জিৎ (অভিনেতা)

ভারতীয় অভিনেতা, প্রযোজক এবং উপস্থাপক
(জিত (অভিনেতা) থেকে পুনর্নির্দেশিত)

জিৎ নামে পরিচিত জিতেন্দ্র মদনানী একজন ভারতীয় অভিনেতা, চলচ্চিত্র প্রযোজক, গায়ক, উদ্যোক্তা এবং টেলিভিশন উপস্থাপক। তিনি প্রধানত বাংলা চলচ্চিত্রে তার কাজের জন্য পরিচিত । তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান "গ্রাসরুট এন্টারটেইনমেন্ট" এবং "জিতজ ফিল্মওয়ার্কস" এর মালিক।[১][২] তিনি "ওয়েস্ট বেঙ্গল মোশন পিকচার আর্টিস্টস ফোরাম"-এর নির্বাহী সম্পাদক ।

জিৎ
২০২৩ সালে জিৎ
জন্ম
জিতেন্দ্র মদনানী

(1978-11-30) ৩০ নভেম্বর ১৯৭৮ (বয়স ৪৫)
জাতীয়তাভারতীয়
অন্যান্য নামজিতু, টলিউডের রাজা, বাংলা সিনেমার বস
পেশাঅভিনেতা, মডেল, প্রযোজক, উদ্যোক্তা
কর্মজীবন১৯৯৩ – বর্তমান
পরিচিতির কারণসম্পূর্ণ তালিকা
দাম্পত্য সঙ্গীমোহনা রতলানী (বি. ২০১১)
পিতা-মাতামিঠু দাস মদনানী
শারদা দেবী মদনানী
পুরস্কারসম্পুর্ণ তালিকা
ওয়েবসাইটwww.jeetonline.com

তিনি টেলি সিনে পুরস্কার, সেরা অভিনেতার জন্য আনন্দলোক পুরস্কার এবং "কিং অব টলিউড" এর জন্য কলাকার পুরস্কার (২০১৪) সহ অসংখ্য পুরস্কারের প্রাপক ছিলেন । তিনি টলিউডে বাণিজ্যিক অ্যাকশন চলচ্চিত্র করার জন্য পরিচিত কয়েকজন অভিনেতাদের একজন ।

প্রথম জীবন সম্পাদনা

তিনি প্রথমে সেন্ট জোসেফ এন্ড মারি স্কুল, নিউ আলিপুর ও পরে ন্যাশনাল হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃক পরিচালিত ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি কলেজ হতে গ্রাজুয়েট হন। পরে তিনি তার পরিবারের ব্যবসায় যোগদান করেন।[৩][৪] তবে সৃজনশীল কাজের প্রতি তার বরাবরই উৎসাহ ছিল। মাঝেমধ্যে তিনি বিখ্যাত অভিনেতাদের অভিনয় অনুকরন করার চেষ্টা করতেন। তার বন্ধু রাজেশ চৌধুরী সৃজনশীল দুনিয়ায় তার ভাগ্য পরীক্ষা করতে বলেন।

এরপর তিনি বিভিন্ন কাজে যোগদান করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন সিরিয়ালে যেমনঃ বিষবৃক্ষ-এ তারাচরণ চরিত্রে, জননী-এ অনিল চরিত্রে সহ আরো কিছু সিরিয়ালে অভিনয় করেন। এরপর তিনি মুম্বাই যান এবং তার উদ্দেশ্যে কোন প্রকার বাঁধা ছাড়াই পাঁচ বছর সেখানে থাকেন।

ছুটিতে কলকাতায় আসার পর তিনি বিভিন্ন পরিচালক ও প্রযোজকদের সাথে দেখা করেন। এরপর তিনি প্রসেনিয়াম আর্ট সেন্টার নামক এক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হন। এই প্রতিষ্ঠানে তিনি বিভিন্ন ইংরেজি নাটকে অভিনয় করেন যেমনঃ আর্মস অ্যান্ড দ্য ম্যান, ম্যান অ্যাট দ্য ফ্লোর। তারপর তিনি আবার মুম্বাই যান এবং এক তেলুগু ছবিতে অভিনয় করেন। ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির নাম ছিল চাঁদু এবং পরিচালক ছিল দক্ষিণ ভারতীয়। এই ছবিটি তেমন কোন পরিচয় তাকে এনে দিতে পারল না, যা তিনি আশা করেছিলেন।

২০০১ সালের অক্টোবরে তিনি আবার কলকাতায় আসেন এবং পরিচালক হারানাথ চক্রবর্তীর কাছ থেকে দেখা করার প্রস্তাব পান এন.টি.ওয়ান. স্টুডিওতে। তার কাছ থেকে তিনি ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সাথী ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পান এবং এই ছবির দৃশ্যায়ন শুরু হয় ১৫ জানুয়ারি, ২০০২ থেকে। এই ছবি জিৎকে বাংলা ছবির জগতে এক বিশেষ স্থান করে দেয়। তার স্বাভাবিক কিন্তু ভাষাসমৃদ্ধ অভিনয় দ্রুতই তাকে বাংলা চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে স্থান করে দেয়। যদিও তিনি রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন, ক্রমশ তিনি একজন অ্যাকশন হিরো হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৫ সালে থামস্‌ আপ-এর এক বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে তিনি আরো সুপরিচিত হন। ২০১২ সালে তিনি একজন সফল প্রযোজক হিসেবে সমাদৃত হন, তার অভিনীত ১০০% লাভ ছবিতে প্রযোজনার মাধ্যমে। তার পরের ছবি আওয়ারা বাজারে ভালোই চলেছে।[৫] তার নতুন ছবি আসছে ২০১৩ সালে। এর মধ্যে শ্রাবন্তীর বিপরীতে অভিনীত দিওয়ানা এবং শুভশ্রী গাঙ্গুলীর বিপরীতে অভিনীত বস ছবি বেশ উল্লেখযোগ্য। বস ছবিটি ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মহেশ বাবুর পরিচালিত ব্লকবাস্টার তেলুগু ছবি বিজন্যাসম্যান ছবির পুনর্নির্মাণ। এই ছবিটি বাবা যাদব- এর পরিচালনা ও রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্ট- এর প্রযোজনায় মুক্তি পায়।

ব্যক্তিজীবন সম্পাদনা

জিৎ এর জন্ম একটি সিন্ধি পরিবারে।[৬][৭] তিনি ২০১১ সালে ২৪শে ফেব্রুয়ারি এক স্কুলশিক্ষক মোহনা রতলানীকে বিয়ে করেন।[৮] তারা ২০১২ সালে ১২ই ডিসেম্বর নবন্যা নামক এক কন্যা সন্তানের পিতামাতা হন।[৩]

চলচ্চিত্র সম্পাদনা

জিৎ ২০০১ সালে তেলুগুতে চাঁদু ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তার পর তিনি ২০০২ সালে প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদীর বিপরীতে সাথী ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তার পশ্চিমবঙ্গে অভিনয় জীবন শুরু করেন।কলকাতার ১ম ১২ কোটি আয় করা সাথী সিনেমা তার দখলে। পশ্চিমবঙ্গে সব থেকে বেশি জনপ্রিয় অভিনেতা তিনি। শুধু ভারতেই নয়, বাংলাদেশেও জিৎ এর জনপ্রিয়তা অনেক। তার সর্বশেষ ছবি ইন্সপেক্টর নটি কে আশানুরূপ ব্যবসা করতে না পারলেও তার আগের দুই বাংলায় মুক্তি প্রাপ্ত জিৎ এর বস ২ বক্সঅফিসে সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছিল। ভারত-বাংলাদেশের অংশগ্রহণে যৌথ প্রযোজনায় অভিনীত একাধিক চলচ্চিত্র রয়েছে তার ক্যারিয়ারে। ২০২৩ সালের জিৎ অভিনীত চেঙ্গিজ বাংলা ও হিন্দি ভাষায় একসঙ্গে মুক্তি পাওয়া প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র।[৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সাহা, পারমিতা। "কারও ব্যর্থতা আমার সাফল্যের কারণ হতে পারে না: জিৎ"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-১৯ 
  2. sun, daily। "Actor Jeet in Dhaka for 'Boss 2' promotion | Daily Sun"daily sun (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-১৯ 
  3. "Bengali Actor Jeet"। ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  4. "Bengali Actor Jeet"। ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৩ 
  5. "বোল বচ্চন করে লাভ নেই, কাজ করে যাও"আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  6. "The Telegraph - Calcutta (Kolkata) | Graphiti | Filmy comeback"web.archive.org। ২০১৮-০৩-০৫। Archived from the original on ২০১৮-০৩-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-১৯ 
  7. "'I am not an athlete with a number on my back, nor am I a telephone number'"web.archive.org। ২০১৮-০৩-০৫। Archived from the original on ২০১৮-০৩-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-১৯ 
  8. "Jeet Marriage"। ১৪ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৩ 
  9. "Jeet's next 'Chengiz' to be first Bengali film ever to release in Hindi and Bengali simultaneously"The Times of India। ২০২৩-০৩-২১। আইএসএসএন 0971-8257। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৫ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা