খনিয়াধানা রাজ্য ছিলো ব্রিটিশ শাসিত ভারতে অবস্থিত একটি দেশীয় রাজ্য, যা বুন্দেলা রাজপুতদের জুদেব রাজবংশের দ্বারা শাসিত হতো।[১] রাজ্যটি রাজধানী ছিল খনিয়াধানা শহরে এবং এটি ছিল মধ্য ভারত এজেন্সির অন্তর্গত বুন্দেলখণ্ড এজেন্সির একটি রাজ্য।[২]

খনিয়াধানা রাজ্য
खनियाधाना
ব্রিটিশ ভারত দেশীয় রাজ্য
১৭২৪–১৯৪৮

ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া থেকে প্রাপ্ত খনিয়াধানা রাজ্যের মানচিত্র
রাজধানীখনিয়াধানা
আয়তন 
• ১৯৪১
১৭৬ বর্গকিলোমিটার (৬৮ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা 
• ১৯৪১
২০,১২৪
ইতিহাস 
• প্রতিষ্ঠিত
১৭২৪
১৯৪৮
উত্তরসূরী
ভারত

খনিয়াধানা রাজ্য প্রতিষ্ঠিত ছিল একাধিক ছোট ছোট ছিটমহলের মধ্যে‌, যার পূর্বদিকে ছিল ব্রিটিশ ভারতের ঝাঁসি জেলা এবং অন্যান্য সকল দিক পরিবৃত ছিল গোয়ালিয়র রাজ্যের নরওয়ার জেলা দ্বারা। খনিয়াধানা ইংরেজিতে ছিল গোয়ালিয়র রেসিডেন্সির অংশ।[৩] এটি ওড়ছা রাজ্যের পশ্চিম দিকে অবস্থিত ছিল।[২] ৫৫ টি গ্রাম সংবলিত এই রাজ্যটি ১০১ বর্গমাইল ক্ষেত্রফল জুড়ে বিস্তৃত ছিল এবং ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে এটির মোট জনসংখ্যা ছিলো ২০,১২৪ জন৷[২]

ইতিহাস সম্পাদনা

১৭২৪ খ্রিস্টাব্দে ওড়ছা রাজ্যের রাজা উদত সিং তার পুত্র অমর সিংকে খনিয়াধানা এবং আরো বেশকিছু গ্রাম নির্দিষ্ট করেন। মারাঠারা বুন্দেলখন্ড অঞ্চলে নিজেদের সর্বশ্রেষ্ঠত্ব কায়েম করতে সফল হলে মারাঠা পেশোয়া ১৭৫১ খ্রিস্টাব্দে অমর সিংকে একটি সামন্ত সনদ প্রেরণ করেন এবং তাকে মারাঠা অধীনস্থ জায়গীরদার হিসেবে উল্লেখ করেন। এরপর থেকে ঝাঁসিতে নিযুক্ত মারাঠাদের পেশোয়া এবং ওড়ছা মহারাজের মধ্যে খনিয়াধানা‌ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। শেষমেষ ঝাঁসির মারাঠারা খনিয়াধানাতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হন। ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ঝাঁসি রাজ্য বিলুপ্ত হলে খনিয়াধানার জায়গীরদার সম্পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানায়। ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে খনিয়াধানাকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সরাসরি ঝাঁসি দরবার বা পেশোয়ার নির্ভরশীলতা থেকে সরিয়ে স্বাধীন ঘোষণা করা হলে এই সমস্যা নিষ্পত্তি ঘটে। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে বৃটেনের রাজা পঞ্চম জর্জের ফরমান অনুসারে গঠিত নরেন্দ্রমন্ডল বা চেম্বার অব প্রিন্সেসের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন এই রাজ্যের শাসকও। [২]

১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে খনিয়াধানা রাজ্যটির রাজা ভারতীয় অধিরাজ্যে যোগদান করলে এটিকে পূর্ব-পশ্চিমে দুটি খণ্ডে বিভক্ত করা হয়। ২৭ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত পশ্চিম দিকের অংশ মধ্যভারত রাজ্যের শিবপুরী জেলা‌ এবং পূর্ব দিকের ২৮ টি গ্রাম বিন্ধ্যপ্রদেশ-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। উভয় প্রদেশই বর্তমানে মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের অংশ।

শাসকবর্গ সম্পাদনা

খনিয়াধানা রাজ্যের শাসকরা ছিলেন বুন্দেলা রাজপুত। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে এই রাজ্যের শাসকগণ রাও বা জায়গীরদার নামে পরিচিত হলেও এর পর থেকে তারা রাজা উপাধি পান। এই রাজ্যটি একটি অ-তোপ সেলামী রাজ্য ছিল।

রাজা সম্পাদনা

  • ১৭২৪–১৭.. অমর সিং
  • ১৭৬০–১৮৬৯ অজ্ঞাত উত্তরসূরী
  • ১৮৬৯–১৯০৯ চিত্র সিং
  • ১৯০৯–১৯৩৮ খলক সিং
  • ১৯৩৮–১৯৪৮ দেবেন্দ্রপ্রতাপ সিং
  • ১৯৪৮~বর্তমান ভানুপ্রতাপ সিং

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bundela Rajas of Bundelkhand (Panna)
  2. David P. Henige, Princely states of India: a guide to chronology and rulers, Orchid Press, 2004 pp:104-5
  3. চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Gwalior Residency"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ12 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 748।