জন বেনো

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

জন বেনো (ইংরেজি: John Benaud; জন্ম: ১১ মে, ১৯৪৪) নিউ সাউথ ওয়েলসের অবার্ন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[] অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

জন বেনো
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জন বেনো
জন্ম১১ মে, ১৯৪৪
অবার্ন, সিডনি, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্করিচি বেনো (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৬১)
২২ ডিসেম্বর ১৯৭২ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট২১ এপ্রিল ১৯৭৩ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬৬/৬৭ - ১৯৭২/৭৩নিউ সাউথ ওয়েলস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪৭
রানের সংখ্যা ২২৩ ২৮৮৮
ব্যাটিং গড় ৪৪.৬০ ৩৬.৫৫
১০০/৫০ ১/- ৪/১৬
সর্বোচ্চ রান ১৪২ ১৪২
বল করেছে ২৪ ৩০৮
উইকেট
বোলিং গড় ৬.০০ ৩৫.২০
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ২/১২ ২/১২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং -/- ৩০/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

লুইস ও আইরিন বেনো দম্পতির পুত্র ছিলেন। ১৩ বছরের বড় বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার রিচি বেনো তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন। প্রয়াত রিচি বেনো’র তুলনায় সর্বদাই জন বেনো পিছনে ছিলেন। তবে, পেশীবহুল আগ্রাসী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্যরূপে চমৎকার খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করে গেছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। লিন্ডসে বেনো নামীয় এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। ১৯৭১ সালে জন্মগ্রহণকারী পুত্র জেমি বেনো অগ্নিনির্বাপক কর্মী ও এনএসডব্লিউ ফায়ার ব্রিগেডসের হাজারডোস ম্যাটেরিয়ালস টেকনিশিয়ান/বিশেষজ্ঞ। জনের কন্যা নিকোল ১৯৭৩ সালে জন্মগ্রহণ করে। এ সময়ে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজে অবস্থান করছিলেন। নিকোল টিএএফই শিক্ষিকা। ১৯৭১ সাল থেকে ব্লু মাউন্টেইন্স এলাকায় বসবাস করছেন।

কপি-বয় হিসেবে সিডনি সান সংবাদপত্রে জন বেনো তার কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর সাংবাদিকতায় ক্যাডেটশীপ লাভের অধিকারী হন। ঐ সংবাদপত্রেই জীবনের বাদ-বাকী সময় অতিবাহিত করেন। ওয়ারউইক ফেয়ারফ্যাক্স দায়িত্ব নিলেও ১৯৮৮ সালে সান বন্ধ হয়ে যায়। বেনো প্রধান সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯০-এর দশকে জন বেনো অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন ও ভারতীয় ক্রিকেট সাময়িকীতে ক্রিকেট সম্পর্কীয় প্রতিবেদন লিখতেন। এছাড়াও, বেশ কয়েকটি আত্মজীবনী ছদ্মনামে প্রকাশ করেছেন। ১৯৯৭ সালে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট নির্বাচকের দায়িত্ব পালনকালের বিভিন্ন ঘটনা বিষয়ক ম্যাটার্স অব চয়েজ গ্রন্থ রচনা করেছেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

সম্পাদনা

১৯৬৬-৬৭ মৌসুম থেকে ১৯৭২-৭৩ মৌসুম পর্যন্ত জন বেনো’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৬৬-৬৭ মৌসুম থেকে ১৯৭২-৭৩ মৌসুম পর্যন্ত ছয় বছর নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়েছেন। এক পর্যায়ে রাজ্য দলটির অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালনকালে অ্যাডিডাস গ্রাস স্পোর্টস জুতো পরিধানে অস্বীকার করলে এক মাসের জন্যে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন।[] তবে, সমর্থক ও গণমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পেতে থাকলে ক্রিকেট এনএসডব্লিউ প্রাক-মৌসুমের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়।

১৯৭১-৭২ মৌসুমের গ্রীষ্মকালে গ্যারি সোবার্সের নেতৃত্বাধীন বহিঃবিশ্ব একাদশের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে খেলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সম্পাদনা

১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জন বেনো।[] ২২ ডিসেম্বর, ১৯৭২ তারিখে অ্যাডিলেডে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২১ এপ্রিল, ১৯৭৩ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৭২ সালে বড়দিনের সময়কালে অ্যাডিলেডে সিরিজের প্রথম টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে তার। রিচি বেনো’র টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটার দীর্ঘ ২০ বছর পর জন বেনো’র অভিষেক ঘটে। এটিই দুই ভাইয়ের অভিষেক ঘটার দীর্ঘতম ব্যবধান।

অস্ট্রেলিয়া খুব সহজেই টেস্টে জয় পেলেও তিনি খুবই কম ভূমিকা রাখেন। নববর্ষের সময়কালে এমসিজিতে দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। এবারও তার দল জয় পায়। তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪২ রান তুলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। তাসত্ত্বেও, তৃতীয় টেস্টে অংশগ্রহণ করা থেকে তাকে বিরত রাখা হয়।[] নিজস্ব তৃতীয় ও সর্বশেষ টেস্ট খেলার জন্যে এপ্রিল, ১৯৭৩ সালে ত্রিনিদাদের পোর্ট অব স্পেনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম টেস্টে অংশ নেন তিনি। ব্যাট হাতে খুবই কম ভূমিকায় রাখেন। তবে বল হাতে নিয়ে চার ওভারে ২/১২ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। ঐ খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর অস্ট্রেলিয়া দলের নির্বাচকমণ্ডলীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[] এ পর্যায়ে অ্যালান বর্ডার জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

১৯৯৭ সালে ‘ম্যাটার্স অব চয়েজ: এ টেস্ট সিলেকশন স্টোরি’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশ করেন। মার্ক লসন গ্রন্থের ভূমিকাংশে উল্লেখ করেন যে, ‘পরিসংখ্যানগত, ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব, আঞ্চলিক রাজনীতির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই টেস্ট একাদশ গঠন করা হয়ে থাকে।’[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "A tale of two paths"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১৯ 
  2. Mark Lawson, "Cricket Books, 1998", Wisden 1999, p. 1437.

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা