জন হল্যান্ড

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

জোনাথন মার্ক হল্যান্ড (ইংরেজি: Jon Holland; জন্ম: ২৯ মে, ১৯৮৭) ভিক্টোরিয়ার স্যান্ডরিংহাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য তিনি। ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কালে থেকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করছেন।

জন হল্যান্ড
২০১১ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জন হল্যান্ড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজোনাথন মার্ক হল্যান্ড
জন্ম (1987-05-29) ২৯ মে ১৯৮৭ (বয়স ৩৬)
স্যান্ডরিংহাম, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামডাচ
উচ্চতা১.৮১ মিটার (৫ ফুট ১১ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৪৪)
৪ আগস্ট ২০১৬ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ টেস্ট১৬ অক্টোবর ২০১৮ বনাম পাকিস্তান
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৮ - বর্তমানভিক্টোরিয়া (জার্সি নং ১৮)
২০১৪ - ২০১৭অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স (জার্সি নং ২৫)
২০১৭ - বর্তমানমেলবোর্ন রেনেগেডেস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ টি২০
ম্যাচ সংখ্যা ৭৩ ৫৫ ২৮
রানের সংখ্যা ৭৪৭ ১৬৩
ব্যাটিং গড় ৩.০০ ১৪.৬৪ ৮.৫৭ ১.৭৫
১০০/৫০ ০/০ ০/১ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান * ৫৫ ১৪ *
বল করেছে ৯৬০ ১৫,৬০১ ২,৭৯১ ৬০৫
উইকেট ২৩৭ ৬৮ ১৬
বোলিং গড় ৬৩.৭৭ ৩২.৮৬ ৩৪.১৬ ৩৭.৮১
ইনিংসে ৫ উইকেট ১০
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৮৩ ৭/৮২ ৬/২৯ ২/১৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/– ২৫/– ১৫/– ৫/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২ ডিসেম্বর, ২০১৯

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স, কার্লটন, মেলবোর্ন রেনেগেডেস ও ভিক্টোরিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করে থাকেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করেন ‘ডাচ’ ডাকনামে পরিচিত জন হল্যান্ড

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

অক্টোবর, ২০০৮ সালে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ও লিস্ট এ ক্রিকেটে অংশ নেন। এরপর, জানুয়ারি, ২০০৯ সালে নিজস্ব প্রথম টুয়েন্টি২০ খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। চারটি শেফিল্ড শিল্ডের খেলাসহ পাঁচটি একদিনের খেলা ও দুইটি টুয়েন্টি২০ খেলায় তার ক্রীড়াশৈলী সাধারণমানের হওয়া সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া এ-দলের পক্ষে খেলার জন্যে বিবেচিত হন। ২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে কুইন্সল্যান্ডে পাকিস্তান এ দলের বিপক্ষে সুন্দর খেলেন ও দলকে বিজয়ী হতে ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীতে তাকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতিযোগিতায় অস্ট্রেলিয়ার ৩০ সদস্যবিশিষ্ট প্রাথমিক দলে রাখা হয়। তবে, চূড়ান্ত দলে ঠাঁই হয়নি তার।

২০০৭-০৮ মৌসুমের অধিকাংশ সময় কাঁধের সমস্যায় ভুগেন ও খেলার বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হন। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের খেলোয়াড় হিসেবে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে কিছুটা সময় অতিবাহিত করেন। সাধারণতঃ আক্রমণধর্মী স্পিনার হিসেবে খেলায় অংশ নেন। বলে পেস আনয়ণসহ ক্ষীপ্রতার সাথে বাঁক খাওয়াতে পারেন। ক্রীড়াবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে তিন বছর খসড়া তালিকায় থাকার পর ২০০৯-১০ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে পূর্ণাঙ্গ চুক্তির আওতায় আসেন।

২০০৮ সাল থেকে জন হল্যান্ডের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রয়েছে। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতেই জন হল্যান্ড খুবই উঁচুমানের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। ফলশ্রুতিতে, রাজ্য দলে অভিষেকের এক বছরের মধ্যেই ২০০৯ সালে ভারত সফরে অস্ট্রেলিয়ার একদিনের দলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সাতটি ওডিআইয়ে গড়া সফরে ১৫-সদস্যের অস্ট্রেলীয় দলের সদস্য হন। ঐ সফরে তাকে কোন খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি। তবে, দৃশ্যতঃ এটি সময়ের ব্যাপার ছিল মাত্র। কিন্তু, ২০১৬ সালের পূর্ব-পর্যন্ত তাকে আর বিদেশ সফরে রাখা হয়নি।

স্বর্ণালীয় সময় সম্পাদনা

বামহাতি অর্থোডক্স স্পিনার জন হল্যান্ড সহজাত আক্রমণধর্মী বোলার হিসেবে পেসের সহযোগিতা নিয়ে বলকে বেশ বাঁক খাওয়ানোয় পারঙ্গমতা দেখান। তাসত্ত্বেও, ভিক্টোরিয়ার পক্ষে তাকে সবসময় খেলতে দেখা যেতো না। লেগ স্পিনার ফাহাদ আহমেদকে ঐ সময় সম্মুখসারির স্পিনার হিসেবে খেলানো হতো। টেস্ট দলে তাকে ডাকা হলে জন হল্যান্ড পূর্বেকার চার মৌসুমে তিনটির অধিক শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় অংশ নেয়ার সুযোগ পেতেন না। তবে, সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ২০১৪-১৫ মৌসুমে ২৩.৬৯ গড়ে ১৩ ও ২০১৫-১৬ মৌসুমে ২০.৯২ গড়ে ১৪ উইকেট পান।

২০১৬-১৭ মৌসুমে ৫০ উইকেট লাভের মাধ্যমে ভিক্টোরিয়া দলকে উপর্যুপরি তৃতীয়বার শিরোপা লাভে সহযোগিতা করেন। এ সকল অর্জন সত্ত্বেও ২০১৭ সালে স্টিভ ও’কিফকে নাথান লায়নের স্পিন সহযোদ্ধা হিসেবে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। ২০১৮-১৯ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা জয়ের অন্যতম প্রধান খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এরফলে, ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্য সফরে অস্ট্রেলিয়া এ-দলের সদস্য হিসেবে তাকে রাখা হয়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জন হল্যান্ড। শ্রীলঙ্কা সফরে আঘাতপ্রাপ্ত স্টিভ ও’কিফের পরিবর্তে টেস্ট দলে নেয়া হয়। ৪ আগস্ট, ২০১৬ তারিখে গালেতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৬ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে আবুধাবিতে পাকিস্তান দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। তাকে কোন ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়নি।

২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া দল শ্রীলঙ্কা গমন করে। জুলাই, ২০১৬ সালে আঘাতপ্রাপ্ত স্টিফেন ও’কিফের পরিবর্তে তাকে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে যুক্ত করা হয়।[১] ৪ আগস্ট, ২০১৬ তারিখে গালেতে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তার অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। মার্ভ হিউজ তাকে ব্যাগ গ্রীন ক্যাপ উপহার দেন।[২] একই খেলায় ধনঞ্জয় ডি সিলভাকে আউট করে প্রথম উইকেটের সন্ধান পান তিনি।

স্টিভ ও’কিফের মাঠের বাইরে অবস্থানের কারণে ২০১৮ সালে আবারও তাকে দলে রাখা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় বাজেভাবে সফর শেষ করেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে নাথান লায়নের সঙ্গী হিসেবে অংশ নেন। কিন্তু, ঐ সিরিজে তিনি কেবলমাত্র চারটি উইকেট লাভে সক্ষম হয়েছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Holland called up to replace O'Keefe"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৬ 
  2. "Australia tour of Sri Lanka, 2nd Test: Sri Lanka v Australia at Galle, Aug 4-8, 2016"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১৬ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা