গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য

বাঙালি লেখক

গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য (১৭৯৯ – ৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৫৯) ঊনবিংশ শতকের একজন সাংবাদিক, সম্পাদক এবং লেখক ছিলেন। তিনি ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং তিনি এর প্রথম সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য

তর্কবাগীশ
জন্ম১৭৯৯ ইং
মৃত্যু৫ ফেব্রুয়ারী, ১৮৫৯ ইং
পেশাসাংবাদিকতা
পরিচিতির কারণসিলেটের প্রথম সাংবাদিক
পিতা-মাতাজগন্নাথ ভট্টাচার্য (বাবা)

প্রাথমিক পরিচয় সম্পাদনা

গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য ১৭৯৯ সালে বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার ইটার পাঁচগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম জগন্নাথ ভট্টাচার্য। তার খর্ব আকৃতির জন্য তিনি গুড়গুড়ে ভট্‌চাজ নামে পরিচিত ছিলেন। [১] ছোটবেলায় বাপ মা মারা যাওয়ার পর তিনি নৈহাটিতে নীলমণি ন্যায়পঞ্চাননের চতুষ্পাঠীতে শিক্ষালাভ করেছিলেন। তার সংস্কৃতে পাণ্ডিত্যের জন্য খ্যাতি ছিল।

কর্মজীবন সম্পাদনা

কলকাতায় আসার পর তাড়াতাড়ি সাংবাদিক হিসাবে প্রতিষ্ঠা পান। ইয়ং বেঙ্গলের মুখপত্র জ্ঞানান্বেষণ পত্রিকার কার্যত সম্পাদক, সম্বাদ ভাস্কর এবং সম্বাদ রসরাজ পত্রিকার পরিচালক ও হিন্দুরত্ন কমলাকর পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি সম্বাদ রসরাজ পত্রিকা দ্বারা ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের পাষণ্ড পীড়ন পত্রিকার সঙ্গে তর্কযুদ্ধে নামতেন। এই সমস্ত পত্রিকা সম্পাদনা করে তিনি অসাধারণ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। কিন্তু অশ্লীল রচনা এবং ব্যক্তিগত আক্রমণাত্ম নিবন্ধ প্রকাশের জন্য তার অর্থদণ্ড ও একাধিকবার কারাবাসও ঘটেছিল। তিনি রাজা রামমোহন রায়ের ব্রাহ্মসভা ছেড়ে রাধাকান্ত দেবের ধর্মসভায় যোগ দিলেও রক্ষণশীল ছিলেন না। [১]

গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য তীব্র শ্লেষাত্মক (কখনো কখনো অশ্লীল) রসরচনার মাধ্যমে স্বজাতীয় ইংরেজ নকলনবিস এবং বিদেশী দুর্নীতিপরায়ন শাসকদের আক্রমণ করতেন। তিনি সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে এবং বিধবা-বিবাহের পক্ষে লেখালেখি করেছিলেন। তৎকালীন সময়ের আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় ও বর্ধমানের বিধবা রাণী বসন্তকুমারীর রেজিস্ট্রি বিবাহে সাক্ষী ছিলেন। [১]

রচনাবলি সম্পাদনা

তার রচিত ও সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য -

  • ভগবদ্‌গীতা
  • জ্ঞানপ্রদীপ
  • ভূগোলসার
  • নীতিরত্ন
  • কাশীরাম দাসের মহাভারত প্রভৃতি।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান - প্রথম খণ্ড - সাহিত্য সংসদ ISBN 81-85626-65-0

সংযোগ শিরোনাম