গোলাম মোস্তফা (শহীদ বুদ্ধিজীবী)

পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নিহত বুদ্ধিজীবী

অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন শহীদ বুদ্ধিজীবী। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।[১] রাষ্ট্রীয় ভাবে বাংলাদেশের শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে প্রথম দফায় যে ১৯১ জন স্বীকৃতি পেয়েছে, তার মধ্যে তিনি একজন।[২][৩]


প্রাথমিক জীবনসম্পাদনা

গোলাম মোস্তফা ১৯৩৯ সালের ২৩ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার রঘুুুনাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে এমএ পাশ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন।


গোলাম মোস্তফা মুক্তি সংগ্রাম কমিটির নেতা ছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনী তাকে সহ স্থানীয় কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মুক্তিকামী ব্যক্তিকে বেয়োনেট চার্জে জর্জরিত করলে ঘটনাস্থলেই তিনিসহ মুক্তি সংগ্রাম কমিটির কয়েকজন সদস্য শাহাদাৎবরণ করেন। ১৭ এপ্রিল দিনটি ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জে গণহত্যা দিবস হিসেবে পরিচিত।

সম্মাননাসম্পাদনা

গোলাম মোস্তফার স্মৃতি রক্ষার্থে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ তার ছবি সংবলিত জাতীয় ডাকটিকিট প্রকাশ করে। তার স্মরণে পীরগঞ্জ থেকে বোচাগঞ্জ উপজেলা অভিমুখী সড়কটি "শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সড়ক" নামে নামকরণ হয়। বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত স্মৃতি ১৯৭১-এর তৃতীয় খ-, অক্সফোর্ড এটলাসসহ বিভিন্ন বইয়ে তাকে নিয়ে বহু প্রবন্ধ ছাপা হয়। এছাড়াও ঠাকুরগাঁও সাংবাদিক ফোরাম সম্মাননা সহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি। শহীদ বুদ্ধিজীবীর রাষ্ট্রীয় তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর তার সমাধিস্থল সংস্কার করে রাষ্টীয় উদ্যোগে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।


ব্যক্তিগত জীবনসম্পাদনা

তার স্ত্রীর নাম বেগম আনোয়ারা মোস্তফা, তিনি পীরগঞ্জ উপজেলা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। ছোট ভাই মোঃ গোলাম হোসেন পীরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ছিলেন।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "পীরগঞ্জ গণহত্যা দিবস ১৭ এপ্রিল"banglanews24.com। ২০১৫-০৪-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-০৬ 
  2. রহমান, রাশেদুর (২৪ মার্চ ২০২১)। "গোলাম মোস্তফা"প্রথম আলো 
  3. "ঠাকুরগাঁওয়ে নেই শহীদ বুদ্ধিজীবী গোলাম মোস্তফার স্মৃতিস্তম্ভ"একুশে টিভি। ২১ ডিসেম্বর ২০২০।