জনক (রামায়ণের চরিত্র)

মিথিলার রাজা

জনক ছিলেন আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৮ম বা ৭ম শতাব্দীর মিথিলা অঞ্চলে অবস্থিত বিদেহের একজন প্রাচীন হিন্দু রাজা।[১] বিদেহ রাজ্যের শাসকদের বলা হত জনক। এটি হল মিথিলার রাজাদের কৌলিক উপাধি ।[২] তিনি মহাকাব্য রামায়ণেও সীতার পিতা হিসেবে আবির্ভূত হন। তার আসল নাম ছিল সীরধ্বজ এবং কুশধ্বজ নামে তার এক ভাই ছিল। তার পিতার নাম ছিল হ্রস্বরোমা,যিনি ছিলেন রাজা নিমির বংশধর।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

জনক
জনক রাম ও তার পিতা দশরথকে মিথিলায় স্বাগত জানাচ্ছেন
গ্রন্থসমূহরামায়ণ, উপনিষদ্‌
অঞ্চলমিথিলা
ব্যক্তিগত তথ্য
মাতাপিতাহ্রস্বরোমা (পিতা), কৈকাসী (মাতা)
সহোদরকুশধ্বজ
দম্পত্য সঙ্গীসুনয়না
সন্তানসীতা, ঊর্মিলা (কন্যাদ্বয়)
রাজবংশইক্ষ্বাকু

জনককে বস্তুগত সম্পদের প্রতি অ-আসক্তির একটি আদর্শ উদাহরণ হিসেবে সম্মান করা হয়। তিনি আধ্যাত্মিক বক্তৃতায় গভীরভাবে আগ্রহী ছিলেন এবং নিজেকে জাগতিক মোহ থেকে মুক্ত মনে করতেন। অষ্টাবক্র ও সুলভার মতো ঋষি ও সাধকদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন প্রাচীন গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। তার দত্তক কন্যা সীতার সাথে তার সম্পর্কের কারণে তাকে জানকী বলা হয়। নেপালের জনকপুর শহরের নামকরণ করা হয়েছে তাঁর এবং তাঁর কন্যা সীতার নামে। [৩] বিদেহ (বা মিথিলা) রাজ্য ঐতিহাসিকভাবে গণ্ডকী নদীর পূর্বে, মহানন্দা নদীর পশ্চিমে, গঙ্গা নদীর উত্তরে এবং হিমালয়ের দক্ষিণে অবস্থিত ছিল।[৪][৫]

রামায়ণে জনক সম্পাদনা

জনক একদিন যজ্ঞভূমি কর্ষণ কালে লাঙলের রেখায় এক সুন্দরী শিশু কন্যা পান । লাঙলের রেখার অন্য নাম সীতা তাই তিনি সেই কন্যার নাম সীতা রাখেন । সীতা বিবাহযোগ্যা হলে জনক স্থির করেন তার কন্যা বীর্যশুল্কা হবে । সাংকাস্যার রাজা সুধন্বা সীতাকে প্রার্থনা করেন কিন্তু জনক কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়ে মিথিলা অবরোধ করেন । জনক তাকে যুদ্ধে পরাস্ত করে আপন ভ্রাতা কুশধ্বজকে সেই রাজ্য দেন । জনকের পণ ছিল যে ব্যক্তি হরধনুতে জ্যা রোপণ করে তা ভঙ্গ করতে পারবে তাকেই কন্যাদান করবেন । রাম এই শর্ত পূরণ করে সীতাকে পত্নী হিসেবে লাভ করেন । জনকের অপর কন্যা ঊর্মিলার সাথে লক্ষ্মণের ও কুশধ্বজের দুই কন্যা মাণ্ডবীশ্রুতকীর্তির সাথে যথাক্রমে ভরতশত্রুঘ্নের বিবাহ হয় ।[৬][৭]

উৎস সম্পাদনা

  1. Raychaudhuri 2006, পৃ. 41–52।
  2. রাজশেখর বসু
  3. Raychaudhuri 2006, পৃ. 44।
  4. Jha, M. (১৯৯৭)। "Hindu Kingdoms at contextual level"Anthropology of Ancient Hindu Kingdoms: A Study in Civilizational Perspective। New Delhi: M.D. Publications Pvt. Ltd। পৃষ্ঠা 27–42। আইএসবিএন 9788175330344 
  5. Mishra, V. (১৯৭৯)। Cultural Heritage of Mithila। Allahabad: Mithila Prakasana। পৃষ্ঠা 13। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  6. পৌরাণিক অভিধান - সুধীরচন্দ্র সরকার
  7. বাল্মীকি রামায়ণ - রাজশেখর বসু