খাপড়া ওয়ার্ড গণহত্যা
খাপড়া ওয়ার্ড গণহত্যা হচ্ছে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে সংঘটিত একটি গণহত্যা। এই গণহত্যায় মোট সাত জন জেলবন্দী ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। এছাড়াও সেদিনের ঘটনায় আহত হন আরও ৩০ জন।[১]
খাপড়া ওয়ার্ড গণহত্যা | |
---|---|
স্থান | রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার |
তারিখ | ২৪ এপ্রিল ১৯৫০ |
নিহত | ৭ |
আহত | ৪০ |
অপরাধীগণ | জেলার বিল |
ইতিহাস
সম্পাদনারাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে জেলবন্দী কমিউনিস্ট নেতা কর্মীদের সাথে উপযুক্ত রাজবন্দীর মর্যাদা ও ভাল খাবারের দাবীতে জেলবন্দী ব্যক্তিগণ অনশনে অংশগ্রহণ করে আসছিলেন।[২] ঘটনার দিন ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের খাপড়া ওয়ার্ড থেকে আটজন রাজবন্দীকে কনডেমড সেল বা ফাঁসির আসামীর নির্জন সেলে স্থানান্তরিত করার সময় রাজনৈতিক বন্দিরা জেলখানায় ডিভিশন না পাওয়ায় প্রতিবাদ করেন। এছাড়াও ভালো খাবার ঠিকমত সরবরাহ না করা, কারাবিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সুযোগ না দেওয়া[৩] এবং খাপড়া ওয়ার্ডে ১১ জন রাজবন্দীকে জোরপূর্বক আটকে রাখার প্রতিবাদ করেন জেলবন্দীরা।[১] জেলার বিলের নির্দেশে চারদিকে জানালাবিশিষ্ট একটি ঘরে আবদ্ধ করে বাইরে থেকে ৪০ জন বন্দির উপর নির্মমভাবে গুলি চালায় কারারক্ষীরা। এর ফলে শহীদ হন মোট ৭জন। বাকি সমস্ত বন্দীরা মারা না গেলেও মারাত্মকভাবে আহত হন। পুলিশ রক্তাপ্লুত বন্দীদের ওপর পূনরায় লাঠিচার্জ করে।[২]
খাপড়া ওয়ার্ডের সেদিনের ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আবদুল হক, বাবর আলী, আমিনুল ইসলাম, মনসুর হাবিব, ভুপেন পালিত, অমূল্য লাহিড়ী এবং নুরুন্নবী চৌধুরী। সেদিন জেল পুলিশের গুলিতে আবদুল হকের বাম হাতটি দ্বিখন্ডিত হয়ে যায় এবং মনসুর হাবিবের জানু ও বাহুতে গুলি লাগে। নুরুন্নবী চৌধুরীর পা কেটে ফেলে দিতে হয়। বাকী চারজনও গুরুতর আহত হন।
শহীদ ৭ জন
সম্পাদনা- আনোয়ার হোসেন, (১৯৩০ - ২৪ এপ্রিল, ১৯৫০) ছাত্রনেতা,
- বিজন সেন, (১৯০৫- ২৪ এপ্রিল, ১৯৫০) শ্রমিক নেতা,
- কম্পরাম সিং, (১৮৮৭-২৪ এপ্রিল ১৯৫০) তেভাগা আন্দোলনের প্রবীণ নেতা
- সুধীন ধর, (১৯১৮- ২৪ এপ্রিল ১৯৫০) মোহিনী মিলের সংগঠক,
- হানিফ সেখ, (১৯২৪-২৪ এপ্রিল ১৯৫০) মোহিনী মিলের শ্রমিক,
- দিলওয়ার হোসেন, (১৯২৬-২৪ এপ্রিল ১৯৫০) কুষ্টিয়ার রেলশ্রমিক
- সুখেন ভট্টাচার্য, (১৯২৮-২৪ এপ্রিল ১৯৫০) ময়মনসিংহের ছাত্র সংগঠক।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ বসু, অঞ্জলি (নভেম্বর ২০১৩)। বসু, অঞ্জলি; সেনগুপ্ত, সুবোধচন্দ্র, সম্পাদকগণ। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। ১ (পঞ্চম সংস্করণ, দ্বিতীয় মুদ্রণ সংস্করণ)। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৬১। আইএসবিএন 978-8179551356।
- ↑ ক খ "The Khapra Ward Day: The Moment and the Movement" [খাপড়া ওয়ার্ড দিবস: ক্ষণ ও আন্দোলন] (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য ডেইলি স্টার। ২৩ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "ঐতিহাসিক খাপড়া ওয়ার্ড শহীদ দিবস রোববার"। বাংলা নিউজ। ২৪ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১৭।