জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা (মেইনস)

জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা (মেইনস) (ইংরেজি: Joint Entrance Examination – Mains/JEE-Mains) [পূর্বনাম:সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষা (ইংরেজি: All India Engineering Entrance Examination/AIEEE)] হল ভারতে ইঞ্জিনিয়ারিং সংক্রান্ত পড়াশোনার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা। এটি শিক্ষার্থীদের বি.টেক, বি.আর্ক প্রভৃতি ডিগ্রি অর্জনের জন্য বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির মাধ্যম। এটি জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা (অ্যাডভান্সড) পরীক্ষার বাছাইপর্ব হিসেবেও সমান কার্যকর। অর্জিত র‍্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে এনআইটি (জাতীয় প্রকৌশল সংস্থা) ও আইআইআইটি (ভারতীয় প্রকৌশল সংস্থা) -তে ভর্তি হবার সুযোগ মেলে। প্রথমবারের মতো এই পরীক্ষা ২০২১ সালে (ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) সর্বোচ্চ চারটি পর্বে সম্পন্ন হয়েছিল।[২][৩]

জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা (মেইনস)
সংক্ষেপJEE-Mains (জেইই-মেইনস)
ধরনঅনলাইন পরীক্ষা
উন্নতিকারক / পরিচালকজাতীয় পরীক্ষা সংস্থা
পরীক্ষার বিষয়সমূহ
উদ্দেশ্যস্নাতক-পূর্ব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি ও আর্কিটেকচার কোর্স (এনআইটি থেকে)। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা (অ্যাডভান্সড) পরীক্ষার বাছাইপর্ব।
প্রথম গ্রহণ২০০২ (২২ বছর আগে) (2002)
পরীক্ষার সময়৩ ঘন্টা, (পেপার ২-এর জন্য ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট)
নম্বর / গ্রেডের সীমা−৭৫ থেকে +৩০০ (পেপার ১)
যতবার হয়বছর প্রতি ২ বার
বাধানিষেধদ্বাদশ শ্রেণী পাশের তিন বছরের মধ্যে, সর্বোচ্চ পরপর তিনবার। বয়স-সীমা নেই।
দেশ / অঞ্চল ভারত
ভাষাইংরেজি, অসমীয়া, বাংলা, গুজরাটি, হিন্দি, কন্নড়, মালয়ালম, মারাঠি, ওড়িয়া, পাঞ্জাবি, তামিল, উর্দু, ও তেলুগু
পরীক্ষার্থীদের বার্ষিক সংখ্যাবৃদ্ধি ২,২৯০,২৮১ (২০২১)[১]
যোগ্যতাদ্বাদশ শ্রেণীর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও AICTE প্রস্তাবিত যেকোনো টেকনিক্যাল বিষয় পরিচিত বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
উত্তীর্ণের হার১৯.১% (১৪১,৬৯৯/৭৩২,০০০ অ্যাডভান্সডে উত্তীর্ণ)
ওয়েবসাইটJEE-Mains

পদ্ধতি সম্পাদনা

  • বি.ই./বি.টেক (পেপার ১)
    • গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন সকলই অনলাইন।
  • বি.আর্ক (পেপার ২)
    • গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান প্রবণতা অনলাইন, কিন্তু অঙ্কন অফলাইন কাগজে-কলমে।
  • বি.প্ল্যানিং (পেপার ৩)
    • গণিত, প্রবণতা ও প্ল্যানিং সকলই অনলাইন।[৪][৫]

পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা সম্পাদনা

২০১৪-তে সর্বাধিক পরীক্ষার্থী নাম নথিভুক্ত করেছিল (১.৩৫ মিলিয়ন)।[৬]

বছর পর্ব পরীক্ষার্থীর সংখ্যা
২০২১ ৭,৩২,০০০[৭] 
৭,০৯,৫১৯ [৮] 
৬,১৯,৬৩৮ [৯] 
৬,৬১,৭৬১ [১০] 
২০২০ ৮,৫৮,২৭৩[১১] 
৯,২১,২৬১[১২]  
২০১৯ ৯,৩৫,৭৪১[১৩]  
৯,২৯,১৯৮[১৩]  
২০১৮ বছরপ্রতি
১ বার
১২,৫৯,০০০[১৪]  
২০১৭ ১১,৮৬,৪৫৪[১৫]  
২০১৬ ১১,৯৪,৯৩৮[১৬]  
২০১৫ ১৩,০৪,৪৯৫[১৭]  
২০১৪ ১৩,৫৬,৮০৫[১৮]  
২০১৩ ১২,৮২,০০০[১৯]  
২০১২ ১২,২০,০০০  

কোটা:কোচিং রাজধানী সম্পাদনা

ভারতের রাজস্থান রাজ্যের কোটার পরিচিতি দেশজুড়ে।

ভারতের রাজস্থানের কোটাকে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের ‘শিক্ষার কাশী (পবিত্র শহর)’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন। শহরটিকে ভারতের ‘শিক্ষার কাশীধাম’ও বলা হয়। এ শহর কোচিংয়ের কারণে ব্যাপক পরিচিত। কোচিং–বাণিজ্যের আর্থিক মূল্য ১২০ বিলিয়ন রুপি[২০]

কোটা সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ‘কোচিং ক্যাপিটাল’ বা ‘কোচিংয়ের রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। সেখানে বারোটিরও বেশি ইনস্টিটিউট রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হতে অত্যন্ত কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নেন।

প্রতিবছর তিন লাখের বেশি শিক্ষার্থী সেখানে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যান। এ শহরে দিনে ১৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করা সাধারণ ব্যাপার এবং সেখানে পরীক্ষার নম্বরই যেন সবকিছু। এখান থেকেই কেউ কেউ ভারতের পরবর্তী প্রজন্মের চিকিৎসক ও প্রকৌশলী হয়ে উঠবেন। এখানকার বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর বয়স ১৭ থেকে ২০–এর মধ্যে। পাঠ্যক্রমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য তাঁরা সপ্তাহে ৭ দিনই প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তাঁরা ছয় ঘণ্টার ক্লাসে অংশ নেওয়ার আগে ভোর চারটায় পড়া শুরু করে। প্রতি ব্যাচে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী থাকেন। তাঁদের প্রতি দুই সপ্তাহে একটি করে পরীক্ষা দিতে হয়। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী সর্বজনীনভাবে র‌্যাঙ্ক করা হয়।

২০২৩ সালে মাত্র ১ লাখ ৪০ হাজার আসনের বিপরীতে ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা জাতীয় যোগ্যতা ও প্রবেশিকা পরীক্ষা (স্নাতক-পূর্ব) বা NEET (National Eligibility cum Entrance Test) এ অংশ নিয়েছিলেন। অন্যদিকে ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান বা IIT (Indian Institutes of Technology) নামে পরিচিত শীর্ষ প্রযুক্তি-প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১০ হাজার আসনে ভর্তি হওয়ার জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা (মেইনস) বা JEE-Mains পরীক্ষা দিয়েছিলেন ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। [২১]

কোটার একটি অন্ধকার দিকও আছে। কোটায় কোচিংয়ের সংস্কৃতি এবং শিক্ষার্থীদের একাডেমিক, পারিবারিক ও সামাজিক চাপ তাঁদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। এ জন্য ২০২৩ সালে এখন পর্যন্ত (অক্টোবর) নগরীর কোচিং স্কুলে অধ্যয়নরত ২৭ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। শিক্ষার্থীরা এখানে এতো বেশি মানসিক চাপে থাকে যে, অ্যালেনের মতো বড় বড় কোচিং স্কুল তাদের ক্যাম্পাসে ৫০ জনের বেশি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শদাতা ছাড়াও ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন চালু রাখেন। [২২]

কোটার কোচিং স্কুলগুলোর বছরের ফি প্রায় দেড় লাখ রুপি। এর সঙ্গে খাবার ও থাকার জন্য মাসে প্রায় ৩০ হাজার রুপি খরচ হয়, যা বছরে ৩ লাখ ৬০ হাজার রুপি। আনুমানিক ১ বছরের খরচ চালাতে ভারতীয় টাকা প্রায় ৫.৫ লাখ রুপি খরচ হয় যা বাংলাদেশী টাকাতে এর পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ৭ লাখ টাকা। ফলে অনেক অভিভাবককে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে অনেক আত্মত্যাগ করতে হয়।


আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "JEE main 2021 number of candidates registered" 
  2. "About | Joint Entrance Examination - Main"jeemain.nta.nic.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২১ 
  3. jeemain.nta.nic.in https://jeemain.nta.nic.in/webinfo2021/Page/Page?PageId=1&LangId=P। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  4. "JEE Exam Main 2020: New Exam Pattern and Syllabus released, Know what are the changes at jeemain.nta.nic.in"Zee Business (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৯-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৬ 
  5. Network, digitalLEARNING। "JEE Main Paper 2020: Testing agency introduces new paper for B.Planning courses" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৬ 
  6. "JEE (Mains) 2014: 14 lakh candidates appeared for the exam : News" 
  7. https://www.collegedekho.com/news/jee-main-2021-number-of-candidates-registered-21297/  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  8. https://www.collegedekho.com/news/jee-main-2021-number-of-candidates-registered-21297/  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  9. https://www.collegedekho.com/news/jee-main-2021-number-of-candidates-registered-21297/  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  10. https://www.collegedekho.com/news/jee-main-2021-number-of-candidates-registered-21297/  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  11. https://jeemain.nta.nic.in/WebInfo/Handler/FileHandler.ashx?i=File&ii=665&iii=Y  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  12. "JEE Main 2020 result declared in record time, details here"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০১-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-১৯ 
  13. "JEE Main 2019: In April, 9.35 lakh candidates registered; January was 9.29 lakh"The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৪-২৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-২২ 
  14. "JEE Main Answer Key 2018 Released"NDTV। ২৪ এপ্রিল ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১৮A total of 2.16 lakh candidates appeared for the JEE Main online exam... while, offline exam ... for around 10.43 lakh aspirants. 
  15. "RESULT OF JEE (MAIN) 2017" (পিডিএফ)cbse.nic.in। National Informatics Centre। ২৭ এপ্রিল ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৭ 
  16. "CBSE JEE Main 2016: Check out the result analysis here!"27 April 2016। India Today। ১৬ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৭ 
  17. "JEE Main Registrations Stats: 2014 vs 2015"2 March 2014। Careers360। ৭ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৭ 
  18. "JEE Main 2014 Result Analysis"7 May 2014। Shiksha। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৭ 
  19. "Number of applicants for JEE Main decreased in 2015"8 January 2016। Jagran Josh। ১ এপ্রিল ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৭ 
  20. https://www.prothomalo.com/education/higher-education/co94hmsifd
  21. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  22. https://www.prothomalo.com/amp/story/education/higher-education/co94hmsifd

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা