কোকড়াঝাড় জেলা
কোকড়াঝাড় জেলা (অসমীয়া: কোকরাঝার জিলা) ইংরেজি: Kokrajhar district); (উচ্চারণ: ˌkɒkrəˈʤɑ:) হচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যের সাতাশটি জেলার ভিতরে একটি। এই জেলা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এক প্রৱেশদ্বার স্বরূপ। ১৯৯৩ সালে স্থাপিত "বড়োলেণ্ড স্বায়ত্বশাসিত পরিষদ"-'র মূল কার্যালয় কোকড়াঝাড় জেলাতে অবস্থিত। এ জেলার সদরদপ্তর হচ্ছে কোকড়াঝাড়।
কোকড়াঝাড় জেলা | |
---|---|
জেলা | |
![]() আসামে কোকড়াঝাড় জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৬°২৪′ উত্তর ৯০°১৬′ পূর্ব / ২৬.৪° উত্তর ৯০.২৭° পূর্ব | |
রাজ্য | অসম |
দেশ | ![]() |
আয়তন | |
• মোট | ৩,১৬৯'"`UNIQ--ref-০০০০০০০১-QINU`"' বর্গকিমি (বিন্যাসন ত্রুটি: invalid input when rounding বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৮,৮৬,৯৯৯[১] |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় মান সময় (ইউটিসি+05:30) |
ওয়েবসাইট | kokrajhar.gov.in |
ভৌগোলিক বর্ণনাসম্পাদনা
কোকড়াঝাড় জেলা ব্রহ্মপুত্রর উত্তর পারে অবস্থিত একটি জেলা। কোকড়াঝাড় জেলার ভৌগোলিক অবস্থান ৮৯ ডিগ্রী ৪৬ মিনিট থেকে ৯০ ডিগ্রী ৩৮ মিনিট দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত ও ২৬ ডিগ্রী ১৯ মিনিট থেকে ২৬ ডিগ্রী ৫৪ মিনিট অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। কোকড়াঝাড় জেলার উত্তরে ভূটান, পূর্বে বঙাইগাঁও জেলা, পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে ধুবড়ী জেলা অবস্থিত। কোকড়াঝাড় জেলার ক্ষেত্রফল ৩১৬৯ বর্গ কিলোমিটার।[১]
নদী-উপনদীসম্পাদনা
কয়েকটি উল্লেখযোগ্য নদী-উপনদী হল: মানাহ, আই, চম্পাবতী, সরলভঙা, সোণকোষ় গৌরাং হেল লঙা ইত্যাদি।
ইতিহাসসম্পাদনা
কোকড়াঝাড় আগে অবিভ্ক্ত গোয়ালপাড়া জেলার একটি অংশ ছিল। ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত, একটা ছোট রেলওয়েস্টেশনের সঙ্গে এটি একটি ছোট গ্রাম ছিল। ১৯৫৭ সালে, সেই সময়কার অসমের মুখ্যমন্ত্রী বিমলা প্রসাদ চলিহাদেব ধুবড়ী মহকুমার উত্তর ভাগের এক অংশ ও গোয়ালপাড়া জেলার কিছু অংশ নিয়ে একটা নতুন মহকুমার সৃষ্টি করেছিলেন। এই নতুন মহকুমাটিকে কোকড়াঝাড় মহকুমা বলা হত। গোয়ালপাড়া জেলাটিকে এইভাবে তিনটি মহকুমায় ভাগ করা হয়। বিজনী, সিডলী, সিরাং, রিপু ও গোমা অঞ্চলের সাথে সেই সময়কার কোকড়াঝাড় মহকুমার মোট ক্ষেত্রফল ছিল ৪০৬৫.৮৮ বর্গ কিঃমিঃ(১৫৬৯.৯ বর্গ মাইল)।[১]
১৯৮৩ সালের ১ জুলাইতে, কোকড়াঝাড় শহরকে জেলাটির সদর কোকড়াঝাড় মহকুমাটি কোকড়াঝাড় জেলাতে উন্নীত হয়। কোকড়াঝাড় শহরকে জেলাটটির সদর বানানো হয়। নতুন জেলাটিতে চারটি করে পুলিশ থানা ছিল: বিজনী, সিডলী, কোকড়াঝাড় ও গোসাঁইগাঁও। জেলাটি পূর্বে মানাহ নদী থেকে পশ্চিমে সোণকোষ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।[১]
প্রশাসনিক বিভাজনসম্পাদনা
কোকড়াঝাড় জেলাকে তিনটি মহকুমাতে ভাগ করা হয়েছে। সেই তিনটি হ’ল: কোকড়াঝাড়, গোঁসাইগাঁও ও পর্বতজোরা। গঙ্গিয়া নদীটি ("টিপকাই" নামে পরিচিত) জেলাটির দক্ষিণ অংশে জেলাটিকে দুটি ভাগে ভাগ করেছে।[১]
মহকুমা | মহকুমার সদর |
---|---|
কোকড়াঝাড় | কোকড়াঝাড় |
গোঁসাইগাঁও | গোঁসাইগাঁও |
পর্বতজোরা | কাজিগাঁও |
জনসংখ্যাসম্পাদনা
কোকড়াঝাড় জেলার সমতল ও ভূটানের পার্বত্য অঞ্চলের লোকদের জীবনের মধ্যে এক জটিল সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এখানে লোকজন ব্যবসা বাণিজ্য ও ভ্রমণের কারণে কোনো অসুবিধা অবিহনে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমান্ত পার হয়।
কোকড়াঝাড় জেলার মোট জনসংখ্যার অধিকাংশই বড়ো সম্প্রদায়র লোক। এছাড়া বহু সংখ্যায় কোচ রাজবংশী,নাথযোগী, দেশী মুসলমান ও সাঁওতাল লোকও আছে।[১]
যাতায়াতসম্পাদনা
গুয়াহাটি থেকে প্রায় ২১২ কিঃমিঃ দূরত্বে কোকড়াঝাড় জেলা অবস্থিত। এখান থেকে জেলাটি পর্যন্ত যেতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লাগে। গুয়াহাটী আন্তঃরাজ্যিক বাস আস্থানের থেকে জেলাটি পর্যন্ত দৈনিক বাস চলাচল করে।
বিমান বন্দরসম্পাদনা
কোকড়াঝাড়ে কোনো বিমান বন্দর নেই। এর নিকটতম বিমান বন্দর হল গুয়াহাটির লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈ আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিমান বন্দর। এর থেকে বাস ও টেক্সীর দ্বারা কোকড়াঝাড় পর্যন্ত যাওয়ার সু-ব্যবস্থা আছে।
রেলওয়ে স্টেশনসম্পাদনা
কোকড়াঝাড় স্টেশন হল উত্তর-পূব সীমান্ত রেলওয়ের প্রবেশদ্বার। গুয়াহাটি ও কোকড়াঝাড়ের মধ্যে দৈনিক যাত্রীবাহী রেল চলাচল করে। রেলের দ্বারাও জেলাটিতে যোবার সু-ব্যবস্থা আছে।[২]
অর্থনৈতিক ব্যবস্থাসম্পাদনা
জেলাটির অর্থনৈতিক ব্যবস্থা মূলতঃ কৃষির ওপরে নির্ভরশীল। এর প্রায় ৮০% লোক কৃষিকর্মের সাথে জড়িত। জেলাটির মোট ক্ষেত্রফলের প্রায় শতকরা ২৫ভাগই হল কৃষিভূমি।
শিক্ষাসম্পাদনা
উল্লেখযোগ্য শিক্ষাকেন্দ্রের নাম হল:
- বড়োল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়
- বিনেশ্বর ব্রহ্ম অভিযান্ত্রিক মহাবিদ্যালয়
- কেন্দ্রীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান
- কোকড়াঝাড় গভ: কলেজ
- কমার্স কলেজ, কোকড়াঝাড়
- বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয়, কোকড়াঝাড়
- আইন মহাবিদ্যালয়
- বি.এড. কলেজ
- বুনিয়াদী প্রশিক্ষন কেন্দ্র
- সংগীত ও চারু-কারু কলা মহাবিদ্যালয়
- আই টি আই (ধাউলীগূরী)
বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থাসম্পাদনা
অসমের ভৈয়াম জনজাতিদের স্বায়ত্বশাসনের দাবীর প্রভাব জেলাটির বড়ো লোকদের মধ্যেও এসে পরে। প্রথমে "ভৈয়াম জনজাতি পরিষদ"র নেতৃত্বে ব্রহ্মপুত্রের উত্তরপারে বসবাস করা ভৈয়াম জনজাতিদের কারণে সুকীয়া নিয়ে উদয়াচল রাজ্যর দাবী করে। পরে, "সদৌ বড়ো ছাত্র সন্থা"র নেতৃত্বে একটি সুকীয়া "বড়োলেন্ড"র দাবীতে আন্দোলন আরম্ভ করে। এই আন্দোলন ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত হিংসাত্মক ঘটনার রূপ নেওয়াতে অসম সরকার "সদৌ বড়ো ছাত্র সন্থা"র সাথে এক চুক্তি করে। এর ফলে এই আন্দোলনের সুত্র কাটে। সর্বশেষে, ২০০৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তারিখে "বড়োলেন্ড সন্ধি"তে অসম সরকার স্বাক্ষর করায় "বড়োলেন্ড স্বায়ত্ব শাষিত পরিষদ" গঠিত হয়। [২]
জনগোষ্ঠীসম্পাদনা
কোকড়াঝাড় জেলায় প্রচলিত ভাষাসমূহের পাইচিত্র তালিকা নিম্নরূপ -
দর্শনীয় স্থানসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ Kokrajhar : Census 2011; আহরণর তারিখ: ২৫ জুন, ২০১২ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ অবৈধ; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Census2011" নাম একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে - ↑ ক খ "কোকড়াঝাড় জেলার তথ্য"। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৭, ২০১২।
- ↑ http://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16.html