বিন্ধ্যপ্রদেশ

ভারতের প্রাক্তন রাজ্য

বিন্ধ্য প্রদেশ একটি ছিল ভারতের একটি প্রাক্তন রাজ্য। রাজ্যটি ২৩,৬০০ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ছিল। [] ভারতের স্বাধীনতার পরপরই ১৯৪৮ সালে পূর্ব মধ্য ভারত এজেন্সির পূর্ব অংশের দেশীয় রাজ্যগুলো থেকে বাঘেলখণ্ড ও বুন্দেলখণ্ড রাজ্য ইউনিয়ন হিসাবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫০ সালের ২৫ জানুয়ারিতে প্রদেশের মধ্যাঞ্চলের বিন্ধ্য পর্বতমালার নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় বিন্ধ্য প্রদেশ। এই রাজ্যের রাজধানী ছিল রেওয়া । এর উত্তরে ছিল উত্তরপ্রদেশ ও দক্ষিণে ছিল মধ্য প্রদেশ এবং বিন্ধ্য প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত দাতিয়া ছিটমহল সম্পূর্ণভাবে মধ্য ভারত রাজ্যের অভ্যন্তরে ছিল ।

বিন্ধ্যপ্রদেশ
विंध्य प्रदेश
ভারতের প্রাক্তন রাজ্য
১৯৪৮–১৯৫৬
বিন্ধ্যপ্রদেশের প্রতীক
প্রতীক

১৯৫১ সালে ভারতের মানচিত্র। ভারতের মধ্যাঞ্চলে বিন্ধ্য প্রদেশকে দেখানো হয়েছে।
রাজধানীরেওয়া
আয়তন 
• 
৬১,১৩১.৫ বর্গকিলোমিটার (২৩,৬০৩.০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা 
• 
৩৬,০০,০০০
ইতিহাস 
• বিন্ধ্য প্রদেশ রাজ্য গঠন
১৯৪৮
১৯৫৬
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
মধ্য ভারত এজেন্সি
মধ্যপ্রদেশ
প্রণব কুমার ভট্টাচার্য (১৯৭৭)। Historical Geography of Madhya Pradesh from Early Records। দিল্লি: মতিলাল বানারসিদাস। পৃষ্ঠা 54–5। 

রাজ্য পুনর্গঠন আইন অনুসারে ১৯৫৬ সালে বিন্ধ্য প্রদেশকে মধ্য প্রদেশে একীভূত করা হয়। []

ইতিহাস

সম্পাদনা

১৯৪৮ সালের ১২ মার্চে বিন্ধ্যপ্রদেশ রাজ্যটি গঠিত হয় এবং একই বছরের ৪ এপ্রিলে নবগঠিত রাজ্যের উদ্বোধন করা হয়। এর গঠনের মাধ্যমে ৩৫ টি দেশীয় রাজ্য একত্র হয়ে বিন্ধ্যপ্রদেশে পরিণত হয়:

  1. রেওয়া
  2. পান্না
  3. দাতিয়া
  4. ওড়ছা
  5. অজয়গড়
  6. বাওনি
  7. বরুন্ধা
  8. বিজাওয়ার
  9. ছত্রপুর
  10. চরখারি
  11. মাইহার
  12. নগদ
  13. সমথার
  14. আলিপুর
  15. বাঁকা-পাহাড়ি
  16. বেরি
  17. ভাইসুন্দা (চৌবে জয়গীর)
  18. বিহাত
  19. বিজনা
  20. ধুরওয়াই
  21. গড়রৌলি
  22. গৌরীহর
  23. জাসো
  24. জিগনি
  25. খানিয়াধনা
  26. কামতা রাজৌলা (চৌবে জয়গীর)
  27. কোঠি
  28. লুগাসি
  29. নাইগাওয়ান রেবাই
  30. পাহড়া (চৌবে জগির)
  31. পালদেও (চৌবে জয়গীর)
  32. সরিলা
  33. সোহওয়াল
  34. তারাওন (চৌবে জগির)
  35. তারী-ফতেহপুর (হাশট-ভাইয়া জয়গীর)

১৯৫০ সালের ২৫ জানুয়ারিতে পূর্বেকার দশটি দেশীয় রাজ্য বিহার, বাঁকা পাহাড়ী, বাওনি, বেরি, বিজনা, চরখারি, জিগনি, সমথর, সরিলা এবং তোরি-ফতেহপুরকে উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্য ভারতে স্থানান্তরিত করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বরে রাজ্য পুনর্গঠন আইনের অধীনে মধ্য ভারত এবং ভোপাল রাজ্যের সাথে একত্রে বিন্ধ্য প্রদেশকে মধ্য প্রদেশে একীভূত করা হয়।

বিন্ধ্যপ্রদেশ গঠনের পরে রাজ্যকে দুটি বিভাগে বিভক্ত করা হয়। প্রতিটি বিভাগে মোট ৪ টি জেলা ছিল।

বুন্দেলখণ্ড বিভাগের সদরদপ্তর ছিল ছত্রপুর জেলার নওগাঁওতে। এর অনর্ভুক্ত জেলাগুলো হল:

  1. পান্না জেলা
  2. ছত্রপুর জেলা
  3. টিকামগড় জেলা
  4. দতিয়া জেলা

বাঘেলখণ্ড বিভাগের বিভাগের সদরদপ্তর ছিল রিওয়ায়। এর অনর্ভুক্ত জেলা গুলো হল:[]

  1. রেওয়া জেলা
  2. সাতনা জেলা
  3. সিদ্ধি জেলা
  4. শাহডল জেলা

রাজনীতি

সম্পাদনা
 
বিন্ধ্যপ্রদেশের মানচিত্র

১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৪৯ সালের মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের নামমাত্র প্রধান ছিলেন রাজপ্রমুখগণ। পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালের মার্চ থেকে ১৯৫২ মার্চ পর্যন্ত প্রধান কমিশনার এবং রাজ্য বিলুপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৯৫২ মার্চ থেকে ১৯৫৬ সালের ৩১ নভেম্বর পর্যন্ত লেফটেন্নট গভর্নরগণ রাজ্যের নামমাত্র প্রধান ছিলেন।

এই রাজ্যের ৬০ সদস্য বিশিষ্ঠ একটি বিধানসভা ছিল। বিধায়কগণ মোত ৪৮ টি আসন থেকে নির্বাচিত হতেন। আসন গুলোর মধ্যে ১৬ টি ছিল একক আসন এবং বাকি ১২টি ছিল দ্বৈত আসন।[] রাজ্যে ৪ টি লোকসভা কেন্দ্র ছিল (২টি একক সদস্য এবং ২টি দ্বৈত সদস্য)। []

১৯৪৮ সালে সালে রাজ্য গঠনের পর রাওয়া রাজ্যের সর্বশেষ শাসক মার্তাণ্ড সিং রাজপ্রমুখ এবং পান্না রাজ্যের সর্বশেষ শাসক যাদবেন্দ্র সিং উপরাজপ্রমুখ হন। প্রাথমিকভাবে অবোধেশ প্রতাপ সিং বাঘেলখণ্ড বিভাগ ও কামতা প্রসাদ সাক্সেনা বুন্দেলখণ্ড বিভাগের মুখ্যমন্ত্রী হলেও শীঘ্রই অবোধেশ প্রতাপ সিংহ পুরো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ওঠেন।

১৯৪৯ সালের ১৪ এপ্রিল অবোধেশ প্রতাপ সিংহ পদত্যাগ করার পর তৎকালীন প্রধান কমিশনার এনবি বোনারজি ১৯৪৯ সালের ১৫ এপ্রিলে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তার স্থলাভিষিক্ত হন এসএন মেহতা ।

১৯৫১ সালের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ৪০ টি আসন এবং সোশালিস্ট পার্টি ১১ টি আসন লাভ করে। [] ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের এসএন শুক্লা ১৯৫২ সালের ১৩ ই মার্চ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন, শিবানন্দ স্পিকার হন এবং সমাজতান্ত্রিক দলের রাম কিশোর শুক্লা বিরোধী দলের নেতা হন। ১৯৫৬ সালের ৩১ অক্টোবরে রাজ্যটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।

আরো দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Bhattacharyya, P. K. (১৯৭৭)। Historical Geography of Madhya Pradesh from Early Records। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 54–5। আইএসবিএন 0 8426 909 13। ২৮ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০২০  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "bhattacharyya" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  2. "States Reorganisation Act, 1956"। India Code Updated Acts। Ministry of Law and Justice, Government of India। ৩১ আগস্ট ১৯৫৬। পৃষ্ঠা section 9। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৩ 
  3. "Statistical Report on General Election, 1951 to the Legislative Assembly of Vindhya Pradesh" (পিডিএফ)। Election Commission of India website। 
  4. "Statistical Report on General Elections, 1951 to the First Lok Sabha" (পিডিএফ)। Election Commission of India website। ৯ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০০৮