঙ্গে অভিনয় জীবন শুরু করেন।কলকাতার ১ম ১২ কোটি আয় করা সাথী সিনেমা তার দখলে। পশ্চিমবঙ্গে সব থেকে বেশি জনপ্রিয় অভিনেতা তিনি। শুধু ভারতেই নয়, বাংলাদেশেও জিৎ এর জনপ্রিয়তা অনেক। তার সর্বশেষ ছবি ইনস্পেকটর নট্টিকে আশানুরূপ ব্যবসা করতে না পারলেও তার আগের দুই বাংলায় মুক্তি প্রাপ্ত জিৎ এর বস ২ বক্সঅফিসে সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছিল। ভারত-বাংলাদেশের অংশগ্রহণে যৌথ প্রযোজনায় অভিনীত একাধিক চলচ্চিত্র রয়েছে তার ক্যারিয়ারে।
চলচ্চিত্রসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ "Bengali Actor Jeet"। ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Bengali Actor Jeet"। ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ "বোল বচ্চন করে লাভ নেই, কাজ করে যাও"। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১২।
- ↑ "Jeet Marriage"। ১৪ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "প্রত্যাশা অনেক, পুরণও হবে"। এই সময়। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৫।