চুড়ি
চুড়ি একধরনের গোলাকৃতির অনমনীয় করভুষণ (বা ব্রেসলেট) গহনা যা সাধারণত ধাতু, কাঠ, কাঁচ, প্লাস্টিক, এমনকি মাটি দিয়েও তৈরি হয়ে থাকে। ঐতিহ্যগতভাবে কঠোর ব্রেসলেট যা সাধারণত ধাতু, কাঠ, কাচ বা প্লাস্টিকের তৈরি চুড়ি পাওয়া যায়। এটি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের ঐতিহ্যগত অলঙ্কার হিসেবে পরিচিত, যা সাধারণত হাতের কব্জিতে পরিহিত।
স্থুল বা মোটা চুড়িকে বালা নামে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও অঞ্চলভেদে চুড়ি বিভিন্ন নামে পরিচিত: [चुरा ছুড়া] ত্রুটি: {{Lang-xx}}: text has italic markup (সাহায্য), তামিল: வளையல், [चूड़ी ছুড়ী] ত্রুটি: {{Lang-xx}}: text has italic markup (সাহায্য), মারাঠি: बांगडी Bangadi, তেলুগু: గాజు, উর্দু: چوڑیاں, পশতু: بنګړې ও বেলুচি: بنگڑي Bangří। এই অলঙ্কার বেশিরভাগ ভারতীয় উপমহাদেশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আরব উপদ্বীপ এবং আফ্রিকার মহিলাদের দ্বারা পরিধান করা হয়। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং অন্যান্য এশীয় দেশে বিয়েতে কনেকে কাঁচের চুড়ি পরতে দেখা যায়। অল্পবয়সী মেয়েরাও চুড়ি পরতে পারে এবং ছোটদের জন্য সোনা বা রূপার তৈরি চুড়ি পছন্দ করা হয়। কিছু পুরুষ এবং মহিলা হাত বা কব্জিতে একটি একক চুড়ি পরেন যাকে কড়া বলা হয়।
চুড়া হল এক ধরনের চুড়ি যা হিন্দু/শিখ পাঞ্জাবি মহিলারা তাদের বিয়ের দিনে পরে। এটি পাথরের কাজ সহ সাদা এবং লাল চুড়ির একটি সেট।
ঐতিহ্য অনুসারে, একজন মহিলা যে চুড়ি পরবেন তা কেনার কথা নয়।
উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদ হল ভারতের সবচেয়ে বড় চুড়ি উৎপাদনকারী।
ইতিহাস
সম্পাদনাসমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে একাধিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে সমুদ্রের খোল, তামা, ব্রোঞ্জ, সোনা, অ্যাগেট, চালসেডনি ইত্যাদি থেকে তৈরি চুড়ি পাওয়া গেছে।[১] আধুনিক পাকিস্তানের মহেঞ্জোদাড়ো প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান (খ্রিস্টপূর্ব ২৬০০) খনন করে বাম হাতে চুড়ি পরা একটি নাচের মেয়ের মূর্তি পাওয়া গেছে।[২] প্রাচীন ভারতে চুড়ির অন্যান্য প্রাথমিক উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে মহুরঝাড়িতে খননকার্য থেকে পাওয়া তামার নমুনা, এরপরে মৌর্য সাম্রাজ্যের (৩২২-১৮৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) সজ্জিত চুড়ি এবং তক্ষশীলার ঐতিহাসিক স্থান (খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দী) থেকে সোনার চুড়ির নমুনা পাওয়া যায়।[১] সজ্জিত খোলের চুড়িও একাধিক মৌর্য স্থান খননের পরে পাওয়া গেছে।[১] অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে তামার রিভেট এবং কিছু ক্ষেত্রে সোনার পাতার ইনলে।[১]
উৎপাদন
সম্পাদনা- বাংলাদেশের ঢাকার লালবাগের শহীদনগরের বেশকয়েকটি চুড়ির কারখানা আছে।[৩]
- ভারতের হায়দ্রাবাদে লাড বাজার নামে চুড়ির জন্য একটি ঐতিহাসিক বিশ্ব-বিখ্যাত বাজার রয়েছে।[৪]
- বেশিরভাগ কাঁচের চুড়ি উত্তর ভারতের পুরানো শহর ফিরোজাবাদে উৎপাদিত হয়।
- পাকিস্তানে, কাচের চুড়ি প্রধানত হায়দ্রাবাদ, সিন্ধুতে উৎপাদিত হয়।[৫]
গ্যালারি
সম্পাদনা-
রেশমী চুড়ি, বাংলাদেশ
-
প্লাস্টিক চুড়ি
-
চুড়ি বিক্রয়, ভারত
-
চুড়ি
-
হায়দরাবাদের চুড়ি
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ Ghosh, page 224
- ↑ Ghosh, page 83
- ↑ আফরিন, সুহাদা (১২ জুন ২০১৭)। "'বাংলা চুড়ি'র খোঁজে"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ "Hyderabad on the Net: Other Attractions"। Hyderabad.co.uk। ৭ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-৩১।
- ↑ "Hyderabadi bangles most desired accessory for Eid buyers"। The News International। ২৮ মে ২০১৯। ৪ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২৩।
- Ghosh, Amalananda (1990). An Encyclopaedia of Indian Archaeology. Brill. আইএসবিএন ৯০-০৪-০৯২৬৪-১.