সূর্যবংশীয় রাজা দিলীপের পুত্র রঘু, রঘুর পুত্র অজ ও অজের পুত্র দশরথ । ইনি অযোধ্যার রাজা এবং রাম লক্ষ্মণাদির পিতা । কৌশল্যা, কৈকেয়ীসুমিত্রা নামে এঁর তিনজন প্রধান মহিষী ছিলেন । বহু বৎসর এঁর কোন পুত্র হয় নি । শান্তা নামে এঁর এক কন্যাও ছিল । দশরথ এই কন্যাকে পরম মিত্র অঙ্গদেশের রাজা রোমপাদের কাছে পৌষ্যপুত্রীরূপে দান করেন । রোমপাদ শান্তাকে বিভাণ্ডক মুনির পুত্র ঋষ্যশৃঙ্গের সাথে বিবাহ দেন ।

দশরথের নিকট কৈকেয়ীর বরপ্রার্থনা

অন্ধমুনির অভিশাপসম্পাদনা

যৌবনে একবার দশরথ মৃগয়াকালে গভীররাত্রে কলসে জল পূর্ণরত এক মুনিকুমারকে জলপানরত হস্তী ভ্রমে শব্দভেদী বাণের সাহায্যে হত্যা করেন । দশরথ যখন মুনিকুমারকে তার অন্ধ পিতার কাছে নিয়ে যান তখন তিনি এই বলে অভিশাপ দেন :

পুত্রব্যসনজং দুঃখং যদেতন্মম সাংপ্রতম্।

এবং ত্বং পুত্রশোকেন রাজন্ কালং করিষ্যসি ।।
— দশরথের প্রতি অন্ধঋষি

অর্থাৎ হে রাজা তুমি যেভাবে আমাকে পুত্রের বিরহ দুঃখ দিয়েছ একই ভাবে তুমিও পুত্রশোকে প্রাণ হারাবে । এই বলে তিনি ও তার স্ত্রী দেহত্যাগ করেন ।

পুত্রেষ্টি যজ্ঞসম্পাদনা

অপুত্রক দশরথ পুত্রকামনায় পুত্রেষ্টিযজ্ঞ করেন। এই যজ্ঞের পুরোহিত ছিলেন তার জামাতা ঋষ্যশৃঙ্গ মুনি। সেই যজ্ঞের পায়েস দশরথ, কৌশল্যা ও কৈকেয়ীকে পুত্রলাভার্থে আহার করতে দেন । কৌশল্যা ও কৈকেয়ী এই পায়সের অংশ অন্য সপত্নী সুমিত্রাকে আহার করতে দেন। এর ফলে কৌশল্যার গর্ভে রাম, কৈকেয়ীর গর্ভে ভরত এবং সুমিত্রার দুই ভাগ পায়স ভক্ষণের ফলে লক্ষ্মণশত্রুঘ্ন নামে দুই যমজ সন্তানের জন্ম হয়।

কৈকেয়ীকে বরদান ও মৃত্যুসম্পাদনা

একবার দেবাসুর যুদ্ধে শম্বরাসুরকে বধ করতে গিয়ে দশরথ ভীষণ ভাবে আহত হন । এসময় দশরথ তাকে একই সময়ে দুটি বর দেবার প্রতিশ্রুতি করেন । রামের রাজ্যাভিষেকে কৈকেয়ী দাসী মন্থরার প্ররোচনায় এই বর চান যেন রামের বদলে ভরত রাজা হয় এবং রাম চৌদ্দ বছরের জন্য বনবাসী হয় । দশরথ নিতান্ত অনিচ্ছায় এই বর দেন এবং রাম এর বনবাসের ষষ্ঠ দিন ইনি দেহত্যাগ করেন ।

বহিঃসংযোগসম্পাদনা