গোয়ালিয়র রাজ্য
গোয়ালিয়র রাজ্য ছিলো একটি অর্ধ-স্বায়ত্তশাসিত মারাঠা রাজ্য৷ বর্তমানে এই রাজ্যটির গুরুত্ব মারাঠা সাম্রাজ্যের উত্থান এবং মোগল সাম্রাজ্যের খন্ডীকরণ এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
গোয়ালিয়র রাজ্য ग्वालियर | |||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৭৩১–১৯৪৮ | |||||||||||
রাজ্যের পতাকা (১৭৩১-১৮১৮) | |||||||||||
১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে গোয়ালিয়র রাজ্যের মানচিত্র | |||||||||||
রাজধানী | গোয়ালিয়র | ||||||||||
প্রচলিত ভাষা | বুন্দেলি, হিন্দি, সংস্কৃত, মারাঠি | ||||||||||
ইতিহাস | |||||||||||
• প্রতিষ্ঠা | ১৭৩১ | ||||||||||
১৫ই জুন ১৯৪৮ | |||||||||||
আয়তন | |||||||||||
১৯৩১ | ৬৮,২৯১ বর্গকিলোমিটার (২৬,৩৬৭ বর্গমাইল) | ||||||||||
জনসংখ্যা | |||||||||||
• ১৯৩১ | ৩৫,২৩,০৭০ | ||||||||||
| |||||||||||
বর্তমানে যার অংশ | মধ্যপ্রদেশ, ভারত |
রাজ্যটি হিন্দু মারাঠা সিন্ধিয়া রাজবংশের দ্বারা শাসিত হতো এবং এটি ছিল ব্রিটিশ ভারতের ২১ তোপ সেলামী রাজ্যগুলির একটি।[১] রাজ্যটি পুরাতন শহর গোয়ালিয়রের নামে নামাঙ্কিত, যদিও শহরটি এই রাজ্যের রাজধানী ছিল না, তা সত্ত্বেও এখানে অবস্থিত দুর্গের ক্ষমতা ও ভৌগোলিক সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে এই শহরটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মারাঠা সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতকে রাজার রাণোজী সিন্ধিয়া এই রাজ্যের পত্তন ঘটান। পেশোয়া প্রথম বাজিরাও উজ্জয়নী অঞ্চলে প্রশাসনিকভাবে শাসনকার্যে সুবিধার জন্য তার বিশ্বস্ত রাণোজী সিন্ধিয়া এবং তার সেনাপতি যশজী অরবিন্দকরকে দায়িত্ব দেন। রাণোজী সিন্ধিয়ার দেওয়ানী রামচন্দ্র বাবা শেনবী ছিলেন একজন ঐশ্বর্যবান ব্যক্তি, তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীতে চার-পাঁচ দশক ব্যয় করে উজ্জয়িনী তে অবস্থিত শ্রী মহাকালেশ্বর মন্দির সংস্কার করান।[২]
১৭৬১ থেকে ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত গোয়ালিয়রে মহাদজী সিন্ধিয়ার শাসনকালে রাজ্যটি মধ্য ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী দেশীয় রাজ্যে পরিণত হয়। ইঙ্গ মারাঠা যুদ্ধের ফলে রাজ্যটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং একটি দেশীয় রাজ্যের পরিণত হয়। মধ্য ভারত এজেন্সির সর্ববৃহৎ দেশীয় রাজ্য ছিল একটি, যা গোয়ালিয়র রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে মধ্য ভারত এজেন্সি থেকে গোয়ালিয়র রেসিডেন্সিকে পৃথক করা হয় এবং সরাসরি ভারতের গভর্নর জেনারেল শাসিত একটি প্রদেশে পরিণত করা হয়। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর সিন্ধিয়া শাসকদের সিদ্ধান্তে একীভূতকরণের দলিল স্বাক্ষরিত করে এটি ভারতীয় অধিরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। স্বাধীন ভারতে এটি মধ্যভারত রাজ্যের অংশীভূত হয়।[৩]
ভূগোল
সম্পাদনারাজ্যটি ৬৪,৮৫৬ কিমি২ (২৫,০৪১ মা২) ক্ষেত্রফল জুড়ে বিস্তৃত ছিল এবং দুটি বিভাগ তথা উত্তর দিকের গোয়ালিয়র বিভাগ এবং দক্ষিণ দিকে মালব বিভাগে বিভক্ত ছিল। উত্তর দিকের গোয়ালিয়র বিভাগ ছিল ৪৪,০৮২ কিমি২ (১৭,০২০ মা২) বিস্তৃত এবং ২৪º১০' - ২৬º৫২' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৭৪º৩৮' - ৭৯º০৮' পূর্ব দ্রাঘিমার মধ্যে। এটির উত্তর উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত চম্বল নদী, যায় এটিকে রাজপুতানা এজেন্সির ঢোলপুর, কারাউলি ও জয়পুর রাজ্য থেকে; পূর্বদিকে যুক্তপ্রদেশের ব্রিটিশ জেলা জালৌন ও ঝাঁসি জেলা, মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলা; দক্ষিণ দিকে ভোপাল, খিলচীপুর ও রাজগড় রাজ্য, রাজপুতানার টঙ্ক রাজ্য; পশ্চিম দিকে রাজপুতানার টঙ্ক রাজ্য, ঝালাওয়াড় রাজ্য এবং কোটা রাজ্য থেকে পৃথক করেছে।[৪]
উজ্জয়নী শহরসহ মালব বিভাগ ছিল ২০,৭৭৪ কিমি২ (৮,০২১ মা২) আয়তন বিশিষ্ট। এটি একাধিক বিচ্ছিন্ন জেলা নিয়ে গঠিত ছিল।
১৯০১ খ্রিস্টাব্দে তথ্য অনুযায়ী এই জেলা থেকে প্রাপ্ত করের পরিমাণ ছিল ১,৫০,০০,০০ ভারতীয় মুদ্রা।[৫] ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে গোয়ালিয়র রাজ্যের জনসংখ্যা ছিল ৪০,০৬,১৫৯ জন।[৬]
ইতিহাস
সম্পাদনাশাসকবর্গ
সম্পাদনাগোয়ালিয়র দেশীয় রাজ্যের শাসকগণ মহারাজা সিন্ধিয়া উপাধিতে ভূষিত হতেন।[৭]
মহারাজা
সম্পাদনা- ১৭৩১ – ১৯ জুলাই ১৭৪৫: রাণোজী রাও সিন্ধিয়া
- ১৯ জুলাই ১৭৪৫ – ২৫ জুলাই ১৭৫৫: জয়াপ্পা রাও সিন্ধিয়া
- ২৫ জুলাই ১৭৫৫ – ১৫ জানুয়ারি ১৭৬১: প্রথম জানকোজী রাও সিন্ধিয়া
- ২৫ জুলাই ১৭৫৫ – ১০ জানুয়ারি ১৭৬০: দত্তাজী – রাজপ্রতিনিধি
- ১৫ জানুয়ারি ১৭৬১ – ২৫ নভেম্বর ১৭৬৩: পদশূণ্য
- ২৫ নভেম্বর ১৭৬৩ – ১০ জুলাই ১৭৬৪: কেদারজী রাও সিন্ধিয়া
- ১০ জুলাই ১৭৬৪ – ১৮ জানুয়ারি ১৭৬৮: মনজী রাও সিন্ধিয়া
- ১৮ জানুয়ারি ১৭৬৮ – ১২ ফেব্রুয়ারি ১৭৯৪: প্রথম মাধব রাও সিন্ধিয়া
- ১২ ফেব্রুয়ারি ১৭৯৪ – ২১ মার্চ ১৮২৭: দৌলত রাও সিন্ধিয়া
- ২১ মার্চ ১৮২৭ – ১৭ জুন ১৮২৭: মহারাণী বইজা বাঈ (স্ত্রী) – রাজপ্রতিনিধি (১৮২৭–১৮৬২)
- ১৭ জুন ১৮২৭ – ৭ ফেব্রুয়ারি ১৮৪৩ (প্রথমবার)
- ১৭ জুন ১৮২৭ – ৭ ফেব্রুয়ারি ১৮৪৩: দ্বিতীয় জানকোজী রাও সিন্ধিয়া (জীবাজী রাও সিন্ধিয়া)
- ১৭ জুন ১৮২৭ – ডিসেম্বর ১৮৩২: মহারাণী বইজা বাঈ (স্ত্রী) – রাজপ্রতিনিধি (দ্বিতীয়বার)
- ৭ ফেব্রুয়ারি ১৮৪৩ – ২০ জুন ১৮৮৬: জয়জী রাও সিন্ধিয়া (২৫শে জুন ১৮৬১ থেকে স্যার জয়জী রাও সিন্ধিয়া)
- ৭ ফেব্রুয়ারি ১৮৪৩ – ১৩ জানুয়ারি ১৮৪৪: মহারাণী তারা বাঈ (স্ত্রী) – রাজপ্রতিনিধি
- ১৮৪৩ – জানুয়ারি ১৮৪৪: দাদা খাসজীবাল্লাহ (সিপাহী বিদ্রোহকালীন)
- ২০ জুন ১৮৮৬ – ৫ জুন ১৯২৫: দ্বিতীয় মাধব রাও সিন্ধিয়া (২৫শে মে ১৮৯৫ থেকে স্যার দ্বিতীয় মাধব রাও সিন্ধিয়া)
- ১৭ আগস্ট ১৮৮৬ – ১৫ ডিসেম্বর ১৮৯৪: মহারাণী সখ্য বাঈ (স্ত্রী) – রাজপ্রতিনিধি (১৮৬২–১৯১৯)
- ৫ জুন ১৯২৫ – ১৫ আগস্ট ১৯৪৭: জর্জ জীবাজী রাও সিন্ধিয়া (১লা জানুয়ারী ১৯৪১ থেকে স্যার জর্জ জীবাজী রাও সিন্ধিয়া)
- ৫ জুন ১৯২৫ – ২৩ নভেম্বর ১৯৩১: মহারাণী চিকু বাঈ (স্ত্রী) – রাজপ্রতিনিধি
- ২৩ নভেম্বর ১৯৩১ – ২২ নভেম্বর ১৯৩৬: মহারাণী গজরা রাজেবাঈ (স্ত্রী) – রাজপ্রতিনিধি
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Gwalior - Princely State (21 gun salute)"। ৮ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ টেমপ্লেট:Website of Shri Mahakaleshwar temple, Ujjain.
- ↑ Boland-Crewe, Tara; Lea, David (২০০৪)। The Territories and States of India। Psychology Press। আইএসবিএন 9780203402900।
- ↑ Great Britain India Office. The Imperial Gazetteer of India. Oxford: Clarendon Press, 1908.
- ↑ https://dsal.uchicago.edu/reference/gazetteer/pager.html?objectid=DS405.1.I34_V12_439.gif
- ↑ Columbia-Lippincott Gazetteer, p. 740
- ↑ Princely States of India