গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়
গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি প্রাচীন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলাতে এটি অবস্থিত। ব্রিটিশ আমলে ১৮৯৩ সালে গৈলা হাই ইংলিশ স্কুল নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৮ সালে গৈলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি মডেল হাইস্কুলে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে এখানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীতে পাঠদান করা হয়।
গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় | |
---|---|
ঠিকানা | |
গৈলা ৮২০০ | |
তথ্য | |
প্রতিষ্ঠাকাল | ২৩ জানুয়ারি ১৮৯৩ |
প্রতিষ্ঠাতা | কৈলাশ চন্দ্র সেন |
বিদ্যালয় বোর্ড | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, বরিশাল |
শ্রেণি | ষষ্ঠ - দশম |
লিঙ্গ | সমন্বিত |
ভাষা | বাংলা |
ক্যাম্পাসের ধরন | গ্রামীণ |
ক্রীড়া | ক্রিকেট, ফুটবল, বাস্কেটবল |
ডাকনাম | গৈলা হাইস্কুল |
পূর্ব নাম | গৈলা হাই ইংলিশ স্কুল |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৮৯৩ সালের ২৩ জানুয়ারি আগৈলঝাড়ার ফুলশ্রী গ্রামের শিক্ষানুরাগী কৈলাশ চন্দ্র সেন নিজ অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। [১] জানা যায়, তিনি শিক্ষাজীবনে বিএ সম্পন্ন করে সরকারি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি পেয়েছিলেন, কিন্তু নিজ অঞ্চলের শিক্ষার গুরুত্বের কথা ভেবে উচ্চপদস্থ সরকারি চাকরি ছেড়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ও দীর্ঘ ৩৭ বছর বিদ্যালয় পরিচালনার পরে অবসর নেন। [২] তিনি প্রথমে গৈলা কালুপাড়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী দাসের বাড়িতে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করেন। প্রতিষ্ঠাকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল ৩৬০ জন। পরবর্তী সময়ে দ্রুত শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পাওয়ায় দাসের বাড়ির সম্পত্তির ওপরেই বর্তমান স্থানে স্কুলটি স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে গৌরনদী-গোপালগঞ্জ সড়কের পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়ায় গৈলা নামক স্থানে বিদ্যালয়টির অবস্থান। বিদ্যালয়টি গৌরনদী-আগৈলঝাড়া অঞ্চলের সর্বপ্রথম মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল। বিদ্যালয়ের পাশে রয়েছে হিজলী বন্দিশিবিরে ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে নিহত তারক সেনের স্মৃতিসৌধ ও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে দক্ষিণাঞ্চলে সড়কপথে সর্বপ্রথম সম্মুখযুদ্ধে নিহত শহীদ সিপাহী আলাউদ্দিন ওরফে আলা বক্সের সমাধি। [৩]
১৯৯৩ সালে গৈলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা নিজেদের অর্থায়নে ১৬০০ বর্গফুট আয়তনের ‘শতবর্ষ ভবন’ গড়ে তোলেন। [৪] পরবর্তীতে ২০০৮ সালে বিদ্যালয়টি মডেল হাইস্কুলে রূপান্তরিত হয় ও গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামকরণ করা হয়। ২০১২ সালে বিদ্যালয়টি ১২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পূনর্মিলনী অনুষ্ঠান উদ্যাপিত হয়। [৫]
অবকাঠামো
সম্পাদনাপ্রশাসন
সম্পাদনাশিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাবিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। প্রতিটি শ্রেণীতে একজন ক্লাস শিক্ষক থাকে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে। তাদের পাঠদানের জন্য মোট ৩৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন।
শিক্ষা-সহায়ক কার্যক্রম
সম্পাদনা- বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা
- বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী
সম্পাদনা- শেখ মুজিবুর রহমান
- আবদুর রব সেরনিয়াবাত, বাংলার সাবেক কৃষি মন্ত্রী
- সুনীল কুমার গুপ্ত, সাবেক মন্ত্রী
- ব্রিগেডিয়ার এম এ মালেক, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
- আবুল হোসেন, সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী
- অজয় দাস গুপ্ত, দৈনিক সমকাল এর সহযোগী সম্পাদক
- তটিনী গুপ্তা, কলকাতা বেথুন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ
- অমিয় দাশ গুপ্ত, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ
- সুরেন্দ্র নাথ গুপ্ত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দু’বার পিএইচডি ডিগ্রী প্রাপ্ত
- এম শাহআলম, প্রকৌশলী
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ দাশগুপ্ত, অজয় (২৩ জানুয়ারি ২০১৫)। "গৈলা স্কুল ১২৩ বছরে"। দৈনিক সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১৬।
- ↑ "কৈলাসচন্দ্র সেনের স্কুলটি"। দৈনিক সমকাল। ২৩ জানুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "গৈলা স্কুল ১২০ বছরে"। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "গৈলা স্কুল—গৌরবের ১২০ বছর"। দৈনিক প্রথম আলো। ২৩ জানুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "বঙ্গবন্ধুসহ বহু কৃতীমান ছিলেন গৈলা স্কুলের শিক্ষার্থী - ১২০ বছর পূর্তিতে মিলন মেলা"। দৈনিক ইত্তেফাক। ২৫ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১৬।
- ↑ "ঐতিহ্যবাহী গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় যে বিদ্যালয়ে পদচারণা ছিল অনেকের"। দৈনিক সংগ্রাম। ২৮ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]