ক্যাথেড্রাল দে লিওন

লিওন, নিকারাগুয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং বৃহৎ আকৃতির গির্জা

আওয়ার লেডি অব গ্রেস ক্যাথেড্রাল, লিওন বা লিওন ক্যাথেড্রাল (স্পেনীয়: Catedral de la Asuncíon de María de León) নিকারাগুয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং বৃহৎ আকৃতির গির্জারূপে বিবেচিত। এছাড়াও এটি মেরি ক্যাথেড্রাল এজাম্পশন ও কুমারীমাতা মেরি’র আশীর্বাদপুষ্ট নামে এর পরিচিতি রয়েছে। প্যারিসভিত্তিক ইউনেস্কো বৃহৎ আকৃতির এ গির্জাটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এরফলে স্থানটি নিকারাগুয়ার লিওন ভাইজোএল গুগুন্সের পর তৃতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যরূপে মনোনীত হয়।

ক্যাথেড্রাল অব দি অ্যাজাম্পশন অব মেরি, লিওন
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিরোমান ক্যাথলিক
প্রদেশলিওন ডায়েস
পবিত্রীকৃত বছর১৮৬০
অবস্থান
অবস্থানলিওন, নিকারাগুয়া
স্থানাঙ্ক১২°২৬′৬″ উত্তর ৮৬°৫২′৪১″ পশ্চিম / ১২.৪৩৫০০° উত্তর ৮৬.৮৭৮০৬° পশ্চিম / 12.43500; -86.87806
স্থাপত্য
স্থাপত্য শৈলীনব্য-ধ্রুপদী
ভূমি খনন১৭৪৭
সম্পূর্ণ হয়১৮১৪
প্রাতিষ্ঠানিক নাম: লিওন ক্যাথেড্রাল
ধরনসাংস্কৃতিক
মানদণ্ড২য়, ৪র্থ
পর্যাদাপ্রাপ্ত হয়২০১১ (৩৫তম অধিবেশন)
সূত্র নং১২৩৬
রাষ্ট্রীয় অংশ নিকারাগুয়া
অঞ্চললাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল
ক্যাথেড্রালের অভ্যন্তর অঙ্গসজ্জ্বা।

ইতিহাস সম্পাদনা

১৭৪৭ থেকে ১৮১৪ সময়কালের মধ্যে গির্জার অবকাঠামো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। ১৮৬০ সালে পোপ নবম পিয়াস স্থানটিকে পবিত্র হিসেবে ঘোষণা করেন। এ স্থাপনা নির্মাণের ফলে মধ্য আমেরিকার সর্ববৃহৎ ক্যাথেড্রালের স্বীকৃতি লাভ করে ও আমেরিকা অঞ্চলের অন্যতম জনপ্রিয় ক্যাথেড্রাল এটি। ভিন্নতর স্থাপত্যশৈলী ও বিশেষ সাংস্কৃতিক গুরুত্বতাই এর প্রধান কারণ।

অবকাঠামো সম্পাদনা

১৭৬২ সালে গুয়াতেমালীয় স্থপতি দিয়েগো হোস দে পোরেস ওয়াই এস্কুইভেল এর স্থাপত্য নকশা প্রণয়ন করেন। বারোকুনব্য-ধ্রুপদী ধাঁচের সংমিশ্রণের সাথে কিছুটা গোথিক, রেনেসাঁস ও মুদেজা’র ধারার প্রভাব পড়েছে এখানে। ঐ দৃষ্টিকোণে ভবনটিকে একলেকিটিসিজম ধাঁচ হিসেবে শ্রেণিবিন্যাস করা যায়।[১] ক্যাথেড্রালটি চতুষ্কোণাকৃতি করে তৈরি করা হয়েছে যা ঐ শতাব্দীগুলোয় নির্মিত ক্যাথেড্রালগুলোর ন্যায় এবং পেরুর লিমাকাজকো’র ক্যাথেড্রালের সাথে এর মিল রয়েছে। দেয়ালগুলো সুসংগঠিত ও মজবুত আকৃতির হওয়ায় সেরো নেগ্রো আগ্নেয়গিরিযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতিজনিত প্রভাব থেকে এ ক্যাথেড্রালটি রক্ষা পেয়েছে বহুবার।

গির্জাটির নিচে মোট সাতটি ছোট কক্ষ রয়েছে। মূলতঃ ভূমিকম্প থেকে রক্ষা পেতেই বিশেষভাবে এগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। তন্মধ্যে একটি কক্ষ দিয়ে সুড়ঙ্গের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। গির্জার নিচ দিয়ে সাতটি সুড়ঙ্গ বয়ে গেছে ও শহরের অন্যান্য গির্জাকে নেতৃত্ব দিচ্ছে ক্যাথেড্রাল কর্তৃপক্ষ।

ক্যাথেড্রালে মৃতদেহ সমাহিত করার জন্য কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এরফলে অর্জিত অর্থে ভবনের অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করা হয়।[২]

ক্যাথেড্রালের নিচে বিশেষভাবে নির্মিত প্রকোষ্ঠ রয়েছে। এতে ২৭জনের শবদেহ সযত্নে রক্ষিত আছে। তন্মধ্যে, ১০জন বিশপ, ৪জন পাদ্রি, একজন প্রখ্যাত স্বাধীনতা আন্দোলনকর্মী, তিনজন কবি, একজন সঙ্গীতজ্ঞ, ছয়জন অভিজাত ব্যক্তি ও একজন ক্রীতদাস রয়েছেন।

ঐতিহাসিক মূল্যায়ন সম্পাদনা

 
রুবেন দারিও’র সমাধিক্ষেত্র।

মিগুয়েল লারেয়াঙ্গা, কবি রুবেন দারিও, সালোমন দে লা সেলভাআলফন্সো কোর্তেস, সঙ্গীতজ্ঞ হোস দে লা ক্রুজ মেনা, চিকিৎসক লুইস এইচ. দেবেল, অধ্যাপক এদগার্দো বুইত্রাগো, লিওনের প্রথম ও শেষ বিশপ এবং মনসিগনর সাইমিও পেরেইরা ও কাস্তিলন নিকারাগুয়ার সকল বিশপ এবং মার্সেলিনো অ্যারিয়াসের ন্যায় নিকারাগুয়ার প্রখ্যাত ব্যক্তিত্বকে সমাহিত করা হয়েছে।

স্পেনীয়ভাষী সাহিত্যিক, ‘কাস্তিলানের পণ্ডিত রাজপুত্র’ ও আধুনিকতাবাদী আন্দোলনের জনক দারিও’র সমাধির কাছেই স্যান পাবলো’র ভাস্কর্য দণ্ডায়মান। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ক্যাথেড্রাল পরিচালনাকারী বিশপ মনসিগনর সিমন পেরেইরা ওয়াই কাস্তিলন গ্রানাডীয় ভাস্কর জর্জ নাভাস করদোনেরোকে কুমারীমাতা মারিয়া’র ভাস্কর্য নির্মাণের জন্য নিযুক্ত করেন। তিনিই ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯১৬ তারিখে দারিও’র শবানুষ্ঠান পরিচালনা করেছিলেন। এছাড়াও, নাভাস প্রভু যীশু খ্রিস্টের বারোজন অনুসারীর ভাস্কর্য নির্মাণ করেছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Cathedral of the Assumption, León"। Wondermondo। 
  2. "Cathedral Basilica of the Assumption"Emporis। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৬, ২০১৭ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

গ্যালারী চিত্র সম্পাদনা